গণমাধ্যম
অতিরিক্ত আইজিপি হলেন সাবেক সংবাদকর্মী কৃষ্ণ পদ রায়
অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। তিনি ১৯৯৫ সালে ১৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশে নিয়োগ পান। এর আগে ঢাকায় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের স্টাফ রিপোর্টার পদে বেশ কিছুদিন দায়িত্ব পালন করেন।
রবিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগ পুলিশ-১ শাখার উপসচিব মো. মাহাবুব রহমান শেখের সই করা এক আদেশে এ পদোন্নতি দেওয়া হয়।
একই আদেশে আরও ৯ জনকে অতিরিক্ত আইজিপি পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন— ঢাকা পুলিশ টেলিকমের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহিদুর রহমান ও বশির আহম্মদ, ঢাকা ট্রেনিং ড্রাইভিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট মো. ময়নুল ইসলাম, ঢাকা স্পেশাল সিকিউরিটি এন্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়নের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া, ঢাকা অপরাধ তদন্ত বিভাগের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক কুসুম দেওয়ান, ঢাকা পুলিশ অধিদপ্তরের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কেম এম হাফিজ আক্তার ও ড. খ. মহিদিউদ্দিন এবং রংপুর রেঞ্জের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. আবদুল বাতেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩০ জুন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়কে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়।
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের হালিতলা গ্রামের গোপাল চন্দ্র রায় এবং রমা রানী রায়ের প্রথম সন্তান কৃষ্ণ পদ রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। পুলিশে তার কর্মজীবন শুরু হয় বগুড়ায়।
শেরপুর ও চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কৃষ্ণ পদ রায়। এরপর চট্টগ্রাম মেট্রোপিলিটন পুলিশের (সিএমপি) সহকারী কমিশনার পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা জোনের ডেপুটি কমিশনার, ডিবি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কৃষ্ণ পদ রায়।
পরবর্তীতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) হিসেবে দায়িত্ব পালনকাল করেন কৃষ্ণ পদ রায়। ডিআইজি পদমর্যাদায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ক্রাইম ও অপারেশন পদেও দায়িত্ব পালন করেন। গত বছরের ৭ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পূর্ণ দায়িত্ব পান তিনি।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
গণমাধ্যমে আঘাত বরদাস্ত করবে না সরকার: মাহফুজ আলম
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, গণমাধ্যমে আঘাত কোনোভাবেই সরকার বরদাস্ত করবে না। যারা এই ধরনের কার্যক্রম করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মাহফুজ আলম বলেন, আমরা শুনেছি একটা গোষ্ঠী একটা বিবৃতি ইস্যু করেছেন। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) তারা কিছু গণমাধ্যমে হামলা করবে। এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট বলা হচ্ছে যারা এই ধরনের কার্যক্রম করার চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, বিভিন্ন মিডিয়াকে হুমকি এবং ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেওয়ায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
এতে বলা হয়, সম্প্রতি বাংলাদেশের কয়েকটি মিডিয়াকে হুমকি প্রদানসহ ঘেরাওয়ের ঘোষণার বিষয়টি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য হলো, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। মিডিয়াকে হুমকি প্রদানসহ ঘেরাওয়ের ঘোষণায় মন্ত্রণালয় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
ডিসেম্বরের মধ্যে আমার দেশ পত্রিকা বাজারে আসছে: মাহমুদুর রহমান
চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় দৈনিক ‘আমার দেশ’ বাজারে আসবে বলে জানিয়েছেন পত্রিকারটির সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মাহমুদুর রহমান বলেন, যত কষ্টই হোক, ডিসেম্বর মাসের মধ্যই ‘আমার দেশ’ পত্রিকা আপনাদের হাতে তুলে দেব। আমার দেশ পত্রিকা আবারও জনগণের পক্ষে কথা বলবে। ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে, লুটেরাদের বিরুদ্ধে কথা বলবে। শুধু সরকারের কাছে চাওয়া, এ পত্রিকা চালুর ব্যাপারে যেন আইনি বাধায় না পড়ে সে সহযোগিতা করা।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার ‘আমার দেশ’ পত্রিকার প্রেস সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। নতুন প্রেস বসাতে অনেক সময় লাগবে। কিন্তু এরই মধ্যে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়ে গেছে। এ ষড়যন্ত্র প্রতিরোধে আমার দেশের মতো মিডিয়া দরকার। ‘আমার দেশ’ কর্পোরেট স্বার্থের বাইরে, কোনো দলের স্বার্থের বাইরে, দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য দাঁড়াবে। দেশের মানুষের জন্য দাঁড়াবে। এজন্য ‘আমার দেশ’ দ্রুত চালু করতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্য দুটি প্রেস থেকে ‘আমার দেশ’ ছাপা হবে।
পত্রিকাটি নতুন করে চালু করতে নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন, হাতে আর আড়াই মাসের কম সময় আছে। অফিস পেয়ে গেলে আশাকরি এর আগেই আমরা আসতে পারব। অন্য প্রেস থেকে ছাপা হলেও ছাপানোর আগে ম্যাটার তৈরি করতে হবে। তার জন্য অফিস দরকার। আমার ধারণা আমার সহকর্মীরা আমার সঙ্গে আরও এক বছর লড়াই করতে রাজি হবেন। কিন্তু অফিস খুঁজে পাওয়ার জন্য এখম আমাদের সংগ্রাম করতে হচ্ছে। অফিসটা সেটাপ করাই এখন চ্যালেঞ্জ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রেসের কিছুই অবশিষ্ট নেই, জমিটা শুধু আছে। একটা নতুন প্রেস করতে যে টাকা প্রয়োজন সে অর্থ আমার নেই। আমরা যারা আমার দেশের পরিচালক তারা সবাই সীমিত অর্থের মালিক। আমরা কোনো কর্পোরেট মিডিয়া না, কোনো দলীয় মিডিয়া না। আমরা কষ্ট করে এটা চালাতাম। এ পত্রিকা চালাব, লেখালেখি করব এটাই আমার ইচ্ছা।
মাহমুদুর রহমান বলেন, দুদিন আগে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা তালা ভেঙে ‘আমার দেশ’ প্রেস আমাদের বুঝিয়ে দেন। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই, প্রেসের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। এমনকি ইলেকট্রিক প্যানেল পর্যন্ত খুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র দুটি মেশিনের খণ্ডাংশ পড়ে আছে, যেগুলো ভাঙা সম্ভব না বলে চুরি করে নিয়ে যেতে পারেনি। এগুলো যে টুকরো-টুকরো করে কেটে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার কিছু প্রমাণ প্রেসের মধ্যে পড়ে ছিল। দেখে মনে হয়েছে শেখ হাসিনা আমাকে টুকরো করতে না পেরে ‘আমার দেশ’ পত্রিকার প্রেস টুকরো টুকরো করেছে। এটাই ফ্যাসিবাদের চরিত্র। আমাদের জন্য ইতিবাচক যে সরকারি প্রতিনিধি অর্থাৎ একজন ম্যাজিস্ট্রেট এবং দুজন ওসি প্রেসের অবস্থা দেখেছেন। একজন ওসি গণমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেছেন, এ প্রেসের আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই।
তিনি আরও বলেন, যেদিন আমরা ‘আমার দেশ’ পত্রিকার কম্পিউটার ও অন্যান্য জিনিসপত্র অন্যত্র স্থানান্তর করতে চেয়েছিলাম, সেদিন আমাদের অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেদিন আমি জেলখানায় আটক ছিলাম। জেলখানায় আমাকে একজন খবর দিয়েছিল, আল্লাহর রহমতে তিনি এখনো জেলখানায় জীবিত আছেন। তিনি তখন জামায়াতে ইসলামের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন, আজহার ভাই। আমি শুধু তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আমার কোনো সহকর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কি না? আল্লাহর রহমতে আমার কোনো সহকর্মীর কিছুই হয়নি। সবাই নিরাপদে ছিলেন। ওই মুহূর্তে এটাই আমার জন্য স্বস্তির সংবাদ ছিল।
দেশের মিডিয়া বিগত ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের দোসরের কাজ করেছে বলে মন্তব্য করে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক বলেন, ‘হাসিনার ফ্যাসিবাদ যে এত ভয়ংকর হয়ে ওঠেছিল, তার পেছনে যেমন পুলিশ, আমলা, ব্যবসায়ী, সেনাবাহিনীর ভূমিকা ছিল, তার সঙ্গে মিডিয়ারও ভূমিকা ছিল। মিডিয়া ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের দোসরের কাজ করেছে। সংবাদ সম্মেলনের নামে নির্লজ্জ তেলবাজির প্রতিযোগিতা আমরা দেখেছি। সাংবাদিক হিসেবে আপনাদের ছোট হয়ে যাওয়ার কথা। এতটা ছোট হতে পারে আপনাদের সম্পাদকেরা। আমার তো বিদেশে বসেই লজ্জা লাগতো।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রেসের যন্ত্রাংশের ক্ষতি হয়েছে ২৫ কোটি এবং কাগজের ক্ষতি হয়েছে ১০ কোটি টাকার। সব মিলিয়ে অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি রাষ্ট্রের কাছে এ ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করবো।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
মিডিয়া কমিশনে থাকবেন মফস্বল প্রতিনিধি
মিডিয়া কমিশনে মফস্বলের প্রতিনিধি থাকবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, এখনো মিডিয়া সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়নি। তবে অচিরেই এটি গঠিত হবে। যেখানে ঢাকা থেকে শুরু করে বিশেষ করে মফস্বল সাংবাদিকদের প্রতিনিধিত্ব থাকবে। কারণ অনেক কষ্ট করে মফস্বল সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ সারাদেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেন।
প্রেস সচিব বলেন, মফস্বলের সাংবাদিকদের সম্মানীসহ নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয়ে প্রয়োজনীয় বক্তব্য তুলে ধরার জন্যে মিডিয়া কমিশনে মফস্বলের সাংবাদিকদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি সম্পৃক্ত করা হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মাগুরায় পূজা মণ্ডপ পরিদর্শনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এবারের দূর্গাপূজায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে সারাদেশে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দু’একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে ব্যবস্থা নিয়ে ইতোমধ্যে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই মুসলিমরা যেভাবে ঈদ উৎসব পালন করে, একইভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের এই উৎসবকে পালন করুক। সেক্ষেত্রে যত ধরনের নিরাপত্তা দরকার সে ব্যবস্থা জেলায় জেলায় নেওয়া হয়েছে।
এ সময় মাগুরা জেলা প্রশাসক অহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কলিমুল্লাহ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদেও সভাপতি বাসুদেব কুণ্ডুসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাশের দাবি
তামাক ব্যবহারজনিত রোগে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রাণ হারাচ্ছেন প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার জন মানুষ। এই বিপুল সংখ্যক প্রাণহানি এড়াতে এবং প্রাণঘাতী নেশাদ্রব্যের হাত থেকে জনস্বাস্থ্য রক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
বুধবার সকাল ১১ টায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে বেসরকারি নারী উন্নয়ন সংস্থা নারী মৈত্রীর আয়োজনে ‘তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে সাংবাদিকদের নিকট প্রত্যাশা ও করণীয়’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় দাবি জানান সাংবাদিকরা।
নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক, অনকোলজিস্ট এবং প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, লীড পলিসি অ্যাডভাইজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এবং বাংলাদেশ এবং প্রাক্তন চেয়ারম্যান, বিসিআইসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাশেদ রাব্বি, সভাপতি, হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম। শামীম মেহেদী, চীফ এক্সিকিউটিভ অফিসার, গ্লোবাল টিভি, প্রথম আলোর যুগ্ম–সম্পাদক সোহরাব হাসান, শাহনাজ বেগম পলি— ব্যবস্থাপনা কমিটি সদস্য, জাতীয় প্রেস ক্লাব এবং জুলহাস আলম, ঢাকা ব্যুরো প্রধান, নিউইয়র্কভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা—অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)।
এছাড়াও আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সুশান্ত কে সিনহা, স্পেশাল করস্পনডেন্স,৭১ টিভি। মো. আব্দুস সালাম মিয়া, প্রোগ্রাম ম্যানেজারস, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ এবং হুমায়রা সুলতানা, কমিউনিকেশনস ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশ।
তামাক কোম্পানিগুলো নানামুখী অপ-কৌশলে বিভ্রান্ত না হওয়ার কথা জানান সুশান্ত কে সিনহা, তিনি বলেন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধিকতর সংশোধনী আনার যে উদ্যোগ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়েছে তা নিঃসন্দেহে একটি সময়োচিত এবং জনবান্ধব উদ্যোগ। তবে বেশ কিছু ধাপ পার হলেও আইনটিকে চূড়ান্ত রূপ পেতে হলে আরো কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। এখনো এটি পাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এটিকে আইনে রূপান্তরের পথে নানা রকম বাধা আসার আশঙ্কা রয়েছে, বিশেষ করে সংশোধনীর বিপক্ষে তামাক কোম্পানিগুলো নানামুখী অপকৌশল ও অপ-তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা নানা রকম বিভ্রান্তিমূলক তথ্য মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচার করে জন বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এক্ষেত্রে আমাদের সাংবাদিক বন্ধুদেরকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।
রাশেদ রাব্বি বলেন, ‘তামাক থেকে সরকারের যে রাজস্ব আয় আসে তার চেয়ে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা বাবদ ব্যয় ৩৪ শতাংশ বেশি। রাজস্ব আয় প্রায় ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা এবং চিকিৎসা ব্যয় প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। তামাকের কারণে বার্ষিক ক্ষতি প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা (ক্যান্সার সার্ভে-২০১৮)। সুতরাং মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর করার পাশাপাশি প্রয়োজন তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করা।’
আর একটি প্রাণও যাতে না হারাতে হয় তামাকের কারণে সে প্রেক্ষাপটে সোহরাব হাসান বলেন, ‘প্রতিদিন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন এই ভয়ংকর তামাকের আগ্রাসনে। তামাকের এই সর্বগ্রাসী আগ্রাসন ও তামাক মহামারি আমাদের জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। আমাদের তামাকের ভয়াবহতা সম্পর্কে আরও সোচ্চার হতে হবে ।পাশাপাশি তামাক কোম্পানির গুলোর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে।’
শামীম মেহেদী বলেন, ‘তরুণরা ই-সিগারেটের প্রতি বেশি আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাদের এই আসক্তি থেকে বের করে আনতে ই-সিগারেট বাজারজাত বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি।’
মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘তামাক একটি প্রাণঘাতী দ্রব্য। তামাকের পক্ষে বলার মতো একটি শব্দও নেই। তামাক পরিবেশ, অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। টোব্যাকো এটলাস ২০১৮- এর তথ্য মতে তামাক ব্যবহারজনিত রোগে প্রতিবছর বাংলাদেশে ১ লক্ষ ৬১ হাজার মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মানে প্রতিদিন ৪৪২ জন মানুষ প্রাণ হারান । জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষায় ও জীবন রক্ষায় দ্রুততম সময়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে হবে এখনই। আইন শক্তিশালী করবার এই পদক্ষেপ বেগবান করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন আমাদের গণমাধ্যমের বন্ধুগণ,যাদের সবচেয়ে বড় শক্তি তাদের লেখনী ও গণমাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের কাছে পৌঁছানোর কৌশল”
বিশেষজ্ঞ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড: গোলাম মহিউদ্দীন ফারুক বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের কারণে মৃত্যুর প্রায় এক-তৃতীয়াংশের জন্য দায়ী তামাক। তামাকের কারণে ফুসফুস ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াসের ক্যান্সার, মুখগহ্বরের ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় তামাক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। বাংলাদেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক অন টোব্যাকো কন্ট্রোল—এফসিটিসি’তে স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশ হলেও ধুমপানমুক্ত পরিবেশ এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রণোদনা নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে এখনও সর্বোত্তম মান অর্জন করতে পারেনি। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশ এবং শক্তিশালী করা অতি জরুরি। যা তামাকমুক্ত সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবে।
সভাপতির বক্তব্যে শাহীন আকতার ডলি বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন, বিশেষ করে নারী ও শিশুরা। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, গর্ভপাত এবং সন্তান জন্মদানে মা ও শিশু উভয়ই মৃত্যুর মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নারী ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাসের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।’
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
গণমাধ্যম
সাংবাদিকের ওপর হামলা, স্টার কাবাবের ১১ স্টাফ গ্রেফতার
রাজধানীর স্টার কাবাবে কাচ্চি বিরিয়ানির সঙ্গে পচা ও গন্ধযুক্ত টিক্কা দেয়ার প্রতিবাদ করায় সাংবাদিক সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক নামে এক গ্রাহককে মারধর করা হয়েছে। এ অভিযোগে হোটেলটির ম্যানেজারসহ ১১ কর্মীকে গ্রেফতার করেছে বনানী থানা পুলিশ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার।
রাসেল সারোয়ার বলেন, রোববার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বনানীর স্টার কাবাব থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, স্টার কাবাবে সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক নামে একব্যক্তির ওপর হামলার ঘটনায় একটি মামলাও করা হয়েছে। মামলার পর ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সবার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আরও চার থেকে পাঁচ জনের নামে মামলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আরও কেউ জড়িত থাকলে, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে ভুক্তভোগী সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক বলেন, রোববার দুপুরে বন্ধুর সাথে বনানীর স্টার কাবাবে খেতে গিয়েছিলাম। এ সময় কাচ্চির সঙ্গে পচা ও গন্ধযুক্ত টিক্কা দেয়া হয়। পরে বিষয়টি নিয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। আমার বন্ধুও খাবারে গন্ধ হওয়ার অভিযোগ করলে, স্টার কাবাবের ম্যানেজার তাকে বলেন, জীবনে টিক্কা খাননি আপনি। এটা এমনই হয়।
তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে আশপাশের আরও তিন গ্রাহক একই অভিযোগ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কলবেল চেপে সব স্টাফকে জড়ো করেন ম্যানেজার। এ সময় স্টার কাবাবের ১৪ থেকে ১৫ জন মিলে বেধড়ক মারধর করেন আমাকে। এতে মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
উল্লেখ্য, সালেহ মোহাম্মদ রশীদ অলক ‘পলিটিক্যাল নিউজ ২৪’ নামের একটি অনলাইন পোর্টালের নির্বাহী সম্পাদক।
এমআই