ধর্ম ও জীবন
ধর্মমন্ত্রীর সঙ্গে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক অত্যন্ত চমৎকার ও বন্ধুত্বপূর্ণ। আগামীতে দু’দেশের মধ্যকার এ সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছাবে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) মন্ত্রণালয়ে ধর্মমন্ত্রী তার অফিস কক্ষে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুহাইলেনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এসব কথা বলেন।
সাক্ষাৎকালে তারা আগামী দিনে দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্ক দৃঢ় ও সুসংহত করার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া হজের নিবন্ধন পরিস্থিতি, হজযাত্রী পরিবহন, ঢাকায় অ্যারাবিক ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউট স্থাপন, বাংলাদেশে আটটি আইকনিক মসজিদ স্থাপনের বিষয়সহ দু’দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।
সৌদি রাষ্ট্রদূত ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ায় ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খানকে অভিনন্দন জানান। এসময় ধর্ম সচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দার ও হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয়
সৌদি পৌঁছেছেন ৩৮ হাজার ৫৭০ হজযাত্রী

হজ পালনের উদ্দেশ্যে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৩৮ হাজার ৫৭০ জন হজযাত্রী। এছাড়া চলতি বছর হজে গিয়ে সৌদি আরবে আরও একজন বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট ছয়জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
সর্বশেষ শুক্রবার (১০ মে) মো. ফয়েজ উদ্দিন (৭২) মদিনায় মারা গেছেন। তার বাড়ি নীলফামারী। তিনি সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে গিয়েছিলেন।
সোমবার (১২ মে) হজ পোর্টালে পবিত্র হজ-২০২৫ প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। অন্যদিকে রোববার সকাল পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৫৭০ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
এবার বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজযাত্রী হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন হজ পালন করবেন।
মোট ৯৬টি হজ ফ্লাইটে ৩৮ হাজার ৫৭০ জন হজযাত্রী সৌদি আরব গেছেন। এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ৪৭টি, সৌদি এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ৩৩টি, ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্স পরিচালিত ফ্লাইট সংখ্যা ১৬টি।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় ২৯ এপ্রিল। সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ ফ্লাইট ৩১ মে।
হজ শেষে ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ১০ জুন। হজযাত্রীদের দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুলাই।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
তাওয়াফের সময় যে দোয়া পড়বেন

হজ ও ওমরার সময় পবিত্র কাবাঘর তাওয়াফ করা হয়। হজ ছাড়াও নফল তাওয়াফের নিয়ম রয়েছে। পবিত্র কোরআনে একাধিক জায়গায় কাবাঘর তাওয়াফের কথা বলা হয়েছে। বর্ণিত হয়েছে, ‘আর আমার ঘরকে পবিত্র রাখবে তাওয়াফকারী, নামাজ কায়েমকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য।’ (সূরা হজ, আয়াত : ২৬)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আমি ইবরাহিম ও ইসমাঈলকে দায়িত্ব দিয়েছিলাম যে তোমারা আমার ঘরকে তাওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র করো।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ১২৫)
তাওয়াফের ফজিলত সম্পর্কে ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, বাইতুল্লাহর চারদিকে তাওয়াফ করা নামাজ আদায়ের অনুরূপ। তবে তোমরা এতে (তাওয়াফকালে) কথা বলতে পারো। সুতরাং তাওয়াফকালে যে ব্যক্তি কথা বলে সে যেন ভালো কথা বলে। (তিরমিজি, হাদিস : ৯৬০)
তাওয়াফের সময় যার যেটা মনে চায় একান্তভাবে আল্লাহ তায়ালার সামনে পেশ করতে পারে। তবে হজরত আতা রহ. বলেন, আবু হুরায়রা রা. আমার নিকট হাদিস বর্ণনা করেন যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সা.–কে বলতে শুনেছেন,…যে ব্যক্তি সাতবার বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করে এবং কোন কথা না বলে নিম্নোক্ত দোয়া পড়ে
سُبْحَانَ اللّٰهِ وَالْحَمْدُ لِلّٰهِ وَلَا إِلٰهَ إِلَّا اللّٰهُ وَاللّٰهُ أَكْبَرُ وَلَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللّٰه
উচ্চারণ : সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদু লি-ল্লাহি ওয়ালা ইলাহা- ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, লা-হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ
তার দশটি গুনাহ মুছে যাবে। তার জন্য দশটি নেকী লেখা হবে এবং তার মর্যাদা দশগুণ বর্ধিত করা হবে। আর যে ব্যক্তি তাওয়াফ করে এবং এ অবস্থায় কথা বলে, (উপরোক্ত জিকির করে বা অন্য কোনো মাসনুন জিকির করে।) সে তার দুই পা রহমতের মধ্যে ডুবিয়ে রাখে; যেমন কারো পা পানিতে ডুবিয়ে রাখে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯৫৭)
হাদিসে উত্তম কথা ছাড়া কোনো কথা না বলতে নির্দেশ করা হয়েছে। তাছাড়া যেহেতু বিধানগতভাবে তাওয়াফও আংশিক নামাজের অন্তর্ভুক্ত তাই তাতে উত্তম কথা (জিকির, তিলাওয়াত এবং সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ ছাড়া) অন্য কোনো কাজ ও কথা বলা উচিত নয়।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
জাতীয়
সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৯ হাজার ৫৪৯ জন হজযাত্রী

পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে পৌঁছেছেন ৯ হাজার ৫৪৯ জন হজযাত্রী। তারা মোট ২৩টি ফ্লাইটে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। বৃহস্পতিবার ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হজ বুলেটিনের আইটি হেল্প ডেস্ক জানায়, এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস (ঢাকা) ও সৌদি আরবের বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, বুধবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা পর্যন্ত ৯ হাজার ৫৪৯ জন বাংলাদেশি হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এদের মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন ২ হাজার ৮৯৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গেছেন ৬ হাজার ৬৫৬ জন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ১০টি ফ্লাইটে সৌদি আরবে গেছেন ৪ হাজার ১৩৬ জন। একই সময়ে, সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের ৬টি ফ্লাইটে ২ হাজার ৪৫৩ জন এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সের ৭টি ফ্লাইটে ২ হাজার ৯৫০ জন হজযাত্রী গন্তব্যে পৌঁছান।
হজ বুলেটিনে আরও জানানো হয়, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ৮৭ হাজার ১০০ জন হজে অংশ নেবেন। এর মধ্যে ৫ হাজার ২০০ জন যাবেন সরকারি ব্যবস্থাপনায় এবং ৮১ হাজার ৯০০ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ১১৮টি প্রাক-হজ ফ্লাইটে ৪৪ হাজার ৩০৭ জন, সাউদিয়া ৮০টি ফ্লাইটে ৩২ হাজার ৭৪০ জন এবং ফ্লাইনাস ৩৪টি ফ্লাইটে ১৩ হাজার ৬৫ জন হজযাত্রী পরিবহন করবে।
উল্লেখ্য, ২৯ এপ্রিল থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে এবং এটি চলবে আগামী ৩১ মে পর্যন্ত।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
জুমার দিন রোজা রাখার বিধান

বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করে জুমার দিন নফল রোজা রাখা বা জুমার দিনকে বিশেষভাবে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা মাকরুহ বা অপছন্দনীয়। ইসলামে জুমার দিনে রোজা রাখার বিশেষ কোনো ফজিলত নেই। বরং নবিজি (সা.) জুমার দিনকে বিশেষভাবে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করতে নিষেধ করেছেন। আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
لاَ تَخْتَصُّوا لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ بِقِيَامٍ مِنْ بَيْنِ اللَّيَالِي وَلاَ تَخُصُّوا يَوْمَ الْجُمُعَةِ بِصِيَامٍ مِنْ بَيْنِ الأَيَّامِ إِلاَّ أَنْ يَكُونَ فِي صَوْمٍ يَصُومُهُ أَحَدُكُمْ
রাতসমূহের মধ্যে তোমরা শুধু জুমার রাতকে নামাজ ও ইবাদতের জন্য নির্ধারন করে নিও না। একইভাবে দিনসমূহের মধ্যে শুধু জুমার দিনকে রোজা রাখার জন্য নির্দিষ্ট করে নিও না। তবে জুমার দিন যদি কারো নিয়মিত রোজা রাখার দিনে পড়ে তাহলে সে রোজা রাখতে পারবে। (সহিহ মুসলিম)
এ হাদিস থেকে বোঝা যায় জুমার দিনকে বিশেষভাবে রোজার জন্য নির্দিষ্ট করা ঠিক নয়। তবে জুমার দিন রোজা রাখা ইদ বা তাশরিকের দিনগুলোতে রোজা রাখার মতো নিষিদ্ধ নয়। অন্য কোনো ফজিলতপূর্ণ দিন বা নিয়মিত রোজা রাখার দিন যদি জুমার দিন হয়, তাহলে জুমার দিন রোজা রাখা যেতে পারে। যেমন কারো যদি প্রতি মাসে আইয়ামে বীজের তিনটি রোজা রাখার অভ্যাস থাকে, কোনো মাসে এই তিন দিনের মধ্যে জুমার দিনও পড়ে যায়, তাহলে সে জুমার দিন রোজা রাখতে পারে।
কেউ যদি প্রতি সপ্তাহে নফল রোজা রাখতে চায়, তাহলে সে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতে পারে। আল্লাহর রাসুল (সা.) প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার তিনি রোজা রাখতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। (সুনানে তিরমিজি)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন,
تُعْرَضُ الْأَعْمَالُ يَوْمَ الِاثْنَيْنِ وَالْخَمِيسِ فَأُحِبُّ أَنْ يُعْرَضَ عَمَلِي وَأَنَا صَائِمٌ
প্রতি বৃহস্পতি ও সোমবার আল্লাহ তাআলার কাছে বান্দার আমলসমূহ পেশ করা হয়। আমি চাই আমার আমলসমূহ যেন রোজা রাখা অবস্থায় পেশ করা হয়। (সুনানে তিরমিজি, সুনানে নাসাঈ)
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ধর্ম ও জীবন
পরিবারের একাধিক ব্যক্তির উপর কুরবানী ওয়াজিব হলে করণীয়

মুসলমানদের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদতের নাম কোরবানি। যা প্রতিটি সামর্থ্যবান নর-নারীর ওপর ওয়াজিব।
কিন্তু কোরবানি সম্পর্কে আমাদের পরিপূর্ণ জ্ঞান না থাকার কারণে বিভিন্ন সময়ে এর সঙ্গে অনেক ভুল ধারণাকেও গুলিয়ে ফেলি। তার মধ্যে একটি হলো গৃহকর্তার নামেই কোরবানি দিতে হবে বা সংসারের পুরুষদের নামেই কোরবানি দিতে হবে।
বাংলাদেশে অনেক পরিবার এমন আছে, যাদের ঘরের নারী/মেয়েদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে আছে, অথচ তাদের নামে কোরবানি করা হয় না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যার পক্ষ থেকে কোরবানি করা হয়েছে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়নি। আবার অনেক পরিবারে মা-বাবার নামে কোরবানি দেওয়া হলেও তাদের অবিবাহিত ছেলে-মেয়ের (যারা শিক্ষা/বিয়ের জন্য রাখা টাকা/সোনা দিয়ে জাকাতযোগ্য হয়ে গেছেন) নামে কোরবানি দেওয়া হয় না। অথচ তাদের ওপর কোরবানি ওয়াজিব।
অনেক আছেন চল্লিশ-পঞ্চাশ হাজার টাকা খরচ করে পরিবারের দুয়েকজনের নামে কোরবানি করেন, অথচ এই টাকায় কোরবানির উপযুক্ত একটি পশু কিনে পরিবারে সাত সদস্যের নামেও কোরবানি করার সুযোগ ছিল। অথচ এই সহজ সমাধানটি অনেকেই মেনে নিতে চান না।
এর কারণ হলো, কোরবানির বিধান সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা নেই। কোরবানি করার সময় আমরা চিন্তা করি না যে আমাদের পরিবারের কজন সদস্যের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে।
কিংবা একটি মানুষের কাছে কী পরিমাণ সম্পদ থাকলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়ে যায়। চলুন, জেনে নেওয়া যাক কোন কোন কারণে মানুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়।
কার ওপর কোরবানি ওয়াজিব : এক বাক্যে বলতে গেলে, যার ওপর জাকাত ওয়াজিব, তার ওপর কোরবানিও ওয়াজিব। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন ওই মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। যে ১০ জিলহজ ফজর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে।
নিসাব কী : সোনার ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭ দশমিক ৫) ভরি সোনার মালিক হলেই তাকে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক বলে গণ্য করা হবে আর রুপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২ দশমিক ৫) ভরি। টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্তুর ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ বা এমন প্রয়োজনাতিরিক্ত জিনিস যার মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ বা বেশি হয়।
কারো কাছে যদি সোনা বা রুপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নাও থাকে, কিন্তু প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক বস্তু মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলে তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (আল মুহিতুল বুরহানি : ৮/৪৫৫)
যেমন—কারো কাছে এক ভরি সোনা ও সামান্য কিছু টাকা আছে, যার কোনো একটিও পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ নয়। কিন্তু এক ভরি সোনার মূল্য ও সামান্য টাকাকে একত্র করলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্যের বেশি হয়ে যায়। যেহেতু এখন সোনার মূল্য অনেক বেশি, তাই কারো কাছে এক ভরির কিছু কম সোনা ও সঙ্গে কিছু টাকা থাকলেই সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার সমপরিমাণ হয়ে যায়। ফলে তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্য কত : বর্তমানে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার দাম প্রায় ৯০ হাজার টাকার মতো।
উল্লিখিত আলোচনা দ্বারা বোঝা যায়, আমাদের দেশে অনেক নারীর ওপরই কোরবানি ওয়াজিব, যেহেতু তাদের সবার কাছে কমবেশি গহনা থাকে। কিন্তু তাদের পক্ষ থেকে কোরবানি দেওয়া হয় না। আবার এমন অনেক পুরুষ আছেন, যার ওপর মূলত কোরবানি ওয়াজিব নয় (ওয়াজিব তার স্ত্রী/কন্যার ওপর)। কিন্তু তার পক্ষ থেকেই কোরবানি দেওয়া হয়।
কোরবানি করতে না পারলে করণীয়
কেউ যদি কোরবানির দিনগুলোতে ওয়াজিব কোরবানি দিতে না পারে, তাহলে কোরবানির পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কোরবানির উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করেছিল, কিন্তু কোনো কারণে কোরবানি দেওয়া হয়নি, তাহলে ওই পশু জীবিত সদকা করে দেবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৪/২০৪; ফাতাওয়া কাজিখান: ৩/৩৪৫)