আন্তর্জাতিক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে চাকরি হারাবে ৩০ কোটি মানুষ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) খাতে বিপুল বিনিয়োগের প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে আবার একই সময় বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, এ খাতে এতো বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগ্রাসনে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের ৩০ কোটি কর্মী চাকরি হারাতে পারে। অবশ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জেরে ২০২৩ সাল জুড়েই কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করছিল বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত সিলিকন ভ্যালিতে।
কোম্পানিগুলো যে সব ক্ষেত্রেই ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের কাজের জায়গাগুলো পূরণ করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিচ্ছে, তা কিন্তু নয়। তবে বিষয়টি কাকতালীয় মনে হলেও যে কোম্পানিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, তারাই বেশি কর্মী ছাঁটাই করছে। এমনকি অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তো সরাসরি এআইকেই কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ বলে উল্লেখ করছে।
তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কর্মীদের মধ্যে এ বিপুল চাকরিচ্যুতির ঘটনা মূলত ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তির জগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে সংঘটিত হতে যাওয়া আরও অপ্রত্যাশিত ঘটনার পূর্বাভাস বলেই মনে করা হচ্ছে। এমনকি চলতি ২০২৪ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে এ খাতের বিজনেস মডেলের অনেক কিছুই বদলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বছরের শুরুতেই চাকরি গেছে সাড়ে ৫ হাজার কর্মীর
সিএনএন জানায়, চলতি বছরের প্রথম ১৩ দিনেই মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চাকরি হারিয়েছেন সাড়ে ৫ হাজার কর্মী। যে সব প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করেছে, তার মধ্যে প্রথম শ্রেণির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ক্ষুদ্র পরিসরে থাকা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে গত ১৩ দিনে গুগল ও অ্যামাজন থেকে চাকরি খুইয়েছেন কোম্পানি দুটির বিভিন্ন বিভাগের এবং বিভিন্ন পর্যায়ের শত শত কর্মী। অথচ এ প্রতিষ্ঠান দুটি মাসখানেক আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিকে বহু বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে পুরো প্রযুক্তি জগতকে চমকে দিয়েছিল।
এ বিগ টেক কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ডিসকর্ড তাদের মোট কর্মীর ১৭ শতাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া জনপ্রিয় মোবাইল গেম পোকেমন গোতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিটি সফটওয়্যারও তাদের মোট কর্মশক্তির একচতুর্থাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ১০ শতাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় ভাষা শিক্ষার অ্যাপ ডুয়োলিংগো।
চলতি বছরের সব মিলিয়ে প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রযুক্তি খাতের সাড়ে ৫ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
নতুন বছরের শুরুতেই এভাবে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মীদের করোনো পরবর্তী ২০২২ ও ২০২৩ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। করোনা মহামারি শেষ হওয়ার পর ২০২৩ সাল ছিল বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কর্মীদের জন্য ভয়াবহ একটি বছর। সব মিলিয়ে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ২০২৩ সালে ছাঁটাই করেছে ২ লাখ ৬২ হাজারের বেশি কর্মী। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালেও ছাঁটাই হোন ১ লাখ ৬৪ হাজার কর্মী।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী ছাঁটাইয়ের সঙ্গে সব ক্ষেত্রেই যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশের সম্পর্ক আছে, তা নাও হতে পারে। তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে অনেকেই এ বিষয়টিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি জগতে কর্মী ছাঁটাই মনিটরিংকারী প্রতিষ্ঠান লেইঅফসের প্রতিষ্ঠাতা রজার লি সিএনএনকে বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই করোনা মহামারির সময় প্রযুক্তি খাতে অধিক হারে নিয়োগ দেয়া কর্মীদের ছাঁটাই করছে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
মূলত করোনা মহামারির সময় বিশ্বে লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রমরমা ব্যবসা করে বিশ্বের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে ব্যাপক হারে কর্মী নিয়োগ দেয় এসব প্রতিষ্ঠান। তবে মহামারি শেষ হওয়ার পর প্রযুক্তি জগতের এ সুদিন আর থাকেনি। রাজস্ব নাটকীয়ভাবে কমে আসায় শেষ পর্যন্ত মহামারির সময় নিয়োগ দেয়া কর্মীদের ছাঁটাই করতে বাধ্য হয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।
তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে করোনা মহামারি পরবর্তী প্রযুক্তি জগতের মন্দার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চ সুদের হারকেও দায়ী করেন রজার লি। তবে ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে এগুলোর বদলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারকে অজুহাত হিসেবে দেখাচ্ছে বলে সিএনএনকে জানান রজার লি।
গত বছর আইবিএম এবং ড্রপবক্সের মতো প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানায়। সাম্প্রতিক সময়ে ডুয়োলিংগো এমনকি গুগলও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আমলে নিয়েই তাদের শ্রম ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়েছে।
ঝুঁকিতে কোটি কোটি মানুষের চাকরি
সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, বর্তমানে শ্রমবাজারে বিশেষ করে, তথ্য প্রযুক্তির জগতে কর্মীদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যদিও শ্রমজগতের ওপর এর প্রভাব কতখানি পড়বে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু বলার সময় আসেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, সামনের দিনগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে পুরো বিশ্বে ঝুঁকির মুখে পড়বে কোটি কোটি মানুষের চাকরি।
এ প্রসঙ্গে খ্যাতনামা বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস গত বছরের মার্চ মাসে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উত্থানের কারণে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে পড়বেন ৩০ কোটি স্থায়ী চাকরিজীবী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়বেন মূলত হোয়াইট কলার অর্থাৎ বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মীরা।
কাফি

আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে সোনার দামে নতুন ইতিহাস

বিশ্ববাজারে ইতিহাস গড়েছে সোনার দাম। প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৫০৫ ডলার ছাড়িয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) স্পট মার্কেটে সোনার দাম প্রতি আউন্সে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৯৩ দশমিক ৯৯ ডলারে, যা দিনের শুরুতে পৌঁছেছিল রেকর্ড ৩ হাজার ৫০৮ দশমিক ৫০ ডলারে।
একই সময়ে ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য মার্কিন সোনার ফিউচার ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬৪ দশমিক ৪০ ডলারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বৃদ্ধি মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।
ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রোডা বলেন, দুর্বল অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং মার্কিন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার প্রভাবেই সোনার দাম বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত একটি বড় কারণ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডের স্বাধীনতার ওপর সমালোচনা, যা ডলারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, সুদের হার না কমানোর কারণে কয়েক মাস ধরেই ফেডারেল রিজার্ভ এবং এর চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সমালোচনা করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়াশিংটন সদর দফতরের ব্যয়বহুল সংস্কারের জন্যও পাওয়েলের সমালোচনা করেছেন।
সোমবার (৩১ আগস্ট) মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ফেডারেল রিজার্ভ স্বাধীন এবং স্বাধীন থাকা উচিত। তবে তিনি আরও যোগ করেছেন, ফেড ‘অনেক ভুল করেছে’ এবং বন্ধকী জালিয়াতির অভিযোগে ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার ট্রাম্পের অধিকারকে সমর্থন করেছেন।
তথ্য বলছে, মার্কিন ব্যক্তিগত খরচের মূল্যসূচক মাসে ০.২ শতাংশ ও বছরে ২.৬ শতাংশ বেড়েছে, যা প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সান ফ্রান্সিসকো ফেড ব্যাংকের সভাপতি মেরি ডেলিও শ্রমবাজারের ঝুঁকি বিবেচনা করে সুদের হার কমানোর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।
সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, মাসের শেষে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমাবে বলে ৮৭ শতাংশ সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম সুদের পরিবেশে স্বর্ণ সাধারণত ভালো ফলাফল দেখায়।
এবার বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি মার্কিন অ-খামার বেতন-বহির্ভূত তথ্যের দিকে, যা আগামী শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হবে এবং ফেডের সম্ভাব্য সুদের হারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে, বাণিজ্যিক খবরে জানা গেছে, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেছেন,আদালতের রায় সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, প্লাটিনামের দাম শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৯৫ ডলার ও প্যালাডিয়ামের দাম শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১১৮ দশমিক ১২ ডলার হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
সুদানে ভূমিধসে নিশ্চিহ্ন একটি গ্রাম, মৃত্যু অন্তত ১ হাজার

ভয়াবহ ভূমিধসে সুদানের একটি গ্রামে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মাররা পাহাড়ি অঞ্চলের ওই গ্রামটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে একজন বাদে ওই গ্রামের সবাই মারা গেছেন।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সুদান লিবারেশন মুভমেন্ট বা সেনাবাহিনী।
ভারী বৃষ্টিপাতের পর গত ৩১ আগস্ট ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। সেখানকার একটি গ্রুপের প্রধান এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ গ্রুপটি দারফুরের ওই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে। তারা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে নারী, পুরুষ ও শিশুদের মরদেহগুলো উদ্ধারের জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।
গ্রামটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয় গেছে বলে জানিয়েছে তারা।
সুদানের সেনাবাহিনী ও প্যারমিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের দ্বন্দ্বের কারণে অনেক মানুষ দারফুরের ওই পাহাড়ি অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অঞ্চলটি এতটাই দুর্গম যে সেখানে পর্যাপ্ত খাবার ও ওষুধ পাওয়াই দুস্কর।
দুই বাহিনীর দ্বন্দ্বের কারণে দুই বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে সুদানের অর্ধেকের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। জীবন বাঁচাতে সেখানে গিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারালেন তারা।
আন্তর্জাতিক
চীনে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

চীনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির বৃহত্তর চীন শাখার উদ্যোগে গুয়াংজু ও শেনজেন শহরে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি ছিল, দেশের গৌরবময় ইতিহাস, গণতন্ত্রের সংগ্রাম এবং দলের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা ও সংহতি প্রকাশের মঞ্চ।
চীন বিএনপির নেতা আসিফ হক রুপু’র সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন চীন বিএনপির নেতা সাখাওয়াত হোসেন কানন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের চীন শাখার নেতা শেখ মাহবুবুর রশীদ, ওয়ালী উল্লাহ, এস এম আল-আমিন, হাসমত আলী মৃধা জেমস, সালাউদ্দিন রিক্তা, মনোয়ার বায়েজীদ, মো. রোমান, জসিম উদ্দিন, খোরশেদ আলম অপু, মো. রাসেলসহ আরো অনেকে।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় বিএনপির অবদান স্মরণ করেন এবং চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের মধ্যে দলীয় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনের মাধ্যমে চীনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা দেশের প্রতি তাদের অঙ্গীকার ও ভালবাসা পুনর্ব্যক্ত করেন। দেশটিতে বসবাসরত শতাধিকেরও বেশি বাংলাদেশি এবং বিএনপি’র ও এর অংঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মী এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক
ভূমিকম্পে ভয়াবহ বিপর্যয়ে আফগানিস্তান, নিহত বেড়ে ৬২২

আফগানিস্তানে আঘাত হানা ভূমিকম্পে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত এ দুর্যোগে ৬২২ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এ ছাড়া হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন ধ্বংসাত্মক এ ভূকম্পনে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম আরটিএ-এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এর আগে, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) গভীর রাতে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে ভূমিকম্পটি। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর থেকে অন্তত আরও তিনবার ‘আফটার শক’ অনুভূত হয়েছে। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলও, যা কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরের পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়।
আফগানিস্তানের দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কুনার প্রদেশের নুর গাল, সাওকি, ওয়াটপুর, মানোগি এবং চাপা দারা জেলায় হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। হতাহতদের সংখ্যা চূড়ান্ত নয়, কারণ কর্মকর্তারা এখনও অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
তিনি জানান, ভূমিধসের কারণে সাওকি জেলার দেওয়া গুল এবং নূর গুল জেলার মাজার দারা যাওয়ার রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে উদ্ধারকারী দলগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে অসুবিধা হচ্ছে।
স্থানীয়রা ইতোমধ্যে এটিকে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে একটি বলে বর্ণনা করেছেন। আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদও ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, দুঃখের বিষয়, আজ রাতের ভূমিকম্পে আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় কিছু প্রদেশে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মুজাহিদ বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তা এবং বাসিন্দারা উদ্ধার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত আছেন। তিনি জানিয়েছেন, জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মূলত, ভৌগলিক কারণেই মধ্য-দক্ষিণ এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান বেশ ভূমিকম্পপ্রবণ। দেশটি এমন বেশ কয়েকটি ফল্ট লাইনের ওপরে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সেই রেকর্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত তিন দশকে কেবল ভূমিকম্পের কারণে আফগানিস্তানে মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের।
১৯৯১ সালে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে হওয়া এক ভূমিকম্পে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়নে ৮৪৮ জন মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
এরপর ১৯৯৭ সালে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের প্রদেশ খোরাসানের কায়েন শহরে ৭ দশমিক ২ মাত্রার এক ভূমিকম্পে দুই দেশে প্রাণ হারিয়েছিলেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ; সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি।
পরের বছরই ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের প্রায় বিচ্ছিন্ন ও তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ তাখারে ভয়াবহ আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার শিকার হয়ে আফগানিস্তান ও তাজিকিস্তানে প্রাণ হারান প্রায় ৪ হাজার মানুষ। এর মধ্যে আফগানিস্তানে নিহতের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩০০।
আন্তর্জাতিক
আফগানিস্তানে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ২০

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নানগারহার ও কুনার প্রদেশে ভূমিকম্পের কারণে আহত ১১৫ জনেরও বেশি মানুষকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর থেকে অন্তত আরও তিনটি কম্পন হয়েছে। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বেশ কয়েক সেকেন্ড কম্পন টের পাওয়া যায়। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
কাফি