অর্থনীতি
খেলাপি ঋণ কমাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা

খেলাপি ঋণ কমাতে ১১ দফা রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে।
এসব খেলাপিদের বিভিন্নি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। তারা নতুন করে জমি বাড়ি গাড়ি কিনতে পারবেন না, এমনকি নতুন ব্যবসাও খুলতে পারবেন না।
বুধবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ডেপুটি গভর্নর জানান, ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সার্বিক ৮ শতাংশের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১০ ও ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সীমাতিরিক্ত, বেনামী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ১১ দফা রোডম্যাপ করা হয়েছে।
ডেপুটি গভর্নর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। কোনো গ্রাহক ঋণ নিয়মিত পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করবে। এই খেলাপিদের সমাজে অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি হবে। আগামীতে খেলাপিরা জমি কিনতে গেলে রেজিস্ট্রশন করতে পারবে না। নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানি চালু কিংবা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিঠি দেবে যেন তাদের কোনো সহযোগিতা না করে। গাড়ি-বাড়ি কিনতে পারবেন না। এমন অবস্থায় পড়তে কোনো ব্যবসায়ী চাইবে না। তাই তারা ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করবে।
বেনামে ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, বেনামে ঋণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাই কত আছে এর সঠিক তথ্য নেই। পত্র-পত্রিকায় বেনামে ঋণের তথ্য আসছে তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে যেহেতু লিখা হচ্ছে কিছু না কিছু আছে, এটি চিহ্নিত করা হবে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং আইন বজায় রেখে ও গত তিন বছরের শ্রেণিকৃত ঋণের তথ্য পর্যালোচনা করে ১১ দফার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন করতে পরলে খেলাপি ঋণ কমে আসবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি আরও বলেন, দুর্বল ব্যাংক সংস্কারের বড় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মূলধন খেলাপি ঋণসহ চারটি সূচকের মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করা হবে। সবল কোনো ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ব্যাংক একীভূত হবে। গত ব্যাংকার্স সভায় ব্যাংকগুলোকে বলে দেওয়া হয়েছে যারা দুর্বল তারা আগে থেকে প্রস্তুতি নেবে কার সঙ্গে একীভূত হবে। যদি কেউ এ ধরনের প্রস্তুতি না নেয় তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে একীভূত করে দেবে বলে জানান ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের।
এক ব্যাংকের পরিচালক অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে শীর্ষ খেলাপির তালিকায় এমন অনেক গ্রাহক আছে, ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, পুরো তথ্যটা নেই তবে ব্যাংকের পরিচালকদের ঋণ ২ লাখ কোটি টাকার উপরে আছে। একজন পরিচালক ব্যবসায়ী হিসাবে ঋণ নিতেই পারেন যদি তিনি অন্য কোনো যোগাযোগের মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি না করে।
অপর প্রশ্নের জবাবে ডেপুটি গভর্নর জানান, ঋণের ২ শতাংশ দিয়ে বিশেষ সুবিধার আওতায় খেলাপি ঋণ নিয়মিত করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন ৭৯০ কোটি টাকার ডাউনপেমেন্ট আদায় হয়। ওই সময় তারল্য সমস্যা ছিল। যদি এ সুবিধা দেওয়া না হতো তাহলে এই টাকাও পেত না ব্যাংকগুলো।
>> রোডম্যাপে যা আছে
ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার ৮ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে নতুন রোড ম্যাপ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি খেলাপি ঋণ কমানো আরেকটি কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করা।
>> খেলাপি ঋণ কমাতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে
তফসিলি ব্যাংকের কোনো ঋণ দুই বছর মন্দ বা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত থাকলে তা অবলোপন (রাইট অব) করা যাবে। তবে সেসব ঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হবে। বর্তমানে ৩ বছর মন্দ বা ক্ষতিজনিত মানে শ্রেণিকৃত থাকলে ঋণ অবলোপন করার সুযোগ রয়েছে। এর ফলে খেলাপির পরিমাণ ৪৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বা ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ কমবে বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অবলোপন করা ঋণ আদায়ের জন্য দেশের প্রত্যেকটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট গঠন করা হবে।
মন্দ ঋণ এবং রাইট অব করা সম্পদ বিক্রির জন্য বেসরকারি খাতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিষ্ঠায় আইন প্রণয়ন করা হবে। এই আইনটি খসড়া করা হয়েছে, যা অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই আইনের ফলে ব্যাংকগুলো তাদের ব্যালেন্স শিট পরিষ্কার করতে পারবে এবং প্রাপ্ত অর্থ ব্যাংকের আয় খাতে দেখাতে পারবে।
মন্দ, অবলোপন, পুনর্গঠন করা ঋণ বা স্টিজ অ্যাসেটের বিপরীতে আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় না করে আয়খাতে দেখানো যাবে না। স্টিজ অ্যাসেট আদায় বা নিয়মিত না হওয়া পর্যন্ত ব্যালেন্স শিটে দেখাতে পারবে না। কারণ এই অ্যাসেট ভবিষ্যতে খেলাপি ঋণে পরিণত হতে পারে।
মহামারি করোনা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে ঋণ পরিশোধের জন্য দেওয়া বিভিন্ন বিশেষ সুবিধার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না।
মেয়াদি ঋণের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সংজ্ঞা, এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট গাইডলাইন ও পরিপত্র সংশোধন অথবা হালনাগাদ করার মাধ্যমে আর্থিক খাত সংস্কারের শর্ত পূরণ হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, বর্তমানে অর্থ ঋণ আদালতে ৭২ হাজার ৫৪৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। যেখানে অনাদায়ী অর্থের পরিমাণ ১ লাখ ৭৮ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোর বিদ্যমান লিগ্যাল টিম বা আইন বিভাগকে শক্তিশালী করা হলে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হবে বলে মনে করছে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
ব্যাংকের অনাদায়ী অর্থ দ্রুত আদায়ের লক্ষ্যে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর আওতায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ( এডিআর) পদ্ধতিতে আদালতের বাইরে মামলা নিষ্পত্তির জন্য ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া।
ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের লাগাম টানতে ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইনে সংজ্ঞায়িত ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা।
খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য যেসব কর্মকর্তা কাজ করবে তাদের বিশেষ ভাতা দেওয়া হবে।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর নিজস্ব মূল্যায়নের পাশাপাশি তালিকাভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক করবে।
>> কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আরও ৬টি পদক্ষেপ
যোগ্য পরিচালক নির্বাচিত হলে ব্যাংকের কপোরেট সুশাসন নিশ্চিত হবে। যা ব্যাংকের সামগ্রিক ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করবে। তাই ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার পরিচালক নিয়োগে বর্তমান ফিট অ্যান্ড প্রোপার টেস্ট প্রক্রিয়া এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা সংশোধন ও হালনাগাদ করা। ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, সম্মানী নির্ধারণ এবং দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কিত নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগের বাছাই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে যা আগামীতে কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। তাদের নিয়োগে কর্ম মূল্যায়নে পারফরমেন্স ইনডিকেটর যুক্ত করা।
কর্পোরেট সুশাসনের মান উন্নত এবং খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমাতে একক গ্রাহক ঋণসীমা (সিঙ্গেল ব্রোয়ার এক্সপোজার লিমিট) কোনোক্রমেই অতিক্রম না করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি দূর করতে, পরিচালনা পর্ষদ শক্তিশালী করতে এবং প্রশাসনিক ব্যয় কমাতে কয়েকটি দুর্বল ব্যাংক অপেক্ষাকৃত সবল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হবে। তবে শর্ত থাকবে একীভূত করার পরবর্তী তিন বছর কোনো কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না।
ব্যাংকগুলোতে সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে মৌলিক প্রশিক্ষণ এবং ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষা পাস বাধ্যতামূলক করা হবে।
ব্যাংকিং সেক্টরে দক্ষ কর্মকর্তার অভাব পূরণ হবে এবং সার্বিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে।

অর্থনীতি
১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম কমলো ৩৯ টাকা

ভোক্তাপর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। জুলাই মাসের জন্য ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ১ হাজার ৪০৩ থেকে ৩৯ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৩৬৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কমেছে অটোগ্যাসের দামও। প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম এক টাকা ৮৪ পয়সা কমিয়ে ৬২ টাকা ৪৬ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। জুন মাসে প্রতি লিটার অটোগ্যাসের দাম ৬৪ টাকা ৩০ পয়সা ছিল।
বুধবার (২ জুলাই) নতুন এ মূল্যের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ। নতুন এ দাম আজ সন্ধ্যা থেকে কার্যকর হবে।
বিইআরসি চেয়ারম্যানের ঘোষণা অনুযায়ী, সাড়ে ৫ কেজির বোতলজাত এলপিজির দাম ৬২৫ টাকা, সাড়ে ১২ কেজির দাম এক হাজার ৪২১, ১৫ কেজির দাম এক হাজার ৭০৫, ১৬ কেজির দাম এক হাজার ৮১৮, ১৮ কেজির দাম দুই হাজার ৪৬, ২০ কেজির দাম দুই হাজার ২৭৩, ২২ কেজির দাম আড়াই হাজার, ৩০ কেজির দাম তিন হাজার ৪০৯, ৩৩ কেজির দাম তিন হাজার ৭৫০, ৩৫ কেজির দাম তিন হাজার ৯৭৭ এবং ৪৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৫ হাজার ১১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থনীতি
এসএমই ফাউন্ডেশন–ইআরএফ অ্যাওয়ার্ড পেলেন গিয়াস উদ্দিন

এসএমই পণ্য বাজারজাতকরণের চ্যালেঞ্জ ও তা দূর করার উপায় নিয়ে প্রতিবেদন করে ‘এসএমই ফাউন্ডেশন–ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেয়েছেন বাণিজ্য প্রতিদিনের গিয়াস উদ্দিন।
বুধবার (০২ জুলাই) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গিয়াস উদ্দিনের হাতে ক্রেস্ট ও সম্মাননার চেক তুলে দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. মুসফিকুর রহমান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এ বছর ‘এসএমই ফাউন্ডেশন-ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’-এ সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন মাধ্যম থেকে মোট ২১ জন সাংবাদিককে পুরস্কৃত করা হয়েছে। এর মধ্যে ইআরএফ সদস্য ছাড়াও সদস্য বহির্ভূত সাংবাদিকেরাও পুরস্কার পেয়েছেন।
কাফি
অর্থনীতি
ব্যাংক ও এসএমই খাতে সংস্কার আসছে ডিসেম্বরের মধ্যেই: অর্থ উপদেষ্টা

আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ফেরানো এবং ব্যাংক ও এসএমই খাতকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে চলমান সংস্কার কাজ আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, দুর্বল ব্যাংকগুলোর কাঠামোগত দুর্বলতা কাটিয়ে তোলার পাশাপাশি গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে সংস্কার কার্যক্রমে গতি আনা হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) রাজধানীর পুরান পল্টনে ‘এসএমই ফাউন্ডেশন-ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরে বড় ধরনের সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে। দুর্বল ব্যাংকগুলো নিয়ে কাজ চলছে। গ্রাহকদের ডিপোজিটের টাকা ফেরত দেওয়ার নিশ্চয়তা নিশ্চিত করতে হবে।
এসএমই খাতে অর্থায়নের জটিলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের ঋণ পেতে এখনও অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। অথচ তাদের ঋণ পরিশোধের হার অনেক ভালো। ব্যাংকগুলো এখানে সহযোগিতা করতে আগ্রহী নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ড. সালেহউদ্দিন বলেন, এসএমই খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। বর্তমান প্রযুক্তির যুগে হাতুড়ি-বাটালের দিন উঠে গেছে। উদ্যোক্তাদেরও এই বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও নীতিনির্ধারকদের এই খাতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এসএমই প্রকল্পে নারীদের অংশগ্রহণ কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে উপদেষ্টা বলেন, নারীরা শুধু দক্ষই নয়, তারা অনেক সময় বেটার ম্যানেজও করে। তাই নারীদের আরও বেশি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন শুধু বক্তৃতায় নয়, বাস্তব কাজের মধ্য দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে।
এসএমই উদ্যোক্তাদের সঠিক তথ্য সংরক্ষণে একটি সমন্বিত ও ডিজিটাল ডেটাবেজ গঠনের ওপর জোর দেন ড. সালেহউদ্দিন। তিনি বলেন, হার্ডকপিতে থাকলে হবে না। সবকিছুই ডিজিটালাইজড করতে হবে। সব ক্ষেত্রেই এখন প্রায়োরিটি ডিজিটাল সিস্টেম হওয়া উচিত।
বর্তমান অর্থনৈতিক কাঠামোর অসমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে উপদেষ্টা বলেন, এখন ব্যাংকের স্ট্রাকচারে ঝামেলা চলছে। তারপরও ৬০-৬২ হাজার কোটি টাকা আমরা এনার্জি খাতে দিয়ে দিচ্ছি। সেখানে এসএমই যেন কোনো বিষয়ই না। এটা পরিবর্তন করতে হবে।
সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার এবং কর ব্যবস্থায় সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা রাখতে হবে। নেগেটিভ রিপোর্ট আমাদের বেকায়দায় ফেলে দেয়। এনবিআরের ক্ষেত্রেও অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। অর্থের অপচয় রোধ করতেই হবে।
রেমিটেন্স প্রবাহকে ইতিবাচক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হলে দক্ষ জনশক্তি তৈরি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ করতে হবে।
এ বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল থেকে মোট ২১ জন রিপোর্টারকে পুরস্কার দিচ্ছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। নারীর ক্ষমতায়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের গুরুত্ব নিয়ে প্রতিবেদন করে ‘এসএমই ফাউন্ডেশন–ইআরএফ মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেয়েছেন ঢাকা পোস্টের উপপ্রধান প্রতিবেদক শফিকুল ইসলাম।
কাফি
অর্থনীতি
আদানির বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ

ভারতের আদানি পাওয়ার থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বকেয়া টাকার ৪৩৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদান করেছে বাংলাদেশ। ফলে বহন খরচ এবং বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি সম্পর্কিত সমস্যাসহ সব বকেয়া পরিশোধ হয়ে গেল।
পিটিআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত জুনে ভারতের এ কোম্পানিকে ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ, যা এককালীন সর্বোচ্চ পরিশোধ।
নয়াদিল্লির সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআই লিখেছে, এর মধ্য দিয়ে আগের বকেয়া, বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যয় এবং বিদ্যুৎ ক্রয়চুক্তি সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয়ের মীমাংসা হয়ে গেছে। এখন বাংলাদেশের আর কোনো বকেয়া নেই, বরং দুই মাসের বিলের সমপরিমাণ এলসি (ঋণপত্র) এবং সব বকেয়ার জন্য সার্বভৌম গ্যারান্টিও বাংলাদেশ দিয়ে রেখেছে।
পাওনা সংক্রান্ত ঝামেলা না থাকায় আদানি পাওয়ারকে তাদের ঝাড়খণ্ড কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকেই নির্ধারিত হারে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)।
ভারতের আরেক সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, গত তিন-চার মাস ধরে ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার করে পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ।
আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর চুক্তি করে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগ। ২৫ বছর মেয়াদি ওই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিতে ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে আদানি পাওয়ার।
কাফি
অর্থনীতি
এলপি গ্যাসের দাম কমবে নাকি বাড়বে, জানা যাবে আজ

জুলাই মাসে এলপিজির দাম বাড়বে নাকি কমবে, তা জানা যাবে আজ বুধবার (২ জুলাই)। আজ এক মাসের জন্য এলপিজির নতুন দাম ঘোষণা করা হবে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, জুলাই মাসের জন্য ভোক্তা পর্যায়ে বেসরকারি এলপিজির মূল্য সমন্বয় সম্পর্কে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের নির্দেশনা বুধবার বিকাল ৩টায় ঘোষণা করা হবে। এ নির্দেশনা জারি করা হবে সৌদি আরামকো ঘোষিত জুলাই (২০২৫) মাসের সৌদি সিপি অনুযায়ী।
এর আগে, গত ২ জুন সবশেষ সমন্বয় করা হয় এলপি গ্যাসের দাম। সে সময় ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম ২৮ টাকা কমিয়ে এক হাজার ৪০৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়।
বুধবার এলপিজির পাশাপাশি ঘোষণা করা হবে অটোগ্যাসের দামও। সবশেষ (২ জুন) সমন্বয় করা হয় অটোগ্যাসের দাম। সে সময় ভোক্তা পর্যায়ে ১ টাকা ২৭ পয়সা কমিয়ে অটোগ্যাসের মূসকসহ দাম প্রতি লিটার ৬৪ টাকা ৩০ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালে এলপিজি ও অটোগ্যাসের দাম সাতবার বেড়েছে এবং চারবার কমেছে, আর এক দফায় ছিল স্থির। বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে দাম বাড়ানো হয়। অন্যদিকে, এপ্রিল, মে, জুন ও নভেম্বর মাসে দাম কমানো হয়। ডিসেম্বরে কোনো পরিবর্তন আসেনি।