ব্যাংক
বিদেশে কার্ডে অর্থ উত্তোলন ফের চালু করলো ব্র্যাক ব্যাংক
বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক পুনরায় মাল্টি কারেন্সি ডেবিট কার্ড দিয়ে বিদেশে নগদ অর্থ উত্তোলনের সুবিধা চালু করেছে। এই সুবিধার আওতায় গ্রাহকেরা এক দিনে নগদ ৩০০ মার্কিন ডলার আর প্রতি মাসে ১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার উত্তোলন করতে পারবেন।
সামগ্রিক গ্রাহক চাহিদা ও অসুবিধার কথা বিবেচনা করে এই সুবিধা আবার চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্র্যাক ব্যাংকের এক কর্মকর্তা।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর ব্র্যাক ব্যাংক বিদেশে কার্ডের মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের এই সুবিধা বন্ধ করে দেয়। তখন গ্রাহকদের কাছে পাঠানো বার্তায় ব্র্যাক ব্যাংক জানায়, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ থেকে ব্র্যাক ব্যাংকের কার্ড দিয়ে দেশের বাইরে সব ধরনের ক্যাশ উত্তোলন স্থগিত করা হয়েছে। তবে ব্র্যাক ব্যাংকের কার্ডধারীরা ভ্রমণ কোটার মধ্যে পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) টার্মিনাল ও ই-কমার্স সেবার মাধ্যমে যেকোনো ধরনের বৈধ কেনাকাটা করতে পারবেন।
তখন এর কারণ সম্পর্কে ব্র্যাক ব্যাংক জানিয়েছিল, ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের গঠনকল্পে ব্যাংকের নীতি হলো, ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক পেমেন্টের সক্ষমতা উৎসাহিত করা ও লেনদেন নিরুৎসাহিত করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আরও বলা হয়, এটি ক্রেডিট নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে কার্ডের ব্যবহার সম্পর্কে নিরীক্ষণযোগ্য তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
ব্যাংক
তথ্য গোপনে এনআরবিসি ব্যাংককে অর্থদন্ড, শাস্তির মুখে কর্মকর্তারা
এনআরবি কমার্শিয়াল (এনআরবিসি) ব্যাংকের পরিচালক আবু বকর চৌধুরীর মিথ্যা ঘোষণায় উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডার হওয়ার তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তথ্য উদ্ঘাটন এবং বিভিন্ন সময়ে অনিয়মের কারণে এখন সব পরিচালকের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ ধারায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে গঠিত ব্যাংকটির সব উদ্যোক্তা শেয়ারহোল্ডারের আইনানুগ আবাসিক মর্যাদার দলিল চাওয়া হয়েছে। এছাড়া অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য গোপন করায় ব্যাংকটিকে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
গত রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ব্যাংকটিতে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নানা অনিয়ম ও জালিয়াতিতে জড়িত ব্যাংকটি। একের পর এক অনিয়ম করেও তা গোপন রাখা হতো। আর এসব অনিয়ম আড়াল করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও দেওয়া হতো মিথ্যা তথ্য। এতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে বিভ্রান্ত করে আসছিল ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ চক্রটি। বিগত সরকারের প্রভাবশালী বলয়ের সহযোগিতায় এবং এনআরবিসি ব্যাংকের আলোচিত চেয়ারম্যান পারভেজ তমালের নেতৃত্বে এসব অপকর্ম চলে আসছিল।
সূত্র জানায়, এনআরবিসি ব্যাংকের ওপর গত ফেব্রুয়ারিতে পরিচালিত বিশদ পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলোকে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এর আগে বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যাখ্যা তলব করে সন্তোষজনক জবাব পাওয়া যায়নি। এমন এক সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যবস্থা নিচ্ছে যখন ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম পারভেজ তমাল, ভাইস চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মিয়া আরজু ও নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমাম পলাতক। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে তাদের আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, এনআরবিসি ব্যাংকের উদ্যোক্তা শেয়ার কেনার সময় ২০১২ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণাপত্রে আবু বকর চৌধুরীর জাতীয় পরিচয়পত্র ‘নেই’ উল্লেখ করা হয়। অথচ পরিদর্শনে দেখা গেছে– ব্যাংকটির ওআর নিজাম রোড শাখায় আবু বকর চৌধুরীর মালিকানার বায়েজিদ স্টিল ইন্ডাস্ট্রির অ্যাকাউন্ট খোলার নথিতে ২০০৮ সালের ১৪ মে ইস্যু করা তাঁর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সংরক্ষিত আছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় আবু বকর চৌধুরীসহ সকল পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১০৯ ধারায় কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ১৪ দিনের মধ্যে পৃথক কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ধারার আওতায় পরিচালক অপসারণ করার ক্ষমতা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার ৬৮ দশমিক ০৬ শতাংশ এবং সাধারণ শেয়ারধারীদের ৩১ দশমিক ৯৪ শতাংশ বলে উল্লেখ করা হয়। অথচ পরিদর্শন দল পেয়েছে ভিন্ন তথ্য। শেয়ার ধারণসংক্রান্ত অসামঞ্জস্য তথ্যের কারণে কেন ১০৯ ধারার আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না ১৪ দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে হবে। আর সকল অনিবাসী পরিচালকের আবাসিক মর্যাদা পুনরায় যাচাই করে ৩০ দিনের মধ্যে দলিলসহ প্রতিবেদন দিতে হবে। এছাড়া আগামী ৬ মাসের মধ্যে অনিবাসীদের শেয়ার ধারণ ৫০ শতাংশে নামিয়ে না আনলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে হুশিয়ারি করা হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, চট্টগ্রামের ওআর নিজাম রোড শাখার হিসাবধারী মো. রেজাউল বশির চৌধুরীর হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন চিহ্নিত হওয়ার পরও তা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানানো হয়নি। এ কারণে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। চিঠি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে এই জরিমানা পরিশোধ না করলে বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত হিসাব থেকে কেটে নেওয়া হবে। এছাড়া ২০২১ সালের ১৮ মে থেকে ২০২২ সালের ৭ এপ্রিলের এ ঘটনায় ব্যাংকটির তৎকালীন ক্যামেলকো ও বর্তমান ডিএমডি কবির আহমেদ, শাখাপ্রধান ও শাখার মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ জড়িত সবার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে জানাতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘ সময় ধরেই এনআরবিসি ব্যাংক অনিয়ম করেও তথ্য লুকিয়ে রেখেছিল। আমাদের পরিদর্শনে সেটি বেরিয়ে এসেছে। এসব অপরাধের জন্য ব্যাংকটিকে জরিমানা এবং জড়িত কর্মকর্তাদের শাস্তির আওতায় আনতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল এবং ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবিউল ইসলামের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এসএম
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
এক মাসে রিজার্ভ বাড়ল ২৪ কোটি ডলার
গত এক মাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে ২৪ কোটি ২ লাখ ১০ হাজার ডলার হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন তথ্য প্রকাশ করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুসারে, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৯৮০ কোটি ৭৮ লাখ ২০ হাজার ডলার। এক মাস আগে অর্থাৎ ২৫ সেপ্টেম্বর রিজার্ভের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ৫০ হাজার ডলার।
এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবে সর্বশেষ বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৩০ কোটি ৩ লাখ ডলার। এক মাসে আগে মোট রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৪৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে মোট রিজার্ভ বেড়েছে ৬২ কোটি ১৮ লাখ ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রিজার্ভের ক্ষয় রোধ করার কারণে রিজার্ভ বাড়ছে। অবশ্য, নিট ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ১৪ বিলিয়ন ডলারের নিচে।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকগুলোর সম্পদ মূল্যায়ন নভেম্বরে শুরু হবে: গভর্নর
আগামী নভেম্বর মাস থেকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দিয়ে ব্যাংকগুলোর সম্পদ মূল্যায়নের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভায় যোগ দিয়ে বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নেন বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিরা। যুক্তরাষ্ট্রসহ দাতা সংস্থাগুলোর কাছে তুলে ধরা হয় নতুন এক সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার রোডম্যাপ।
প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়, ব্যাংক ব্যবস্থাপনাসহ ভগ্ন দশায় থাকা দেশের আর্থিক খাতের শুদ্ধতায় আনা পরিবর্তনগুলো।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, সম্পদ মূল্যায়নের কাজ শুরু করতে রোডম্যাপ তৈরি করা রয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দিয়ে যাচাই-বাছাই করে কোন ব্যাংক কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটি নিরূপণ করা হবে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি খাতের অংশীদারত্ব কোন পথে, কীভাবে হবে এ নিয়ে মার্কিন সরকারের নীতি সহায়তাও চাওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে গভর্নর জানান, যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও বিশ্বব্যাংকের কাছে নীতি সহায়তা চাওয়া হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এ সহায়তা দরকার।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ই-রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক
দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ইলেকট্রনিক মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বুধবার (২৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে।
স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত বিশেষ আদেশ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, গত ২২ অক্টোবর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর মাধ্যমে জারিকৃত বিশেষ আদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পরিপালন নিশ্চিতে নির্দেশনা প্রদান করা হলো। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতা বলে এ নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চার সিটি করপোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলের অধিভুক্ত সরকারি কর্মচারী, ব্যাংকার, মোবাইল প্রতিষ্ঠানের কর্মী ও ছয়টি বড় কোম্পানির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করে গত মঙ্গলবার এক বিশেষ আদেশ জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে রিটার্ন দাখিলসংক্রান্ত এনবিআরের বিশেষ আদেশে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের আয়কর আইনের ক্ষমতাবলে এনবিআর চার ধরনের ব্যক্তি করদাতাদের ইলেকট্রনিক মাধ্যমে অনলাইনে আয়কর দাখিল বাধ্যতামূলক করলো।
তালিকার প্রথমে রয়েছেন ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে অবস্থিত আয়কর সার্কেলসমূহের অধিক্ষেত্রভুক্ত সব সরকারি কর্মচারী।
তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন সব তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তৃতীয়ত, সব মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারীদেরও অনলাইনে রিটার্ন দিতে হবে।
তাছাড়া ছয়টি বড় বিদেশি কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, বাটা শু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড এবং নেসলে বাংলাদেশ পিএলসি।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্যাংকখাতে উদ্বৃত্ত তারল্য ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা
তারল্য সংকটে ভুগতে থাকা বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে এখন উদ্বৃত্ত দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকখাতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা। দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পরে আমানতকারীদের আস্থা বৃদ্ধির কারণেই এই পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
নতুন করে আস্থা ফিরে আসা সত্ত্বেও ২০২৪ সালের আগস্টে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি বছরে ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশে নেমে এসেছে। আর এটিই ব্যাংকগুলোয় তারল্য বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, বর্তমানে ৪৬টি ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। যার মধ্যে চারটি শরিয়াহভিত্তিক এবং ৪২টি প্রথাগত ব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে উদ্বৃত্ত তহবিলের শীর্ষে রয়েছে সোনালী ব্যাংক। এরপর রয়েছে অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল)।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আমানতকারীরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। কারণ তারা মনে করেন তাদের কষ্টার্জিত অর্থের জন্য বেশি নিরাপত্তা দেওয়া হয় এসব প্রতিষ্ঠানে। এই পরিবর্তনের ফলে সরকারি ব্যাংকগুলোতে আমানত বেড়েছে। বিপরীতে শরিয়াভিত্তিক বেশ কয়েকটি ব্যাংকের অবস্থা কম অনুকূলে রয়েছে।
এস আলম গ্রুপের মতো বড় শিল্পগোষ্ঠী একাধিক ব্যাংক অধিগ্রহণের পর বেশ কয়েকটি আমানতকারী এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তাদের তহবিল তুলে নিয়েছিলেন। এস আলম, বেক্সিমকো ও সিকদার গ্রুপের মতো গ্রুপের বিরুদ্ধে বড় আকারের ঋণ খেলাপির কারণে শরিয়াহভিত্তিক ও প্রচলিত কিছু ব্যাংক তারল্য সংকটে পড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন, সার্বিকভাবে ব্যাংকখাত স্থিতিশীল রয়েছে। বেশিরভাগ ব্যাংক বিনিয়োগের জন্য পর্যাপ্ত তারল্য ধরে রেখেছে।
বেসরকারি ঋণে নীতিগত প্রভাব
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাহাদ আবদুল মান্নান বলেন, বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি কমার কারণ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতিকে দায়ী করা যেতে পারে, যার লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ।
উচ্চ সুদের হার এবং স্থানীয় মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠানামাও উদ্যোক্তাদের নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সন্ধানে নিরুৎসাহিত করেছে। এর ফলে অনেক ব্যাংক তাদের অতিরিক্ত তারল্য সরকারি বন্ড ও বিলে বিনিয়োগ করেছে।
২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংক অধিগ্রহণের আগে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করা মান্নান বলেন, বেসরকারি খাতের ঋণ বিতরণে স্থবিরতার কারণে ব্যাংকগুলো ট্রেজারি বিল ও বন্ডে নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছে।
ব্যাংকখাতের স্থিতিশীলতা
মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, দেশের অধিকাংশ ব্যাংকে পর্যাপ্ত তারল্য রয়েছে। বেসরকারি খাতের ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেকেই মানসম্মত ব্যাংকিং পদ্ধতি অনুসরণ করে ট্রেজারি ইনস্ট্রুমেন্টে বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছেন।
মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, ব্যাংকের বাইরে প্রচলিত নগদ অর্থ যেমন কমছে, তেমনি প্রতিযোগিতামূলক সুদের হার বেশি হওয়ায় আমানত বাড়ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনেয়ারা শিখা বলেন, শক্তিশালী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল ব্যাংকগুলোকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। ফলে ধুঁকতে থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা ছাপানো বন্ধ করে দিয়েছে। এ কারণেই এ খাতের সামগ্রিক স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।
এমআই