অর্থনীতি
এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে রেকর্ড ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে দেশের ব্যাংকগুলো এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৩ হাজার ৮৫৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৩ হাজার ২৩৪ কোটি ৬১ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছিলো। সে হিসাবে আগের বছরের তুলনায় ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৬২৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এছাড়া ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করা হয়েছিলো ১ হাজার ৯০৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকার।
অপরদিকে একক মাস হিসেবে নভেম্বর মাসে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে। এ মাসে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৮৫৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার। এর আগের মাস অর্থাৎ অক্টোবর রমাসে ঋণ বিতরণ করা হয়েছিলো ৮০৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে এজেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
তথ্য অনুযায়ী, এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে বিতরণ করা মোট ঋণের মধ্যে ২ হাজার ৫৪৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা গ্রামে বিতরণ করা হয়। আর শহরে বিতরণ করা হয় ১ হাজার ৩১০ কোটি ২১ লাখ টাকা। অর্থাৎ এই ব্যাংকিং মাধ্যমে সিংহভাগ ঋণ গ্রামে বিতরণ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এজেন্ট ব্যাংকিং আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ও ব্যয়সাশ্রয়ী হওয়ায় জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এজেন্ট আউটলেটে একজন গ্রাহক সহজেই তার হাতের আঙুলের স্পর্শের মাধ্যমে হিসাব পরিচালনা করতে পারেন। তাই গ্রামীণ জনপদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যকরী একটি উদ্যোগ।
আলোচ্য এ সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পাশাপাশি আমানত সংগ্রহ বেড়েছে। জুলাই-নভেম্বর সময়ে আমানত সংগ্রহ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭৯৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর আগের অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিলো ১ লাখ ৪৮ হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আমানত সংগ্রহ বেড়েছে ২৫ হাজার ২২৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা।
যেসব অঞ্চলের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়েছে ও ব্যাংকিং সুবিধা কম এমন যায়গার মানুষের কাছে আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের সৃষ্টি হয়েছিল। শুরুর দিকে পল্লী অঞ্চল থেকে সংগৃহীত আমানতের বিপরীতে ঋণ বিতরণের হার খুবই কম ছিল। তবে ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। পাশাপাশি প্রান্তিক অঞ্চলে অল্প সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এ ব্যাংকিং মাধ্যম। এতে আর্থিক সুবিধা যেমন মানুষের নাগালের মধ্যে চলে গেছে, তেমনি কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে। কম টাকায় এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঝামেলামুক্তভাবে হিসাব খোলার কারণে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে মানুষ উৎসাহিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০ হাজার ৯১৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা রেমিট্যান্স বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পল্লী অঞ্চলে ৯ হাজার ৯৩৫ কোটি ১১ লাখ টাকা এবং শহরে ৯৮৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে। নীতিমালা অনুযায়ী, এজেন্ট ব্যাংকিং পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে প্রত্যেক এজেন্টের একটি চলতি হিসাব থাকতে হয়। এ সেবার মাধ্যমে ছোট অঙ্কের অর্থ জমা ও উত্তোলন করা যায়। যেকোন এলাকায় ব্যাংকের শাখা না থাকলেও এখন সারা দেশের মানুষ ব্যাংকিং সেবা পাচ্ছে।
এরপর দেশের ব্যাংক খাতে ২০১৪ সালে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু হয়। বর্তমানে এই সেবার গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ১১ লাখ ৯৫ হাজার ২০৫টি। দেশব্যাপী পাড়া-মহল্লা ও হাটবাজারে এরকম এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ৫৮১টি। আর এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট বেড়ে হয়েছে ২১ হাজার ৫০৬টি।
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স স্থানীয় মুদ্রায় বিতরণ, ছোট অঙ্কের ঋণ প্রদান ও আদায় এবং এককালীন জমার কাজও করেন এজেন্টরা। তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন উপযোগ সেবার বিল পরিশোধের পাশাপাশি সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলোর অর্থও উত্তোলন করা যায়। এ ছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংক হিসাব খোলা, ঋণ আবেদন, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের নথিপত্র সংগ্রহ করতে পারেন এসব এজেন্ট। তবে এখনো বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই এজেন্টদের।

অর্থনীতি
বিসিএমএ’র নতুন সভাপতি প্রিমিয়ার সিমেন্টের এমডি আমিরুল হক

দেশের সিমেন্টশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রিমিয়ার সিমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. আমিরুল হক।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ঢাকায় বিসিএমএর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে তাঁকে দুই বছরের জন্য সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
এ ছাড়া সংগঠনের প্রথম সহসভাপতি হয়েছে কনফিডেন্স সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান মো. ইমরান করিম। সহসভাপতি হয়েছেন ইউনিক সিমেন্টের পরিচালক তানজিমা বিনতে মোস্তফা।
বিসিএমএ জানায়, নবনির্বাচিত সভাপতি আমিরুল হক বিসিএমএর পাশাপাশি এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এলওএবি) সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চার দশক ধরে তিনি দেশে ব্যবসা–বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত। পেট্রোকেমিক্যাল, শিপিং, বীজ প্রক্রিয়াকরণ ও ভোজ্যতেল শোধনাগার, আটার কল, চিংড়ি হ্যাচারি, ব্যাগ, স্যাক উৎপাদন, আবাসন খাতসহ বিভিন্ন খাতের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম চেম্বার ও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন আমিরুল হক। দেশের শিল্প খাতে অবদানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তিনি একাধিকবার সিআইপিও নির্বাচিত হন।
সভাপতি, প্রথম সহসভাপতি ও সহসভাপতি ছাড়াও বিসিএমএর নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন সেভেন রিং সিমেন্টের তাহমিনা আহমেদ।
এ ছাড়া নির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন হাইডেলবার্গ সিমেন্টের ট্যারেন্স ওএনজি, মীর সিমেন্টের শামা-ই-জহির, ডায়মন্ড সিমেন্টের আবদুল্লাহ ইফতেখার, এনজিএস সিমেন্টের অভিমুন্য সাহা ও আকিজ সিমেন্টের মো. মশিউর রহমান।
আমিরুল হকের আগে বিসিএমএর সভাপতি ছিলেন ক্রাউন সিমেন্টের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আলমগীর কবির। তিন দফায় দায়িত্ব পালনের পর নিয়ম অনুযায়ী নতুন সভাপতির হাতে সংগঠনের নেতৃত্ব তুলে দেন বিদায়ী সভাপতি।
অর্থনীতি
বাড়তি ব্রয়লার মুরগির দাম, মাছের বাজারে স্বস্তি

রাজধানীর কাঁচাবাজারে ফের বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ঈদের পর দাম কমে গেলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে হঠাৎ করেই দামের এই ঊর্ধ্বগতিতে বিস্মিত হচ্ছেন ক্রেতারা। তবে মাছের বাজার কিছুটা স্থিতিশীল থাকায় সেখানেই কিছুটা স্বস্তি খুঁজছেন তারা। এদিকে গরু ও খাসির মাংসের দাম আগের মতোই রয়েছে, কিন্তু ঈদের রেশ না কাটায় সেখানে নেই তেমন বিক্রি।
শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে রাজধানীর রামপুরা-বনশ্রীসহ আশেপাশের একাধিক বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজারে এখন ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫–১৭০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহেও সেটি ছিল ১৪৫–১৫০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ কেজিতে ১৫–২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সোনালি মুরগির দামও বেড়েছে। বর্তমানে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮০ টাকা।
গত বছরের সেপ্টেম্বরেই কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ব্রয়লার মুরগির জন্য সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা দাম নির্ধারণ করেছিল। এক বছর না যেতেই আবার সেই দামের কাছাকাছি চলে এসেছে বাজার।
রামপুরা বাজার গিয়ে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দোকানে ভিড় অনেকটাই কম। মুরগির দোকানে দাঁড়িয়ে আছেন গৃহিণী হাসিনা আক্তার। পাশ থেকে হাঁক ডেকে বললেন, “ভাই, এই তো গত সপ্তাহে তো ১৫৫ টাকায় কিনেছি, আজকে হঠাৎ ১৭৫ বলছেন ক্যান? সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বাড়া কি স্বাভাবিক?” দোকানি মো. রিয়াজ উদ্দিন মুখে কিছুটা বিরক্তি নিয়ে জবাব দিলেন, “ আমরা তো নিজেরা দাম বাড়াই না। ফার্ম থেকেই এখন ১৬০–১৬৫ টাকা পড়ছে। আমাদের যদি ১০ টাকা লাভ না থাকে, চলবে কীভাবে? আমরাও তো কষ্টে আছি।”
রেজাউল করিম নামের এক পোশাককর্মী বলেন, তিনদিন আগেও অফিসের পেছনের গলির দোকানে ১৫০ টাকা কেজি ছিল। আজ বলল ১৭০! বাসায় বাচ্চাদের জন্য কিনি, নিজেরা তো যা পাই তা দিয়েই চলে। এত দাম দিলে তো মুরগিও বাদ দিতে হবে!
তিনি বলেন, এতদিন মুরগি ১৪০-১৫০ টাকার মধ্যে ছিল, আমার মতে এটাই ছিল ব্রয়লার মুরগির স্বাভাবিক দাম। এই দামে থাকলে গরিব ধনী সবাই নিজেদের চাহিদা মতো খেতে পারবে। কিন্তু মাঝেমধ্যেই হঠাৎ করে দাম কেন জানি বেড়ে যায়।
বাজার পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, ফার্ম ও পরিবহনপর্যায়ে একটি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে। যদিও খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন—বর্ষা মৌসুমে সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন এবং ফিডের মূল্যবৃদ্ধিই দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ। মুরগি বিক্রেতা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, “দাম বাড়ছে ফার্ম থেকে। আমরা আগে যেখানে ১৪৫–১৫০ টাকায় কিনতাম, এখন সেখানে কিনতে হচ্ছে ১৬০–১৬৫ টাকায়। আমাদের যে খরচ, তাতে অন্তত ১৫ টাকা লাভ না রাখলে ব্যবসা টিকবে না। এই দামে বিক্রি করতেই বাধ্য হচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, কোনো কোনো গ্রাহক ভাবছেন আমরা ইচ্ছে করে দাম বাড়িয়েছি। কিন্তু আমরাও বিপদে। পরিবহন খরচ, শ্রমিক, দোকান ভাড়া—সবমিলিয়ে ন্যূনতম লাভেই চলছি।
বনশ্রী এ ব্লক এলাকার বাজারে গিয়ে দেখা গেলো সকালের মাছের বাজার অনেকটাই জমজমাট। মাছের দোকানগুলোতে তাজা রুই, কাতল, পাবদা সাজানো। দাম প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিক্রেতারা জানান, বর্তমানে বাজারে রুই ও কাতল বিক্রি হচ্ছে ৩০০–৩৪০ টাকা কেজিতে। পাবদা ৩৫০–৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬৫০–৭০০, টেংরা ৬০০–৭০০, শিং ৪০০–৪৫০, কৈ ২০০–২২০ এবং তেলাপিয়া–পাঙ্গাস পাওয়া যাচ্ছে ১৮০–২০০ টাকায়। দেশি শিং ও কৈ মাছের দাম অবশ্য এখনও অনেক বেশি—প্রতি কেজি যথাক্রমে ১২০০ ও ১০০০ টাকা।
বাজার করতে আসা শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বললেন, আজকের বাজারে মুরগির দাম একটু বেড়েছে। গরু-খাসির দাম তো অনেক বেশি। সেই তুলনায় আমার মত নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য মাছ এখন সবচেয়ে ব্যালান্সড অপশন।
মাছ বিক্রেতা হুমায়ুন কবির বললেন, “ঈদের পর এখন লোকজন মাংস থেকে সরে মাছেই ঝুঁকছে। দামও বাড়েনি, আবার ভালো মাছ মিলছে, তাই বিক্রিও ভালো।”
শ্যামল মিয়া নামক আরেক বিক্রেতা জানান, মাংস-মুরগির বাজারে দাম বাড়ছে, আর আমরা মাছওয়ালারা একটু স্বস্তিতে আছি। রুই কাতল আগের মতোই আছে, তাই মানুষ আসছে। পাবদা, তেলাপিয়া ভালো যাচ্ছে।
এদিকে ঈদের এক সপ্তাহ পেরোলেও এখনও রাজধানীর অধিকাংশ পরিবারে কোরবানির মাংস আছে। সেই কারণে গরু, খাসি ও ছাগলের মাংসের দোকানগুলোতে এখনো ক্রেতার অভাব। রামপুরা বাজারের মাংস ব্যবসায়ী মো. কবির হোসেন বলেন, “ঈদের পর এমনটা হতেই পারে, তবে এবার একটু বেশি সময় ধরে লোকজন মাংস কিনছে না। দাম কমেনি—গরু ৭৫০–৭৮০, খাসি ১১০০ আর ছাগল ১০০০ টাকায় বিক্রি করছি। কিন্তু বিক্রি নেই বললেই চলে। যারা কোরবানি দেয়নি, তারাও মাছ-মুরগিতে চলে গেছে।
অর্থনীতি
আজ ও আগামীকাল কাস্টম হাউজ খোলা

আজ শুক্র ও আগামীকাল শনিবার (১১-১২ জুলাই) ছুটির দুই দিন দেশের সব কাস্টম হাউজ খোলা থাকবে। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) কাস্টমস নীতির প্রথম সচিব মু রইচ উদ্দিন খানের সই করা নির্দেশনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, ধীরগতির কারণে গত কয়েকদিন দেশের আমদানি-রপ্তানি পণ্যচালান ছাড় প্রক্রিয়া কিছুটা বাধাগ্রস্ত হয়।
এ অবস্থায় দেশের আমদানি- রপ্তানি বাণিজ্য নিরবচ্ছিন্ন রাখার উদ্দেশ্যে ১১-১২ জুলাই, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রাখার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
অর্থনীতি
অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাত গ্রেপ্তার

অর্থনীতিবিদ ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. নাসিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ধানমন্ডি থেকে আবুল বারকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে। এর ভিত্তিতে ডিবি অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এননটেক্স গ্রুপের নামে ২৯৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি আবুল বারকাতসহ ২৩ জনের নামে মামলা করে দুদক। সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান ও আবুল বারকাত পরস্পর যোগসাজশে জালজালিয়াতির মাধ্যমে এননটেক্স গ্রুপের ২২টি প্রতিষ্ঠানকে এই টাকা ঋণ দিয়েছিলেন। আতিউর রহমান, তাঁর সহযোগী অন্য ব্যক্তিরা বিভিন্ন অনৈতিক কৌশলে এই অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাত বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
অর্থনীতি
৮ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবে স্টার্টআপ, সুদের হার ৪ শতাংশ

স্টার্টআপ বা নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য বড় সুখবর দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের ২১ বছর বা তার বেশি বয়সী যে কেউ এখন থেকে নতুন ব্যবসা শুরু করতে চাইলে ব্যাংক থেকে সহজ শর্তে ঋণ নিতে পারবেন।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) এ সংক্রান্ত একটি মাস্টার সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, নতুন এই নীতিমালা দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করবে। এতে করে উদ্ভাবনী উদ্যোগ বাড়বে, কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত হবে। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনেও সহায়তা করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, নতুন উদ্যোক্তাদের বড় ধরনের সুযোগ তৈরির এই ঋণের সুদের হার হবে মাত্র ৪ শতাংশ। এ ছাড়া, ব্যাংকগুলো এখন শুধু ঋণ নয়, চাইলে বিনিয়োগও করতে পারবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল কোম্পানি গঠন করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনার ফলে এখন নতুন উদ্যোক্তাদের ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে পারবেন। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতি আরও জোরদার করবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব স্টার্টআপ তহবিল থেকে এখন শুধু ইক্যুইটি বা অংশীদার ভিত্তিতে বিনিয়োগ করতে পারবে। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫০০ কোটি টাকার তহবিল থেকে দেওয়া যাবে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ। তবে এই তহবিল ছাড়া অন্য কোনো উৎস থেকে নতুন করে ঋণ বা বিনিয়োগ করা যাবে না। আগে যেসব ঋণ বা বিনিয়োগ অনুমোদন হয়েছে, সেগুলোর অর্থ ছাড় দেওয়া যাবে।
সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, নতুন নিয়মে ঋণের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। আগে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা দেওয়া হতো, এখন ধাপে ধাপে ২ কোটি থেকে ৮ কোটি টাকা পর্যন্ত দেওয়া যাবে। অর্থায়নের জন্য উদ্যোক্তার বয়স কমপক্ষে ২১ বছর হতে হবে। তবে সর্বোচ্চ বয়সের কোনো সীমা নেই। যেসব স্টার্টআপ ইতোমধ্যেই চালু আছে, সেগুলোও এই সুবিধা পাবে। তবে কোম্পানির বয়স ১২ বছরের বেশি হলে এই সুবিধা পাওয়া যাবে না।
তবে ব্যাংকগুলো নিজেরা যে পুরোনো স্টার্টআপ তহবিল তৈরি করেছিল, তা থেকে এখন নতুন করে ঋণ দেওয়া যাবে না। আগে যে ঋণ অনুমোদন করা হয়েছে, সেগুলোর অর্থ বিতরণ চালিয়ে যাওয়া যাবে। এতদিন ব্যাংকগুলো কেবল পুরোনো বা চলমান ব্যবসাকে ঋণ দিত। নতুন উদ্যোক্তারা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন, কারণ ব্যাংকারদের মনে হতো নতুন ব্যবসার ঝুঁকি বেশি। তবে এখন সেই ধারণা বদলেছে।