অর্থনীতি
ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির চেয়ে পরিশোধ বেশি
উচ্চ মূল্যস্ফীতি চলছে বিশ্বব্যাপী। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দর বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে ক্রয়ক্ষমতা হারিয়েছেন অনেকেই। সারাবিশ্বে চলা এ সংকটের ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। গত ডিসেম্বরে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি কমে ১০ শতাংশের নিচে আসলেও এসময়ে বেড়েছে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি। এসব বিবেচনায় এখন বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। ফলে সংকট থাকলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে না সরকার। এতে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেওয়া কমলেও আগের ঋণ ও সুদ পরিশোধের চাপ থেকেই যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন বলছে, সদস্য বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ২০৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ঋণাত্মক। অর্থাৎ সঞ্চয়পত্রের ঋণ ও সুদ পরিশোধের চেয়ে এই সময়ে কম বিক্রি হয়েছে। অথচ চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্টে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বেড়েছিল। প্রথম মাস জুলাইয়ে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। পরের মাস আগস্টে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৩১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে নিট বিক্রি ফের ঋণাত্মক ধারায় ফেরে। মাসটিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকার যে পরিমাণ ধার করেছিল, তার চেয়ে ১৪৮ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে হয়েছে সুদ পরিশোধে।
তথ্য বলছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ছয় (জুলাই-ডিসেম্বর) মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা ঋণাত্মক। অর্থাৎ আলোচিত সময়ে যে পরিমাণ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে বেশি আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল বাবদ পরিশোধ করেছে সরকার। অতিরিক্ত অর্থ কোষাগার অথবা ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে হয়েছে।
অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে ধরা হয়। চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে কোনো ‘ঋণ’ নিতে পারেনি সরকার।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, সঞ্চয়পত্রে সুদহার কমানোসহ কড়াকড়ি আরোপের কারণে সাধারণ মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে গেছে। এ কারণে নিট বিক্রি নেগেটিভ হয়েছে। অপরদিকে সরকারকে কোষাগার বা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সুদ-আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে ভিন্ন কথা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আইএমএফ শর্ত দিয়েছে ২০২৬ সালের মধ্যে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ এক-চতুর্থাংশ কমিয়ে আনা। তাছাড়া সরকারও অধিক সুদে ঋণ নিতে চাচ্ছে না। এ কারণে এখন নতুন ঋণ না নিয়ে আগের ঋণ পরিশোধে মনোযোাগী সরকার।
যেসব শর্ত সঞ্চয়পত্রে
বর্তমানে ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে আয়কর রিটার্নের সনদ দাখিল বাধ্যতামূলক। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে সঞ্চয়পত্রের সুদহার ২ শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনা হয়। তার আগে ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে কালো টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে ক্রেতার তথ্যের একটি ডাটাবেজ তৈরি হয়।
দেশে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। এছাড়া পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ৭৬, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে ১১ দশমিক ২৮, তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের সুদহার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে কয়েক দফায় সঞ্চয়পত্রের সুদহার কমানো হলেও এখনো ব্যাংকের তুলনায় বেশি।
গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। সংশোধিত বাজেটে লক্ষ্য কমিয়ে ২০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। তবে অর্থবছর শেষে সঞ্চয়পত্র থেকে এক টাকাও ঋণ পায়নি সরকার। বিপরীতে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের সুদ-আসল পরিশোধ এবং ভাঙানো বাবদ ৬ হাজার ৬৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে সরকার।
২০১৭-১৮ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকার ঋণ নিয়েছিল সরকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে নিট ঋণের পরিমাণ বেড়ে ৪৯ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা হয়। ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার নিট ঋণ নেয় ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছর সঞ্চয়পত্র থেকে নেওয়া হয় ৪১ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা। এরপর ২০২১-২২ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ১৯ হাজার ৯১৬ কোটি টাকার নিট ঋণ নিয়েছিল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
পতনের পর স্বর্ণের দামে বড় লাফ
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। বড় উত্থানের পর যেমন বড় দরপতন হয়েছে, তেমনি বড় দরপতনের পর বড় উত্থানের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববাজারে সোনার দামের অস্থিরতার মধ্যে দেশের বাজারেও দামি এই ধাতুটির দামে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়া বা কমার ঘটনা ঘটছে। চলতি নভেম্বর মাসে ৬ বার দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।
বিশ্ববাজারে গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সোনার দামে বড় পতন হয়। পাঁচ কার্যদিবসে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ১২২ ডলার কমে যায়। এমন পতনের পর গত সপ্তাহে সোনার দামে বড় উত্থান হয়েছে। প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ ডলারের বেশি। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ১৮ হাজার টাকার ওপরে।
বিশ্ববাজারে বড় ধরনের উত্থান হওয়ায় বাংলাদেশেও গত সপ্তাহে সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। তবে বিশ্ববাজারের তুলনায় বাংলাদেশে সোনার দাম বাড়ানোর হার বেশ কম। ফলে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম আবার বাড়তে পারে। গত সপ্তাহে দুই দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা। অবশ্য গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে দুই দফায় ভালো মানের সোনার দাম ভরিতে ৪ হাজার ১৯৯ টাকা কমানো হয়।
তথ্য পর্যালোচায় দেখা যায়, বিশ্ববাজারে দফায় দফায় দাম বেড়ে গত ৩০ অক্টোবর প্রতি আউন্স সোনার দাম রেকর্ড ২ হাজার ৭৮৯ ডলারে ওঠে। বিশ্ববাজারে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ায় বাংলাদেশে ২০, ২৩ ও ৩১ অক্টোবর টানা তিন দফা সোনার দাম বাড়ানো হয়। ৩১ অক্টোবর সব থেকে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয় এক হাজার ৫৭৫ টাকা। এতে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম দাঁড়ায় এক লাখ ৪৩ হাজার ৫২৬ টাকা। দেশের বাজারে এটিই সোনার সর্বোচ্চ দাম।
বিশ্ববাজারে রেকর্ড দাম হওয়ার পরদিন থেকেই অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর থেকে পতনের মধ্যে পড়ে সোনা। কয়েক দফায় দাম কমে ১৪ নভেম্বর প্রতি আউন্স সোনার দাম ২ হাজার ৫৪৭ দশমিক ১০ ডলারে নেমে যায়। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে যেমন সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে, তেমনই বিশ্ববাজারে দরপতন দেখা দিলে দেশের বাজারেও সোনার দাম কমানো হয়। ৫ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে চার দফায় দেশের বাজারে ভালো মানের প্রতি ভরি সোনার দাম কমানো হয় ৯ হাজার ১৭ টাকা।
অবশ্য এই বড় দরপতনের পর বিশ্ববাজারে সোনার দামে আবার বড় উত্থান প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত সপ্তাহে লেনদেন শুরুর সময় প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ২ হাজার ৫৬২ দশমিক ৫৪ ডলার। সপ্তাহ শেষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭১৫ দশমিক ৮৫ ডলারে। অর্থাৎ গত সপ্তাহে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ১৫৩ দশমিক ৩১ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৯৭ টাকা (এক ডলার ১২০ টাকা ধরে)।
বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহের ২০ ও ২২ নভেম্বর দুই দফায় দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ২০ নভেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়ানো হয়। এছাড়া ২২ নভেম্বর বাড়ানো হয় এক হাজার ৯৯৪ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে দেশের বাজারে ভালো মানের এক ভরি সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ হাজার ৯৩৪ টাকা।
বাজুসের এক সদস্য বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। হুটহাট দাম বাড়ছে। বাজার পরিস্থিতি অনুমান করা খুব কঠিন হয়ে গেছে। গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দামে ব্যাপক উত্থান হয়েছে। তার আগে বড় দরপতন হয়। বিশ্ববাজারে এমন অস্থিরতা থাকায় দেশের বাজারেও কয়েক দফা সোনার দাম বাড়া-কমার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বিশ্ববাজারের যে চিত্র দেখা গেছে, তাতে দেশের বাজারে যে কোনো সময় সোনার দাম বাড়তে পারে। কারণ, গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
তিন মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ৩১ শতাংশ
দেশে সঞ্চয়পত্র বিক্রি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস জুলাই-সেপ্টেম্বরে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে বিক্রি হয়েছিল ২১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা বা ৩১ শতাংশ কমেছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটিতে জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি, আসল পরিশোধ ও সর্বশেষ স্থিতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাশাপাশি সঞ্চয়পত্রের নগদায়নও (ভাঙানো) কমে গেছে। এ কারণে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। এ বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২২ হাজার ৯২১ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে সঞ্চয়পত্রের আসল পরিশোধ বাবদ সরকারের খরচ কমেছে ১৬ হাজার ২৬২ কোটি টাকা বা প্রায় ৭১ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত জুলাই-আগস্টে নতুন করে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ১৪ হাজার ৯৯২ কোটি টাকার। তার বিপরীতে সঞ্চয়পত্রের আসল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ৬ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এই তিন মাসে সঞ্চয়পত্রের প্রকৃত বিক্রি দাঁড়ায় ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকায়। বিক্রি কমে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতিও কমেছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের নিট স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। এর মানে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের স্থিতি এক বছরে ১১ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা বা সোয়া ৩ শতাংশের মতো কমেছে।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দেওয়ার নির্দেশ
কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) মমিন উদ্দিন একটি অফিস আদেশ জারি করে কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তিনি জানান, রাজউকের ৯ম গ্রেডে ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের এবং অবশিষ্ট গ্রেড ১০ থেকে অন্য গ্রেডের কর্মকর্তাদের সম্পদ বিবরণী আগামী ৩০ নভেম্বর মধ্যে চেয়ারম্যান দপ্তরে দাখিল করতে হবে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ
একটি বিটকয়েনের দাম ১ লাখ ছুইছুই করছে। আজ শুক্রবার বিটকয়েনের দাম ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে ছাড়িয়েছে। এই দাম বিটকয়েনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই বিটকয়েনের দাম বাড়তে থাকে। আর্থিক বাজারের প্রত্যাশা, ট্রাম্প প্রশাসন ক্রিপ্টোবান্ধব হবে। খবর রয়টার্সের
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি বলছে, চলতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের দাম দিগুণের বেশি হয়েছে। গত ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর বিটকয়েনের দাম ২৫ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। গত দুই সপ্তাহের মধ্যে এটি বেড়েছে ৪৫ শতাংশের বেশি। আজ শুক্রবার একটি বিটকয়েন বিক্রি হয়েছে ৯৯ হাজার ৩৮০ ডলারে।
মূল্যবৃদ্ধির দৌড়ে বিটকয়েন পাল্লা দিচ্ছে ইলন মাস্কের টেসলার সঙ্গে। ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে টেসলার শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ। বিনিয়োগকারীরা মনে করেছেন, ট্রাম্পের বন্ধুরা এবং যেসব বিষয়ে তার আগ্রহ আছে, সেসব বিষয় তিনি ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় ভালো করবে।
সিডনির এটিএফএক্স গ্লোবালের প্রধান বাজার বিশ্লেষক নিক টুইডেল বলেন, ‘বিটকয়েনের দাম বাড়ছে ট্রাম্পের জন্যই। কারণ, তিনি এই শিল্পের খুবই সমর্থনকারী। এর মানে হলো, ক্রিপ্টোর মজুত ও মুদ্রা উভয়েইর চাহিদা আরও বাড়বে। নির্বাচনের ফল আসার পর বিটকয়েনের দাম প্রায় রেকর্ড পর্যায়ে ওঠার মানে হলো, এই মুদ্রার ওপরে কেবল খোলা আকাশ রয়েছে।’
গত ১০ নভেম্বর আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে ৮০,০০০ ডলারে পৌঁছে যায়। বিশেষজ্ঞরা রুশ বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছেন, বর্তমান বৃদ্ধির পর্যায়ে থাকলে বিটকয়েনের দাম ৩ লাখ ডলারে পৌঁছানোও অবাক করার মতো কিছু হবে না।
ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তার মাধ্যমে এর দাম ওঠা-নামা করে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে বিটকয়েন কারেন্সি মার্কেটে প্রকাশ করা হয়।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকে কলমানি সুদহার ১০ শতাংশ ছাড়ালো
ব্যাংক খাতে কলমানি সুদহার সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল বৃহস্পতিবার কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য ধার নেওয়া টাকার গড় সুদহার উঠেছে ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে। ১৩ নভেম্বর থেকে এই সুদহার ১০ শতাংশ বা তার ওপরে রয়েছে। কলমানি বাজারে সুদহার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এর আগে সাম্প্রতিক সময়ে কলমানি বাজারে এক দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে সুদহার ১০ শতাংশের ওপরে ওঠেনি। আবার চার দিন ও সাত দিনের জন্য টাকা ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার আরও বেশি। গতকাল চার দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ছিল সোয়া ১২ শতাংশ। আর সাত দিনের ধারের ক্ষেত্রে এই সুদহার ছিল ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ। তবে কলমানিতে বিভিন্ন মেয়াদে ধারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি টাকা লেনদেন হয় এক দিনের ধার হিসেবে।
কলমানি হচ্ছে সরকারি–বেসরকারি ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়ার একটি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় যেসব ব্যাংকের হাতে নগদ টাকার সংকট থাকে তারা তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে যেসব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত তারল্য বা অর্থ থাকে তাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে। এ জন্য সুদ দিতে হয়। সুদহার নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে টাকা ধার দেওয়া–নেওয়া করলেও দিন শেষে লেনদেন ও সুদের তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক কলমানি বাজারের প্রতিদিনের লেনদেন ও সুদের তথ্য প্রকাশ করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ২০১৬ সাল থেকে কলমানি বাজারের তথ্য রয়েছে। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৬ সালের পর গতকালই প্রথম কলমানিতে এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে গড় সুদহার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এদিন এক দিনের জন্য কলমানিতে ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, যার সর্বোচ্চ সুদহার ছিল ১১ শতাংশ। আর সর্বনিম্ন সুদহার ছিল ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। এক দিনের ধারের ক্ষেত্রে কলমানিতে গড় সুদহার প্রথম ১০ শতাংশে উন্নীত হয় ১৩ নভেম্বর। ওই দিন এই বাজারে এক দিনের জন্য ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছিল।
ব্যাংকাররা বলছেন, বর্তমানে কিছু ব্যাংক তীব্র তারল্যসংকটে রয়েছে। এসব ব্যাংকের সংকট এতটাই প্রকট যে গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী টাকাও ফেরত দিতে পারছে না। আবার সরকারি ট্রেজারি বিল–বন্ডের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক বেশি লাভের আশায় কলমানির বদলে বিল–বন্ডে অর্থ বিনিয়োগ করছে। ফলে কলমানিতে টাকা ধার দেওয়া বা এই বাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া ব্যাংকের সংখ্যা কমে গেছে।
এমআই
You must be logged in to post a comment Login