অর্থনীতি
অযৌক্তিক করের চাপ তৈরি হলে বিবেচনা করা হবে: এনবিআর চেয়ারম্যান

ব্যাংকসহ বিভিন্ন খাতে অযৌক্তিক করের চাপ তৈরি হলে এনবিআর তা বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। সেইসাথে কর ছাড় দেওয়া প্রয়োজন সেটা ধাপে-ধাপে দেখতে হবে।
মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রাক বাজেট আলোচনায় তিনি এ আশ্বাস দেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণকালে বিভিন্ন খাতে সক্ষমতা বাড়াতে হবে। সরকারের রাজস্ব বাড়াতে হবে। এজন্য প্রতিষ্ঠান ও শিল্পগ্রুপগুলোকে শুল্ক-কর সহায়তা বা করছাড়ের নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, কোথায়-কোথায় আমাদের কর ছাড় আছে, কেন আমরা এই সুবিধা দিচ্ছি এবং তার ফল হিসেবে আমরা কি পাচ্ছি সেগুলো খুঁজে বের করছি। সেখানে কোথায় আমাদের কর ছাড় দেওয়া প্রয়োজন সেটা ধাপে-ধাপে দেখতে হবে, সেগুলো আমরা খুঁজে বের করছি।
প্রাক বাজেট সভায় ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ ও ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্রেডিট কার্ডে রিটার্ন জমার প্রমাণ (পিএসআর) প্রত্যাহারের দাবি জানান ব্যাংকাররা।
অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে- ব্যাংকের কর্পোরেট আয়করের হার ৩০ শতাংশ হ্রাস করা, স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিল ও স্বীকৃত আনুতোষিক তহবিলের অর্জিত আয়ের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করা, জিরো-কুপন বন্ডে বিনিয়োগের জন্য কর প্রণোদনার আওতায় ব্যাংকগুলোকে নিয়ে আসা ইত্যাদি।
অর্থসংবাদ/কাফি

অর্থনীতি
একীভূতকরণে তিন ব্যাংকের সম্মতি, সময় চায় দুটি

বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ইসলামী ব্যাংক খাতের সংস্কার প্রক্রিয়ায় বড় অগ্রগতি এসেছে। পাঁচটি বেসরকারি ইসলামী ব্যাংকের মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক একীভূত হতে সম্মতি দিয়েছে। অন্যদিকে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক সময় চেয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে মূলধন ঘাটতি, খেলাপি ঋণ ও তারল্য সংকটে ভোগা এসব ব্যাংককে রক্ষা করতে একীভূতকরণের উদ্যোগ নেন। গত সপ্তাহে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পাঁচটি ব্যাংকের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক হয়। বৈঠকে ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও পরিচালকরা অংশ নেন।
সবশেষ বৃহস্পতিবার গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের নেতৃত্বে চারজন ডেপুটি গভর্নর ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন। ব্যাংক দুটির পক্ষে চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা বৈঠকে অংশ নেন।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নূরুল আমিন জানান, তাদের ব্যাংকের মোট ঋণের পরিমাণ ১৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা এস আলম গ্রুপের নামে-বেনামে নেওয়া, যা বর্তমানে খেলাপি। এসব ঋণের বিপরীতে জামানত রয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশেরও কম। এরপর বিকেলে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম সাদিকুল ইসলাম বলেন, এস আলম গ্রুপ তাদের ব্যাংক থেকে ছয় হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। তবে সময় ও মূলধন পেলে ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
এর আগে বুধবার এক্সিম ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার আগের দিন মঙ্গলবার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক একীভূত হতে সম্মতি জানায়। তবে এক্সিম ব্যাংক এখনই এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে রাজি হয়নি। ব্যাংকটি জানিয়েছে, তারা আগে নিজেদের পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করতে চায় এবং এজন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন।
বৈঠক শেষে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, আমরা একটি রোডম্যাপ উপস্থাপন করেছি। বাংলাদেশ ব্যাংক সেটি আরও স্পষ্ট ও বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করতে বলেছে। সংশোধন করে আমরা পরবর্তী বৈঠকে তা তুলে ধরব।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, পাঁচ ব্যাংকের সম্মিলিত মূলধন ঘাটতি ও খেলাপি ঋণের পরিমাণ দুই লাখ ছিয়াশি হাজার কোটি টাকারও বেশি। একীভূতকরণ-পরবর্তী ব্যাংককে স্থিতিশীল করতে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ সহায়তা তহবিল গঠন করা হবে। তহবিলের অর্থ সরকারের পাশাপাশি ডিপোজিট ইন্সুরেন্স ট্রাস্ট ফান্ড থেকেও জোগান দেওয়া হবে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এই একীভূতকরণ ব্যাংক খাতের বড় ধরনের সংস্কার আনবে। এতে খেলাপি ঋণ পুনর্গঠন, ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা এবং আমানতকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা সহজ হবে। তবে তারা সতর্ক করেছেন, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন না হলে কাঙ্ক্ষিত ফল আসবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, ব্যাংকগুলোর দুরবস্থার কারণে আমানতকারীদের ঝুঁকি কমাতে ও আর্থিক স্থিতিশীলতা ফেরাতে একীভূতকরণ এখন একমাত্র কার্যকর সমাধান। খুব শিগগিরই প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে আশা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
একীভূত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে এক্সিম ব্যাংকের মালিকানা ছিল আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদারের হাতে। বাকি চার ব্যাংক— গ্লোবাল ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, ইউনিয়ন এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক— এসব ব্যাংকের মালিকানা রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপের কাছে।
বিগত সরকার আমলে এই মালিকপক্ষ বিভিন্ন নামে ব্যাংকগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে নেয়, যার ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এসব ব্যাংকে নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নেয়। এক্সিম ব্যাংক ছাড়া বাকি চারটিতে নিয়োগ দেওয়া হয় স্বতন্ত্র পরিচালক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংকের সারাদেশে মোট শাখা রয়েছে ৭৭৯টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২২৬টি শাখা রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের। এরপর সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৮০টি, এক্সিম ব্যাংকের ১৫৫টি, ইউনিয়ন ব্যাংকের ১১৪টি এবং গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের রয়েছে ১০৪টি শাখা।
এ ছাড়া এই ব্যাংকগুলোর অধীনে ৬৯৮টি উপশাখা, ৫০০ জন এজেন্ট ও ১ হাজারের বেশি এটিএম বুথ রয়েছে।
ব্যাংকগুলোতে কর্মরত জনবল রয়েছে ১৫ হাজারের বেশি। সবমিলিয়ে এসব ব্যাংকে গ্রাহক হিসাবের সংখ্যা প্রায় ৯২ লাখ। আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা, তবে দেওয়া ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা— যার একটি বড় অংশ বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংক থেকে ধার করে সরবরাহ করা হয়েছে।
ঋণ বিতরণেও রয়েছে চরম অনিয়ম। গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রায় ৯০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়েছে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে, যা বর্তমানে খেলাপি হয়ে পড়েছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৭০ শতাংশ এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২০ শতাংশ ঋণ একই গ্রুপের কাছে গেছে। এক্সিম ব্যাংকের প্রায় ১০ শতাংশ ঋণ রয়েছে সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে।
এই বিপুল অঙ্কের বিতরণকৃত ঋণের বড় একটি অংশই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে, যা আদায় করতে পারছে না ব্যাংকগুলো।
অর্থনীতি
প্লাস্টিক ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক ধারণা দিলেই পুরস্কার ১ লাখ টাকা

প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক উদ্যোগের ধারণা দিলে একজন উদ্যোক্তা পুরস্কার পাবেন ১ লাখ টাকা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ফাউন্ডেশনে (এসএমই ফাউন্ডেশন) ও জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা ইউনিডো এই ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। এতে সহায়তা করছে নরওয়ে দূতাবাস। প্রতিযোগিতায় বিজয়ী উদ্যোক্তাদের মোট ৫৪ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পর্যটন ভবনে এসএমই ফাউন্ডেশনের সম্মেলনকক্ষে ‘প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রতিযোগিতা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এই অনুষ্ঠান নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পুরস্কারের এই তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিকভাবে সারা দেশ থেকে আবেদনকারী উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকে নারী, শিক্ষার্থী, গবেষক, বেসরকারি সংস্থা এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতের উদ্যোক্তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জনকে নির্বাচিত করে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। নির্বাচিত উদ্যোক্তারা প্রশিক্ষণ শেষে জুরিবোর্ডের কাছে তাঁদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা উপস্থাপন করবেন। এরপর সাতজন উদ্যোক্তাকে ২ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে। পরবর্তী সময়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের মধ্য থেকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত পাঁচজন উদ্যোক্তাকে ৩ লাখ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে।
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য এই লিংকে আবেদন করা যাবে।
এসএমই ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ৩০ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশের প্রায় ১ কোটি ১৮ লাখ শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৯ শতাংশের বেশি কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি (সিএমএসএমই)। শিল্প খাতের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৮৫ শতাংশ সিএমএসএমই খাতে। এই খাতে প্রায় ৩ কোটিরও বেশি জনবল কর্মরত আছে।
এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সৈয়দ শাহজাহান আহমেদ, জাতীয় প্রকল্প পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজিম হাসান সাত্তার ও ফারজানা খান, মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. আবদুস সালাম সরদার। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন ইউনিডো বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জাকিউজ্জামান এবং বিশেষজ্ঞ মো. মাহবুল ইসলাম।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন মো. মুসফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার অভাবে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের ২০২০ সালের প্রতিবেদনের হিসাবে দেশে বছরে ৯ লাখ ৭৭ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্যের মধ্যে পুনর্ব্যবহার হয় ৩১ শতাংশ। ঢাকায় প্রতিদিন ৬৪৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়, যা পুরো দেশের শতকরা ১০ ভাগ। পুনর্ব্যবহার হয় শতকরা মাত্র ৩৭ ভাগ। সরকারের জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় ২০৩০ সালের মধ্যে প্লাস্টিকের ব্যবহার অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
অর্থনীতি
তিন দিনে রেমিট্যান্স এলো ৩৪ কোটি ডলার

চলতি মাসের প্রথম ৩ দিনে দেশে ৩৪ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে এসেছে ১১ কোটি ৪৩ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সেপ্টেম্বরের প্রথম ৩ দিনে দেশে ৩৪ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত বছর একই সময়ে এসেছিল ৩০ কোটি ৭০ লাখ ডলার। অর্থাৎ বছর ব্যবধানে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ১১ দশমিক ৬০ শতাংশ।
আরিফ হোসেন আরও বলেন, এছাড়া গত ৩ সেপ্টেম্বর এক দিনেই প্রবাসীরা দেশে ১৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। যা চলতি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহে বড় ধরনের অবদান রেখেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে এসেছে ৫২৪ কোটি ২০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স। বছর ব্যবধানে যা বেড়েছে ১৭ দশমিক ৯০ শতাংশ।
এর আগে, সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে দেশে এসেছে ২৪২ কোটি ১৮ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর জুলাইয়ে দেশে এসেছিল ২৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
প্রসঙ্গত, গত ২০২৪-২৫ অর্থবছর জুড়ে দেশে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স, যা দেশের ইতিহাসে কোনো নির্দিষ্ট অর্থবছরে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়ের রেকর্ড।
অর্থনীতি
পোশাক শ্রমিকদের বেতন পরিশোধে ৮৮৬ কোটি টাকা ছাড় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের

পোশাক খাতের শ্রমিকদের দুই মাসের (আগস্ট ও সেপ্টেম্বর) বেতন-ভাতা পরিশোধের সুবিধার্থে ৮৮৬ কোটি টাকা ছাড় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের (এসআইবিএল) মাধ্যমে এই অর্থ ছাড় করা হয়েছে।
বিজিএমইএ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি তীব্র তারল্য সংকটে থাকা পাঁচটি সংকটাপন্ন ব্যাংক পোশাক কারখানাগুলোর রপ্তানি আয় সময়মতো পরিশোধ করতে পারছিল না। এর ফলে, সংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোও তাদের শ্রমিকদের পাওনা মেটাতে পারছিল না, যা শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছিল।
এমন পরিস্থিতিতে পোশাক রপ্তানিকারকদের আর্থিক কার্যক্রমে সৃষ্ট অচলাবস্থা নিরসনে গত ২৬ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজিএমইএ। এর ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮৮৬ কোটি টাকা অর্থ ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে।
অর্থনীতি
আরও ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার কিনলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ডলারের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বিগত তিন অর্থবছর ধরে রিজার্ভ থেকে বিপুল পরিমাণ ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ভিন্ন পথে হাঁটছে নিয়ন্ত্রক এ সংস্থাটি। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সাত দফায় মোট ৮১ কোটি ডলারের বেশি কিনে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সবশেষ আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ৫ বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে কেনা হয়েছে ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এর আগে গত মঙ্গলবার ৮ বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে কেনা হয় ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান, বাজারে বর্তমানে চাহিদার তুলনায় ডলারের সরবরাহ বেশি। এ কারণেই রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজার থেকেই ডলার কিনছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।
আজ বৃহস্পতিবার কেনাকাটা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ (এফএক্স) নিলাম কমিটির মাধ্যমে, মাল্টিপল প্রাইস অকশন পদ্ধতিতে। প্রতি (এক ডলার) ডলারের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা।
এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পাঁচ দফায় ডলার কেনে। ১৩ জুলাই ১৮ ব্যাংক থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১৭ কোটি ১০ লাখ ডলার কেনা হয়। এরপর ১৫ জুলাই একই দরে ৩১ কোটি ৩০ লাখ ডলার, ২৩ জুলাই ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে এক কোটি ডলার কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার, ১০ আগস্ট ১১ ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে মোট ৮ কোটি ৩০ লাখ ডলার কেনা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারের দাম হঠাৎ করে অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়া বা অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়া- দুটোই অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর। বর্তমানে দেশে খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং বিদেশি দায় পরিশোধও সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ফলে নিকট ভবিষ্যতে ডলারের তীব্র চাহিদা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তাদের মতে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই ডলার ক্রয় রিজার্ভকে আরও শক্তিশালী করবে। এছাড়া জাতীয় নির্বাচন পরবর্তী রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এলে বিনিয়োগ বাড়বে, ফলে ডলারের চাহিদাও বাড়তে পারে।