অর্থনীতি
শীতের অজুহাতে মাছের বাজারে আগুন!

শীতের অজুহাতে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়েছে মাছের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, গত কয়েক দিনের ঠান্ডায় জেলেরা মাছ কম ধরছেন। ফলে বাজারে মাছের সরবরাহ কমেছে, বেড়েছে দাম। তবে ক্রেতারা বলছেন, বাজারে সব জিনিসেরই দাম বেশি। শীত শুধু অজুহাত।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের খুচরা মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে স্বাভাবিকই আছে মাছের সরবরাহ। তবে ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক কম।
বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে বাজারে আকার ও মানভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ২৪০ টাকা, বোয়াল ৬৫০ টাকা, সরপুঁটি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মিরকা ২৫০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, দেশি কই ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা, সিলভার কার্প ১৮০ থেকে ২৬০ টাকা, পাঙ্গাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, বাইলা ৩০০ টাকা, পোয়া মাছ ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা, মৃগেল ৩০০ টাকা, টুনা ৩০০ টাকা, চাপিলা ২০০ থেকে ৪০০ টাকা, সুরমা ২৫০ টাকা, গলদা চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৭০০ টাকা, কোরাল ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, ফাইস্যা ৫০০ টাকা, তপসী মাছ ৭০০ টাকা, আইড় ৮০০ টাকা, লাক্ষ্যা মাছ ৭৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, টেংড়া ৬০০ টাকা, দেশি পুঁটি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাচকি ৪০০ টাকা, কালিবাউস ৩০০ টাকা, ফলি মাছ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, বাইম ৮৫০ টাকা, কাইক্যা মাছ ৪০০ টাকা, ভেদা মাছ ৫০০ টাকা, রূপচাঁদা ১১৫০ টাকা, শোল ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা, দেশি শিং ১০০০ টাকা, চাষের শিং ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, দেশি মাগুর ১০০০ টাকা, চাষের মাগুর ৬০০ টাকা, টাকি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, প্রতি বছরই শীতের সময় মাছের দাম একটু বেশি থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। প্রায় প্রত্যেক ধরনের মাছেই কেজিতে ২০ থেকে ৫০ টাকা বা তারও বেশি বেড়েছে। পাশাপাশি নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুরে মাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে বলেও জানান তারা। যার কারণে বাজারে মাছের সংকট রয়েছে বলে দাবি বিক্রেতাদের।
মাছের দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা আল-আমিন বলেন, গত কয়েকদিনের ঠান্ডায় জেলেরা মাছ ধরতে পানিতে কম নামছে। যার কারণে বাজারে মাছের সরবরাহ কম এবং দাম বেশি। কেজিতে ২০-৩০ টাকা দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের মাছের।
মাছের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে ইলিশের। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের কেজি রাখা হচ্ছে ২৪০০ টাকা, ৬০০-৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি রাখা হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা, আধা কেজি ওজনের ইলিশের কেজি রাখা হচ্ছে ১১০০ টাকা। বর্তমানে জাটকা ধরা, মজুদ ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বাজারে জাটকা পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজি দরে।
ইলিশের দাম বাড়ার কারণ হিসেবেও শীতকে দায়ী করছেন বিক্রেতারা। তবে কারওয়ান বাজার রেলগেটে অবস্থিত মাছের আড়তের গাজী আল মামুন নামের এক ইলিশের আড়ৎদার বলেন, শীতের জন্য জেলেরা ইলিশ মাছ ধরতে যাচ্ছে না, ব্যাপারটা এমন নয়। নদ-নদীতেই ইলিশ কম। যার কারণে বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশ নেই, দামও অনেক গুণ বেশি।
মোস্তফা জামাল নামের এক ক্রেতা বলেন, মাছের দাম আগের তুলনায় অনেক গুণ বেড়েছে। আগে তো চাষের মাছ খেতে পারতাম। এখন সেটাও পারছি না। যে চাষের মাছের কেজি ছিল ১৫০ টাকা, সেটা এখন ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। দেশি মাছ তো বাজারে পাওয়াই দুষ্কর। পেলেও দাম ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। ৬০০ টাকার নিচে এখন আর বাজারে কোনো দেশি মাছ পাওয়া যায় না। বিক্রেতারা সব সময় সুযোগ খোঁজে দাম বাড়ানোর। এখন শীতের অজুহাত দিচ্ছে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
দেড় লাখ টাকা ছাড়াল সোনার ভরি

ফের সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এর ফলে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের ১৭ দিনেই চতুর্থবারের মতো সোনার দাম বাড়ানো হয়েছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনায় ১ হাজার ৪৭০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৫১ হাজার ২৮২ টাকা নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের ইতিহাসে এটিই এখন পর্যন্ত সোনার সর্বোচ্চ দাম।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যা মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি, ৫ ফেব্রুয়ারি ও ১০ ফেব্রুয়ারি সোনার দাম বাড়ানো হয়।
এছাড়া, ২১ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ৩৯৯ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ১৮ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৯০ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৬৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি সোনার দাম ১ হাজার ১৫ টাকা বাড়িয়ে ১ লাখ ১ হাজার ৯৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সোনার দাম বাড়ানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৫৭৮ টাকা, ২১ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির এক ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
রমজানে ২৫ স্থানে সুলভমূল্যে মাংস-ডিম-দুধ বিক্রি করবে সরকার

পবিত্র রমজান উপলক্ষে সুলভ মূল্যে চারটি পণ্য বিক্রি করবে মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চার পণ্যের মধ্যে ২৫০ টাকা কেজি ড্রেসিং ব্রয়লার মুরগির মাংস, প্রতি ডজন ডিম ১১৪ টাকা, ৬৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস এবং ৮০ টাকা দরে প্রতি লিটার দুধ কেনা যাবে।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, ১ রমজান থেকে ২৮ রমজান পর্যন্ত ঢাকা শহরে এ ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের ২৫টি স্থানে সুলভ মূল্যে প্রাণিজাত পণ্য বিক্রয়ের ক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লবের সময় যে সব স্থানে সাধারণ মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ বেশি ছিল সেসব স্থানে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বস্তি এলাকায় বিক্রির ব্যবস্থা করা হবে।
যেখানে মিলবে পণ্য:
১। সচিবালয়ের পাশে (আব্দুল গণি রোড), ২। খামারবাড়ী (ফার্মগেট), ৩। ঘাটফুট রোড (মিরপুর),৪। আজিমপুর মাতৃসদন (আজিমপুর), ৫। নয়াবাজার (পুরান ঢাকা), ৬। বনশ্রী, ৭। হাজারীবাগ (সেকশন), ৮। আরামবাগ (মতিঝিল), ৯। মোহাম্মদপুর (বাবর রোড), ১০। কালশী (মিরপুর), ১১। যাত্রাবাড়ী (মানিক নগর গলির মুখে), ১২। শাহাজাদপুর (বাড্ডা), ১৩। কড়াইল বস্তি, বনানী, ১৪। কামরাঙ্গীর চর, ১৫। খিলগাঁও (রেল ক্রসিং দক্ষিণে), ১৬। নাখাল পাড়া (লুকাস মোড়), ১৭। সেগুন বাগিচা (কাঁচা বাজার), ১৮। বসিলা (মোহাম্মদপুর), ১৯। উত্তরা (হাউজ বিল্ডিং), ২০। রামপুরা (বাজার), ২১। মিরপুর ১০, ২২। কল্যাণপুর (ঝিলপাড়), ২৩। তেজগাঁও, ২৪। পুরান ঢাকা (বঙ্গবাজার), ২৫। কাকরাইল
আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় এ বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
পবিত্র রমজান উপলক্ষে সুলভ মূল্যে চারটি পণ্য বিক্রি করবে মৎস্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। চার পণ্যের মধ্যে ২৫০ টাকা কেজি ড্রেসিং
এ সময় জানানো হয়, প্রতিদিন সবগুলো বিক্রয়কেন্দ্র মিলে ৬০ হাজার পিস ডিম, ৬ হাজার লিটার দুধ, ২ হাজার কেজি মুরগি ও ২০০০-২৫০০ কেজি মাংস বিক্রি হবে।
ঢাকা ছাড়াও সারা দেশব্যাপী এ ভ্রাম্যমাণ বিক্রয় কার্যকম থাকবে। জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ নিজ নিজ উদ্যোগে এ কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
করের আওতায় আসছেন গ্রামাঞ্চলের চিকিৎসক-ব্যবসায়ীরা

জেলা, উপজেলা এবং গ্রাম অঞ্চলে যেসব ব্যবসায়ীরা, চিকিৎসক, আইনজীবীর মতো সরকারি-বেসরকারি কর্মজীবী রয়েছেন, যারা কর দেওয়ার মতো আয় করছেন, সবার কাছে কর আদায়ের জন্য তালিকা করে দেওয়ার পাশাপাশি তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত দ্বিতীয় অধিবেশন শেষে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গ্রামে অনেকে অনেক আয় করছে বলে ডিসিরা জানিয়েছেন। তারা কিন্তু কর দিচ্ছেন না। আমরা এখন কর সংগ্রহ বাড়িয়ে রাজস্ব বাড়াতে চাই। এ বিষয়ে এনবিআর এখন উদ্যোগ নেবে। তাদের একটি তালিকা ডিসিরা দেবেন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা যে প্রচুর বিক্রি করেন, চিকিৎসক আইনজীবীরা যে ফি নেন, তাদের রশিদ বা ডিজিটাল পেমেন্ট মেথডে এনে তাদেরকেও করের আওতায় আনার উদ্যােগ নেওয়া হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের চিকিৎসক-আইনজীবীরা সরাসরি ক্যাশ ট্রানজেকশন করেন। এ কারণে তাদেরকে করের আওতায় আনা যায় না। চিকিৎসকরা যে ফি নেন তার রিসিট তো কোনো মানুষ নেয় না। এই ফি যদি ডিজিটাল মাধ্যমে দেওয়া হয়, তাহলে কিন্তু তার একটা রেকর্ড থাকে। বিদেশে কিন্তু এগুলো সব রেকর্ডেড৷
এখন তাদের (চিকিৎসক) যে এটেনডেন্ট থাকে ফ্রি কালেকশন করে। তাদের রশিদ দিয়ে ফি নেওয়ার ব্যবস্থা করা দরকার। আইনজীবী বা অন্যান্য পেশার জন্যও এমন ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ডিসিরাই আজ উত্থাপন করেছেন গ্রামাঞ্চলে ব্যবসায়ীরা অনেক আয় করেন। তখন এনবিআর এ বিষয়টি নিয়ে ড্রাইভ দিতে বলেছে৷ আমাদের ট্যাক্সের আওতা না বাড়ালে তো হবে না৷ এমনিতেই তো দাবি থাকে ভ্যাট কমান-ট্যাক্স কমান৷ সুতরাং ভ্যাট-ট্যাক্স সহনীয় পর্যায়ে রেখে ট্যাক্স গ্রহণের পরিধিটা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে এই ট্যাক্স নেটটা বাড়িয়ে রাজস্ব আরও বিস্তৃত করতে পারি৷ মোটকথা জোর করে করের পরিমাণ না বাড়িয়ে ট্যাক্সের নেট বাড়ানো হবে৷ আমাদের শিল্প প্রতিষ্ঠান আছে ৫০ থেকে ৬০ লাখ কিন্তু কর দেয় মাত্র পাঁচ লাখ৷
এছাড়া এ সম্মেলনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কর্মসংস্থান বাড়াতে ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের গ্রামে এম্পলয়মেন্টটা বাড়াতে হবে৷ সেখানে বাড়ানো সহজ৷ চায়নাতে গ্রাম্য শিল্পের সঙ্গে গভীর যোগাযোগ৷ চায়নার প্রত্যন্ত একটি গ্রামে তৈরি হওয়া পণ্য আমেরিকার ওয়ালমার্টেও পাবেন৷ অথচ বাংলাদেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের এই জিনিসগুলো যোগাযোগের অভাবে উঠে আসে না। যোগাযোগ না থাকলে ব্যালেন্স ডেভলপমেন্টটা করা সম্ভব হবে না।
তিনি বলেন, এছাড়া ডিসিরা যে দুর্গম এলাকা রয়েছেন, সেগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা বাড়ানো এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের ব্যবস্থার কথা বলেছেন। তারা বলেছেন, এসএমই খাতে ছোট উদ্যোক্তা লোন পায় না। সেগুলো আমরা ব্যবস্থা নেবো।
উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারের যেকোনো সিদ্ধান্ত আমরা বাস্তবায়ন করি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিয়ে। মাঠ পর্যায়ের অফিসাররা যদি দক্ষ এবং সেবক হন তাহলে জনগণ যে সেবাটা পান সেটা কার্যকর হয়। আমরা সরকারের সঙ্গে ডিসিদের যোগাযোগ বাড়ানোর কথা বলেছি।
উপদেষ্টা বলেন, গ্রামাঞ্চলে কৃষি কিন্তু এখন একটি বড় সোর্স। সেটা ঠিক না থাকলে আমরা এত মানুষকে খাওয়াতে পারতাম না। সেদিকে নজর দেওয়ার কথা আমরা বলেছি ডিসিদের।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তি আরও পিছিয়েছে: অর্থ উপদেষ্টা

চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় আরও পিছিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আগামী জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব এক সঙ্গে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় উপস্থাপনে করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের দ্বিতীয় অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত অধিবেশন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, আমরা বলেছি যে, আমাদের কিছু কাজ আছে। আমরা অত তাড়া করছি না। আমি একটা জিনিস বলি, আপনারা তো ভাবছেন ভিক্ষা করে নিয়ে আসি, আসলে অনেক শর্ত মেনে এবং আমাদের নিজস্ব তাগিদে। কিছু শর্ত আছে বললেই আমরা পালন করবো, তা নয়। এখন আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি ভালো। চলতি হিসাব, আর্থিক হিসাব ও প্রবাসী আয় ভালো। আমরা মরিয়া হয়ে উঠছি না।
আগামী মার্চে কি আইএমএফ পর্ষদে প্রস্তাব উঠছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, মার্চে না আমরা বলছি একটু অপেক্ষা করবো, আগামী জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম দুই কিস্তির প্রস্তাব এক সঙ্গে উঠবে।
চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের প্রস্তাব প্রথম দফায় গত ৫ ফেব্রুয়ারি সংস্থার নির্বাহী পর্ষদের সভায় উপস্থাপনের কথা থাকলেও প্রথম। দফায় তা পিছিয়ে ১২ মার্চ করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে তা আরও পিছিয়ে জুনে নিয়ে যাওয়া হলো। বোর্ড অনুমোদন করলে তার কয়েক দিন পর দুই কিস্তির অর্থ একসঙ্গে ছাড় হতে পারে।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশকে প্রতিটি কিস্তি পেতে কিছু শর্ত পরিপালন করতে হচ্ছে। চতুর্থ কিস্তির জন্য গত জুনভিত্তিক দেওয়া বিভিন্ন শর্তের মধ্যে কর সংগ্রহ ছাড়া সব শর্ত পূরণ হয়েছে। চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি দেখতে গত ৩ ডিসেম্বর ঢাকা সফরে আসে আইএমএফের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের বৈঠকে বারবারই কর আহরণ বাড়ানোর বিষয়টি অনেক গুরুত্ব পায় বলে জানান অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, শুধু চতুর্থ কিস্তির জন্য নয়, আগের কিস্তিগুলোতেও কর আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা যায়নি।
সূত্র জানায়, আইএমএফ প্রতিনিধি দল কর অব্যাহতি সুবিধা কমিয়ে রাজস্ব বাড়ানোর জন্য চাপ দেয়। একই সঙ্গে কর-জিডিপি অনুপাত বছরে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে নতুন করে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বাড়ানোর শর্তজুড়ে দেওয়া হয়। সরকার এ শর্ত নিয়ে দরকষাকষি করে। বাড়তি রাজস্ব আহরণের কৌশল হিসেবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যেই অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ায় সরকার। তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্তে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নানা মহল থেকে সমালোচনা শুরু হয়। এতে করে প্রায় ১০টি পণ্য ও সেবায় শুল্ক- করা কিছুটা কমানো হয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ৩৫৯২ কোটি টাকা দেবে চীন

সময়ের পরিক্রমায় ব্যস্ততা বেড়েছে মোংলা বন্দরের। আমদানিকারকরা আস্থা রাখায় দিন দিন বাড়ছে কন্টেইনারবাহী জাহাজের আগমন। এতে বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা বাড়াতে তিন হাজার ৫৯২ কোটি টাকা ঋণ দেবে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী চীন। এতে বন্দর ব্যবহারকারীদের আধুনিক সুবিধা দেওয়া সম্ভব হবে। মোংলা বন্দর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
কন্টেইনার এবং মালামালের সুষ্ঠু ও নিরাপদ উত্তোলন-অবতরণ নিশ্চিত করতে ‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পের মোট ব্যয় চার হাজার ৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৪৭৫ কোটি ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। বাকি তিন হাজার ৫৯২ কোটি ৮৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা চীন সরকারের জিটুজি ঋণ থেকে আসবে। জানুয়ারি ২০২৫ থেকে ডিসেম্বর ২০২৮ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রকৌশল ও উন্নয়ন) ও যুগ্মসচিব ড. এ. কে. এম. আনিসুর রহমান বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। আরও জেটি ও ডাটা সেন্টার হবে। আইসিটি খাত শক্তিশালী হবে। বন্দর পরিচালনায় প্রয়োজনীয় আইসিটি সুবিধাদি যুক্ত হলে বন্দরের সক্ষমতা বাড়বে। প্রকল্পে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে চীন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে অন্যান্য দেশের কাগো হ্যান্ডেলিংয়ের মাধ্যমে বন্দরটির আঞ্চলিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন জানায়, বর্তমানে মোংলা বন্দরে ৪৭টি জাহাজ একসঙ্গে নোঙ্গর করতে পারে। কিন্তু কোনো কন্টেইনার জেটি নেই। মোংলা বন্দরে বর্তমানে বার্ষিক এক কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো এবং এক লাখ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা রয়েছে। প্রকল্পটি দীর্ঘদিন ধরে বিবেচনাধীন ছিল এবং চীনের উচ্চ পর্যায়ের তাগিদেই এটি অনুমোদিত হয়েছে। সরকার ঋণনির্ভর প্রকল্প কমাতে চায়, তবে মোংলা বন্দরকে আরও কার্যকর করতে এটি অপরিহার্য। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা থাকায় মোংলা বন্দর নেপাল, ভুটান এবং পশ্চিমবঙ্গের বাণিজ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।