জাতীয়
অনুমতি ছাড়া বাংলাদেশে কাজ করতে পারবেন না বিদেশিরা

অনুমতি ছাড়া বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে কাজ করার সুযোগ থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- বিডার কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ তথ্য জানান তিনি।
‘কর্মানুমতি ব্যতীত বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কর্মী/ নাগরিকদের বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে’ অনুষ্ঠিত সভায় মুখ্যসচিব বলেন, ‘আয়কর ফাঁকি দিয়ে অনেক বিদেশি নাগরিক এ-থ্রি ভিসা, বি-ভিসা কিংবা টুরিস্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাজ করছেন। অনেক ক্ষেত্রে তারা এক প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজে এসে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছেন। ২০০৬ সালে প্রণীত ভিসা নীতিমালায় কর্মানুমতি গ্রহণের শর্ত না থাকায় অনেকে আবার কর্মানুমতি না নিয়ে কিংবা ভিসার মেয়াদ না থাকায় বা শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বছরের পর বছর কাজ করে মাত্র ৩০ হাজার টাকা জরিমানা দিয়ে দেশত্যাগ করেন।’
তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আমরা দৈনিক ও প্রগ্রেসিভহারে জরিমানার বিধান আরোপের সিধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে কর্মানুমতি থাকা সাপেক্ষে বিদেশি নাগরিকরা যদি অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগ দিতে চান তাহলে নির্ধারিত ফি দিয়ে সেই প্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন, সেক্ষেত্রে তার নিজ দেশে গিয়ে পুনরায় ভিসা করার দরকার পড়বে না।
তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, অনেকে ট্যুরিস্ট বা বিজিনেস ভিসায় এসে কর্মানুমতি প্রাপ্তির কাগজপত্র প্রেসেসিংয়ের জন্য ৩ মাস এবং অনুমোদনের ৩ মাস সময় পেয়ে থাকেন। আমরা আজকের সভায় সেটিকে উভয়ক্ষেত্রে এক মাসের মধ্যে নিয়ে আসার সিধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, কর্মানুমতিসহ ভিসা জটিলতা দূর করতে বিদেশি নাগরিকরা বিভিন্ন দেশ থেকে ভিসার আবেদন করতে পারবেন। বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত আমাদের রাষ্ট্রদূতরা অনলাইনের মাধম্যে সে ভিসার আবেদন আমাদের স্পেশাল ব্রাঞ্চে পাঠাবেন। স্পেশাল ব্রাঞ্চ সাতদিনের মধ্য ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করবে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব আরও বলেন, আমরা দেশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আবেদন রাখতে চাই যে, যোগ্যতাসম্পন্ন জনবল বাংলাদেশেই রয়েছে, তাদের রিপ্লেসমেন্টে যেন বিদেশি কর্মীদের না আনা হয়।
তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও অনেক বিদেশি নাগরিক অবাধে অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া। তিনি বলেন, কর্মানুমতি ছাড়া বিদেশি নাগরিকদের দেশে কাজ করার ফলে তাদের অর্জিত অর্থ হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে ক্রমান্বয়ে আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদেশি নাগরিকদের নিয়ম মেনেই বাংলাদেশে কাজ করতে হবে।

জাতীয়
অবৈধ অস্ত্রের খবরদাতাকে পুরস্কৃত করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, যেসব অবৈধ অস্ত্র রয়েছে, আমি আগেই বলেছি, আমরা একটি ঘোষণা দিয়েছি। আপনারা আমাদের খবর দিন, আমরা ধরে ফেলব। আর যিনি খবর দেবেন, তাকে পুরস্কৃত করা হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে। পুলিশকে শক্তিশালী করার জন্য কোস্টগার্ডের টহলও বাড়ানো হবে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বহু আলোচিত মেঘনাপাড়ের গুয়াগাছিয়া পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মুন্সীগঞ্জবাসীর একটি প্রাণের দাবি ছিল, এখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন। আল্লাহর কৃপায় স্থায়ী না হলেও সাময়িকভাবে এটি খোলা হয়েছে। আশা করছি, এটি স্থায়ী হয়ে যাবে। আমি নিজেও মুন্সীগঞ্জবাসী। তাই মুন্সীগঞ্জের বাইরের যেসব ভাই আছেন, তাদের পক্ষ থেকেও ধন্যবাদ জানাই।
তিনি বলেন, গত তিরিশ-চল্লিশ বছরের ঘটনা আমি বলতে পারব না, তবে এখানে একটি ক্যাম্প দরকার, এটা আমি অনুভব করি। আমি বলছি না যে আমাদের দেশে এক হাজারের বেশি সমস্যা নেই। দেশে তো সমস্যাই হচ্ছে। কিন্তু আমাদের সেই সমস্যা ভেতর থেকেই কাজ করে যেতে হবে। আমরা যেটা ভালো মনে করব, সেটাই করব। এখন অনেকের অনেক ধরনের স্বার্থ থাকে। সবাই নিজ নিজ স্বার্থ হাসিল করতে চাইবে। কিন্তু আমরা সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করব, যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, নয়ন ও পিয়াশের প্রসঙ্গে আমি জানতে চেয়েছি; শোনা যাচ্ছে, তারা দেশে নেই, পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে চলে গেছে। তবে দেশে ফিরে এলে তাদের কেরানীগঞ্জ জেলখানা ছাড়া অন্য কোথাও স্থান হবে না। এই এলাকায় তাদের কোনো স্থান হবে না। ফাঁড়িটি স্থায়ী করার জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ে চলে গেছে। আশা করছি, আল্লাহর কৃপায় এটি স্থায়ী ফাঁড়ি হয়ে যাবে।
আলু নিয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, আলুর ব্যাপারে সত্যিই কৃষকরা দাম পাচ্ছেন না। এ জন্য আমরা কোল্ডস্টোরেজের গেটে আলুর দাম কেজিতে ২২ টাকা নির্ধারণ করেছি। এ কারণে এখন আলু খুব বেশি বের হচ্ছে না। তবে এক টাকা বা দেড় টাকা করে দাম বাড়ছে। আমি আশা করি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আলুর দাম আরও বাড়বে।
খুচরা বাজার দর নির্ধারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খুচরা বাজার তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। আমরা বড় বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। তবে আপনাদের সবার মুখ তো আমি বন্ধ করতে পারব না, পারব? একজন না একজন প্রশ্ন তুলবেই।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল করিম মল্লিক, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত, পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার, গজারিয়া ইউএনও মো. আশরাফুল আলম, মুন্সীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক সফিকুল ইসলাম, কোস্টগার্ডের কর্মকর্তাবৃন্দ, পুলিশ বাহিনীসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা এবং গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার আলম আজাদ।
দীর্ঘ নদীপথ পাড়ি দিয়ে দুর্গম এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শনে গিয়ে উপদেষ্টা স্থানীয়দের সন্তোষ প্রকাশে অভিভূত হন। গ্রামবাসীরা দল বেঁধে এসে তাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধসহ অনেক পরিবার আবার নিজ গ্রামে ফিরতে শুরু করেছে। উপদেষ্টা তাদের নিরাপত্তাসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।
মুন্সীগঞ্জ জেলার দুই বছরের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বিগত বছরটি আগের বছরের তুলনায় খুন এবং ডাকাতির সংখ্যা কমেছে। দুর্গম এবং সংঘাতপ্রবণ এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি বা ক্যাম্প স্থাপন করলে এর হার আরও কমানো সম্ভব বলেও মত দেন উপদেষ্টা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর স্থানীয় নৌডাকাত ও অবৈধ বালু উত্তোলনকারী চক্রের বাধার কারণেই এটি দ্রুত স্থায়ী ফাঁড়িতে রূপান্তরের প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গত ২২ আগস্ট গুয়াগাছিয়া অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প চালু করা হয়। এরপর এটি ঘিরে মানববন্ধন, এলাকায় ও ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন এবং ক্যাম্পের টহল পুলিশের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুয়াগাছিয়া আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।
জাতীয়
অনির্দিষ্টকালের গণছুটি ঘোষণা পবিস কর্মীদের, বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

পল্লী বিদ্যুতের সংস্কার, চাকরি বৈষম্য দূরীকরণ ও হয়রানিমূলক পদক্ষেপ বন্ধের চার দফা দাবিতে রোববার থেকে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের গণছুটিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন পল্লী বিদ্যুৎ অ্যাসোসিয়েশনের সহ-দপ্তর সম্পাদক অঞ্জু রানী মালাকার।
তিনি বলেন, একাধিকবার কমিটি গঠনসহ সংকট সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে নানামুখি আশ্বাস দেওয়া হলেও কিছুই বাস্তবায়ন করেনি বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়। আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুতি, বদলি, বরখাস্তসহ নানা শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়ে হয়রানি করছে। এর ফলে পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে।
এ সময় অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত ও বরখাস্তকৃত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বরখাস্ত আদেশ বাতিল এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
জাতীয়
লাশ পোড়ানো নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য : হেফাজতে ইসলাম

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানোকে নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে ক্ষুব্ধ ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় স্থানীয় প্রশাসন চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে হেফাজতে ইসলাম।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) হেফাজতের আমির আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব আল্লামা সাজেদুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, কাবার আদলে ১২ ফুট উঁচু নুরাল পাগলার মাজার ও বেদী নির্মাণ, নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি ও নিজস্ব কালেমার প্রচলন ইত্যাদি শরিয়তবিরোধী কর্মকাণ্ড নিয়ে অনেক দিন ধরে রাজবাড়ীর স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। নুরাল পাগলার পরিবারকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা নানাভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেও বিফল হন।
এমনকি নুরাল পাগলার এসব অপকর্ম রোধে একাধিকবার স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তারা বৈঠক করে স্মারকলিপি দেন এবং প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলনও করেন। এতে তাদের ধৈর্যের পরিচয় পাওয়া গেলেও প্রশাসনের অসহযোগিতার কারণে এক পর্যায়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতা নুরাল পাগলার কথিত কাবার আদলে তৈরি কবর ভেঙে লাশ তুলে পুড়িয়ে দেয়।
তারা বলেন, ‘ইসলামে লাশ পোড়ানো নিষিদ্ধ। এটি মানবিক মর্যাদার প্রশ্ন।
ইসলাম-প্রদত্ত এই মর্যাদা কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। ফলে নুরাল পাগলার লাশ পোড়ানো নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য কাজ। একটি অন্যায় রোধ করতে গিয়ে আরেকটি অন্যায় করার সুযোগ নেই। তবে আমরা মনে করি, রাজবাড়ীতে স্থানীয় প্রশাসন সেখানকার দল-মত-নির্বিশেষে ক্ষুব্ধ ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনতার ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষায় চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
প্রশাসন নুরাল পাগলার ব্যাপারে যথাসময়ে পদক্ষেপ নেয়নি বলেই এমন সহিংস পরিস্থিতি তৈরি হতে পেরেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা সরকারকে আরো কঠোর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে আরো বলেন, ‘আমরা লক্ষ করেছি, সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষার ক্ষেত্রে সরকার ও প্রশাসন প্রায়ই করিৎকর্মার পরিচয় দেয়। বাম ও প্রগতিশীল ঘরানাও খুবই সরব থাকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এলে তাদের সব সময় নিষ্ক্রিয় ও নীরব দেখা যায়।
এই বৈষম্য ইসলামবিদ্বেষপ্রসূত বলে আমরা মনে করি। এমনকি একশ্রেণির বাম ও প্রগতিশীলদের নৈতিক সমর্থনের কারণে তাদের ঘরানার কেউ কেউ বিভিন্ন সময় আল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর নামে কটূক্তি ও বিষোদ্গার করার দুঃসাহসও দেখিয়েছে। কিন্তু শত প্রতিবাদেও তাদের কোনো বিচার হয়নি। এই দীর্ঘ অবিচারের সংকট নিরসনে সরকার এবং একই সঙ্গে বাম-প্রগতিশীল ঘরানার মুরব্বিদেরও এগিয়ে আসতে হবে। দায়িত্ব শুধু আলেমদেরই নয়, তাদেরও রয়েছে।’
জাতীয়
ডেঙ্গুতে এক সপ্তাহে ১৪ জনের মৃত্যু

সারাদেশে এক সপ্তাহে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩২ জন। সেইসঙ্গে শনাক্ত রোগী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ৮৩১ জনে
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন দুইজন। মারা যাওয়া দুইজনই ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ছিলেন। এসময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৬৪ জন।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোলরুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৪৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৭৬ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৫০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ৫৮ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ৭৩ জন, খুলনা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩৮ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ৩০ জন রয়েছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৯ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ নিয়ে চলতি বছর আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত মোট ছাড়পত্র পেয়েছেন ৩২ হাজার ১৫৩ জন।
গত ১ জানুয়ারি থেকে ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের মধ্যে ৫৯ দশমিক ৬ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৪ শতাংশ নারী।
জাতীয়
ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্র এখনো চলমান: আদিলুর রহমান

ফ্যাসিবাদ সবসময় ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকবে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেছেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক ছাত্রজনতাকে সবসময় সচেতন থাকতে হবে, ফ্যাসিবাদকে দমন ও প্রতিহত করতে হবে। দেশে আবার যেন ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে, সেদিকে সবার নজর রাখতে হবে।
শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নাটোর শহরের ভবানীগঞ্জ মোড়ে নবনির্মিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের উদ্বোধন শেষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।
উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসন—গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, আয়নাঘর, ব্যাপকভাবে মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া এবং অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে দমন-পীড়ন-এটাই ছিল গত সাড়ে ১৫ বছর। সেখান থেকে ফেরেশতার মতো এক ঝাঁক তরুণ জাতিকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিল। সারা দেশের মানুষ তাদের পেছনে এসে দাঁড়িয়েছিল।
জুলাইয়ে সংঘটিত হত্যা ও অপরাধের বিচারকে দৃশ্যমান করার প্রক্রিয়া চলছে এবং বিচার দৃশ্যমান হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরই মধ্যে সরকারের দ্বিতীয় লক্ষ্য নির্বাচন সামনে এসেছে। সরকার জুলাইয়ের সব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি বলেন, ৩৬ দিনের সংগ্রামের পর বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে, কিন্তু সমস্ত আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হয়নি। বিচার ও সংস্কারের কাজ এখনো বাকি আছে। বিচারকে দৃশ্যমান করার চেষ্টা চলছে, বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমানও হচ্ছে। সংস্কারের কাজও চলছে। সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনেরও সব প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি গণঅভ্যুত্থানের এই সরকার বিচার ও সংস্কার—এই দুটি এগিয়ে নিয়ে নির্দিষ্ট সময়েই জাতীয় নির্বাচন করবে।
আদিলুর রহমান খান বলেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে বলে কেউ যেন মনে না করে তারা আর ষড়যন্ত্র করবে না। পতন হয়েছে মানে তারা বসে থাকবে তা কিন্তু নয়। তাদের ষড়যন্ত্র সবসময় অব্যাহত থাকবে। তাই দেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতাকে সবসময় সচেতন থাকতে হবে, ফ্যাসিবাদকে দমন ও প্রতিহত করতে হবে। দেশে আবার যেন ফ্যাসিবাদ ফিরে না আসে, সেদিকে সবার নজর রাখতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে আমরা কাজ করছি। রাজনৈতিক কিছু মতপার্থক্য থাকলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একমত হয়ে তা বাস্তবায়ন করা হবে।