সারাদেশ
রাজবাড়ী থেকে ভারতে গেল ওরশ স্পেশাল ট্রেন

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জোড়া মসজিদে ১২৩তম পবিত্র ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে আজ বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টা ২ মিনিটে রাজবাড়ী রেলস্টেশন থেকে আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া রাজবাড়ীর উদ্যোগে ২৪টি বগিতে ২ হাজার ২৫৬ জন ওরশ যাত্রী নিয়ে স্পেশাল ট্রেন ভারতের মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
এ সময় ট্রেন যাত্রীদের বিদায় জানান রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাজী কেরামত আলী। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ, পৌর মেয়র আলমগীর শেখ তিতু, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসা, সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. ইফতেখারুল আলম প্রধান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী সোহরাবসহ জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এ সময় মোনাজাত করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন আলহাজ্ব হাফেজ মওলানা মো. শাজাহান।
এদিকে, ২৪টি কোচের বিশাল ট্রেনটি রাজবাড়ী রেলস্টেশনে প্রায় সারা দিন অবস্থান করে। আয়োজকদের পক্ষ থেকে সাজানো হয় ইঞ্জিনসহ ট্রেনটির সকল বগি। ট্রেনটি দেখতে এবং যাত্রীদের বিদায় জানাতে দূরদূরান্ত থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থীর আগমন ঘটে। দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে ট্রেনটি রাজবাড়ী রেলস্টেশন এলাকায় আসে। এরপর ট্রেনটিকে আরও সাজানো হয়। এরপর বিকেলে ট্রেনটি রাজবাড়ী রেলস্টেশনের ২নং প্ল্যাটফর্মে আনা হয়। ট্রেনটিকে এক নজর দেখতে বিকেল থেকেই রাজবাড়ী রেলস্টেশন এলাকায় সর্বস্তরের মানুষ ভিড় করতে থাকে। কেউ কেউ তাদের পরিবারের লোকজন ও আত্মীয়স্বজনকে বিদায় দিতে আসতে দেখা যায়। এ সময় তাদের একে অপরের থেকে দোয়া নিতে দেখা যায়।
জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ৩২তম ও বড় পীর গাউসুল আযম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (আ.) এর ১৯তম অধস্তন পবিত্র বংশধর আলী আব্দুল কাদের সামশুল কাদের হযরত সৈয়দ শাহ মোর্শেদ আলী আল কাদেরী আল হাসানী আল হুসাইনী আল বাগদাদী আল মেদিনীপুরী (আ.) মশহুর নাম ‘মওলাপাক’ এর ১২৩তম বার্ষিক পবিত্র ওরশ শরীফ আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) দিবাগত রাতে মেদিনীপুর জোড়া মসজিদে উদযাপিত হবে।
উক্ত পবিত্র ওরশ শরীফ পরিচালনা করবেন রাসুলে পাক (সা.) এর ৩৬তম ও বড় পীর গাউস-উল-আযম হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (আ.) পাক এর ২৩তম অধস্তন আওলাদ পাক জিল্লেইলাহী, বেলায়েতের রবি, গাউসে জামান লাখো ভক্তের আকা ও কেবলা কাদেরীয়া তরীকার ‘সাজ্জাদানশীন হুজুরপাক হযরত সৈয়দ শাহ্ ইয়া’সুব আলী আল কাদেরী’ আল হাসানী আল হুসাইনী আল বাগদাদী আল মেদিনীপুরী মাদ্দাজিল্লুহুল আলী।
রাজবাড়ীর আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়ার সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ কাদেরী খোকন বলেন, ১২৩তম বার্ষিক পবিত্র ওরশ শরীফ উপলক্ষ্যে আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া বাংলাদেশের উদ্যোগে ২৪টি বগি সম্বলিত মেদিনীপুর ওরশ স্পেশাল ট্রেনে ১৩১৮ জন পুরুষ, ৮৫৩ জন নারী, ৮৫ জন শিশুসহ (বালক-৫৫ বালিকা-৩০) মোট ২২৫৬ জন ওরশ যাত্রী নিয়ে আজ রাত ১০টা ২ মিনিটে ট্রেন লিডার আলহাজ্ব মো. মাহবুব-উল-আলম দুলালের নেতৃত্বে রাজবাড়ী রেলওয়ে স্টেশন হতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। আগামী ১৭ তারিখ মেদিনীপুরের জোড়া মসজিদে ওরশ অনুষ্ঠিত হবে। পবিত্র ওরশ শরীফ শেষে আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি ওরশ স্পেশাল ট্রেনটি আবার রাজবাড়ী ফিরে আসবে।
তিনি আরও বলেন, শত বছরেরও বেশি সময় ধরে ধর্মীয় এই ওরশ উৎসবকে নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী আন্তর্জাতিক এই ট্রেনটি দুটি দেশের সেতুবন্ধন এবং সব ধর্মের প্রতি একে অপরের সমান শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে।
রাজবাড়ী রেলওয়ে জিআরপি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোমনাথ বসু জানান, আজ বুধবার দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে রাজবাড়ী রেলস্টেশনে ট্রেনটি আসে। সারা দিন ট্রেনটিকে সাজানোর পর রাত ১০টা ২ মিনিটে ছেড়ে যায়। রাজবাড়ী থেকে দর্শনা পর্যন্ত জিআরপি পুলিশ টিম স্পেশাল গার্ডে নিয়োজিত থাকবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথভাবে ১৯০২ সাল থেকে এই ওরশ স্পেশাল ট্রেনটি চলাচলের ব্যবস্থা করে আসছে। তবে করোনা অতিমারির কারণে ২০২১ ও ২০২২ সালে ওরশ স্পেশাল ট্রেন যায়নি। ভারতের মেদিনীপুরের সঙ্গে মিল রেখে রাজবাড়ীর বড় মসজিদে নানা আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে।

সারাদেশ
টানা বৃষ্টিতে ২১ জেলায় ৭২ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে

গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীসহ সারাদেশে ২১ জেলায় ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) রাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যের ভিত্তিতে কৃষি মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তা এবং উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের অনেক জায়গায় অস্থায়ী জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
ফসলহানির শিকার জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে: কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, খাগড়াছড়ি, পাবনা, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালি, বরগুনা, ভোলা ও শরীয়তপুর।
ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে: আউশ: ৪৪ হাজার ৬৬২ হেক্টর, আমন বীজতলা: ১৪ হাজার ৩৯৩ হেক্টর, শাকসবজি: ৯ হাজার ৬৭৩ হেক্টর, বোনা আমন: ২৯৭ হেক্টর, পাট, কলা, পেঁপে, পান, মরিচ ও গ্রীষ্মকালীন তরমুজ: প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে।
জেলা অনুযায়ী ক্ষতির চিত্র: কুমিল্লা: ১১ হাজার ৫৯০ হেক্টর, নোয়াখালী: ৭ হাজার ৮০৬ হেক্টর, ফেনী: ১ হাজার ৬৫৫ হেক্টর।
তবে বৃষ্টিপাত কমে আসায় জমিতে জমে থাকা পানির পরিমাণও কমছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ ৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে। এছাড়া গোপালগঞ্জে ৮০, রাজশাহীর বাঘাবাড়িতে ৭৩ এবং আরিচায় ৭১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করা লঘুচাপটি দুর্বল হয়ে মৌসুমি বায়ুর অক্ষের সঙ্গে মিশে গেছে। এতে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমছে এবং শুক্রবার থেকে আরও কমে আসবে।
তবে শুক্রবারও ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহে কিছু কিছু জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে, উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কা না থাকায় চারটি সমুদ্রবন্দরকে সতর্কতা সংকেত নামিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সারাদেশ
গোমতী নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে, কুমিল্লায় বন্যার শঙ্কা

টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হু হু করে বাড়ছে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। ফলে জেলার কয়েকটি উপজেলায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বুধবার (৯ জুলাই) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে গোমতী নদীর পানি ৮ দশমিক ৫৬ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। যা বিপৎসীমার ৩ মিটার নিচে। গোমতী নদীর বিপৎসীমা ১১ দশমিক ৩ সেন্টিমিটার।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, আকস্মিক ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে গত ২৪ ঘণ্টায় গোমতীর পানি ৫ মিটারের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। কুমিল্লা অঞ্চলের পাশাপাশি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যেও ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ওই রাজ্যের পানি গোমতী দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুমিল্লা অংশের দিকে নামছে।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান জানান, টানা ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে গোমতী নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃষ্টি থেমে গেলে এবং উজানের ঢল বন্ধ হলে বিপদ কাটতে পারে। নতুবা বন্যার শঙ্কা রয়ে যাবে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অপরদিকে কুমিল্লা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল ৩টা থেকে আজ বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১২৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। একটি ভারী বর্ষণের সংকেত রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।
কুমিল্লা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আরিফ জানান, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। সাগরে একটি লঘুচাপ আছে, তবে সেটি অনেক দূরে ভারতের অংশে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের জন্য আবহাওয়ার একই পূর্বাভাস রয়েছে।
এদিকে গোমতীর পানি বৃদ্ধির ফলে বন্যার আগাম প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, জেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে বন্যার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। আমাদের ৫৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও জিআর চাল মজুত আছে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
সারাদেশ
ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন, ৩০ গ্রাম প্লাবিত

ফেনীতে ভারী বৃষ্টিপাত ও ভারতের উজানের পানিতে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থান ভেঙে ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলার লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। এতে অন্তত ৩০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, ভোগান্তিতে পড়েছে হাজারো মানুষ। এছাড়া রাস্তা-ঘাট ডুবে যাওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পরশুরাম উপজেলা।
পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরাম উপজেলার জঙ্গলঘোনায় দুইটি, অলকায় তিনটি, শালধর এলাকায় একটি ও ফুলগাজী উপজেলার উত্তর শ্রীপুর এলাকায় একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সিলোনিয়া নদীর পরশুরামের গদানগর এলাকায় একটি ও ফুলগাজীর দেড়পড়া এলাকার দুইটি স্থানে ভেঙেছে। এছাড়া কহুয়া নদীর পরশুরাম উপজেলার সাতকুচিয়ায় দুইটি, বেড়াবাড়িয়ায় একটি ও ফুলগাজী উপজেলার দৌলতপুর এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের একটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পরশুরামের মধ্যম ধনীকুন্ডা এলাকার বাসিন্দা নাহিদা সুলতানা বলেন, সন্ধ্যার পর ঘরে পানি ঢুকতে শুরু করে। কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ছাদে আশ্রয় নিয়েছি। গেলো বছরের বন্যাতেও সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে। বছর না ঘুরতে আবার আমাদের স্বপ্ন পানিতে ডুবছে।
মির্জানগর ইউনিয়নের পূর্ব রাঙামাটিয়া এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে বল্লামুখা বাঁধের প্রবেশ মুখটি বন্ধ করা হয়নি। সময়মতো বাঁধের এ স্থানটি বন্ধ করা হলে পানি প্রবেশের সুযোগ ছিল না। প্রতিবছরই কিছু মানুষের দায়সারা কাজের কারণে বড় একটি জনগোষ্ঠীকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান বলেন, মাঠপর্যায়ে থেকে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। মানুষজন এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে না। বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙনের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহরিয়া ইসলাম বলেন, উপজেলায় তিনটি নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের চারটি স্থানে ভাঙনের তথ্য পেয়েছি। এরইমধ্যে শতাধিক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছে। তাদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বুধবার (৯ জুলাই) উপজেলার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
ফেনী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান বলেন, জেলায় টানা দুই দিন ধরে মাঝারি ও ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা বিগত কয়েক বছরে সর্বোচ্চ। বুধ ও বৃহস্পতিবারও জেলাজুড়ে মাঝারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল কাশেম বলেন, নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও বাঁধ ভাঙনের শঙ্কা রয়েছে।
অপরদিকে টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের উজানের পানিতে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে দুই উপজেলায় মোট ১৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুর্গতদের জন্য শুকনো খাবার ও রান্না করা খাবারের জন্য সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ফুলগাজী উপজেলায় ৩২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৬৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরশুরাম উপজেলায় ৩২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখায় ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, ফুলগাজী ও পরশুরাম উপজেলায় ৪০০ করে মোট ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি দুর্গতদের মাঝে রান্না করা খাবার সরবরাহের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সারাদেশ
আজ ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলার ডিএনডি খাল খনন প্রকল্পের আওতায় ঢাকা অংশের ৯ টি খালে বিদ্যমান গ্যাস পাইপলাইন স্থানান্তর কাজের জন্য আজ (সোমবার) ঢাকার বিভিন্ন স্থানে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
রবিবার (৬ জুলাই) এক বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
বার্তায় বলা হয়, সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত মোট ১১ ঘণ্টা টেংরা, বাহির টেংরা, হাজীনগর, আমতলা, বড়ভাঙ্গা, কোদালদোয়া, সানাড়পাড়, নিমাইকাশারি, নামা শ্যামপুর, জিয়া সরণি, জাপানি বাজার, তিতাস গ্যাস সড়ক, ছাপড়া মসজিদ, রূপসী বাংলা হাসপাতাল, শনির আখড়া, আরএস টাওয়ার সংলগ্ন এলাকা, গোবিন্দপুর, মাতুয়াইল, মৃধাবাড়ী, কাজলা, ভাঙ্গা ব্রিজ, ডেমরা, স্টাফ কোয়ার্টার, আমুলিয়া, পাইটি, জহির স্টিল, শাহরিয়ার স্টিল, ধার্মিক পাড়া ও কাউন্সিল এলাকায় বিদ্যমান সব শ্রেণির গ্রাহকের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।
ওই বার্তায় আরও বলা হয়, এছাড়া এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করতে পারে। গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।
সারাদেশ
পুটিয়ায় বর্ণাঢ্য আয়োজনে ফুটসাল ডে-নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু

হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠলো পুটিয়া ফুটসাল ডে-নাইট ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫ (সিজন-০১)-এর। শুক্রবার (৪ জুলাই) রাত ৮টায় পুটিয়া বড় তালুকদার বাড়ি মোড় সংলগ্ন মাঠে অনুষ্ঠিত হয় টুর্নামেন্টের শুভ উদ্বোধনী ম্যাচ।
পুটিয়া ফুটসাল কর্তৃক আয়োজিত এবারের প্রতিযোগিতায় মোট ২৬টি দল অংশগ্রহণ করছে। উদ্বোধনী খেলায় মুখোমুখি হয় ভেদরগঞ্জ ক্রীড়া একাডেমি বনাম বাংলা বাজার ফুটবল একাডেমি। জমজমাট এই খেলায় ভেদরগঞ্জ ক্রীড়া একাডেমি ৪-২ গোলে জয়লাভ করে।
পুরো মাঠ ছিল উৎসবমুখর, করতালিতে মুখরিত দর্শকদের উচ্ছ্বাসে। ম্যাচ সেরা (ম্যান অব দ্য ম্যাচ) নির্বাচিত হন ভেদরগঞ্জ ক্রীড়া একাডেমির অন্তর।
টুর্নামেন্টের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভেদরগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক মোহাম্মদ মোজাহেরুল হক। তিনি বলেন, এলাকাভিত্তিক খেলাধুলার মাধ্যমে যুবসমাজকে খারাপ দিক থেকে দূরে রাখা যায়। খেলাধুলা সময়কে গঠনমূলক কাজে ব্যয় করতে শেখায়। আমি আয়োজক খেলোয়াড় অভিভাবক ও দর্শকদের আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই।
আরও উপস্থিত ছিলেন আহ্বায়ক ভেদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি হাবিবুর রহমান তালুকদার, পারভেজ আহমেদ সেলিম, ডা.সাইফুল ইসলাম সুমন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মনিরুজ্জামান তালুকদার। টুর্নামেন্ট উদ্যোক্তা ছিলেন হাবিবুর রহমান রতন তালুকদার এবং আতাউর রহমান রানা তালুকদার। এছাড়াও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ক্রীড়াপ্রেমী দর্শকবৃন্দ এবং বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/তাহের/কাফি