অন্যান্য
লভ্যাংশের অর্থ পায়নি এমারেল্ড অয়েলের বিনিয়োগকারীরা
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের লভ্যাংশের অর্থ না পাওয়ার অভিযোগ করছেন বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ বছরে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীনসহ মোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দেয়। একই সঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদের দিয়ে এ লভ্যাংশ অনুমোদনও করিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। অথচ লভ্যাংশের সেই অর্থ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধই করা হয়নি। নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে তা না দেওয়াকে মহাপ্রতারণা বলছেন বিনিয়োগকারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ী, কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের ঘোষণা করা লভ্যাংশ বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডদের অনুমোদনের ৩০দিনের মধ্যে বিতরণ সম্পন্ন করতে হবে। এ বিষয়ে ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারি বিএসইসির জারি করা আদেশে বলা হয়, অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যেই বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে লভ্যাংশ জমা করতে হবে। অন্যথায় জরিমানাসহ শাস্তির আওতায় আসবে কোম্পানিটি।
সূত্র মতে, নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নির্দেশনা থাকলেও ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদনের পর প্রায় দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও সেই লভ্যাংশের অর্থ এখনো বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে পাঠায়নি খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানটি। কোম্পানিটির লভ্যাংশের এ অর্থ পাঠানোর শেষ সময় ছিল চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি।
এদিকে গত ৩০ জুন,২০২৩ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এমারেল্ড অয়েল কর্তৃপক্ষ ৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীনসহ মোট ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। যার রেকর্ড ডেট ছিলো একই বছরের ২৯ নভেম্বর। আর এজিএম ছিলো ২৭ ডিসেম্বর। কোম্পানিটির এজিএমে পূর্ববতী উদ্যোক্তা ও পরিচালকগণ যাদের শেয়ার ৩০ দশমিক ৪৫ শতাংশ ব্যতীত সকলের জন্য এ লভ্যাংশ অনুমোদিত হয়। নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও কোম্পানিটি লভ্যাংশের এ টাকা বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দেয়নি।
নির্ধারিত সময় শেষ হলেও লভ্যাংশের অর্থ বিতরণ না করায় কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন করেছে বলে মনে করছে বাজার সংশ্লিষ্টরা। লভ্যাংশ নিয়ে কোম্পানিটির এ ধরনের প্রতারণার আইনি ব্যবস্থা ও কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
এ অবস্থায় লভ্যাংশ না পাওয়ায় আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির হস্তক্ষেপ কামনা করছে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীরা। এছাড়াও কোম্পানিটির শেয়ারদর নিয়ে কারসাজির অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
এ বিষয়ে জানতে এমারেল্ড অয়েলের কোম্পানি সচিব মো. ইমরান হোসাইনকে একাদিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তিতে অর্থসংবাদের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জানতে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোনো সাড়া দেননি তিনি।
এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার নিয়ে গেম্বলিংয়ের অভিযোগ উঠেছে কোম্পানিটির একজন পরিচালকের বিরুদ্ধে। জাপান প্রবাসী মিয়া মামুন নামের এক ব্যক্তি এ কোম্পানিটির শেয়ার দর নিয়ে কারসাজি করার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন গল্প ছড়িয়ে ৮ টাকা দরের শেয়ার বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১৮৮ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যা বর্তমানে ৭০-৮০ টাকার মধ্যে দর উঠা-নামা করে। সেই হিসাবে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে রয়েছে বিনিয়োগকারীরা।
এ বিষয়ে জানতে মিয়া মামুনকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে মন্তব্য জানতে অর্থসংবাদের পক্ষ থেকে ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি তিনি।
জানা গেছ, দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুটি কোম্পানির মালিকানায় এসেছে কথিত জাপানি একটি প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিগুলোর শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে মিনোরি বাংলাদেশ নামের প্রতিষ্ঠানটি দুই কোম্পানির মালিকানায় আসে। এ খবরসহ বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে মিয়া মামুন সিন্ডিকেট দুটি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধিতে কারসাজি করেই যাচ্ছে। একটি কোম্পানির শেয়ার ৮ টাকা থেকে বেড়েছে ১৮৮ টাকা পর্যন্ত। এখন অপর একটি কোম্পানির শেয়ারদর নিয়ে একই রকম ফাঁদ পেতেছে এই চক্রটি। ২৩ টাকা দরের শেয়ারটি ৪৩ টাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ধরিয়ে দিয়ে ফের ২৫ টাকা করে কিনছে চক্রটি যার দর ৩০ টাকার উপরে। আবারও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মাঝে বিভিন্ন মুখরোচক গালগল্প সাজিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে অভিযোগ উঠেছে। মিনোরি বাংলাদেশের মালিকানায় রয়েছেন জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি মিয়া মামুন। তাঁর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে একাধিক কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি করার অভিযোগ উঠেছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন গুজব ছড়িয়ে কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর আকাশচুম্বী করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
সূত্র মতে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং ফু-ওয়াং ফুড লিমিটেডের মালিকানায় যুক্ত হয়েছে মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেড। দুই কোম্পানির মালিকানায় মিনোরির যুক্ত হওয়ার খবরে প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও শেয়ারহোল্ডাররা এখনো লভ্যাংশ পাননি। এর মধ্যে এমারেল্ড অয়েলের কারখানাসহ সব সম্পত্তি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব বেসিক ব্যাংক নিলামে তুলেছে। ফলে সম্পদবিহীন কাগুজে কোম্পানিতে পরিণত হতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। তবুও নিত্যনতুন গুজব ছড়িয়ে শেয়ারটির দর বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানি ফু-ওয়াং ফুডস নিয়েও কারসাজি করে যাচ্ছে মিয়া মামুন চক্র।
জানা গেছে, ২০১৪ সালে দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ওই বছর পুঁজিবাজারে ২ কোটি শেয়ার ইস্যু করে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করে প্রতিষ্ঠানটি। ধানের কুঁড়া থেকে তেল উৎপাদন ও বাজারজাত করে এমারেল্ডের স্পন্দন ব্র্যান্ড সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়। তবে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির মাত্র দুই বছর পরেই বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি মামলার কারণে ২০১৬ সালের ২৭ জুন থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এ মামলার আসামি হয়ে পালিয়ে যায় এমারেল্ডের মালিকপক্ষ।
সূত্র জানায়, এমারেল্ড অয়েলের উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মালিকপক্ষের পালিয়ে যাওয়ার খবরের সুযোগ নিতে মরিয়া হয়ে উঠে মিনোরি বাংলাদেশের মালিক মিয়া মামুন। ২০১৮ সাল থেকে শুরু হয় তাঁর এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার নিয়ে কারসাজির পরিকল্পনা। তখন থেকেই কম মূল্যে কিনতে থাকে এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার। এক্ষেত্রে নিজের ঘনিষ্ঠজনদের ব্যবহার করেন মিয়া মামুন। বিভিন্ন নামে-বেনামে এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার কেনা সম্পন্ন হলে শুরু করে কারসাজির দ্বিতীয় ধাপ।
দ্বিতীয় ধাপে কৌশলে জাপানের কোম্পানি মিনোরিকে যুক্ত করা হয় এমারেল্ড অয়েলের মালিকানায়। শেয়ারবাজারে এই তথ্যটি ছড়িয়ে কৃত্রিমভাবে বাড়ানো হয় কোম্পানিটির শেয়ারদর। কয়েক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারদর প্রায় ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে- মূলত শেয়ার কারসাজি করতেই এমারেল্ড অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানায় এসেছে মিয়া মামুন।
জানা গেছে, এমারেল্ড অয়েলের সম্পদ নিলামে বিক্রি করতে বেসিক ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে অর্থঋণ আদালত। এর প্রেক্ষিতে একবার নিলামও করে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকটি। তবে কেউ নিলামে অংশ নেয়নি। ফলে আইন অনুযায়ী পুণরায় নিলাম করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বেসিক ব্যাংক। এরপরও এমারেল্ডের সম্পদ বিক্রি না করতে পারলে তা ভোগদখল করবে ব্যাংকটি।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একটি কোম্পানির কোন সম্পদ নেই জানা সত্ত্বেও কোম্পানিটি কেনার একমাত্র উদ্দেশ্য হতে পারে শেয়ারদর নিয়ে কারসাজি করা। তাঁরা বলছেন, মিনোরি নিয়ে বিভিন্ন তথ্য ছড়িয়ে ইতিমধ্যেই কোম্পানিটির শেয়ারদর আকাশচুম্বী করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মিয়া মামুন কোটি কোটি টাকা হাঁতিয়ে নিয়েছে। ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। এদিকে এমারেল্ড অয়েলের ৩৮ শতাংশের বেশি শেয়ারের মালিক হলেও কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদে নাম নেই মিয়া মামুনের।
বেসিক ব্যাংক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থসংবাদকে বলেন, এমারেল্ড অয়েলের নতুন পরিচালনা পর্ষদকে ঋণ পরিশোধে অগ্রসর হওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়। বর্তমান পর্ষদ শর্ত দিয়েছে সুদ মওকুফ ও পুনঃতফসিলের আবেদন নিষ্পত্তি করতে। এমন অবস্থায় ব্যাংকের নিয়মাচার অনুযায়ী দলিলাদি সম্পাদন এবং সোলেনামার মাধ্যমে মামলা স্থগিতের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এক্ষেত্রে আইনি জটিলতা নিরসনের জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে একাধিক চিঠি এবং আলোচনার প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু এসব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বর্তমান পর্ষদ প্রয়োজনীয় সহায়তা না করায় এবং আইনী জটিলতা থাকায় ঋণটি পুনঃতফসিল করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করার পর নতুন করে ফু-ওয়াং ফুড নিয়ে খেলছে মিয়া মামুন চক্র। এক্ষেত্রেও জাপানি প্রতিষ্ঠান মিনোরি বাংলাদেশের বিনিয়োগের বিষয়টি সামনে আনা হয়েছে। সম্প্রতি ফু-ওয়াং ফুডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদেও যোগ দিয়েছেন আলোচিত মিয়া মামুন।
মিয়া মামুনের জন্ম চট্টগ্রামের নাসিরাবাদে। ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং ১৯৯৮ সালে সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০০ সালে জাপানে পাঁড়ি জমান মিনোরির এই উদ্যোক্তা। ২০০৮ সালে পড়াশোনা শেষ করে তিন বছর চাকরি করেন। পরবর্তীতে জাপানে গড়ে তোলেন মিনোরি নামের কোম্পানি।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী বাংলাদেশ: ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস দেশে চোখের যত্ন ও পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্য অলাভজনক প্রতিষ্ঠান অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ ও সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
অরবিস ইন্টারন্যাশনালের প্রেসিডেন্ট ও সিইও ডেরেক হডকির সাথে এক বৈঠকে তিনি বলেন, বাংলাদেশে চোখের যত্নের সেবা সম্প্রসারণ করতে হবে এবং এ লক্ষ্যে আরা অরবিস ইন্টারন্যাশনালের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হড, অরবিস ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ডেরেক বাংলাদেশ সফর করছেন। এখন চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ চলছে। ডেরেকে গত বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীতে অধ্যাপক ইউনূসের সাথে তার কার্যালয়ে দেখা করেন।
অরবিস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. মুনির আহমেদ প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাতের সময় ডেরেকের সাথে ছিলেন। অরবিস প্রেসিডেন্ট প্রধান উপদেষ্টাকে ফ্লাইং আই হাসপাতালের একটি মডেল সংস্করণ উপস্থাপন করেন। অধ্যাপক ইউনূস এটির ভূয়সী প্রশংসা করেন।
ডেরেক অরবিস ইন্টারন্যাশনালের কাজ সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবিহিত করেন। অরবিস ১৯৮২ সালে বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি-সংরক্ষণ কর্মসূচি শুরু করেছিল। অরবিস গত ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে কাজ করছে।
ডেরেক বলেন, এই সময়ের মধ্যে, অরবিস এ পর্যন্ত কমিউনিটি আউটরিচ ইভেন্টে ৭.৮ মিলিয়নেরও বেশি চোখের স্ক্রিনিং পরিচালনা করেছে, প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মধ্যে ৪.৫ মিলিয়নেরও বেশি ব্যক্তিকে ওষুধ ও অপটিক্যাল চিকিৎসা প্রদান করেছে, ২৫৮,০০০টিরও বেশি চোখের সার্জারি করেছে এবং বাংলাদেশের ৪০ হাজারের বেশি লোককে চোখের যত্ন নেওয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষিত করেছে।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশে চক্ষু স্বাস্থ্য খাতে অরবিসের অবদানের কথা স্বীকার করেন এবং ফ্লাইং আই হাসপাতালের প্রতি তার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অরবিস এখন বাংলাদেশে ১১তম প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
ড. ইউনূস বলেন, আমি অরবিসকে ভালোবাসি। আমি ফ্লাইং আই হসপিটালকে ভালোবাসি। তিনি উল্লেখ করেন যে, অরবিস বাংলাদেশে চোখের স্বাস্থ্য খাতে ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম।
ডেরেক বলেন, অরবিস ব্যক্তি, পরিবার ও জনগোষ্ঠীকে সাহায্য করার জন্য বিশ্বব্যাপী ২ শতাধিক দেশ ও ভূখণ্ডে দৃষ্টি সংরক্ষণের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
বিশ্বজুড়ে প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ সম্পূর্ণভাবে পরিহারযোগ্য অন্ধত্ব ও দৃষ্টিশক্তি হ্রাসের সমস্যা নিয়ে বসবাস করছে উল্লেখ করে ডেরেক বলেন, চার দশকেরও বেশি সময় ধরে অরবিস জোরদার ও টেকসই চোখের যত্ন ব্যবস্থা নিয়ে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।
অরবিস প্রেসিডেন্ট বলেন, অলাভজনক এ প্রতিষ্ঠানটি আফ্রিকা, এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকায় বিশেষ কর্মসূচি পরিচালনা করছে এবং প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তির প্রয়োগ করছে।
তিনি বলেন, গত চার দশক ধরে অরবিস শিশুদের চোখের যত্ন, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনাল সার্জারি, কর্নিয়ার রোগ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর গুরুত্ব দিয়ে বাংলাদেশের স্থানীয় অংশীদারদের দক্ষতা ও জ্ঞানের উন্নতিতে সাহায্য করেছে।
ডেরেক এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে আরও অবিহিত করেন, অরবিস সারা দেশে বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায় ৪২টি দৃষ্টি সেবা কেন্দ্র স্থাপন করে চোখের যত্নের সাথে জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করেছে; ১৭টি সেকেন্ডারি হাসপাতাল, চারটি তৃতীয় হাসপাতাল, দুটি ওয়েট ল্যাব, একটি মানসম্পন্ন রিসোর্স সেন্টার ও একটি ডিজিটাল ট্রেনিং হাব প্রতিষ্ঠা বা উন্নতিতে সহায়তা করেছে।
এছাড়া, অরবিস ৪০০টি কমিউনিটি ক্লিনিককে ভিশন স্ক্রিনিং টুলস দিয়ে সজ্জিত করেছে এবং শৈশব অন্ধত্বের একটি প্রধান কারণ, প্রিম্যাচুরিটি রেটিনোপ্যাথির স্ক্রিনিং ও ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্দেশিকা তৈরি করেছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
১৪ কোম্পানির লেনদেন বন্ধ মঙ্গলবার
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১৪ কোম্পানির শেয়ার লেনদেন রেকর্ড ডেট সংক্রান্ত কারণে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বন্ধ থাকবে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিগুলো হচ্ছে- কাসেম ইন্ডাস্ট্রিজ, রংপুর ফাউন্ড্রী, এগ্রিকালচারাল মার্কেটিং, ভিএফএস থ্রেড ডাইং, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, শেফার্ড ইন্ডাস্ট্রিজ, লিগ্যাসি ফুটওয়ার, সাফকো স্পিনিং, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং, সায়হাম টেক্সটাইল, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, শমরিতা হসপিটাল, বিএটিবিসি এবং বাটা সু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড।
রেকর্ড ডেট সংক্রান্ত কারণে কোম্পানিগুলোর শেয়ার লেনদেন এ দিন বন্ধ থাকবে। আর রেকর্ড ডেটের পর আগামী বুধবার (২০ নভেম্বর) কোম্পানিগুলো আবার লেনদেনে ফিরবে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই গণমিছিলে শিক্ষার্থীরা
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই গণমিছিল কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টায় সব স্তরের নাগরিক এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নতুন এই কর্মসূচির কথা জানান এই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল কাদের।
এতে বলা হয়, আজ সারা দেশের মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া-কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব প্রার্থনালয়ে প্রার্থনা ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র-জনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
দেশের সব স্তরের নাগরিকদের এই কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার গণসংগীত, পথনাটক, দেয়াললিখন, স্মৃতিচারণা ও বিক্ষোভ সমাবেশের মধ্য দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোজ’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঢাকাসহ অন্তত ১৬টি জেলা ও মহানগরে এসব কর্মসূচি পালনের খবর পাওয়া গেছে। এসব কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীর পাশাপাশি কোথাও কোথাও শিক্ষক ও আইনজীবীরাও অংশ নেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
দুই কোম্পানির লভ্যাংশ বিতরণ
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত দুই প্রতিষ্ঠান গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরে জন্য ঘোষিত লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে পাঠিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
কোম্পানিগুলো হলো- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি এবং মেঘনা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
সূত্র মতে, কোম্পানিগুলো সমাপ্ত হিসাববছরের নগদ লভ্যাংশ বিইএফটিএন সিস্টেমসের মাধ্যমে এবং বোনাস লভ্যাংশ বিও হিসাবের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের পাঠিয়েছে।
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটি ৫ শতাংশ নগদ এবং ৫ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। এছাড়া একই সময় মেঘনা ইন্স্যুরেন্স ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অন্যান্য
সংকট উত্তরণে বাংলাদেশের পাশে রয়েছে ইইউ: স্টেফানো সানিনো
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রবিষয়ক সেক্রেটারি জেনারেল স্টেফানো সানিনো বলেছেন, ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে এবং সংকট উত্তরণেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহযোগিতা করবে।
বুধবার বিকেলে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপিয়ান এক্সটার্নাল অ্যাকশন সার্ভিসে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি এ প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। ব্রাসেলসে নিযুক্ত বাংলাদেশর রাষ্ট্রদূত মাহবুব সালেহ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ২০১৮ সালে সরকারের কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত, সাম্প্রতিক সময়ে রিট ও শেষে সর্বোচ্চ আদালতের রায়সহ ঘটনাপ্রবাহ বিস্তারিত তুলে ধরেন।
হাছান মাহমুদ জানান, দুর্বৃত্তরা অসৎ উদ্দেশে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ব্যবহার করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করেছে। ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে, যা অনেক ক্ষেত্রে মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে। যারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।
সেক্রেটারি জেনারেল স্টেফানো সানিনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে হতাহত ও হামলার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টিকে স্বাগত জানান।
তিনি বলেন, আমি আশা করি স্বচ্ছ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনা হবে ও দ্রুত বাংলাদেশ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে জানান, সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত দায়িত্বশীল এবং আন্তরিক। তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন যাত্রায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবদান ও বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করে একসঙ্গে কাজ করার আশা প্রকাশ করেন।