ক্যাটাগরি: অর্থনীতি

বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আরেকটি কঠিন বছর হতে যাচ্ছে ২০২৪

ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, বিনিয়োগের কঠোর শর্ত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাজনিত (এআই) নেতিবাচক প্রভাবের কারণে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য আরেকটি অনিশ্চয়তার বছর হতে যাচ্ছে ২০২৪ সাল। গতকাল প্রকাশিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) জরিপে দেখা গেছে, স্থবির প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে বছর পার করছে বিশ্ব অর্থনীতি।

রীতি অনুযায়ী প্রতি বছর ডব্লিউইএফের সম্মেলনের আগে অর্থনীতিবিদদের নিয়ে একটি জরিপ করা হয়। এবারের জরিপে বেসরকারি ও সরকারি খাত থেকে বিশ্বব্যাপী ৬০ জনের বেশি প্রধান অর্থনীতিবিদ অংশ নিয়েছেন। এ জরিপের ফলাফলকে গুরুত্ব দিয়ে থাকেন বিভিন্ন দেশের নীতিনির্ধারক ও ব্যবসায়ী নেতারা। গতকালই সুইজারল্যান্ডের দাভোসের সুইস রিসোর্টে ডব্লিউইএফের পাঁচ দিনব্যাপী বার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়েছে।

চলতি বছর জরিপে অংশ নেয়া অর্থনীতিবিদদের মধ্যে প্রায় ৫৬ শতাংশ আশা করেন, ২০২৪ সালে সামগ্রিকভাবে বৈশ্বিক অর্থনীতি দুর্বল হবে। আঞ্চলিক সংঘাত বাড়বে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে মাঝারি বা শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি হলেও ইউরোপে দুর্বল অথবা খুব দুর্বল প্রবৃদ্ধি হবে। তবে দক্ষিণ এশিয়া, পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য ইতিবাচক পূর্বাভাস দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এসব অঞ্চলে ২০২৪ সালে অন্তত মাঝারি প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করেছেন তারা। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সুদহার সর্বোচ্চে রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। জরিপে অংশ নেয়া ৭০ শতাংশ অর্থনীতিবিদ প্রত্যাশা করেছেন, মূল্যস্ফীতি কমবে ও বেকারত্ব বাড়বে।

এআই যে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে তা উঠে এসেছে এ জরিপে। অর্থনীতিবিদরা জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে বৈষম্য বাড়িয়ে দেবে এআই। ৯৪ শতাংশ অর্থনীতিবিদ আশা করেন, পরবর্তী পাঁচ বছরে উচ্চ আয়ের অর্থনীতির দেশগুলোয় উল্লেখযোগ্যভাবে উৎপাদন বাড়াবে এআই। তবে নিম্ন আয়ের অর্থনীতির দেশগুলোয়ও উৎপাদন বাড়াবে এআই, এমনটা মনে করেন ৫৩ শতাংশ অর্থনীতিবিদ।

ডব্লিউইএফ ১০৭টি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর পৃথক একটি জরিপ করেছে। এ জরিপের ফলাফলে দেখানো হয়েছে বেশির ভাগ দেশের প্রবৃদ্ধি পরিবেশগতভাবে টেকসই ও সামাজিকভাবে নিরপেক্ষ নয়।

ডব্লিউইএফ জানিয়েছে, প্রবৃদ্ধির একটি নতুন সংজ্ঞা দিতে হবে, যা সামাজিক, পরিবেশগত ও অন্যান্য অগ্রাধিকারের সঙ্গে অর্থনীতির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে।

ডব্লিউইএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদিয়া জাহিদি বলেন, ‘শুধু প্রবৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়। ‌প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় বিশ্বব্যাপী প্রবৃদ্ধির পুনরুজ্জীবন অপরিহার্য।’

শেয়ার করুন:-
শেয়ার