ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় আবেদন করবেন যেভাবে
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন গত বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়েছে; যা সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে।
ভর্তি-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ভর্তি পরীক্ষার আবেদন অনলাইনে করা যাবে। পরীক্ষা প্রাক-নির্বাচনী ও মূল ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা দুটি শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। প্রাক-নির্বাচনী ভর্তি পরীক্ষা ২৪ ফেব্রুয়ারি। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় মেধার ভিত্তিতে নির্বাচিত আবেদনকারীরা মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। চূড়ান্ত এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ মার্চে।
প্রথম ধাপে ১০০ নম্বরের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সময় থাকবে ১ ঘণ্টা। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা যাবে। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরের ধাপে চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস কৌশল, পুরকৌশল, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদে বিভিন্ন বিভাগে স্নাতক শ্রেণিতে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি-ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকেরা আবেদন করতে পারবেন। যেসব ছাত্রছাত্রী ২০২০ বা ২০২১ সালে মাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় এবং ২০২৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন, অথবা ২০২০ সালে মাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় এবং ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষার সংশোধিত ফলাফল ১২ মার্চ, ২০২৩ তারিখের পরে শিক্ষা বোর্ড থেকে ফলাফল প্রাপ্ত হয়েছেন, অথবা ২০১৯ সালের নভেম্বর বা তার পরে জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং ২০২২ সালের নভেম্বর অথবা তার পরে জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রাপ্ত হয়েছেন, অন্যান্য শর্তপূরণ সাপেক্ষে শুধু তারাই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেসব ছাত্রছাত্রী ইতিপূর্বে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন অথবা অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছেন, তারা এই ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড বা মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড অথবা কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে গ্রেড পদ্ধতিতে বিজ্ঞান বিভাগে (গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়নসহ) জিপিএ ৫-এর স্কেলে ন্যূনতম জিপিএ-৪.০০ পেয়ে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা দাখিল অথবা সমমানের পরীক্ষায় পাস করতে হবে অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড পেয়ে পাস করতে হবে।
প্রার্থীকে বাংলাদেশের যেকোনো মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতিতে জিপিএ ৫-এর স্কেলে জিপিএ-৫ এবং উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়সমূহের প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় পাস করতে হবে অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড/নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে।
আরও পড়ুন: ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় ২ লাখ ৭৯ হাজার আবেদন
যেসব প্রার্থী ২০২০ সালে মাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় এবং ২০২২ সালে উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক বা তার সমমানের পরীক্ষায় তাদের সংশোধিত ফলাফল ১২ মার্চ, ২০২৩ তারিখের পরে শিক্ষা বোর্ড থেকে ফলাফল প্রাপ্ত হয়েছেন, সে ক্ষেত্রে তাদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড/মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড/কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় গ্রেড পদ্ধতিতে ৫-এর স্কেলে জিপিএ-৫.০০ এবং উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয়সমূহের প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ-৫ পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক/আলিম/সমমানের পরীক্ষায় পাস করতে হবে অথবা বিদেশি শিক্ষা বোর্ড থেকে সমমানের পরীক্ষায় কমপক্ষে সমতুল্য গ্রেড/নম্বর পেয়ে পাস করতে হবে।
সব সঠিক আবেদনকারীর মধ্য থেকে বাছাই করে ১ম থেকে ১৮০০০তম পর্যন্ত সব আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে। এই বাছাইয়ের জন্য যথাক্রমে আবেদনকারীর উচ্চমাধ্যমিক/সমমান পরীক্ষায় উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন বিষয় তিনটিতে প্রাপ্ত মোট নম্বর এবং উচ্চতর গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরকে অগ্রাধিকারের ক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং জিসিই ‘এ’ লেভেল পাস করা প্রার্থীদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য জিসিই ‘ও’ লেভেল পরীক্ষায় কমপক্ষে পাঁচটি বিষয়ের (গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন ও ইংরেজিসহ) প্রতিটিতে ন্যূনতম বি গ্রেড এবং জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিজ্ঞান ও রসায়ন-তিন বিষয়ের যেকোনো দুটিতে ন্যূনতম ‘এ’ গ্রেড এবং একটিতে ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড পেয়ে পাস করতে হবে।
ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে জিসিই ‘ও’ লেভেল এবং জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষার ফলাফল প্রাপ্ত সব সঠিক আবেদনকারীর মধ্য থেকে উল্লিখিত নির্ধারিত গ্রেডের ভিত্তিতে বাছাই করে ১ম থেকে ৪০০তম পর্যন্ত আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে। এই বাছাইয়ের জন্য যথাক্রমে আবেদনকারীর জিসিই ‘এ’ লেভেল পরীক্ষায় গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে প্রাপ্ত গ্রেডকে অগ্রাধিকারের ক্রম হিসেবে বিবেচনা করা হবে। ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ সাপেক্ষে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত সব সঠিক আবেদনকারীকে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে।
উল্লিখিত শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের দুটি শিফটে বিভক্ত করে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা হবে। পরিসংখ্যানভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রতিটি শিফটে প্রার্থীদের মেধার বিন্যাসের সমতুল্যতা নিশ্চিত করা হবে। প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফলাফলের মেধাক্রম অনুসারে প্রতি শিফটের ১ম থেকে ৩০০০তম শিক্ষার্থীকে মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত করা হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত ন্যূনতম ১২ জন পরীক্ষার্থী (পর্যাপ্ত আবেদন গ্রহণ সাপেক্ষে) মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য বিবেচিত আবেদনকারীদের তালিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।
আবেদনপত্র গ্রহণ, প্রাক-নির্বাচনী ও মূল ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি
১. অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও জমা শুরু : ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা।
২. অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও জমা শেষ : ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, সোমবার বেলা ৩টা।
৩. মোবাইল বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আবেদন ফি প্রদান শেষ : ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার বেলা ৩টা।
৪. ইটিএসআর চিহ্নিত আবেদনপত্র সরাসরি রেজিস্ট্রার অফিসের ভর্তি শাখায় জমা দেওয়া অথবা রেজিস্টার্ড ডাকযোগে/কুরিয়ারের মাধ্যমে রেজিস্ট্রার অফিসে প্রেরণ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ শনিবার থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ মঙ্গলবার (শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত) সকাল ১০টা বেলা ৩টা (সরাসরি জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)।
৫. প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য আবেদনকারীদের নামের তালিকা প্রকাশের সর্বশেষ তারিখ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, মঙ্গলবার।
৬. প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, শনিবার (শিফট ০১-‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপ, সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা), শিফট ০২- ‘ক’ ও ‘খ’ গ্রুপ: বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা।)
৭. মূল ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪।
৮. মূল ভর্তি পরীক্ষা: ৯ মার্চ ২০২৪, শনিবার, (মডিউল ‘A’: গ্রুপ ‘ক’ এবং ‘খ’ উচ্চতর গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা) এবং
৯. ভর্তির জন্য নির্বাচিত ও অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ : ৩১ মার্চ ২০২৪।
আবেদনের নিয়ম
আবেদন করার নিয়ম ভর্তির নির্দেশিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট-এ পাওয়া যাবে। ওয়েবসাইটে নির্দেশনা মোতাবেক আবেদন ফরম পূরণ করে তা অনলাইনে দাখিল করতে হবে। দাখিল করা শেষে একটি আবেদন ক্রমিক নং প্রদান করা হবে এবং পরে এই নম্বরের বিপরীতে বুয়েটের ওয়েসবাইটে বর্ণিত পদ্ধতিতে প্রাথমিক আবেদন ও ভর্তি পরীক্ষা বাবদ প্রদেয় ফি জমা দিতে হবে। অতঃপর আবেদনটি চূড়ান্তভাবে দাখিল করতে হবে।
মোট আসনসংখ্যা
পার্বত্য চট্টগ্রাম ও অন্যান্য এলাকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীভুক্ত প্রার্থীদের জন্য প্রকৌশল বিভাগসমূহ ও নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের জন্য মোট ৩টি এবং স্থাপত্য বিভাগে ১টি সংরক্ষিত আসনসহ সর্বমোট আসনসংখ্যা এক হাজার ৩০৯টি।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
‘শহীদি মার্চ’ থেকে শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি
শেখ হাসিনার সরকার পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ‘শহীদি মার্চ’ কর্মসূচি পালন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কর্মসূচি থেকে ৫ দফা দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শহীদি মার্চ কর্মসূচি শেষে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
এর আগে এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শহীদি মার্চ শুরু হয়ে নীলক্ষেত-নিউমার্কেট-সায়েন্সল্যাব-কলাবাগান-মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ-সংসদ ভবন হয়ে ফার্মগেট-কারওয়ান বাজার-শাহবাগ-টিএসসি হয়ে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
শহীদি মার্চে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এবং সাধারণ জনতা অংশ নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশে মিলিত হয়।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, এই আন্দোলনের শহীদ ভাইদের রক্ত এবং তাদের স্পিরিট কখনো বৃথা যেতে দেবো না। এখনো অনেক ফ্যাসিস্টদের অস্তিত্ব রয়েছে, আমরা ফ্যাসিস্টদের এবং ফ্যাসিবাদী চিন্তা লালন করা মানুষদের বলতে চাই, এই স্বাধীন বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট আচরণ করার চেষ্টা করবেন না। কোনো চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট এই বাংলাদেশে হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে ভাইয়েরা এই স্বাধীনতা আনতে রক্ত দিয়েছেন, আমরা তাদের রক্তের মূল্য দিতে যে কোনো সময় নিজেদের রক্ত দিতে প্রস্তুত আছি।
আরেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, বাংলাদেশকে স্বাধীন করার জন্য এই আন্দোলনে আমাদের ভাইয়েরা শহীদ হয়েছেন। দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না এমন স্বপ্ন নিয়ে, এমন প্রত্যাশা নিয়ে আমাদের ভাইয়েরা নিজের বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা আমাদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করিনি। আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। দেশকে পুনর্গঠনের যে লড়াই সেটি আমাদের চালিয়ে যেতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফাহিম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম আহমেদ পলাশ মারা গেছেন। গত ২৭ আগস্ট বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ দিতে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে গতকাল বুধবার দুপুরে মারা যান তিনি।
জানা যায়, বন্যার্তদের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্রাণবাহী ট্রাকে নোয়াখালী যাওয়ার পথে মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ এলাকায় ট্রাকটি দুর্ঘটনায় কবলিত হয়। দুর্ঘটনায় ১২ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত দিনাজপুর খানসামা উপজেলার বাসিন্দা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহিম আহমেদ পলাশকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ফাহিমের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার ২ সেপ্টেম্বর রাতে অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে নেয়া হয়। গতকাল বুধবার দুপুরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফাহিমের মৃত্যুর খবরে তার নিজ এলাকা দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় শোকের ছায়া নেমে আসে। নিহত পলাশ জেলার খানসামা উপজেলার ভাবকী ইউনিয়নের ভাবকী গ্রামের মুন্সিপাড়া এলাকার আক্কাস আলীর পুত্র।
ফাহিমের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুর্ঘটনার দুই দিন আগে থেকেই বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গত ২৬ আগস্ট রাত ৩টার দিকে ট্রাকে করে নোয়াখালী সেনবাগের উদ্দেশে ত্রাণ নিয়ে রওনা দেয় শিক্ষার্থীরা। পথে মীরসরাই অতিক্রম করার পর জোরারগঞ্জ এলাকায় পৌঁছালে চালকের অসাবধানতার কারণে সামনে থাকা একটি গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে সামনের আসনে থাকা দু’জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন এবং ট্রাকের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। গাড়িতে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগৃহীত তৃতীয় দিনের ত্রাণ ছিল।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
ইউজিসি চেয়ারম্যান হলেন ড. এস এম এ ফায়েজ
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) তাকে এ নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আইন, ১৯৭৩ (রাষ্ট্রপতির আদেশ নং-১০/৭৩)-এর ৪ (১) (এ) ও ৪ (৩) ধারা অনুযায়ী প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজকে কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হলো। চেয়ারম্যান হিসেবে তার মেয়াদ হবে চার বছর। তিনি প্রচলিত বিধি অনুযায়ী বেতন-ভাতা ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি পাবেন। এ নিয়োগাদেশ তার যোগদানের তারিখ হতে কার্যকর হবে। এ নিয়োগাদেশ তার যোগদানের তারিখ হতে কার্যকর হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো।
ড. ফায়েজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনেরও চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
নিরাপত্তার দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল ইবির হাসিনা হল
ছাত্রলীগের পদধারী সাবেক নেত্রী সন্দেহজনকভাবে পরিচয় গোপন ও ছদ্মবেশ ধারণ করে হলের রাজনৈতিক কক্ষে প্রবেশ করায় আতঙ্কে ভুগছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শেখ হাসিনা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। ফলে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রীদের মধ্যে উদ্বিগ্নতা ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার (০৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে হলে অবস্থানরত আতঙ্কগ্রস্থ নারী শিক্ষার্থীরা হলের গেইট খুলে ফোয়ারার সামনে নিজেদের নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। এসময় তারা ‘বহিরাগত হলে এলো, হলবাসী জেগে উঠো’, ‘তুমি কে আমি কে? বহিরাগত ছাত্রলীগ’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।
আন্দোলনকারী ছাত্রীরা জানায়, গত ৩ সেপ্টেম্বর আনুমানিক সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগে সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেত্রী ঝুমা ছদ্মবেশ ধারণ করে শেখ হাসিনা হলের দক্ষিণ ব্লকের ২০১ নম্বর রাজনৈতিক কক্ষ থেকে সন্দেহজনক ২টি বস্তা নিয়ে বের করে নিয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগ নেত্রীর পরিচয় গোপন করে হলে প্রবেশ করার কাজে সাহায্য করেছেন এ কক্ষে অবস্থানরত আরেক ছাত্রী। তিনি আল ফিকহ্ এন্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিভাগের স্নাতক ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বিভাগের এশা (ছদ্মনাম)।
হলসূত্রে আরও জানা যায়, শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্নতা নিরসনে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ২য় তলার আবাসিক ছাত্রীরা সম্মিলিতভাবে ২০১ নম্বর কক্ষে যায়। এসময় তারা ছাত্রলীগ নেত্রীর হলে প্রবেশের ঘটনা সম্পর্কে এশার কাছে জানতে চাইলে সে কোনোরূপ যুক্তিযুক্ত উত্তর দিতে পারেনি। একই সাথে এশা স্পষ্টত জানায় তার সাথে যোগাযোগ করেই ঝুমা শেখ হলে এসেছিল।
তবে বস্তায় কী ছিল এবং কেন এতদিন পর সাবেক ছাত্রী ছদ্মবেশ ধারণ এবং পরিচয় গোপন করে হলে এসেছেন সেই বিষয়ে এশা কোন উত্তর দিতে পারেনি। কিন্তু, বস্তার ভেতর অবৈধ কোনো কিছু থাকতে পারে এবং তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহের কারণ রয়েছে বলে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্রীরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এশা (ছদ্মনাম) বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা, কারণ আমি ঝুমা আপুর রুমেই গেস্ট হিসেবে থাকতাম এবং তার বেডেই। আমি হলে আসার আগেই আমার রুমমেট আপুর থেকে আমার নাম্বার নিয়ে ঝুমা আপু আমার সাথে যোগাযোগ করে যে, আমি কবে হলে যাবো। আমি তাকে কোনভাবেই সাহায্য করিনি এমনকি আপু যেদিন হলে আসে আমি ডিপার্টমেন্টের কাজে বাইরে ছিলাম।
তিনি জানান, ঝুমা (সাবেক ছাত্রলীগ নেত্রী) জিনিসপত্র নেওয়ার সময় হল কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন। তবে তিনি রুমে না থাকায় কীভাবে নেত্রী রুমে ঢুকলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে এ ছাত্রী জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চান না।
এ বিষয়ে হলের অফিসে যোগাযোগ করলে তারা জানান, এ বিষয়ে কেউ অফিসে ইনফর্ম করেনি এবং আমরা কোনকিছু জানিও না এবং অফিসের তখন কেউ উপস্থিত ছিলো না। শুনেছি হলের আয়ারা জিনিসপত্র নামিয়ে দিতে সাহায্য করেছে।
তবে ছাত্রলীগ নেত্রী ঝুমার সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এমআই/সাকিব
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার
জালিয়াতি-অনিয়মের আঁতুরঘর সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজ
সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও জাল জালিয়াতির অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা সংক্রান্ত নীতিমালা পরিপন্থি অর্থনৈতিক ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট নানান অনিয়মের অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে চার দফা দাবি নিয়ে বিক্ষোভ ও অবস্থান করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের ডাক দিলে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মালিবাগে দুপুর ১টার দিকে কলেজের সামনের ফটকে এ আন্দোলন চলমান রেখেছে শিক্ষার্থীরা। এই ডেন্টাল কলেজটির প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঐক্যবন্ধভাবে আন্দোলন ও প্রতিবাদের ডাক দেয়। এসময় বিভিন্ন স্লোগান ও প্লেকার্ড হাতে নিয়ে অনিয়মের বিষয়গুলো তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা।
সূত্র মতে, ডেন্টাল কলেজের একই ভবনে কলেজ ও হাসপাতাল থাকার কথা থাকলেও সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজে রয়েছে রড-সিমেন্টের দোকান। যা বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২২ (২০২২ সালের ১৬নং আইন) এর ধারা ৩৯ এবং স্থাপন ও পরিচালন বিধিমালা, ২০২৩ এর পরিপস্থি। এভাবেই একের পর এক অনিয়ম ও জালিয়াতি করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। এর আগে ২০১৭ সালে পরিচালনার শর্ত পূরণ না করায় সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজের ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়াও বিভিন্ন সময় তদন্ত (ইন্সপেকসন) হলেও অর্থের বিনিময়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ ধামাচাপা দেয়। ফলে কখনোই শিক্ষার মান উন্নয়ন ও জালিয়াতি বন্ধ হয়নি প্রতিষ্ঠানটির। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ একটি ডেন্টাল কলেজে যে ধরনের ল্যাব, কমন লাইব্রেরিসহ যেসব সুযোগ সুবিধা থাকার প্রয়োজন তার বিন্দু মাত্র নেই এই প্রতিষ্ঠানটিতে।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্ধারিত পরিমানের অতিরিক্ত ফি কমানো, কলেজ ও হাসপাতালের শিক্ষাগত ও ক্লিনিক্যাল অবকাঠামোগত উন্নয়ন, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা প্রদান এবং বিভিন্ন অনৈতিক ও জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বহিস্কার করা। একই সঙ্গে অসৎ ও অশালীন আচরণকারী ব্যক্তিদের অনতিবিলম্বে কলেজ থেকে অপসারণ করা।
জানা গেছে, গত ১৬ আগস্ট থেকে ২১ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ১৮ আগস্ট কলেজের কর্তৃপক্ষের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। এরপর ২৫ আগস্ট শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলেও কোনো দাবি মানেনি কর্তৃপক্ষ। গত শনিবার (৩১ আগস্ট) কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ৭ ঘণ্টা মিটিংয়ের পর কোন ধরণের সমাধান না পেয়ে কলেজে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। ওইদিন শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলে একদিন সময় চেয়ে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। পরদিন হাসপাতালের সকল রোগী বের করে দিয়ে হাসপাতালে তালা লাগিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এসময় কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক ড. সিফাতী রহমান বলেন, গত ১৫ বছর ধরে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। আজকের আন্দোলন প্রতারণার বিরুদ্ধে।
আন্দোলনরত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জালিয়াতি করে আসছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির শুরুতে টিউশন, ভর্তি এবং ইন্টার্ন ফি নেওয়া হলেও তাদের কাগজপত্রে কেনো ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই, থাকে না কলেজের নাম কিংবা লোগো। কোনো মানি রিসিট দেওয়া হয় না। সেমিস্টার শেষে ৫ বছর পর আবারও ইন্টার্ন ফি চাওয়া হয়।
তারা আরও বলেন, এছাড়া হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য নির্দিষ্ট রুমের ব্যবস্থা নেই। গ্রুপ স্টাডি করার মতো কেনো জায়গা নেই। কোনো বিষয়ে শিক্ষক ও অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ করলে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। সময় মতো কখনোই কর্তৃপক্ষকে খুঁজে পাওয়া যায় না। এধরনের সমস্যা নিয়ে আমাদের রাস্তায় নেমে আসতে হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানকে তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ফেলেছে। আমাদের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নকে পুঁজি করে আপনারা ব্যবসা কেন করবেন?
এছাড়াও শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ইন্টার্ন ফি থেকে শুরু করে লাগামহীন শর্ত রয়েছে আমাদের ভর্তি ফর্মে। যেকোনো সময় শর্ত পরিবর্তন করে ফি বাড়িয়ে দেওয়া হয়। অথচ আমাদের টাকা হসপাতালের কাজে ব্যবহার করা হয়। ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কোনো ধরনের বেতন-ভাতা প্রদান করা হয় না। কলেজের বেতন পরিশোধ করা না হলে অনলাইন ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া ও পরীক্ষা দিতে দেওয়া হয় না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনাকালীন সময় শিক্ষার্থীদের কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হয়নি। ওইসময় শিক্ষার্থীরা আর্থিক সমস্যায় থাকলেও তাদের থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায় করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগেও রয়েছে ত্রুটি। অগ্রিম টাকা দিয়ে পেতে হয় নিয়োগ। এ নিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলে (বিএমডিসি) অভিযোগ করা হলে কলেজ থেকে আমাদের হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়া এর আগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয় অভিযোগ করেছি কিন্তু আমরা কোনো বাস্তবায়ন দেখতে পাইনি।
কলেজ বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জনতে সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর কাজী জিয়াউল ইসলামের মুঠোফোনের মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এবিষয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহরিয়ার নবী অর্থসংবাদকে বলেন, সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজের লোকজন আমার কাছে আসছিলো, কলেজ বন্ধ রাখার জন্য আমার কাছে পরামর্শ চেয়েছে। কিন্তু আমি বলেছি কলেজ বন্ধ করে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। এ কলেজটির অনিয়মের বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তদন্ত করেছে। তদন্ত রিপোর্টটি এখনো আমি পাইনি। কলেজের বিষয়ে এর আগেও অভিযোগ পেয়ে আমরা তদন্ত করেছি এবং তাদের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্য নিজস্ব ক্যাম্পাসে কার্যক্রম পরিচলনার জন্য ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময় দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) থেকে সরকারিভাবে বেতন দেওয়া হয়। কিন্তু বেসরকারি মেডিকেল বা ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সময় যে টাকা রাখা হয় তা থেকে প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে বছরে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হতো। অতিরিক্ত ফি নেওয়ার মতো ক্ষমতা কোনো ডেন্টাল কলেজের নাই।
কাফি