রমজানে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় খেজুরের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। এ সুযোগে প্রতি বছরই পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়। তবে এবার রমজান মাস শুরু হওয়ার অনেক আগেই যশোরে খেজুরের দাম গত বছরের তুলনায় ৪০-৬০ শতাংশ বেড়েছে।
আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুল্ক ও করহার বৃদ্ধি, টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি এবং ঋণপত্র জটিলতার কারণে এ বছর খেজুরের দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফআইএ) তথ্যানুযায়ী, চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে প্যাকিংভেদে প্রতি টন খেজুরের শুল্কায়ন মূল্য ছিল ৫০০ থেকে ১ হাজার ডলার। কিন্তু বর্তমানে শুল্কায়ন মূল্য বেড়ে হয়েছে টনপ্রতি ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৭৫০ ডলার। এর সঙ্গে নতুন করে যোগ হয়েছে ২৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি, ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট। এ তিন খাতে আগে কোনো রাজস্ব দিতে হতো না ব্যবসায়ীদের। পাশাপাশি অগ্রিম আয়কর ও অগ্রিম কর আগের মতোই ৫ শতাংশ হারে দিতে হচ্ছে। এর প্রভাবে খেজুর আমদানিতে ব্যয় হচ্ছে বেশি।
যশোরের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হয় গলা বা বাংলা খেজুর। প্রতি কেজি বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা গত বছরের রমজানে ছিল ১২০-১৩০ টাকা। জাহিদি খেজুর এখন বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা কেজি দরে, যা গত বছর ছিল মাত্র ১৫০ টাকা। বাজারে দুই ধরনের দাবাস খেজুর পাওয়া যায়। মানভেদে এ খেজুর ৪৫০-৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ৩০০ টাকা। বর্তমানে বরই খেজুর মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪৪০-৫৪০ টাকা, যা গত বছর ছিল ২২০-৪৩০ টাকা। ছায়ার খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা কেজি দরে, যা আগে ছিল ২০০ টাকা।
অন্যদিকে জাম্বো মেডজুল মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। সাধারণ মেডজুল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা। মাবরুম খেজুর প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়, যা গত বছর ছিল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা। বাজারে আজওয়া পাওয়া যায় দুই ধরনের। বর্তমানে এটি ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ছিল ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজি।
বাজারে বিভিন্ন ধরনের মরিয়ম খেজুর পাওয়া যায়। সৌদি আরব, ইরান, তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া ও মিসর থেকে এ জাতের খেজুর আসে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো জাতের মরিয়ম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১৫০ টাকায়। কালমি মরিয়ম বিক্রি হচ্ছে ৭০০-৯০০ টাকায়, যা গত রমজানে ছিল ৬৫০-৭০০ টাকা। সুফরি মরিয়ম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০০ টাকায়, যা গত রমজানে ছিল ৬৫০ টাকা। আম্বার ও সাফাভি জাতের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা প্রতি কেজি, যা গত রমজানে ছিল ৯০০ টাকা। প্যাকেট ক্রাউন (৪০০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়, যা আগে ছিল ১২০ টাকা।
অর্থসংবাদ/এমআই