ব্যাংক
আমানত বিমা প্রিমিয়ামে ভুল তথ্য দিলে গুনতে হবে জরিমানা

তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বছরে দুইবার (ষাণ্মাসিক) আমানত বিমার প্রিমিয়ামের তথ্য পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে কোনো ব্যাংক এ তথ্য পাঠাতে বিলম্ব বা ভুল করে তাহলে জরিমানা গুনতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট এ সংক্রান্ত একটি মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, দেশের ক্ষুদ্র আমানতদারীদের আমানতের সুরক্ষা ও সামগ্রিক আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ১৯৮৪ সাল থেকে আমানত বিমা পদ্ধতি তথা ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স সিস্টেমস চালু আছে। বর্তমানে ‘ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০’ অনুযায়ী দেশে কার্যরত সব তফসিলি ব্যাংক আবশ্যিকভাবে আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলের সাথে বিমা করা আছে। এই আইনের ৫ নং ধারা অনুযায়ী সকল তফসিলি ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে আলোচ্য তহবিলে প্রিমিয়াম জমা প্রদান করে। প্রিমিয়াম হিসাবায়নের লক্ষ্যে বর্তমানে প্রতি ষাণ্মাসিকে বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক হতে নির্দিষ্ট ছক অনুযায়ী আমানত বিমা প্রিমিয়াম নির্ধারণী তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
সংগৃহীত তথ্য প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাই পূর্বক নির্ধারিত প্রিমিয়াম হার প্রয়োগ করে ব্যাংকগুলোর জন্য আবশ্যিকভাবে প্রদেয় প্রিমিয়ামের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ফলে ব্যাংকগুলোর পাঠানো আমানত বিমা প্রিমিয়াম নির্ধারণী তথ্যগুলোর সুনির্দিষ্টতা নিশ্চিত করার জন্য ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স ডিপার্টমেন্ট থেকে আগে জারি করা এ সংক্রান্ত সার্কুলার লেটারসমূহ একীভূত করে এই মাস্টার সার্কুলারটি জারি করা হয়েছে।
মাস্টার সার্কুলারে আমানত বিমা প্রিমিয়াম নির্ধারণী তথ্য দাখিল সম্পর্কে বলা হয়েছে, সকল তফসিলি ব্যাংককে নির্দেশনা অনুযায়ী তথ্য প্রস্তুত করতে হবে। প্রস্তুত করা সব তথ্যের সফট কপি এবং হার্ডকপি দাখিল করতে হবে।
তফসিলি ব্যাংকগুলোকে জানুয়ারি থেকে জুন ও জুলাই থেকে ডিসেম্বর ষাণ্মাসিকের শেষ কর্মদিবসের হিসাবের স্থিতির ভিত্তিতে যথাক্রমে ৩১ জুলাই এবং ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট আগের বছরের তথ্য পাঠাতে হবে।
ভুল বা বিলম্বে তথ্য দাখিলের জন্য জরিমানা
ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্য সম্বলিত বিবরণী দাখিল করলে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১’ এর ১০৯(২) ধারার বিধানবলে অর্থদণ্ড ও তদসংশ্লিষ্ট শাস্তি আরোপ করা হবে।
বিলম্বে তথ্য প্রদানের জন্য জরিমানা
নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিবরণী দাখিলে ব্যর্থ হলে ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১’ এর ১০৯(৭) ধারার বিধান বলে নির্ধারিত হারে জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হবে।
প্রিমিয়াম পরিশোধ
অত্র বিভাগ হতে প্রিমিয়াম প্রদানের জন্য পত্র জারির ১০ (দশ) দিনের মধ্যে সকল ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক মতিঝিল অফিসের ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট বিভাগে সংরক্ষিত আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিল হিসাবে নির্ধারিত প্রিমিয়াম জমা প্রদান করতে হবে। প্রিমিয়াম পরিশোধের সর্বশেষ দিন সরকারি ছুটির দিন হলে পরবর্তী প্রথম কর্মদিবসকে সর্বশেষ দিন হিসেবে গণ্য করা হবে।
প্রিমিয়াম প্রদানে ব্যর্থতার ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ
বিমাকৃত কোনো ব্যাংক প্রিমিয়াম প্রদানে ব্যর্থ হলে ‘ব্যাংক আমানত বিমা আইন, ২০০০’ এর ৫(৩) নং ধারায় বর্ণিত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এর চলতি হিসাব থেকে সমপরিমাণ অর্থ প্রিমিয়াম বাবদ কর্তন করে আমানত বিমা ট্রাস্ট তহবিলে জমা করা হবে। এ ক্ষেত্রে বিলম্বিত সময়ের জন্য প্রিমিয়ামের উপর ব্যাংক রেটে দণ্ডসুদ আরোপ করা হবে।
এ নির্দেশনা জানুয়ারি-জুন, ২০২৪ ষাণ্মাসিকের জন্য ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ ভিত্তিক তথ্য দাখিলের সময় হতে কার্যকর হবে। এই বিভাগের ২০১১, ২০১৩, ২০২০, ২০২১ সালের সংশ্লিষ্ট সার্কুলার রহিত করা হয়েছে। তথ্য দাখিল ও প্রিমিয়াম প্রদান ছাড়া অন্যান্য বিষয়ে আগে জারি করা ২০১২, ২০১৪ সালের সার্কুলার কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অর্থসংবাদ/এমআই

অর্থনীতি
চাঁদপুরে ইউসিবির এটিএম বুথ বন্ধ, গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ

ঈদুল আযহার ছুটি শুরুর প্রথম দিন থেকেই ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) গ্রাহকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। নেটওয়ার্ক সমস্যার অজুহাতে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাংকের এটিএম বুথ হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ফলে নগদ টাকা উত্তোলন করতে না পেরে বিপাকে পড়েছে ব্যাংকটির অসংখ্য গ্রাহক। তেমনি চাঁদপুর শহর ও বাবুরহাট এলাকা ঘুরে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ খোলা থাকলেও ইউসিবির বুথ বন্ধ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, চাঁদপুর শহর ও বাবুরহাটে ইউসিবির দুটি শাখা রয়েছে। এতে বৃহস্পতিবার সকালে কিছু গ্রহক টাকা উঠাতে পারলেও দুপুর ১টার পর থেকে বন্ধ হয়ে যায় বুথের কার্যক্রম। এতে স্থানীয় গ্রাহক সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাড়িরটানে গ্রামে ঈদ করতে আসা ঘরমুখো মানুষ গুলো টাকা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন। ইউসিবির এটিএম বুথে টাকা না পেয়ে গ্রাহকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
চাঁদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ইউসিবির এটিএম বুথে গিয়ে দেখা গেছে, বুথের দরজায় সাঁটানো রয়েছে “ছুটির কয়েকটা দিন এই এটিএম বন্ধ থাকবে” লেখা নোটিশ। এতে যাদের জরুরি নগদ টাকা প্রয়োজন ছিল, তারা চরম বিপাকে পড়েছেন।
ব্যাংকটির অন্য একটি বুথের সামনে সাঁটানো এক নোটিশে লেখা রয়েছে, “পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে আগামী ৫ জুন, বৃহস্পতিবার থেকে ১২ জুন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ থাকবে। কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনের জন্য আগামী ৯ জুন সোমবার থেকে ১৪ জুন শনিবার পর্যন্ত ইউসিবির সকল ব্যাংকিং সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে”। তবে আগামী ৯ জুন থেকে এটিএম বন্ধ রাখার কথা থাকলেও আজ ৫ জুন থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এসব বুথ।
অন্যদিকে ঈদের বন্ধে এটিএম বুথের নিরাপত্তা ও টাকা রাখার বিষয়ে আগাম সতর্কতা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ঈদের ছুটি শুরুর প্রথম দিন থেকেই টাকা পাওয়া যাচ্ছে না ইউসিবির এটিএম বুথে। বেশির ভাগ ব্যাংক অন্য ব্যাংকের কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন বন্ধ বা সীমিত করেছে। বিভিন্ন বুথ ঘুরে টাকা তুলতে না পেরে বিড়ম্বনায় পড়ছেন অনেকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত সোমবার এটিএম বুথ, এমএফএস, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, পয়েন্ট অব সেলস, কিউআর কোড ও অনলাইন ই-পেমেন্ট গেটওয়েতে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এমন নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ইউসিবির বুথ বন্ধ করে দেওয়াকে প্রতারণা বলছেন গ্রাহকরা।
ঢাকা থেকে ঈদ উদযাপন করতে আসা মনির হোসেন জানান, টাকা না পেলে সমস্যায় পড়তে হবে। মো. সোহেল আকন টাকা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একাধিক গ্রাহক জানান, কোনো আগাম নোটিশ ছাড়াই এভাবে বুথ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে বাজার করা, পরিবহন খরচসহ নানা কাজে বিপর্যয় ঘটেছে।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। গ্রাহকরা দ্রুত সমস্যার সমাধান এবং ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে আগাম প্রস্তুতির দাবি জানিয়েছেন ইউসিবি কর্তৃপক্ষের প্রতি।
ইউসিবির বুথ বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে ইউসিবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) মোহাম্মদ মামদুদুর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিরি রিসিভ করেননি। এ কারণে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
অর্থসংবাদ/কাফি
ব্যাংক
আজ রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে ঢাকা ও চট্টগ্রামের কিছু ব্যাংক

আজ শুক্রবার (৬ জুন); রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদ উপলক্ষে তাই আজও ঢাকা ও চট্টগ্রামের কোরবানির পশুর হাটের আশেপাশের ব্যাংক শাখা ও উপশাখাগুলো রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা এক নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকের এই শাখা ও উপশাখাগুলো খোলা রাখা হচ্ছে। গত ৩ জুন থেকেই এই নির্দেশনা পালন করে আসছে ব্যাংকগুলো।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জারি করা এ নির্দেশনায় বলা হয়, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ব্যাপকসংখ্যক ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি এবং বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থের লেনদেন হয়। তাই হাটসংলগ্ন এলাকার ব্যাংক শাখাগুলোতে অতিরিক্ত ব্যাংকিং সহায়তা দেওয়া জরুরি।
ঢাকা উত্তর সিটির আওতায় যেসব হাটে এই সুবিধা থাকবে তার মধ্যে রয়েছে—উত্তরা দিয়াবাড়ি, ভাটারা সুতিভোলা, মিরপুর গাবতলী, মোহাম্মদপুর বছিলা, খিলক্ষেত বনরূপা ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সংলগ্ন হাট।
ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতায় রয়েছে—লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট এলাকা, শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট, পোস্তগোলা, দনিয়া কলেজ, সাদেক হোসেন খোকা মাঠ, ধোলাইখাল, রহমতগঞ্জ, কদমতলী, কমলাপুর ও আমুলিয়া আলীগড় মডেল কলেজ এলাকা।
অন্যদিকে চট্টগ্রামে এই সুবিধা দেওয়া হবে শুধুমাত্র সাগরিকা পশুর হাটসংলগ্ন ব্যাংক শাখাগুলোতে।
কাফি
অর্থনীতি
ইউসিবির এটিএম বুথে মিলছে না টাকা, বিপাকে গ্রাহকরা

ঈদুল আযহার ছুটি শুরুর প্রথম দিনেই ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) গ্রাহকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। নেটওয়ার্ক সমস্যার অজুহাতে ব্যাংকের বেশিরভাগ এটিএম বুথ হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, ফলে নগদ টাকা উত্তোলনে ব্যর্থ হয়েছেন বহু গ্রাহক।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) রাতে রাজধানীর মতিঝিল-দিলকুশা সহ বিভিন্ন এলাকায় ইউসিবির এটিএম বুথে গিয়ে দেখা গেছে, বুথের দরজায় সাঁটানো রয়েছে “ছুটির কয়েকটা দিন এই এটিএম বন্ধ থাকবে” লেখা নোটিশ। এতে যাদের জরুরি নগদ টাকা প্রয়োজন ছিল, তারা চরম বিপাকে পড়েছেন।
ব্যাংকটির আরও একটি বুথের সামনে সাঁটানো এক নোটিশে লেখা রয়েছে, “পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে আগামী ৫ জুন, বৃহস্পতিবার থেকে ১২ জুন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ব্যাংক বন্ধ থাকবে। কোর ব্যাংকিং সফটওয়্যার আপগ্রেডেশনের জন্য আগামী ৯ জুন সোমবার থেকে ১৪ জুন শনিবার পর্যন্ত ইউসিবির সকল ব্যাংকিং সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে”। তবে আগামী ৯ জুন থেকে এটিএম বন্ধ রাখার কথা থাকলেও আজ ৫ জুন থেকেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এসব বুথ।
অন্যদিকে ঈদের বন্ধে এটিএম বুথের নিরাপত্তা ও টাকা রাখার বিষয়ে আগাম সতর্কতা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ঈদের ছুটি শুরুর প্রথম দিনেই টাকা পাওয়া যাচ্ছে না ইউসিবির এটিএম বুথে। বেশির ভাগ ব্যাংক অন্য ব্যাংকের কার্ড দিয়ে টাকা উত্তোলন বন্ধ বা সীমিত করেছে। বিভিন্ন বুথ ঘুরে টাকা তুলতে না পেরে বিড়ম্বনায় পড়ছেন অনেকে।
ভুক্তভোগীরা জানান, ঈদের বাজার ও ভ্রমণের ব্যস্ত সময়ে এমন ভোগান্তি তাদের পরিকল্পনা ব্যাহত করেছে। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগাম নোটিশ না দিয়ে এমন গুরুত্বপূর্ণ সময় বুথ বন্ধ রাখা গ্রাহকসেবার চরম ব্যর্থতা। এসব ছলচাতুরি ও প্রতারণার ছাড়া কিছুই না।
এ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রাহকরা। মতিঝিল এলাকায় একজন গ্রাহক বলেন, “ঈদের ছুটি শুরুর প্রথম দিনেই এমন সংকট মেনে নেওয়া যায় না। টাকা না থাকলে জরুরি কেনাকাটা, যাতায়াত-সব কিছুই বন্ধ হয়ে যায়।” এমন সময়ে এ ধরনের সিদ্ধান্তে ভোগান্তি চরমে উঠেছে। গ্রাহকরা দ্রুত বুথ সচল এবং বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে টানা ১০ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। বন্ধের মধ্যেও রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সীমিত পরিসরে কয়েকদিন ব্যাংক চলবে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশের ১৮টি পশুর হাটসংলগ্ন এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের একটি হাটসংলগ্ন ব্যাংক শাখা গতকাল থেকে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত খোলা থাকবে। এ ছাড়া আজ ৫ জুন ঢাকা মহানগর, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামের তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট শাখা এবং ঈদের পর ১১ ও ১২ জুন ওষুধ শিল্পসহ আমদানি, রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী শাখা খোলা রাখতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত সোমবার এটিএম বুথ, এমএফএস, ইন্টারনেট ব্যাংকিং, পয়েন্ট অব সেলস, কিউআর কোড ও অনলাইন ই-পেমেন্ট গেটওয়েতে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
এবিষয়ে জানতে ইউসিবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) মোহাম্মদ মামদুদুর রশিদের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান অর্থসংবাদ’কে বলেন, এটিএম বুথের নিরাপত্তা ও পর্যাপ্ত টাকা রাখার বিষয়ে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছে। তবে ইউসিবির বুথ বন্ধ থাকার নোটিশের বিষয়ে আমরা অবগত না। ব্যাংককে শাস্তি দেওয়া আমাদের উদ্দেশ্য না। আমাদের উদ্দেশ্য গ্রাহকের সেবা নিশ্চিত করা।
অর্থসংবাদ/কাফি
ব্যাংক
পাঁচ ব্যাংক মিলে হবে একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক

বেসরকারি খাতের পাঁচটি ইসলামী ব্যাংককে একত্রিত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নতুন এই ব্যাংকের মূলধন জোগান দেবে সরকার। এটি হবে শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক।আগামী জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে এই ব্যাংক গঠনের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন ব্যাংকটির প্রধান কাজ হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে (এসএমই) অর্থায়ন করা।
বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচটি বিশেষ টিম গঠন করছে যারা তিন মাসের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং বিভিন্ন তথ্য যাচাই করবে। এসব টিমে ব্যাংকগুলো থেকেও কিছু যোগ্য কর্মী নেওয়া হবে।
একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংকগুলো হলো- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক।
এর মধ্যে চারটি ব্যাংক ছিল বিতর্কিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে, আর এক্সিম ব্যাংক ছিল নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদারের অধীনে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই পাঁচ ব্যাংকের নতুন পর্ষদ দায়িত্ব নিয়েছে। এক্সিম ব্যাংক ছাড়া বাকি চারটিতে স্বতন্ত্র পরিচালকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বুধবার (৪ জুন) পাঁচ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এবং এমডিদের (ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের) সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে তাদের একীভূতকরণের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে ব্যাংকগুলোকে সাময়িকভাবে সরকারি মালিকানায় নেওয়া হবে। তবে একীভূতকরণের ফলে গ্রাহকদের লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। গ্রাহকরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন একীভূত ব্যাংকের অংশ হয়ে যাবেন।
ব্যাংকগুলোর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বাদে অন্য কর্মকর্তারা একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের চাকরিতে বহাল থাকবেন। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হতে অন্তত তিন বছর সময় লাগতে পারে। এছাড়া, ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের একীভূত হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
যেভাবে একীভূত হবে:
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চলতি মাসের শেষের দিকে পাঁচটি ব্যাংক পরিচালনায় বাংলাদেশ ব্যাংক যুক্ত হবে। এই ব্যাংকগুলো পরিচালনার জন্য আলাদা একটি কমিটি গঠন করা হবে, যা ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত জানুয়ারিতে এসব ব্যাংকের সম্পদের প্রকৃত অবস্থা যাচাইয়ের (একিউআর) জন্য দুটি আন্তর্জাতিক অডিটর নিয়োগ দেয়। সেই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। একিউআর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব ব্যাংকের সম্পদ মূল্যায়ন করা হয়েছে। যদি কোনো ব্যাংক নিজেকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী প্রমাণ করতে পারে, তবে সে ব্যাংক একীভূতকরণ প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়বে, অন্যথায় একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
একীভূতকরণের মূল লক্ষ্য আমানতকারীর আস্থা পুনরুদ্ধার এবং আর্থিক খাতে জঞ্জাল দূর করার মাধ্যমে শৃঙ্খলা ফেরানো। দুর্বল ব্যাংক নিষ্পত্তি করা। এই প্রক্রিয়া ২০২৫ সালের ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ’ এর আওতায় হবে এবং ১৫ অক্টোবরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
একীভূতকরণের পর যেসব ব্যাংকের ঋণ অনিয়মিত হয়ে গেছে, সেগুলো সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির কাছে হস্তান্তর করা হবে। এতে করে নতুন ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের নিচে থাকবে, যার ফলে ব্যাংক খরচ কমবে এবং পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাওয়া যাবে।
এরপর নতুন ব্যাংকটির লাইসেন্স দেওয়া হবে, যার মূলধন যোগান দেবে বাংলাদেশ সরকার এবং বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীরা। পাঁচটি ব্যাংকের সম্পদ ও দায় নতুন ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং শাখাগুলো ধীরে ধীরে একীভূত করা হবে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কিছু জনবলও কমানো হবে। একীভূত ব্যাংকটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হলে, বেসরকারি খাতে শেয়ার ছাড়ার মাধ্যমে উদ্যোক্তারা ব্যাংকটি পরিচালনায় অংশ নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত তিন বছর সময় লাগতে পারে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দুরবস্থায় পড়া এই ৫ ব্যাংকের মোট আমানত ১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৯২ হাজার ৭৮৬ কোটি টাকা।
একিউআর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের ১ লাখ ৪৬ হাজার ৯১৮ কোটি টাকা বা ৭৬ শতাংশ খেলাপি। এর মধ্যে ইউনিয়ন ব্যাংকের মোট ঋণের ৯৮ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ৯৭ শতাংশ, গ্লোবাল ইসলামী ৯৫ শতাংশ, সোশ্যাল ইসলামী ৬২ শতাংশ এবং এক্সিম ব্যাংকের ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ ঋণ খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।
বৈঠকে বলা হয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাইছে এই ৫টি ব্যাংককে একত্র করে একটি শক্তিশালী ইসলামী ব্যাংক তৈরি করতে। যদিও মালিকদের অনিয়মের কারণে ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়েছে। তবে আশা দিক হল ব্যাংকগুলোর শক্তিশালী নেটওয়ার্ক বিস্তীর্ণ ব্যাংকিং সেবা প্রদানের সহযোগিতা করবে বলে সবাই তুলে ধরা হয়।
সারা দেশে এসব ব্যাংকের ৭৬০টি শাখা, ৬৯৮টি উপ-শাখা, ৫১১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং ৯৭৫টি এটিএম বুথ রয়েছে। এজন্য কর্মচারীদের ছাঁটাই করা হবে না, তবে যারা নিয়োগ পেয়েছেন তাদের যোগ্যতা যাচাই করা হবে। ব্যাংকগুলো ঋণ আদায় বাড়ানোর চেষ্টা করবে এবং সরকারের কাছ থেকে কয়েক ধাপে সহায়তা নেওয়া হবে। কিছু শাখা বন্ধ করা হতে পারে বা অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা হতে পারে।
বৈঠক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
কাফি
ব্যাংক
যেসব এলাকায় আজ খোলা রয়েছে ব্যাংক

আগামী ৭ জুন দেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে আজ ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে ঈদের আগে এবং ঈদের পরে সরকারি ছুটির মধ্যেও কিছু এলাকায় সীমিত পরিসরে ব্যাংকের কিছু শাখা খোলা থাকবে। মূলত ঈদের আগে তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী, কর্মকর্তাদের বেতন-বোনাসসহ অন্যান্য ভাতা পরিশোধ এবং ঈদের পরে আমদানি-রপ্তানিমুখী শিল্পের সুবিধার্থে ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক নির্দেশনায় বলা হয়, আসন্ন ঈদুল আজহার পূর্বে তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রপ্তানি বিল বিক্রয়ের এবং উক্ত শিল্পে কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন, বোনাস ও অন্যান্য ভাতাদি পরিশোধের সুবিধার্থে আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সীমিত পরিসরে ব্যাংকের শাখা খোলা থাকবে। এদিন শিল্পঘন ঢাকা মহানগরী, আশুলিয়া, টঙ্গী, গাজীপুর, সাভার, ভালুকা, নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে অবস্থিত পোশাক শিল্পের লেনদেনে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাসমূহে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। তবে ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বাকি সময় ব্যাংকের লেনদেন পরবর্তী আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এছাড়া ওষুধ শিল্প খাতসহ আমদানি ও রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা গ্রাহকদের গুরুত্বপূর্ণ ও বৈদেশিক লেনদেন সম্পাদনের লক্ষ্যে ১১ জুন ও ১২ জুন বুধবার এবং বৃহস্পতিবার সরকারি ছুটির দিন ব্যাংকের স্বীয় বিবেচনায় ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এলাকার অথরাইজড ডিলার (এডি) শাখা সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। এ দু’দিন বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখাসমূহে লেনদেন হবে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। আর লেনদেন পরবর্তী আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালিত ব্যাংক খোলা থাকবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্দেশনায় বলা হয়, ছুটির দিনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বিধি মোতাবেক ভাতাদি প্রাপ্য হবেন। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
You must be logged in to post a comment Login