জাতীয়
প্রধানমন্ত্রীকে হাঙ্গেরি ও কিরগিজস্তানের অভিনন্দন

সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পুনরায় ক্ষমতা গ্রহণ করায় শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে হাঙ্গেরি ও কিরগিজস্তান। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান তার শুভেচ্ছা বার্তায় বলেছেন, তারা বিগত সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং শেখ হাসিনা দায়িত্বশীল নীতির মাধ্যমে অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় যে অবদান রেখেছেন, তা প্রশংসনীয়।
অরবান বলেন, তিনি নিশ্চিত যে, শেখ হাসিনার প্রতি নতুন করে বাংলাদেশের জনগণের আস্থা জ্ঞাপন তাকে তার সাফল্য অব্যাহত রাখতে সক্ষম করবে।
তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, তার সরকার অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে বিদ্যমান তাদের সহযোগিতাকে আরও গভীর করতে ভবিষ্যতে একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ উপায়ে কাজ করে যাবে।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী শুভেচ্ছা বার্তায় অত্যন্ত দায়িত্বশীল এ কর্তব্য পালনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্য এবং তার সুস্বাস্থ্য কামনা করেছেন।
কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট সাদির জাপারভ তার বার্তায় বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে, সরকার প্রধান শেখ হাসিনার কার্যক্রম দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে এবং বাণিজ্য-অর্থনৈতিক, বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের ক্ষেত্রে বহুমুখী কিরগিজ-বাংলাদেশ সহযোগিতার উন্নয়নে অবদান রাখবে।
তিনি আশ্বাস দিয়েছেন যে, তারা কিরগিজস্তান ও বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে গঠনমূলক সহযোগিতা জোরদার করতে প্রস্তুত।
কিরগিজস্তানের প্রেসিডেন্ট তার শুভেচ্ছা বার্তায় শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি এবং রাষ্ট্রীয় কাজে সাফল্য কামনা করেন।
অর্থসংবাদ/এমআই

জাতীয়
শত কোটি টাকা লোপাট: উপদেষ্টা আসিফের এপিএসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী (এপিএস) মোয়াজ্জেম হোসেনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ ও তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ শনিবার দুদকের কার্যালয় থেকে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জানিয়েছে, মোয়াজ্জেম হোসেন তার দায়িত্ব পালনকালে প্রভাব খাটিয়ে তদবির ও টেন্ডার সংক্রান্ত নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে যার পরিমাণ শত কোটি টাকারও বেশি।
গত বৃহস্পতিবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আরও তদন্ত ও প্রমাণ যাচাই করার স্বার্থে তার বিদেশে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি তার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সাময়িকভাবে অকার্যকর করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হওয়ার পর তাকে এপিএস পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
জাতীয়
ঈদযাত্রায় ট্রেনের ৩ জুনের টিকিট বিক্রি শুরু

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের টিকিট অগ্রিম বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঘরমুখো মানুষের এই যাত্রায় চতুর্থ দিনের (৩ জুন) ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে আজ। যাত্রীদের সুবিধার্থে অনলাইনের মাধ্যমে শতভাগ আসনের টিকিট বিক্রি করা হবে।
শনিবার (২৪ মে) সকাল ৮টায় বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এ ছাড়া দুপুর ২টায় বিক্রি শুরু হবে পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলোর আসনের টিকিট।
এবার শুধু ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর মোট আসন সংখ্যা থাকছে ৩৩ হাজার ৩১৫টি। ঈদ উপলক্ষে রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কর্মপরিকল্পনার তথ্যমতে, ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ৩১ মের আসন বিক্রি হয়েছে ২১ মে, ১ জুনের আসন বিক্রি হয়েছে ২২ মে, ২ জুনের আসন বিক্রি হয়েছে ২৩ মে, ৪ জুনের আসন বিক্রি হবে ২৫ মে, ৫ জুনের আসন বিক্রি হবে ২৬ মে এবং ৬ জুনের আসন বিক্রি হবে ২৭ মে।
রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঈদের আগে ৭ দিনের ট্রেনের আসনের টিকিট বিশেষ ব্যবস্থায় অগ্রিম হিসেবে বিক্রি করবে। এ সময় কেনা টিকিটগুলো যাত্রীরা রেলওয়েকে ফেরত দিতে পারবেন না। প্রতিজন টিকিটপ্রত্যাশী ৪টি আসনের টিকিট একবার একসঙ্গে সংগ্রহ করতে পারবেন।
ঈদ পরবর্তী ফেরত যাত্রায় ৯ জুনের অগ্রিম টিকিট ৩০ মে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ১০ জুনের টিকিট ৩১ মে, ১১ জুনের টিকিট ১ জুন, ১২ জুনের টিকিট ২ জুন, ১৩ জুনের টিকিট ৩ জুন, ১৪ জুনের টিকিট ৪ জুন এবং ১৫ জুনের অগ্রিম টিকিট ৫ জুন পাওয়া যাবে।
কাফি
জাতীয়
বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক আজ

চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন। আজ শনিবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় রাজধানীর উপদেষ্টা ভবনে এই দুই দলের সঙ্গে পৃথক বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী দুই দলই শুক্রবার পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। নির্দিষ্ট সূত্র জানায়, আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিএনপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং রাত ৮টায় জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা।
তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য শুক্রবার রাতে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বৈঠকে অংশগ্রহণের বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, পরে জানানো হবে।
এর আগে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের সময় চাওয়া হয়। এরপরই উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে মৌখিকভাবে শনিবার রাতে বৈঠকের সময় জানানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, “চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপের জন্য আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের সংলাপ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুলে দিতে পারে।”
জানা গেছে, বৈঠকে নির্বাচন, বিচারব্যবস্থা, প্রশাসনিক সংস্কার এবং সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাজমান টানাপড়েনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। বিশেষ করে বিরোধী জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে ঐক্য ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
এদিকে, জামায়াতের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, দলটি মনে করে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ কোনো সমাধান নয়। বরং তারা চান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।
এর আগে, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এক বিবৃতিতে প্রধান উপদেষ্টাকে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানান।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান উত্তপ্ত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার এই উদ্যোগ পরিস্থিতি শান্ত করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। তবে আলোচনার ফলাফল এবং দলগুলোর প্রতিক্রিয়া পরিস্থিতির গতিপথ নির্ধারণ করবে।
কাফি
জাতীয়
সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জেদ্দা চেম্বার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক

সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছে জেদ্দা কনস্যুলেট।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সৌদি আরবে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মিয়া মো. মাইনুল কবিরের সঙ্গে জেদ্দা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে জেদ্দা চেম্বারের ভাইস চেয়ারম্যান রাঈদ ইব্রাহিম আল-মুদাইহিম, ভাইস চেয়ারম্যান ঈমাদ মোহাম্মাদ আল-আবৌদ এবং চেম্বারের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের পক্ষে কমার্শিয়াল কাউন্সেলর সৈয়দা নাহিদা হাবিবা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
এছাড়াও উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের খাত ভিত্তিক সম্ভাবনা ও সম্প্রসারণ এবং দুই দেশের চেম্বার অব কমার্স সমূহের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়।
কনসাল জেনারেল আলোচনায় উল্লেখ করেন সৌদি আরবে বাংলাদেশের রপ্তানি উল্লেখ যোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে তার অবস্থান সুদৃঢ় রেখেছে।
তিনি সৌদি বাজারে বাংলাদেশের উচ্চ মানের চামড়াজাত পণ্য, প্লাস্টিক সামগ্রী, হিমায়িত মাছ, কৃষি-প্রক্রিয়াজাত পণ্য, ফার্মাসিউটিক্যালস, পাট ও পাটজাত পণ্য, চা এবং হালাল মাংসের মতো বিভিন্ন বৈচিত্র্যময় পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে পণ্য বহুমুখীকরণের সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া চেম্বার প্রতিনিধিসহ সৌদি ব্যবসায়ীদেরকে বাংলাদেশে সফরের আমন্ত্রণ জানান মাইনুল কবির এবং দুই দেশের চেম্বারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব করেন।
জেদ্দা চেম্বারের পক্ষ হতে বাংলাদেশ হতে বাণিজ্যিক প্রতিনিধি দলকে সৌদি আরবে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং দুই দেশের ব্যবসায়ীগণের মধ্যে সেক্টরভিত্তিক যোগাযোগ বৃদ্ধি ও বি-টু-বি সভা আয়োজনে সহযোগিতা করা হবে মর্মে জানানো হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাত এবং একটি বৃহৎ তরুণ জনশক্তির অভ্যন্তরীণ বাজার সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিকে স্বাগত জানিয়ে সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ এবং বিভিন্ন মেগা প্রকল্প ও ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও প্রযুক্তিগত চাহিদা পূরণে বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা তুলে ধরা হয়।
রেড সিগেট ওয়েটার্মিনাল বাংলাদেশ, সৌদি-বাংলাদেশ শিল্প ও কৃষি বিনিয়োগ কোম্পানি লিমিটেড (এসএবিআইএনসিও) ইত্যাদি প্রকল্পের ন্যায় নবায়নযোগ্য জ্বালানিখাতসহ বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে বাংলাদেশে আরও সৌদি বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব নীতিমালার উল্লেখ করে বাংলাদেশে ইকনমিক জোন-এ সৌদি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। পরিশেষে, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল জেদ্দা, সৌদি আরবের পক্ষ হতে উভয় দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সার্বিক সহায়তা প্রদানের জন্য আশ্বাস প্রদান করা হয়।
জাতীয়
অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি, করে যাব: সেনাপ্রধান

সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করছি। সহযোগিতা করে যাব। তবে তিনি কিছুটা হতাশা প্রকাশ করে বলেছেন, কী সংস্কার হচ্ছে, কিভাবে হচ্ছে, এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। এমনকি এ বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো পরামর্শ বা আলোচনা করা হয়নি।
বুধবার (২১ মে) ঢাকা সেনানিবাসের সেনা প্রাঙ্গণে অফিসার্স অ্যাড্রেসে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান তার বাহিনীর সদস্যদের কাছে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে বলেন, সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর এমন কোনো কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কখনো যুক্ত হবে না। কাউকে তা করতেও দেওয়া হবে না। তিনি সব পর্যায়ের সেনাসদস্যকে নিরপেক্ষ থাকার এবং ভবিষ্যতে নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে ওই অনুষ্ঠানে নির্বাচন ছাড়াও মানবিক করিডর, বন্দর, সংস্কারসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে। সেনাপ্রধান জাতীয় নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই হওয়া উচিত বলে জানান।
সেনাপ্রধান বলেন, সার্বিকভাবে দেশে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এই পরিস্থিতির আরও অবনতি হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসনসহ সব সংস্থা প্রত্যাশা অনুসারে পুনর্গঠিত হতে পারছে না। মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডরসংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে সেনাপ্রধান বলেন, এটি ক্রিস্টাল ক্লিয়ার না। বিষয়টি স্পর্শকাতর, ঝুঁকিপূর্ণ ও অসম্ভব।
তিনি বলেন, মানবিক করিডর বিষয়ে সিদ্ধান্ত একটি নির্বাচিত সরকার থেকেই আসতে হবে এবং তা বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই হতে হবে। এখানে জাতীয় স্বার্থ দেখতে হবে, যা করার জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করেই করতে হবে। যা-ই করা হোক না কেন, পলিটিক্যাল কনসেনসাসের (রাজনৈতিক ঐকমত্য) মাধ্যমে সেটা হতে হবে।
সেনাপ্রধান বলেন, আগস্ট থেকে সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মহল তাকে ও সেনাবাহিনীকে অন্যায্যভাবে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছে।
‘মব ভায়োলেন্স’ বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা বা আক্রমণের বিরুদ্ধেও কঠোর বার্তা দেন জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
বুধবারের অফিসার্স অ্যড্রেসে সেনাপ্রধানের বক্তব্য সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় বেশি। বিশিষ্টজনদের অনেকেরই ধারণা, সেনাপ্রধান সঠিক কথাই বলেছেন।
সামিরক বিশেষজ্ঞ মে. জে. (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী সংস্কার এবং রাষ্ট্রের নিরাপত্তাগত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রাখা সম্পর্কে বলেন, সবাইকে একটি লক্ষ্যে কাজ করা দরকার। তা হচ্ছে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা। নিজ নিজ অবস্থানে থেকে যার যে দায়িত্ব সে দায়িত্ব পালন করতে হবে। যার যে দায়িত্ব তাকে সেই দায়িত্ব পালন করতে দিতে হবে। কাউকে অবজ্ঞা করা উচিত না। দেশের অগ্রগতি চাইলে সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে সবাইকে নিয়েই কাজ করা উচিত।
তিনি আরও বলেন, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশি ও বিদেশি অনেকে চায় সার্বিক সংকট থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ যেন না হয়। এ ধরনের একটি অপচেষ্টা চলছে। সেই অপচেষ্টা যেন কোনোভাবেই সফল হতে না পারে সেভাবেই সবার কাজ করা দরকার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের সময় সেনাপ্রধানের দূরদর্শী ইতিবাচক ভূমিকা অবিস্মরণীয়। সার্বিক বিষয় চিন্তা করে তার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল। এখনও দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ নানা বিপর্যয় মোকাবেলায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। একইসঙ্গে নৌ ও বিমান বাহিনীও প্রশংসা পাচ্ছে। কিন্তু এই সশস্ত্র বাহিনীকে অন্ধকারে রেখে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের ক্ষেত্রে স্পর্শকাতর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার উদ্যোগ অবিবেচনাপ্রসূত। এ ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার বিচক্ষণতার পরিচয় দেয়নি। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব যাদের ওপর ন্যস্ত, তাদের মতামত না নিয়ে মানবিক করিডর বা ত্রাণ সহায়তা দিতে যাওয়ার উদ্যোগ যুক্তিযুক্ত না। এ ক্ষেত্রে সেনাপ্রধান যে কনসার্ন ব্যক্ত করেছেন, তা যথার্থ। রাষ্ট্রের সংস্কারে সশস্ত্র বাহিনীকে যুক্ত করা যেত। কারণ সশস্ত্র বাহিনীরও সংস্কার প্রয়োজন।