ধর্ম ও জীবন
জুমার দিনে যে পাঁচটি ভুল কাম্য নয়
জুমার নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের অন্যতম একটি ইবাদত। জুমার দিনে অনান্য ইবাদাতের জন্যেও রয়েছে অতিরিক্ত সওয়াবের হুকুম। তাই এই দিনটিকে সঠিকভাবে পালন করা জরুরি।
শুক্রবারে জুমার নামাজ গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। মোটামুটি সব মুসলমান জুমার নামাজ আদায় করেন। কিন্তু এই নামাজের সময় আমরা কিছু ভুল হয়ে যায়। সে রকম পাঁচটি ভুল নিয়ে সংক্ষিপ্ত কথা—
পরিচ্ছন্ন না হয়ে জুমায় যাওয়া
জুমার নামাজে যাওয়ার আগে গোসল করা জরুরি। অনেকে এই দিনে এত বেশি ব্যস্ত থাকেন যে, কোনো রকম জুমার ফরজ দুই রাকাত আদায় করে চলে আসেন। অথচ আবু সাইদ খুদ্রি (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি এ মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্কের জন্য গোসল করা ওয়াজিব (জরুরি)। আর মিসওয়াক করবে এবং সম্ভব হলে সুগন্ধি ব্যবহার করবে। ’ (বুখারি, হাদিস: ৮৮০, মুসলিম, হাদিস: ৮৪৬)
তাই সবার উচিত জুমার দিন গোসল করা এবং মিসওয়াক করা। যদি সামর্থ্য থাকে, সুগন্ধি ব্যবহার করা। এছাড়াও ভাল ও পরিচ্ছন্ন জামা পড়ে মসজিদে যাওয়া। রাসুল (সা.) নিজেও এই দিন ভাল ও পরিচ্ছন্ন পোশাক পরতেন।
মসজিদে দেরি করে যাওয়া
জুমার নামাজ কেবল দুই রাকাত নামাজ আদায়ে যথেষ্ট নয়। জুমার খুতবা শোনাও জরুরি। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন জানাবাত (সহবাস পরবর্তীকালে) গোসলের মতো গোসল করে এবং নামাজের জন্য আগমন করে, সে যেন একটি উট কোরবানি করলো। যে ব্যক্তি দ্বিতীয় পর্যায়ে আগমন করে, সে যেন একটি গাভী কোরবানি করলো। তৃতীয় পর্যায়ে যে আগমন করে, সে যেন একটি শিং-বিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করলো। চতুর্থ পর্যায়ে যে আগমন করলো সে যেন একটি মুরগি কোরবানি করলো। পঞ্চম পর্যায়ে যে আগমন করলো, সে যেন একটি ডিম কোরবানি করলো। (বুখারি, হাদিস: ৮৮১)
তাই জুমার নামাজের দিন পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া উত্তম। তাহলে সময়মতো ও সঠিকভাবে নামাজ আদায় সম্ভব।
জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা
জুমার নামাজের সময় অন্য কাজ করা নিষিদ্ধ। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মসজিদের দিকে যাওয়া জরুরি। জুমার প্রথম আজান শোনার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসায় কিংবা অন্য কাজ বন্ধ করে দেওয়া অথবা নামাজের জন্য বিরতি দেওয়া উচিত। ইয়াহ্ইয়া ইবনু সাইদ (রহ.) থেকে বর্ণিত, আয়েশা (রা.) বলেছেন, লোকজন নিজেদের কাজকর্ম নিজেরাই করতেন। যখন তারা দুপুরের পরে জুমার জন্য যেতেন, তখন সে অবস্থায়ই চলে যেতেন। তাই তাদের বলা হলো, যদি তোমরা গোসল করে নিতে ভালো হতো…। (বুখারি, হাদিস: ৯০৩, মুসলিম, হাদিস: ৮৪৭)
মনোযোগ দিয়ে খুতবা না শোনা
খুতবা শোনা জুমার নামাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই ঠিকভাবে খুতবা শোনাও জরুরি। তবে যদি মুসল্লি বেশি হওয়ার কারণে অথবা অন্য কোনো কারণে খুতবার আওয়াজ না শোনা যায়, তবে নিরব থাকা নিয়ম।
আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমভাবে ওজু করে জুমার নামাজে এলো, নীরবে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শুনলো, তাহলে পরবর্তী জুমা পর্যন্ত এবং আরও অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে ব্যক্তি (অহেতুক) কঙ্কর স্পর্শ করলো, সে অনর্থক, বাতিল, ঘৃণিত ও প্রত্যাখ্যানযোগ্য কাজ করলো। (মুসলিম, হাদিস: ১৮৭৩) প্রসঙ্গত আরবি ও বাংলায় দেওয়া উভয় খুতবাই মনোযোগ দিয়ে শোনা জরুরি।
খুতবার সময় কথা বলা
খুতবা শোনা ওয়াজিব। রাসুল (সা.) খুতবার সময় কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে। (বুখারি, হাদিস: ৯৩৪, মুসলিম, হাদিস: ৮৫১)
খুতবার সময় কেউ কথা বললে তাকে চুপ থাকতে বলাও উচিত নয়। অর্থাৎ খুতবার সময় মুখ পুরোপুরি বন্ধ রাখা চাই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে জুমার নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
নারী হজ যাত্রীদের নিয়ে সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা
মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববী কর্তৃপক্ষ নারী হজ যাত্রীদের জন্য নয় নির্দেশনা জারি করেছে। ইনফোগ্রাফির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ এক্স পোস্টে এ নির্দেশনা শেয়ার করে। এসব নির্দেশনা নারীদের নামাজের স্থানগুলোতে মেনে চলতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যথাযথ ইসলামিক পোশাক পরিধান করা, দায়িত্বরত কর্মীদের সঙ্গে উত্তম আচারণ করা, ফ্লোরে ঘুমানো কিংবা বসা পরিহার করা এবং নামাজে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো।
নির্দেশনায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে নামাজের স্থানে খাওয়া বা পানি পান করা থেকে বিরত থাকা, হইচই না করা এবং জুতা পায়ে কার্পেটের ওপর না হাঁটা। এছাড়া নারীদের হজ যাত্রীদের ব্যক্তিগত মালামাল সাবধানে রাখতে বলা হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
আল্লাহর কাছে যে ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট
দুনিয়ার সৃষ্টিকুলের মধ্যে শুধু জিন ও মানুষকেই আল্লাহ তাআলা বিবেক ও চিন্তাশক্তি দান করেছেন। সত্য ও কল্যাণ বুঝে গ্রহণ করার সামর্থ্য দান করেছেন। অসত্য ও অকল্যাণ প্রত্যাখ্যান করার সামর্থ্য দান করেছেন। আল্লাহ তাআলা চান মানুষ তার এই নেয়ামতের মূল্যায়ন করুক। চিন্তাশক্তি কাজে লাগাক। চোখে দেখে, কানে শুনে পর্যবেক্ষণ করার শক্তি কাজে লাগাক।
মানুষ যখন নিজের বিবেক, চিন্তা ও পর্যবেক্ষণশক্তি কাজে লাগায় এবং সত্য গ্রহণ করে, তখন মানুষ হয় সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ, যে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়ে আল্লাহ তাআলা তাকে সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু মানুষ যখন নিজের চিন্তাশক্তি অকেজো করে রাখে, আল্লাহ তাআলা চোখ, কান ও অন্তর দেওয়ার পরও অন্ধ ও বধির হয়ে থাকে, নির্বোধ হয়ে থাকে, তখন মানুষ হয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট। মানুষের মধ্যে নিকৃষ্ট তো বটেই, চতুস্পদ জন্তুর চেয়েও নিকৃষ্ট। কারণ আল্লাহ তাআলার নেয়ামত পেয়েও সে সেগুলোর মূল্যায়ন করতে পারে নি।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَلَقَدۡ ذَرَاۡنَا لِجَهَنَّمَ كَثِیۡرًا مِّنَ الۡجِنِّ وَ الۡاِنۡسِ لَهُمۡ قُلُوۡبٌ لَّا یَفۡقَهُوۡنَ بِهَا۫ وَ لَهُمۡ اَعۡیُنٌ لَّا یُبۡصِرُوۡنَ بِهَا وَ لَهُمۡ اٰذَانٌ لَّا یَسۡمَعُوۡنَ بِهَا اُولٰٓئِكَ كَالۡاَنۡعَامِ بَلۡ هُمۡ اَضَلُّ اُولٰٓئِكَ هُمُ الۡغٰفِلُوۡنَ
আর অবশ্যই আমি সৃষ্টি করেছি জাহান্নামের জন্য বহু জিন ও মানুষকে। তাদের রয়েছে অন্তর, তা দ্বারা তারা বোঝে না; তাদের রয়েছে চোখ, তা দ্বারা তারা দেখে না এবং তাদের রয়েছে কান, তা দ্বারা তারা শোনে না। তারা চতুষ্পদ জন্তুর মত; বরং তারা অধিক পথভ্রষ্ট। তারাই হচ্ছে গাফেল। (সুরা আ’রাফ: ১৭৯)
আল্লহ তাআলা ‘জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছেন’ এর অর্থ এই নয় যে বিনা কারণে তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছিল। বরং তারা নিজেদের কাজের কারণে জাহান্নামের উপযুক্ত হয়। যেহেতু আল্লাহ তাআলা তাদেরকে অন্তর, মস্তিষ্ক, কান, চোখ সবকিছু দিয়েই সৃষ্টি করার পরও তারা এগুলোকে যথাযথভাবে ব্যবহার করে না। তারা কিছু বোঝে না, দেখে না, শোনে না। অথচ তারা পাগল বা উম্মাদ নয় যে কিছুই বুঝতে পারবে না। অন্ধও নয় যে কোনো কিছু দেখবে না, বা বধিরও নয় যে কোনো কিছু শুনবে না। বরং তারা পার্থিব বিষয়ে অধিকাংশ লোকের তুলনায় অধিক সতর্ক ও চতুর।
কোরআনের আরেকটি আয়াতেও এ ধরনের ব্যক্তিদের সৃষ্টিকুলের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট বলা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰهَ وَ رَسُوۡلَهٗ وَ لَا تَوَلَّوۡا عَنۡهُ وَ اَنۡتُمۡ تَسۡمَعُوۡنَ وَ لَا تَكُوۡنُوۡا كَالَّذِیۡنَ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَ هُمۡ لَا یَسۡمَعُوۡنَ اِنَّ شَرَّ الدَّوَآبِّ عِنۡدَ اللّٰهِ الصُّمُّ الۡبُكۡمُ الَّذِیۡنَ لَا یَعۡقِلُوۡنَ
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য কর এবং তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না, অথচ তোমরা শুনছ। আর তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা বলে আমরা শুনেছি অথচ তারা শোনে না। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে নিকৃষ্টতম বিচরণশীল প্রাণী হচ্ছে বধির, বোবা, যারা বোঝে না। (সুরা আনফাল: ২২)
অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্টিকুলের মধ্যে সেসব মানুষই সবচেয়ে নিকৃষ্ট যারা সত্য ও ন্যায় শ্রবণের ব্যাপারে বধির এবং তা গ্রহণ করার ব্যাপারে বোবা হয়ে থাকে। কারণ আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সত্য জানা ও সে পথে চলার জন্য চোখ ও কান দিয়েছিলেন, কিন্তু তারা সেগুলো কাজে লাগায়নি।
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, মানুষের চোখ, কান ও অন্তর সম্পর্কে কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে যে আল্লাহর এই নেয়ামতগুলো সে কী কাজে লাগিয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَ لَا تَقۡفُ مَا لَیۡسَ لَكَ بِهٖ عِلۡمٌ اِنَّ السَّمۡعَ وَ الۡبَصَرَ وَ الۡفُؤَادَ كُلُّ اُولٰٓئِكَ كَانَ عَنۡهُ مَسۡـُٔوۡلًا
আর সে বিষয়ের পেছনে ছুটো না, যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই। কান, চোখ আর অন্তর- এগুলোর প্রতিটির ব্যাপারেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সুরা ইসরা: ৩৬)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
বুধবার থেকে পবিত্র জমাদিউস সানি মাস গণনা শুরু
বাংলাদেশের আকাশে কোথাও জমাদিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী বুধবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে পবিত্র জমাদিউস সানি মাস গণনা শুরু হবে বলে জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের আকাশে আজ কোথাও ১৪৪৬ হিজরি সনের পবিত্র জমাদিউস সানি মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামীকাল (৩ ডিসেম্বর) মঙ্গলবার পবিত্র জমাদিউল আউয়াল মাস ৩০ দিন পূর্ণ হবে এবং আগামী ৪ ডিসেম্বর বুধবার থেকে পবিত্র জমাদিউস সানি মাস গণনা করা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিন আগে মসজিদে গেলে যে সওয়াব পাওয়া যায়
সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন- জুমার দিন। এ দিনটিকে সাপ্তাহিক ঈদের দিনও বলা হয়। মুসলমানদের কাছে এ দিন অপরিসীম ফজিলতের। আল্লাহ তাআলার কাছে জুমার গুরুত্ব এত বেশি যে, পবিত্র কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি সুরা নাজিল করা হয়েছে। তাতে জুমার নামাজের গুরুত্ব বর্ণনা করে আল্লাহ বলছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! জুমার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহকে মনে রেখে তাড়াতাড়ি করবে ও কেনাবেচা বন্ধ রাখবে। এ-ই তোমাদের জন্য ভালো; যদি তোমরা বোঝো।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ৯)
জুমার নামাজের আজান দেওয়ার পর সব বৈষয়িক কাজ স্থগিত রেখে নামাজ আদায় করার জন্য আল্লাহ সবাইকে মসজিদে কাতারবন্দী হওয়ার আদেশ দিয়েছেন। এর পরের আয়াতেই বলা হয়েছে, ‘নামাজ শেষ হলে তোমরা বাইরে ছড়িয়ে পড়বে ও আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে এবং আল্লাহকে বেশি করে ডাকবে; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সুরা জুমা, আয়াত: ১০)।
অর্থাৎ আল্লাহর হক আদায় করার মাধ্যমে আখিরাতের সম্পদ অর্জন করার পর আবার দুনিয়ার সম্পদ তথা স্বাভাবিক রুটিরুজির অন্বেষণে ছড়িয়ে পড়তে বলা হচ্ছে।
জুমার দিন এবং এই দিনের আমল সম্পর্কে বহু হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এককভাবে অন্য কোনো দিন বা দিনের নামাজ নিয়ে এত বর্ণনা আর পাওয়া যায় না। আমলের দিক থেকে আল্লাহ তাআলা যেসব দিনকে ফজিলত ও বৈশিষ্ট্যপূর্ণ করেছেন, জুমা তার অন্যতম।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করে প্রথম মসজিদে হাজির হয়, সে যেন একটি উট কুরবানি করল; দ্বিতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করে, সে যেন একটি গরু কুরবানি করল; তৃতীয় যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল এবং সে যেন একটি ছাগল কুরবানি করল।
অতঃপর চতুর্থ যে ব্যক্তি মসজিদে গেল, সে যেন একটি মুরগি সদকা করল। আর পঞ্চম যে ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, সে যেন একটি ডিম সদকা করল। এরপর ইমাম যখন বেরিয়ে এসে মিম্বরে বসে গেলেন খুতবার জন্য, তখন ফেরেশতারা লেখা বন্ধ করে খুতবা শুনতে বসে যায়। (বুখারি: ৮৮১)
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আইন-আদালত
‘চিন্ময় দাসের কাজ ও বক্তব্যের দায় ইসকন নিবে না’
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী ইস্যু নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)। যেখানে বলা হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের কাজ ও বক্তব্য একান্তই তার নিজের। এর দায় ইসকন নেবে না।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর স্বামীবাগ আশ্রমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটা জানিয়েছেন ইসকনের সাধারণ সম্পদক চারু চন্দ্র দাস ব্রক্ষ্মচারী। এ সময় ভারতের মন্তব্যে সম্পৃক্ত না থাকার দাবিও করে সংগঠনটি।
ইসকনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা সবাইকে পুনরায় অবহিত করতে চাই যে, অনেক মাস আগেই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইসকনের সাংগঠনিক পদ/পদবীসহ ইসকনের যাবতীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং উল্লেখ করা হয় যে, তাদের দ্বারা সংঘটিত কার্যক্রম ইসকনের কার্যক্রম নয়।’
চারু চন্দ্র বলেন, ‘গত ৩ অক্টোবর অফিসিয়াল বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয় যে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস (চন্দন কুমার ধর) ইসকন বাংলাদেশের মুখপাত্র নন। তাই তার বক্তব্য সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত। অতএব, লীলারাজ গৌর দাস, স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বক্তব্য এবং কৃতকর্মের জন্য ইসকন বাংলাদেশ কোনোভাবেই দায়বদ্ধ নয়।’
ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের মৃত্যু ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসকন বাংলাদেশকে অন্যায়ভাবে দায়ী করার অপচেষ্টা চলছে। আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা এবং চলমান আন্দোলনের সঙ্গে ইসকন বাংলাদেশের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। এই মিথ্যাচার এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সড়ক দুর্ঘটনার মতো বিষয়গুলোকেও ইসকনের চক্রান্ত বলে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’
এরপরও দুঃখজনকভাবে কিছু বিশেষ মহল ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের সংগঠনের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইসকনকে নিষিদ্ধ করার মতো অযৌক্তিক দাবি তুলছে, যোগ করেন তিনি।
গত ২৫ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এরপর তার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এমআই