জাতীয়
সেবার মান উন্নত করতে বিটিসিএলের নতুন সিদ্ধান্ত

সারা দেশে শহরাঞ্চল থেকে মাঠপর্যায় পর্যন্ত গ্রাহকদের উন্নত সেবা সরবরাহ করতে ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’ গঠন করেছে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)। এর আওতায় গ্রাহকরা ইন্টারনেট সংক্রান্ত বিষয়ে সার্বক্ষণিক সেবা নিতে পারবেন। এই টিমের সদস্যরা সপ্তাহে ৭ দিন এবং ২৪ ঘণ্টা যেকোন প্রয়োজনে সাড়া দেবে।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিটিসিএলের ওয়েব সাইটে এলাকাভিত্তিক র্যাপিড রেসপন্স টিমের সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, গ্রাহকদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য বিটিসিএল এই র্যাপিড রেসপন্স টিম ও ২৪/৭ সেবা চালু করা করেছে। এছাড়া সংস্থাটির উন্নততর নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টারের (এনওসি) মাধ্যমে গ্রাহকসেবা কার্যক্রমকে আরও দ্রুততর করা হচ্ছে বলেও জানানো হয়। ‘র্যাপিড রেসপন্স টিম’ কে সাজানো হয়েছে সারা দেশকে সাতটি অঞ্চলে বিভক্ত করে। যেখানে ২১ জন কর্মকর্তাকে এই টিমের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এলাকাভিত্তিক র্যাপিড রেসপন্স টিমের ১ নম্বরে রয়েছে- ঢাকা মেট্রোপলিটনের উত্তর অংশ। এতে বনানী, গুলশান, উত্তরাসহ সংলগ্ন এলাকা- গাজীপুর, নরসিংদী, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ এবং নেত্রকোণা এলাকা রয়েছে।
দুই নম্বরে আছে ঢাকা মেট্রোপলিটনের দক্ষিণ অংশ। এর আওতায় নিউমার্কেট, নীলক্ষেত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা, সচিবালয়, রমনা, পুরান ঢাকাসহ সংলগ্ন এলাকা- জিঞ্জিরা, কেরানীগঞ্জ, কলাতিয়া, দোহার, নবাবগঞ্জ, কামরাঙ্গীর চর এলাকা রয়েছে।
তিনি নম্বরে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটনের পূর্ব অংশ। এর আওতায় মগবাজার, খিলগাঁও, বনশ্রী, রামপুরা, গেন্ডারিয়াসহ সংলগ্ন এলাকা- নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ এলাকা রয়েছে।
চার নম্বরে রয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটনের পশ্চিম অংশ। এর আওতায় শেরে বাংলা নগর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুরসহ সংলগ্ন এলাকা, সাভার, মানিকগঞ্জ এলাকা রয়েছে।
পাঁচ নম্বরে রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাসমূহ, ছয় নম্বরে রয়েছে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের জেলাসমূহ এবং সাত নম্বরে রয়েছে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের জেলাসমূহ।
এ বিষয়ে র্যাপিড রেসপন্স টিমের বিটিসিএলের রমনা বিভাগের ডিজিএম (সুইচ) এ এম আব্দুল্লাহ পাটওয়ারী বলেন, গ্রাহক সেবা উন্নত এবং আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলকে সাতটি ভাগে বিভক্ত করে ২১ জন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ টিম গ্রাহকদের যে কোনো প্রকার অভিযোগ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমাধান করার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করবে।
অর্থসংবাদ/এমআই

জাতীয়
ছেলে হত্যার বিচার এখনো পাইনি: আবরার ফাহাদের বাবা

ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণ বিচার এখনো হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা বরকত উল্লাহ।
শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত জাতীয় সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বরকত উল্লাহ বলেন, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আমার ছেলে আবরার ফাহাদকে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে রাতভর নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। তার একমাত্র অপরাধ ছিল– সে দেশের পক্ষে কথা বলেছিল। ভারতীয় আধিপত্য, আগ্রাসন এবং তৎকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের কিছু অবৈধ চুক্তির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিল।
তিনি বলেন, আবরার লিখেছিল– ভারত গোপন চুক্তিতে ফেনী নদীর পানি নিচ্ছে, আমরা ইলিশ পাচ্ছি না, অথচ আমাদের ইলিশ কম দামে ভারতে পাঠানো হচ্ছে। এ কথা বলার অপরাধেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনার সরকার সেসময় একতরফা নীতিতে বৈষম্য তৈরি করেছিল।
বরকত উল্লাহ বলেন, আজ ছয় বছর পেরিয়ে গেছে, আমি এখনো ছেলের হত্যার বিচার পাইনি। আমি ন্যায়বিচার চাই– এটাই একজন বাবার আহ্বান।
আবরারের বাবা আরও বলেন, এখনো দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে র্যাগিং হয়। এখন তো ড. ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার এসেছে, তাহলে কেন এসব বন্ধ হবে না?
তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই-আগস্টে যেসব তরুণ শহীদ হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার তাদের তালিকা করেছে, এটা ভালো। কিন্তু ছাত্রলীগের হাতে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে যারা মারা গেছে, তাদের কোনো তালিকা নেই। আমি অনুরোধ করব– এ ধরনের মৃত্যুরও একটি রাষ্ট্রীয় তালিকা তৈরি হোক।
বরকত উল্লাহর কথায় উঠে আসে দীর্ঘদিনের চাপা ক্ষোভ ও অসহায়ত্ব। তিনি বলেন, আমার ছেলে নিজের দেশকে ভালোবেসেছিল, সেটাই ছিল তার অপরাধ। আমি বারবার বিচার চাইছি, এখনো সেই প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ। আমি দেশের বিবেকবান মানুষদের কাছে অনুরোধ জানাই– আবরারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করুন।
জাতীয়
মানবাধিকার সুরক্ষা-উন্নয়নে সহায়তা দিতেই মানবাধিকার মিশন: প্রেস উইং

বাংলাদেশ সরকার ও জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) মধ্যে মানবাধিকার মিশন স্থাপন–সংক্রান্ত তিন বছরের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়েছে। মিশনের লক্ষ্য হবে, দেশে মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে সহায়তা দেওয়া।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে আজ শনিবার দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি সংগঠনগুলোকে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়াই হবে মানবাধিকার মিশনের মূল উদ্দেশ্য।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার–সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা পূরণে এ দেশকে সহায়তা করাই এ উদ্যোগের লক্ষ্য। আর সে জন্য দক্ষতা, আইনগত সহায়তা ও প্রতিষ্ঠানগত সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে মিশন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা ও সংস্কারের প্রতি সরকারের প্রতিশ্রুতি থেকেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার প্রেক্ষাপটে জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করা ও সংস্কারের অব্যাহত প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন হিসেবেই সরকার এ উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা জানি, জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেশে কিছু গোষ্ঠী উদ্বেগ জানিয়েছে। কারণ, দেশের সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সংস্কৃতি ও দৃঢ় ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেকোনো আন্তর্জাতিক অংশীদারত্বকে এ মূল্যবোধগুলোর প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে বলে মত দিয়েছেন নাগরিকেরাও।
সেই প্রেক্ষাপটে ওএইচসিএইচআর মিশন শুধু গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করায় জোর দেবে; বিশেষ করে পূর্ববর্তী সরকারের আমলে সংঘটিত অপরাধের বিষয়ে। এ মিশন দেশের আইনি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কাঠামোর বাইরে কোনো সামাজিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আশা করি, মিশন সব সময় স্বচ্ছতা বজায় রাখবে এবং স্থানীয় অংশীজনদের নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করবে। জাতিসংঘ বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ধর্মীয় বাস্তবতাকে পুরোপুরি সম্মান জানিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সরকার স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছে, জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে সার্বভৌম কর্তৃত্ব অনুযায়ী যেকোনো সময় এ চুক্তি থেকে সরে আসতে পারবে বাংলাদেশ।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, যদি পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এমন একটি কার্যালয় থাকত, তবে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও প্রকাশ্যে গণহত্যার মতো অনেক অপরাধ সঠিকভাবে তদন্ত ও নথিভুক্ত করা এবং বিচারের আওতায় আনা যেত।
শেষে বলা হয়, মানবাধিকারের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার আদর্শে নয়, ন্যায়ের ভিত্তিতে হতে হবে।
বাংলাদেশ সরকার এ অংশীদারত্বকে একটি সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করছে। এর মাধ্যমে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো শক্তিশালী হবে এবং আইনের শাসন ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় সক্ষমতা বাড়বে। এটি আমাদের মূল্যবোধ, আইন ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার ভিত্তিতে পরিচালিত হবে।
জাতীয়
প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত সময়েই নির্বাচন হবে: প্রেস সচিব

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আপনারা নিশ্চিত থাকুন, চিফ অ্যাডভাইজর (প্রধান উপদেষ্টা) যেদিন নির্বাচনের কথা বলেছেন, সেদিনই নির্বাচন হবে।
শনিবার (১৯ জুলাই) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আয়োজিত ‘টেডএক্স কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ ইভেন্টে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির ময়নামতি অডিটোরিয়ামে এই আয়োজন করা হয়।
শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচন নিয়ে কোন ধরনের অনিশ্চয়তা নেই। নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল অথবা কোন প্রতিদ্বন্দ্বীর কোন ধরনের আপত্তি থাকবে না এমন পরিবেশ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রেস সচিব বলেন, একদিন পেছানো হবে না। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন হবে। এই যে গোল্ডেন জেনারেশন হাসিনার মতো ডিক্টেটরকে হটাতে পেরেছে তারা দেশকে এক অনন্য পর্যায়ে নিয়ে যাবে। দেশকে তারা মেরামত করতে পারবে।
জুলাই সনদ নিয়ে প্রেস সচিব বলেন, আমরা অন্যান্য দেশের দিকে যদি দেখি, তাহলে বুঝবো আসলে এসব বিষয়ে অনেক সময় লেগে যায়। কিন্তু আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো বারবার এটা নিয়ে বসছে, আলোচনা করছে ৷ আশা করি শীঘ্রই জুলাই সনদ আসবে।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ছাড়াও আয়োজনে লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী ও উদৌক্তাসহ আরও ১০ জন বক্তা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয়
মানবিক না হলে দেশের উন্নতি সম্ভব না: সেনাপ্রধান

বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিতে শৃঙ্খলা ও মানবিক মূল্যবোধের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, মানবিক ও ভালো মানুষ না হলে দেশের উন্নতি সম্ভব না।
শনিবার (১৯ জুলাই) মিরপুর সেনানিবাসে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে (এমআইএসটি)- ‘মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড সাইন্স’ বিষয়ক তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সেনাপ্রধান।
তিনি বলেন, শৃঙ্খলা মেনে চললে দেশই লাভবান হবে। উন্নয়নের জন্য প্রকৌশল শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। এসময় পাঁচটি ক্যাটাগরিতে পাঁচজনকে পুরস্কার দেন তিনি।
তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য শক্তি, উৎপাদন কৌশল, তাপ প্রকৌশল ও মহাকাশ গবেষণাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, চীন, জাপান ও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের খ্যাতনামা গবেষক ও পেশাজীবীরা অংশ নেন।
জাতীয়
জামায়াতের সমাবেশের নিরাপত্তায় ১২ হাজার পুলিশ, রয়েছে র্যাব-ডিবিও

রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আজ শনিবার জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশ। ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে দলে দলে আসতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। দলটির আশা করছে, জাতীয় সমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি মানুষের সমাগম ঘটবে।
সমাবেশকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে মূল নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ।
ডিএমপি জানায়, ঢাকায় অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশ সদস্যসহ প্রায় ১২ হাজারের বেশি পুলিশ সদস্য নিরাপত্তায় যুক্ত রয়েছেন। ইউনিফর্ম পরা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি করছেন ডিবির সদস্যরা। ১২ হাজার পুলিশ ছাড়াও আরও কয়েক হাজার র্যাব সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও জামায়াতের ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন।
পুলিশ বলছে, সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল যেন কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পারে সেজন্য সজাগ রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে পুলিশের। কন্ট্রোল রুম থেকে সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং চলছে। সব মিলিয়ে নিরাপত্তার কোনো ঘাটতি নেই।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, রমনা বিভাগের পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য ইউনিফর্ম ও সিভিল ড্রেসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন্দ্রিক সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। এর বাইরে সারাদেশ থেকে যেসব গাড়ি আসবে সুনির্দিষ্ট করে পার্কিংয়ের জন্য ট্রাফিক পুলিশ কাজ করছে। রমনা এলাকায় যেন কোনো গাড়ি প্রবেশ না করে এজন্য সব জেলার জন্য রুট নিদিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
পুরো ঢাকার সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, জামায়াতের জাতীয় সমাবেশ ঘিরে ঢাকায় পর্যাপ্ত নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কোথাও যেন কোনো বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি না হয় সেজন্য ঢাকার সব জায়গায় পুলিশ রয়েছে।
সমগ্র ঢাকায় কত হাজার পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত চার হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এর বাইরেও থানা-ফাঁড়িতে রয়েছে আরও আট হাজার পুলিশ। সবমিলিয়ে ১২ হাজার পুলিশ মোতায়েন রয়েছে নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য। এছাড়া ডিএমপির আটটি ট্রাফিক বিভাগ সড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সদস্যরাও মোতায়েন রয়েছে।
র্যাবের নিরাপত্তার ব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে এলিট ফোর্সটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক উইং কমান্ডার এম জেড এম ইন্তেখাব চৌধুরী বলেন, সমাবেশস্থলের চতুর্দিকে র্যাবের পেট্রোল ডেপ্লয় করা হয়েছে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার স্বার্থে অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। এছাড়া র্যাবের অতিরিক্ত জনবল কাজ করছে। যদি কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় র্যাব নিয়ন্ত্রণ করতে সমর্থ হবে। গুরুত্বপূর্ণ স্পটে পর্যাপ্ত সংখ্যক র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
র্যাবের গোয়েন্দা কার্যক্রম আরও বেশ কিছুদিন আগে থেকেই শুরু হয়েছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও। মাঠের ভেতরে ও বাইরে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে স্থাপন করা হয়েছে একাধিক মনিটরিং সেল। দলে ছয় হাজারের মতো স্বেচ্ছাসেবক আটটি বিভাগের আওতায় কাজ করছে।
যাতায়াত ব্যবস্থাপনায় ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন জামায়াত নেতারা। ঢাকার বাইরের বাসগুলোর ড্রপিং পয়েন্ট নিয়ে নির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানান, সমাবেশস্থলে ২০টি পয়েন্টে প্রায় ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। ঢাকার বাইরে থেকে যারা আসবেন, তাদের জন্য কমপক্ষে ১৫টি পার্কিং পয়েন্ট রাখা হয়েছে। সারাদেশ থেকে রাজধানীতে মানুষের ঢল নামবে আজ।
জানানো হয়েছে, সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি সমাবেশে একটি ‘ঐক্যের ডাক’ এবং কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাতে পারেন। আসতে পারে নির্বাচনকেন্দ্রিক বার্তাও।