অর্থনীতি
আমদানি করা একাধিক প্লাস্টিক পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব

দেশে স্থাপিত প্লাস্টিক শিল্পকারখানাগুলো অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে সক্ষম। তাই প্লাস্টিক শিল্প টিকিয়ে রাখতে আমদানি করা একাধিক প্লাস্টিক পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ)।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) অনুষ্ঠিত প্রাক বাজেট আলোচনায় এ দাবি জানায় সংগঠনটি। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে বিপিজিএমইএ ছাড়াও একাধিক সংগঠনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আমদানি করা প্লাস্টিক পাইপ, টিউব, হোসে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্কের পরিবর্তে ২৫ শতাংশ, প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার, প্যালেটস, ক্রেট, টুথব্রাশ, প্লাস্টিক বোতল ইত্যাদি পণ্যে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বহাল ও ৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি। একই সঙ্গে আমদানি করা খেলনার ট্যারিফ মূল্য বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এছাড়া পণ্য বিক্রির ওপর ৭ শতাংশ অগ্রিম আয়কর কর্তন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। অন্যদিকে রপ্তানির সক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সব স্থানীয় ক্রয়কে ভ্যাটমুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)।
বিজিএপিএমইএ তাদের প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি হিসেবে জানিয়েছে, ভ্যাট আইনে সব ক্রয়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রযোজ্য। রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান অফিস পরিচালনার জন্য স্টেশনারিসহ বেশকিছু দ্রব্যসামগ্রী স্থানীয় বাজার থেকে ক্রয় করে। এসব ক্রয় প্রকারান্তরে উৎপাদন ও রপ্তানির সঙ্গে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পর রপ্তানি সেক্টরকে সরাসরি কোনো আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের সুযোগ থাকবে না।
এছাড়া সব রপ্তানির ক্ষেত্রে উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে আগামী ৫ বছরের জন্য শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করা, অর্জিত ব্যাংক সুদ আয়ের ওপর উৎসে কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা, দ্রুত ও নিরবচ্ছিন্ন করতে ইউডি জারির ক্ষমতা, বন্ডের আওতায় এক্সেসরিজ ও প্যাকেজিংয়ের ফিনিসড পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে বিজিএপিএমইএ।
কাফি

অর্থনীতি
চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদের মুখে চট্টগ্রাম বন্দরে সম্প্রতি বাড়ানো শুল্ক ও বিভিন্ন সেবার মাশুল এক মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামে আয়োজিত একটি কর্মশালায় এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন নৌপরিবহন বিষয়ক উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
‘কাস্টমস অ্যান্ড পোর্ট ম্যানেজমেন্ট: প্রবলেমস, প্রসপেক্টস অ্যান্ড ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক ওই কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, এক মাসের স্থগিতাদেশের পর নতুন শুল্ক কার্যকর হবে। পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি এবং বে-টার্মিনালের মতো বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে বন্দরের খরচ বাড়ানোটা জরুরি ছিল। তবে এই সাময়িক স্থগিতাদেশ রপ্তানিকারকদের ওপর চাপ কিছুটা কমাবে।
কর্মশালায় অংশ নিয়ে ব্যবসায়ীরা বর্ধিত শুল্ক কমপক্ষে ছয় মাসের জন্য স্থগিত রাখার এবং কিছু চার্জ কমানোর দাবি জানান। তারা বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বর্ধিত শুল্কের কারণে, রপ্তানিকারকদের টিকে থাকতে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। তারা আরও বলেন, বন্দরের সেবার মান বা সক্ষমতা না বাড়িয়েই বেসরকারি কনটেইনার ডিপোগুলো (আইসিডি) ৪০-৪৫% চার্জ বাড়িয়েছে। এই সমস্যা সমাধানে যৌথ টাস্কফোর্স গঠন এবং আইন সংস্কারের প্রস্তাবও দেন তারা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বন্দরটি বর্তমানে তার ধারণক্ষমতার বাইরে পরিচালিত হচ্ছে। এটি এখনও জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভরশীল এবং সীমিত গভীরতার কারণে আন্তর্জাতিক মানের চেয়ে পিছিয়ে আছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা কনটেইনার দ্রুত খালাস, কাস্টমস প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয়করণ এবং আগামী পাঁচ বছরের সম্ভাব্য বাণিজ্য প্রবৃদ্ধি সামাল দিতে আইন সংস্কারের ওপর জোর দেন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান জানান, বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা নিলামযোগ্য কনটেইনারগুলো এই মাসেই তালিকাভুক্ত করে দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া, তিনি সাবেক সংসদ সদস্যদের ফেলে রাখা ৩০টি গাড়ি সরকারি পরিবহন পুলে যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়ার কথাও জানান।
কর্মশালায় জানানো হয়েছে, লজিস্টিকস পারফরম্যান্স, বাণিজ্য ব্যয় এবং কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স দক্ষতার দিক থেকে চট্টগ্রাম বন্দর এখনও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বন্দরগুলোর তুলনায় বেশ পিছিয়ে রয়েছে।
অর্থনীতি
বাংলাদেশের আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা আনতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ৮ পরামর্শ

বাংলাদেশের আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা আনতে আটটি পরামর্শ দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। মার্কিন সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত ফিসক্যাল ট্রান্সপারেন্সি রিপোর্ট বা আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে এই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার আগের সরকারের তৈরি বাজেট কাঠামোই মূলত অনুসরণ করছে। আগের সরকারের বাজেট কাঠামো বদলায়নি অন্তর্বর্তী সরকার। তবে সরকার অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা বাড়াতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।
এবার দেখা যাক আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা আনতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কী কী পরামর্শ দিয়েছে।
১. বছরের শেষ হিসাব প্রতিবেদন যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রকাশ করা।
২. বাজেট নথি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রস্তুত করা।
৩. নির্বাহী কার্যালয়ের ব্যয় আলাদাভাবে দেখানো।
৪. বাজেটে সরকারের রাজস্ব আয় ও ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র প্রকাশ করা।
৫. আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সর্বোচ্চ নিরীক্ষা কর্তৃপক্ষের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। বাজেটের পূর্ণাঙ্গ তথ্য যেন তারা পায়, সেই ব্যবস্থা করা।
৬. নিরীক্ষা প্রতিবেদন সময়মতো প্রকাশ করা, যেখানে প্রস্তাবনা ও বিস্তারিত তথ্য থাকবে।
৭. প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ–সংক্রান্ত চুক্তির মূল তথ্য প্রকাশ করা।
৮. সরকারি ক্রয়ের তথ্য প্রকাশ করা।
প্রতিবেদনে আরও যা আছে
মার্কিন সরকারের পররাষ্ট্র দপ্তরের আর্থিক স্বচ্ছতা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগের সরকার নির্বাহী বাজেট প্রস্তাব ও প্রণীত বাজেট অনলাইনে সাধারণ জনগণের জন্য প্রকাশ করেছে। তবে বছরের শেষ হিসাব প্রতিবেদন যৌক্তিক সময়ের মধ্যে প্রকাশ করেনি। তারা মনে করছে, বাজেটের তথ্য সাধারণভাবে নির্ভরযোগ্য হলেও আন্তর্জাতিক মান অনুসারে হয়নি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারের ঋণ বা দেনার পরিমাণ কত, তা বাজেটে প্রকাশ করা হতো। বাজেট নথিতে সরকারের পরিকল্পিত ব্যয়, রাজস্ব আয়সহ প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে অর্জিত আয় দেখানো হলেও একাধিক দিক থেকে তথ্য অসম্পূর্ণ ছিল। বিশেষ করে নির্বাহী বিভাগের ব্যয় আলাদা করে দেখানো হয়নি। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক বরাদ্দ ও আয় প্রকাশ করা হলেও রাজস্ব ও ব্যয়ের সম্পূর্ণ হিসাব পাওয়া যায়নি।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সরকারি নিরীক্ষক সংস্থা অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে পুরো হিসাব যাচাই করতে পারেনি। কিছু সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর মনে করছে, প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী স্বতন্ত্র নয়।
প্রাকৃতিক সম্পদ খাতের চুক্তি ও লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে আইনগত মানদণ্ড অনুসরণ করা হলেও সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে সীমিত তথ্য দেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের সব প্রক্রিয়া উন্মুক্ত ও স্বচ্ছভাবে করেছে। সেই সঙ্গে আগের সরকারের নেওয়া চলমান ও আগের সব সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি স্থগিত করেছে।
অর্থনীতি
দুর্গাপূজায় হিলি স্থলবন্দরে ৮ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি-রপ্তানি

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে টানা ৮ দিন আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত অন্যান্য দিনগুলোতে পানামা পোর্ট অভ্যন্তরে পণ্য খালাস কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়া হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাহিলি সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফেরদৌস রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, দূর্গাপূজায় ভারত অভ্যন্তরে অনেক আনুষ্ঠানিকতা থাকে যার কারণে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৮ দিন হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৮ দিন বন্ধের পর ৪ অক্টোবর থেকে আবারও আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, ৮ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত অন্য দিনগুলোতে কাস্টমসের কার্যক্রম সচল থাকবে এবং চাইলে আমদানিকারকরা বন্দর থেকে আমদানিকৃত পণ্য খালাস করতে পারবেন। সব ধরনের সহযোগিতা তাদেরকে করা হবে।
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট ওসি আরিফুল ইসলাম বলেন, দূর্গাপূজায় ৮ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকলেও হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার কার্যক্রম স্বাভাবিক থাকবে।প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে ভারত-বাংলাদেশের মাঝে তারা যাতায়াত করতে পারে।
অর্থনীতি
স্বস্তি ফেরেনি সবজি-পেঁয়াজে, মাছ-মুরগির দামও চড়া

বাজারে আগের তুলনায় কিছুটা কমলেও এখনও প্রায় বেশিরভাগ সবজি কিনতে গুনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকা। যা আগে আরও বেশি ছিল। অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগি, ডিম ও নানা ধরনের মুদি পণ্যের দাম আগের মতোই আছে। মাছ ও পেঁয়াজের দামও কিছুটা কমলেও স্বস্তিদায়ক পর্যায়ে আসেনি।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে বেগুন ৭০–৮০ টাকা, পটল ৬০–৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, শসা ৫০–৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, কচুর চরা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ও জালি আকার ভেদে প্রতিপিচ ৫০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
তবে বাজারে সবচেয়ে কম দামে পাওয়া যাচ্ছে আলু ও পেঁপে। এই দুটি সবজি প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বাজারের পেঁয়াজের দাম সামান্য কমেছে। আগে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হলে এখন ৬৫ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে পাড়া-মহল্লায় এ দাম আরও অন্তত ৫ টাকা বেশি।
সবজির দাম বেশি হওয়ার কারণ জানিয়ে একজন সবজি বিক্রেতা বলেন, আরও কিছুদিন সবজির দাম এমন বাড়তি থাকবে। কারণ এখন বেশিরভাগ সবজির মৌসুম শেষ হয়েছে। বাজারে নতুন করে সবজি ওঠার আগ পর্যন্ত এমন বেশি দাম থাকবে। বাজারে নতুন সবজি ওঠা শুরু করলে ধীরে ধীরে সবকিছুর দাম কমে আসবে। বর্তমানে বাজারে সবজি চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। যে কারণে পাইকারি বাজারেই বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। এর প্রভাব খুচরা বাজারগুলোতেও পড়েছে।
এদিকে, মাছের বাজারেও বেশ চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম। এতে নদীর কিছু মাছের দাম বেড়েছে।
বাজারে ইলিশসহ চিংড়ি মাছের দাম চড়া। প্রতি ৭০০ গ্রামের একহালি ইলিশ ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ প্রতি পিস দুই থেকে তিন হাজার টাকা দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। ৪০০-৫০০ গ্রামের মাছ প্রতি কেজি ৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে, দাম বেড়ে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে।
এ ছাড়া, কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩৫০-৪২০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৬০ টাকা ও পাঙ্গাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তবে, বাজারে এখন মুরগি ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি ১৭০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দামে।
এদিকে চাল বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে এখন সরু নাজিরশাইল ও মোটা কয়েক পদের চাল আমদানি হচ্ছে। ওসব চালের দাম কমেছে। তবে আগের মতোই রয়েছে জনপ্রিয় মিনিকেট চালের দাম।
এখন বাজারে প্রতি কেজি নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৬ টাকায়, যা আগে ৯০-৯২ টাকা ছিল। অন্যদিকে, মোটা পায়জাম ও স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা, যা কেজিপ্রতি ৪-৫ টাকা কমেছে। তবে মিনিকেট চাল আগের দামেই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারে সজিব রাইস এজেন্সির কর্ণধার সালমান হোসেন বলেন, ভারত থেকে প্রচুর চাল আসছে, তাই দাম কমছে। তবে দেশি যেগুলো মিনিকেট আছে, সেগুলো আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে। আমদানি বাড়লে দাম আরও কমতে পারে।
তালতলা বাজারে চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, মোকামে চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ১২০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা নাজিরের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তবে বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই একই আছে। আবার পুরোনো কোনো চালের দামও এখনো কমেনি।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন পর বাজারে চালের দাম কমছে। বছরের শুরুতে চালের দাম বেড়েছিল, এরপর প্রায় চড়া ছিল বাজার।
অর্থনীতি
জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমে ৫৪ কোটি ডলার

রেমিট্যান্স প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ের প্রবৃদ্ধির প্রভাবে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অব পেমেন্ট–বিওপি) উন্নতি দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৫৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার। ফলে এক বছরে ঘাটতি কমেছে ১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ২১.৩৬ শতাংশ।
তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে দেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৭৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ৩৮২ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
অর্থাৎ রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৫ শতাংশ। একই সময়ে আমদানি বেড়ে দাঁড়ায় ৬২৭ কোটি ডলারে, যা আগের বছর ছিল ৫২৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। অর্থাৎ আমদানি বেড়েছে প্রায় ১৯.৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরো জানা যায়, বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ সামান্য বেড়ে ১৫০ কোটি ৫০ লাখ ডলার হয়েছে, যা গত অর্থবছরের জুলাইয়ে ছিল ১৪৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
অন্যদিকে আর্থিক হিসাবের ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে নেট এফডিআই বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি ডলারে, যা এক বছর আগে ছিল মাত্র ৩৮ কোটি ডলার। একই মাসে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৯.৮০ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ২৫.৮২ বিলিয়ন ডলার। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড (বিপিএম-৬) অনুযায়ী হিসাব করলে রিজার্ভ দাঁড়ায় ২৪.৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ২০.৩৯ বিলিয়ন ডলার।
এ সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে, যা আগের বছরের জুলাইয়ে ছিল ১৯১ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এক বছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৯.৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ সামনের দিনগুলোতেও ধরে রাখা চ্যালেঞ্জ হবে। তা না হলে চাপ তৈরি হতে পারে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম মনে করেন, নিয়মিত লেনদেনে উদ্বৃত্ত থাকলে ঋণ ছাড়াই চলা সম্ভব হয়।
তবে ঘাটতি থাকলে ঋণের ওপর নির্ভর করতে হয়। তাই দীর্ঘমেয়াদে চলতি হিসাবের স্থিতি ইতিবাচক রাখা জরুরি।