জ্বালানি তেল রপ্তানিতে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ দেশ সৌদি আরব। ২০৩০ সাল নাগাদ অর্থনীতিকে জ্বালানি তেল নির্ভরতা থেকে সরিয়ে আনতে কাজ করছে দেশটি। এর অংশ হিসেবে জ্বালানি তেল-বহির্ভূত ব্যবসা খাতের বিস্তারে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়াচ্ছে সৌদি সরকার। জানুয়ারিতে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতের ব্যবসায়িক কার্যক্রম বেড়েছে। খবর দ্য ন্যাশনাল নিউজ।
জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যাচাইয়ের একটি গ্রহণযোগ্য মানদণ্ড হলো রিয়াদ ব্যাংকের পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স। জানুয়ারিতে এ সূচক ৫৫ দশমিক ৪-এ নেমে এসেছে, যেখানে গত ডিসেম্বরে এ সূচক ৫৭ দশমিক ৫ ছিল বলে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন। নতুন ব্যবসার কারণে কার্যক্রম বেড়েছে। কিন্তু প্রতিযোগিতা থাকলেও বেশকিছু ব্যবসা খাতে বিক্রির হার নিম্নমুখী ছিল।
নতুন ব্যবসা শুরু হওয়ায় জানুয়ারিতে ক্রয় কার্যক্রমের পাশাপাশি পণ্যের মজুদও বেড়েছে। যদিও অঞ্চলগুলোয় কেনাকাটার প্রবৃদ্ধি আট মাসের সর্বনিম্নে ছিল। লোহিত সাগরে বিদ্যমান সংকটের মধ্যেও জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতের ক্রয়মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। মূলত শক্তিশালী চাহিদা, কাঁচামালের ঊর্ধ্বমুখী দাম, সরবরাহ শৃঙ্খলের ঝুঁকি এবং শিপিংয়ের খরচ বেড়ে যাওয়ায় এ প্রভাব পড়েছে।
রিয়াদ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ নাইফ আল-ঘাইথ বলেন, ‘জীবনযাপন ব্যয় ও সুদহার বাড়লেও জ্বালানি তেল-বহির্ভূত খাতের প্রবৃদ্ধি যে অব্যাহত রয়েছে সেটি স্পষ্ট। এর মাধ্যমে সৌদির অর্থনীতিতে ভিন্ন খাতগুলোর অবদানের বিষয়টি প্রকাশ পায়। উৎপাদন খরচ বাড়লেও পণ্য বাজারজাতের দাম এখনো কম। যার পরিপ্রেক্ষিতে বাজারে প্রতিযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ বহাল রয়েছে।’
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সবশেষ প্রাক্কলন অনুযায়ী, চলতি বছর সৌদির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৭ এবং ২০২৫ সালে ৫ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হবে। গত বছর জ্বালানি তেল উত্তোলন ও সরবরাহ কমার কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ১ শতাংশে নেমে এসেছিল। অন্যদিকে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে জ্বালানি তেল-বহির্ভূত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শক্তিশালী পর্যায়ে ছিল। কেননা সরকারিভাবে বিভিন্ন খাতে বিদেশী বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়।
বর্তমানে আবাসন থেকে শুরু করে পর্যটন, বিনোদন ও অবকাঠামো খাতে বেশকিছু নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া রিয়াদ চলতি বছর নতুন নীতিমালা কার্যকর করেছে। এর অংশ হিসেবে বিদেশী বহুজাতিক ব্যবসায়িক কোম্পানিগুলোকে স্থানীয় অফিস চালু করতে হবে। অন্যথায় কোম্পানিগুলো সরকারি সব চুক্তি ও সুবিধা হারাবে।
অর্থসংবাদ/এমআই