জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠেয় নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্মেলনের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করবেন সরকার প্রধান।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর মিউনিখ সফর উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠেয় নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগ দিতে বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রওনা হবেন প্রধানমন্ত্রী। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সরকার গঠনের পর এটি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর হতে যাচ্ছে।
আমাদের অবস্থান হচ্ছে আমরা সবসময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে। আমরা চাই পৃথিবীতে শান্তি ও স্থিতি বিরাজ করুক। জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধ বন্ধের আলোচনাই করবেন।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের কারণে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কি না জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, কোনও প্রশ্নই আসে না। রাশিয়া আমাদের অত্যন্ত বন্ধুপ্রতীম দেশ। রাশিয়া আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সাহায্য করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের পর দেশ পুনর্গঠনে রাশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এমনকি চট্টগ্রাম বন্দরে মাইন অপারেশন করার সময়ে রাশিয়ার একজন নাগরিকও মৃত্যুবরণ করেছে।
তিনি বলেন, সুতরাং রাশিয়ার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত উষ্ণ ও ঐতিহাসিক। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যে বন্ধনে আমরা আবদ্ধ হয়েছি, সেই বন্ধন অনেক দৃঢ়।
মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সের সভাপতি রাষ্ট্রদূত ড. ক্রিস্টোফ হিউজেনের আমন্ত্রণে জার্মানি যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি সাইডলাইনে সরকারপ্রধান অন্তত সাত দেশ ও তিন আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ নেতাদের সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী সস্মেলনের সাইডলাইনে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজ, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রাটা, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেতে ফ্রেডেরিকসেন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।
হাছান মাহমুদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ভেনজা শুলজ, বিশ্ব ব্যাংকের সিনিয়র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ ও মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স প্রেসিডেন্ট স্যার নিক ক্লেগের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৬ ফেব্রুয়ারি সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনে এবং ক্লাইমেট ফিন্যান্স সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন। জার্মান প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত একটি নাগরিক সংবর্ধনায়ও উপস্থিত হবেন।
মিউনিখ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার উদ্দেশে মিউনিখ ত্যাগ করবেন। ১৯ ফেব্রুয়ারি তার ঢাকায় পৌঁছার কথা রয়েছে।