অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা
খেলাপি ঋণ কমাতে ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
এসব খেলাপিদের বিভিন্নি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। তারা নতুন করে জমি বাড়ি গাড়ি কিনতে পারবেন না, এমনকি নতুন ব্যবসাও খুলতে পারবেন না।
বুধবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ডেপুটি গভর্নর জানান, ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সার্বিক ৮ শতাংশের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১০ ও ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সীমাতিরিক্ত, বেনামী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ১১ দফা রোডম্যাপ করা হয়েছে।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করবে। এই খেলাপিদের সমাজে অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি হবে। আগামীতে খেলাপিরা জমি কিনতে গেলে রেজিস্ট্রশন করতে পারবে না। নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানি চালু কিংবা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিঠি দেবে যেন তাদের কোনো সহযোগিতা না করে। গাড়ি-বাড়ি কিনতে পারবেন না। এমন অবস্থায় পড়তে কোনো ব্যবসায়ী চাইবে না। তাই তারা ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করবে।
বেনামে ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, বেনামে ঋণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাই কত আছে এর সঠিক তথ্য নেই। পত্র-পত্রিকায় বেনামে ঋণের তথ্য আসছে তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে যেহেতু লিখা হচ্ছে কিছু না কিছু আছে, এটি চিহ্নিত করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং আইন বজায় রেখে ও গত তিন বছরের শ্রেণিকৃত ঋণের তথ্য পর্যালোচনা করে ১১ দফার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে পরলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, দুর্বল ব্যাংক সংস্কারের বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলধন খেলাপি ঋণসহ চারটি সূচকের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হবে। সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে। গত ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে যারা দুর্বল তারা আগে থেকে প্রস্তুতি নেবে কার সঙ্গে একীভূত হবে। যদি কেউ এ ধরনের প্রস্তুতি না নেয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে একীভূত করে দেবে বলে জানান ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে শীর্ষ খেলাপির তালিকায় এমন অনেক গ্রাহক আছে, ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, পুরো তথ্যটা নেই তবে ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ ২ লাখ কোটি টাকার উপরে আছে। একজন পরিচালক ব্যবসায়ী হিসাবে ঋণ নিতেই পারেন যদি তিনি অন্য কোনো যোগাযোগের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি না করে।
অপর প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি গভর্নর জানান, ঋণের ২ শতাংশ দিয়ে বিশেষ সুবিধার আওতায় খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন ৭৯০ কোটি টাকার ডাউনপেমেন্ট আদায় হয়। ওই সময় তারল্য সমস্যা ছিল। যদি এ সুবিধা দেওয়া না হতো তাহলে এই টাকাও পেত না ব্যাংকগুলো।
>> রোডম্যাপে যা আছে
ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে নতুন রোড ম্যাপ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি খেলাপি ঋণ কমানো আরেকটি কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করা।
>> খেলাপি ঋণ কমাতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে
তফসিলি ব্যাংকের কোনো ঋণ দুই বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত থাকলে তা অবলোপন (রাইট অব) করা যাবে। তবে সেসব ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। বর্তমানে ৩ বছর মন্দ বা ক্ষতিজনিত মানে শ্রেণিকৃত থাকলে ঋণ অবলোপন করার সুযোগ রয়েছে। এর ফলে খেলাপির পরিমাণ ৪৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অবলোপন করা ঋণ আদায়ের জন্য দেশের প্রত্যেকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট গঠন করা হবে।
মন্দ ঋণ এবং রাইট অব করা সম্পদ বিক্রির জন্য বেসরকারি খাতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়ন করা হবে। এই আইনটি খসড়া করা হয়েছে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই আইনের ফলে ব্যাংকগুলো তাদের ব্যালেন্স শিট পরিষ্কার করতে পারবে এবং প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকের আয় খাতে দেখাতে পারবে।
মন্দ, অবলোপন, পুনর্গঠন করা ঋণ বা স্টিজ অ্যাসেটের বিপরীতে আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় না করে আয়খাতে দেখানো যাবে না। স্টিজ অ্যাসেট আদায় বা নিয়মিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যালেন্স শিটে দেখাতে পারবে না। কারণ এই অ্যাসেট ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণে পরিণত হতে পারে।
মহামারি করোনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ঋণ পরিশোধের জন্য দেওয়া বিভিন্ন বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না।
মেয়াদি ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সংজ্ঞা, এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট গাইডলাইন ও পরিপত্র সংশোধন অথবা হালনাগাদ করার মাধ্যমে আর্থিক খাত সংস্কারের শর্ত পূরণ হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বর্তমানে অর্থ ঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যেখানে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান লিগ্যাল টিম বা আইন বিভাগকে শক্তিশালী করা হলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
ব্যাংকের অনাদায়ী অর্থ দ্রুত আদায়ের লক্ষ্যে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর আওতায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ( এডিআর) পদ্ধতিতে আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া।
ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের লাগাম টানতে ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইনে সংজ্ঞায়িত ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য যেসব কর্মকর্তা কাজ করবে তাদের বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নিজস্ব মূল্যায়নের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করবে।
>> কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও ৬টি পদক্ষেপ
যোগ্য পরিচালক নির্বাচিত হলে ব্যাংকের কপোরেট সুশাসন নিশ্চিত হবে। যা ব্যাংকের সামগ্রিক ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করবে। তাই ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নিয়োগে বর্তমান ফিট অ্যান্ড প্রোপার টেস্ট প্রক্রিয়া এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা সংশোধন ও হালনাগাদ করা। ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, সম্মানী নির্ধারণ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগের বাছাই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে যা আগামীতে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তাদের নিয়োগে কর্ম মূল্যায়নে পারফরমেন্স ইনডিকেটর যুক্ত করা।
কর্পোরেট সুশাসনের মান উন্নত এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে একক গ্রাহক ঋণসীমা (সিঙ্গেল ব্রোয়ার এক্সপোজার লিমিট) কোনোক্রমেই অতিক্রম না করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দূর করতে, পরিচালনা পর্ষদ শক্তিশালী করতে এবং প্রশাসনিক ব্যয় কমাতে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংক অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হবে। তবে শর্ত থাকবে একীভূত করার পরবর্তী তিন বছর কোনো কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
ব্যাংকগুলোতে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মৌলিক প্রশিক্ষণ এবং ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা পাস বাধ্যতামূলক করা হবে।
ব্যাংকিং সেক্টরে দক্ষ কর্মকর্তার অভাব পূরণ হবে এবং সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কলমানি সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো
ব্যাংক খাতে কলমানি সুদহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য ধার নেওয়া টাকার গড় সুদহার উঠেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে। ১৩ নভেম্বর থেকে এই সুদহার ১০ শতাংশ বা তার ওপরে রয়েছে। কলমানি বাজারে সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে সুদহার ১০ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। আবার চার দিন ও সাত দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার আরও বেশি। গতকাল চার দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল সোয়া ১২ শতাংশ। আর সাত দিনের ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তবে কলমানিতে বিভিন্ন মেয়াদে ধারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা লেনদেন হয় এক দিনের ধার হিসেবে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সাল থেকে কলমানি বাজারের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের পর গতকালই প্রথম কলমানিতে এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিন এক দিনের জন্য কলমানিতে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, যার সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১১ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে কলমানিতে গড় সুদহার প্রথম ১০ শতাংশে উন্নীত হয় ১৩ নভেম্বর। ওই দিন এই বাজারে এক দিনের জন্য ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে কিছু ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকটে রয়েছে। এসব ব্যাংকের সংকট এতটাই প্রকট যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আবার সরকারি ট্রেজারি বিল–বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক বেশি লাভের আশায় কলমানির বদলে বিল–বন্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে কলমানিতে টাকা ধার দেওয়া বা এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যা নিরসনে বিআইএ’র সভা
দেশের নন-লাইফ বিমা খাতের কোম্পানিগুলোর সমস্যা নিরসনে করণীয় ঠিক করতে মতবিনিময় সভা করেছে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে অ্যাসোসিয়েশনের কনফারেস রুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিভিন্ন নন-লাইফ বিমা কোম্পানির ৪২ জন মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইএ’র নন-লাইফ টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক ও রুপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির উপদেষ্টা পি কে রায়।
অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নাসির উদ্দিন আহমেদ (পাভেল) ও প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট হোসেন আখতার সভায় বিশেষভাবে উপস্থিত ছিলেন। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সৈদয় বদরুল আলম, সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান, মো. ইমাম শাহীন।
সভায় মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তারা দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে নন-লাইফ বিমা কোম্পানির সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করেন এবং এসব সমস্যা নিরসনের জন্য নিজস্ব মতামত ব্যক্ত করেন। বিআইএ’র প্রেসিডেন্ট, প্রথম ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও নির্বাহী কমিটির সদস্যরা মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মুডিসের রেটিংয়ে সঠিক চিত্র উঠে আসেনি দাবি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
ঋণমান নির্ণয়কারী মার্কিন এজেন্সি মুডিস রেটিংয়ে বাংলাদেশের আর্থ-রাজনৈতিক অবস্থার সঠিক চিত্র উঠে আসেনি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমানোর মাত্র দুদিনের মাথায় ছটি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণমান কমানোর পর বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) রাতে এমন দাবি করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এতে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি একটি বড় রূপান্তরের মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। সরকার এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। এর ইতিবাচক ফল পেতে আরও সময় লাগবে। দেশি-বিদেশি অংশীদারদের সমর্থন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি বাড়াবে।
এর আগে, গত বুধবার (২১ নভেম্বর) ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক ও প্রিমিয়ার ব্যাংকের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে মুডিস।
একই সময়ে মুডিস ছটি ব্যাংকের এলটি ডিপোজিট বা দীর্ঘমেয়াদি আমানতের রেটিং পূর্বাভাস পরিবর্তন করে স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক করেছে।
এমআই