আন্তর্জাতিক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে চাকরি হারাবে ৩০ কোটি মানুষ
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) খাতে বিপুল বিনিয়োগের প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে আবার একই সময় বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, এ খাতে এতো বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগ্রাসনে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের ৩০ কোটি কর্মী চাকরি হারাতে পারে। অবশ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জেরে ২০২৩ সাল জুড়েই কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করছিল বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত সিলিকন ভ্যালিতে।
কোম্পানিগুলো যে সব ক্ষেত্রেই ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের কাজের জায়গাগুলো পূরণ করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিচ্ছে, তা কিন্তু নয়। তবে বিষয়টি কাকতালীয় মনে হলেও যে কোম্পানিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, তারাই বেশি কর্মী ছাঁটাই করছে। এমনকি অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তো সরাসরি এআইকেই কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ বলে উল্লেখ করছে।
তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কর্মীদের মধ্যে এ বিপুল চাকরিচ্যুতির ঘটনা মূলত ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তির জগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে সংঘটিত হতে যাওয়া আরও অপ্রত্যাশিত ঘটনার পূর্বাভাস বলেই মনে করা হচ্ছে। এমনকি চলতি ২০২৪ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে এ খাতের বিজনেস মডেলের অনেক কিছুই বদলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বছরের শুরুতেই চাকরি গেছে সাড়ে ৫ হাজার কর্মীর
সিএনএন জানায়, চলতি বছরের প্রথম ১৩ দিনেই মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চাকরি হারিয়েছেন সাড়ে ৫ হাজার কর্মী। যে সব প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করেছে, তার মধ্যে প্রথম শ্রেণির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ক্ষুদ্র পরিসরে থাকা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে গত ১৩ দিনে গুগল ও অ্যামাজন থেকে চাকরি খুইয়েছেন কোম্পানি দুটির বিভিন্ন বিভাগের এবং বিভিন্ন পর্যায়ের শত শত কর্মী। অথচ এ প্রতিষ্ঠান দুটি মাসখানেক আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিকে বহু বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে পুরো প্রযুক্তি জগতকে চমকে দিয়েছিল।
এ বিগ টেক কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ডিসকর্ড তাদের মোট কর্মীর ১৭ শতাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া জনপ্রিয় মোবাইল গেম পোকেমন গোতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিটি সফটওয়্যারও তাদের মোট কর্মশক্তির একচতুর্থাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ১০ শতাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় ভাষা শিক্ষার অ্যাপ ডুয়োলিংগো।
চলতি বছরের সব মিলিয়ে প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রযুক্তি খাতের সাড়ে ৫ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
নতুন বছরের শুরুতেই এভাবে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মীদের করোনো পরবর্তী ২০২২ ও ২০২৩ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। করোনা মহামারি শেষ হওয়ার পর ২০২৩ সাল ছিল বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কর্মীদের জন্য ভয়াবহ একটি বছর। সব মিলিয়ে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ২০২৩ সালে ছাঁটাই করেছে ২ লাখ ৬২ হাজারের বেশি কর্মী। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালেও ছাঁটাই হোন ১ লাখ ৬৪ হাজার কর্মী।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী ছাঁটাইয়ের সঙ্গে সব ক্ষেত্রেই যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশের সম্পর্ক আছে, তা নাও হতে পারে। তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে অনেকেই এ বিষয়টিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি জগতে কর্মী ছাঁটাই মনিটরিংকারী প্রতিষ্ঠান লেইঅফসের প্রতিষ্ঠাতা রজার লি সিএনএনকে বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই করোনা মহামারির সময় প্রযুক্তি খাতে অধিক হারে নিয়োগ দেয়া কর্মীদের ছাঁটাই করছে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
মূলত করোনা মহামারির সময় বিশ্বে লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রমরমা ব্যবসা করে বিশ্বের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে ব্যাপক হারে কর্মী নিয়োগ দেয় এসব প্রতিষ্ঠান। তবে মহামারি শেষ হওয়ার পর প্রযুক্তি জগতের এ সুদিন আর থাকেনি। রাজস্ব নাটকীয়ভাবে কমে আসায় শেষ পর্যন্ত মহামারির সময় নিয়োগ দেয়া কর্মীদের ছাঁটাই করতে বাধ্য হয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।
তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে করোনা মহামারি পরবর্তী প্রযুক্তি জগতের মন্দার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চ সুদের হারকেও দায়ী করেন রজার লি। তবে ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে এগুলোর বদলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারকে অজুহাত হিসেবে দেখাচ্ছে বলে সিএনএনকে জানান রজার লি।
গত বছর আইবিএম এবং ড্রপবক্সের মতো প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানায়। সাম্প্রতিক সময়ে ডুয়োলিংগো এমনকি গুগলও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আমলে নিয়েই তাদের শ্রম ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়েছে।
ঝুঁকিতে কোটি কোটি মানুষের চাকরি
সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, বর্তমানে শ্রমবাজারে বিশেষ করে, তথ্য প্রযুক্তির জগতে কর্মীদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যদিও শ্রমজগতের ওপর এর প্রভাব কতখানি পড়বে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু বলার সময় আসেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, সামনের দিনগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে পুরো বিশ্বে ঝুঁকির মুখে পড়বে কোটি কোটি মানুষের চাকরি।
এ প্রসঙ্গে খ্যাতনামা বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস গত বছরের মার্চ মাসে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উত্থানের কারণে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে পড়বেন ৩০ কোটি স্থায়ী চাকরিজীবী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়বেন মূলত হোয়াইট কলার অর্থাৎ বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মীরা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
কমলা হ্যারিসকে বারাক ওবামার আনুষ্ঠানিক সমর্থন
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন জানিয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। শুক্রবার (২৬ জুলাই) এক মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন ওবামা। এতে দেখা যায় তার স্ত্রী এবং তিনি বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসের সঙ্গে কথা বলছেন।
ওবামা হ্যারিসকে বলেন, মিশেল এবং আমি আপনাকে ফোন করেছি জানাতে যে, এই নির্বাচনে আপনাকে সহায়তা করতে আমরা সবকিছু করব এবং আপনাকে সমর্থন দিতে পেরে আমরা খুবই গর্বিত।
সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা কমলাকে বলেন, আমি আপনার জন্য গর্বিত। এটি একটি ঐতিহাসিক বিষয় হতে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে ২০০৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন বারাক ওবামা। এরপর ২০১২ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন তিনি। প্রায় এক যুগ আগে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব শেষ করলেও দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি এখনো বেশ জনপ্রিয় ব্যক্তি। এছাড়া তার আলাদা একটি প্রভাবও রয়েছে।
এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। কিন্তু গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে শোচনীয় পরাজয় হওয়ার পর বাইডেনের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায় এবং প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিতে তার উপর চাপ আসতে থাকে। দলীয় নেতাদের পরামর্শে অবশেষে গত রোববার তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করার ঘোষণা দেন।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পাকিস্তানের ইসলামাবাদ-পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি
জামায়াতে ইসলামি পাকিস্তান, জামিয়াত উলেমা ই ইসলাম-ফজলসহ (জেইউআই-এফ) বিভিন্ন ইসলামি দল এবং পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) বিক্ষোভ ও আন্দোলন কর্মসূচির জেরে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানী ইসলামাবাদ এবং সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে ১৪৪ ধারা জারি দেশটির সরকার।
সম্প্রতি দেশজুড়ে বিদ্যুতের দাম প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি করেছে পাকিস্তানের সরকার। সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) কোরআন অবমাননার দায়ে বন্দি জনৈক পাকিস্তানি নাগরিক মোবারক সানি মামলার রায় পুনর্বিবেচনা করা হবে বলে ঘোষণা করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
এই দুই ইস্যুকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরেই বিক্ষোভ করছিল জামায়াতে ইসলামি, জেইউআইএফ এবং অন্যান্য ইসলামি দলগুলো। এরই মধ্যে পাকিস্তানের কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার পিটিআই কর্মসূচি ঘোষণা করলে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজধানী ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাব প্রদেশ।
এই অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এদিন রাতে ইসলামাবাদ ও পাঞ্জাবের সর্বত্র ১৪৪ ধারা জারি করে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পাঞ্জাবের প্রাদেশিক সরকার।
এ সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শুক্রবার থেকে রাজধানীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ জারি করা হলো। পরবর্তী আদেশ না আসা পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে। জনসাধারণকে কোনো অবস্থাতেই ১৪৪ ধারা লঙ্ঘণ না করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আর পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তার স্বার্থে পাঞ্জাব প্রদেশের সর্বত্র ১৪৪ ধারা জারি করা করা হয়েছে। জনগণকে সরকারের এই আদেশ মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়— এমন কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশও দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবে প্রাদেশিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে। রাজধানীর প্রতিটি সংযোগ সড়ক ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ, সেইসঙ্গে শহরজুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর টহল চলছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দামে টানা পতন
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে সামান্য বেড়েছে। তবে টানা তিন সপ্তাহ পতনের পথেই রয়েছে দাম। এর অন্যতম কারণ হলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক দেশ চীনে দুর্বল চাহিদা। তাছাড়া গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিরও সম্ভাবনা রয়েছে। খবর রয়র্টাস
এদিন সেপ্টেম্বরের জন্য ব্যারেলপ্রতি ক্রুড তেলের দাম ১২ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৮২ দশমিক ৪৯ ডলার হয়েছে। তাছাড়া ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টার মিডিয়েটের দাম ১৩ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে ৭৮ দশমিক ৪১ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার তেলের দাম সামান্য বাড়ার কারণ হলো দ্বিতীয় প্রান্তিকে মার্কিন অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা।
যদিও গত তিন সপ্তাহে উভয় বেঞ্চমার্কের দাম কমেছে ৫ শতাংশ। এই সপ্তাহে ব্রেন্ট সামান্য কম দামে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টার মিডিয়েটের দাম কমেছে দুই শতাংশের বেশি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীনে জুন মাসে চাহিদা কমেছে ৮ দশমিক ১ শতাংশ, যা দৈনিক হিসাবে ১৩ দশমিক ৬৬ মিলিয়ন ব্যারেল।
বিশ্লেকরা জানিয়েছেন, পেট্রোল ও ডিজেলের কারণেই মূলত চীনে চাহিদা কমেছে। কারণ দেশটিতে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বেড়েছে।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি মান্দিসা মায়া
প্রথমবারের মত প্রধান বিচারপতি হিসেবে একজন নারীকে নিয়োগ দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তার নাম মান্দিসা মায়া। বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা মায়ার নাম ঘোষণা করেন।
বৃহস্পতিবার ( ২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। এতে বলা হয়, মায়া বর্তমানে উপ-প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রধান বিচারপতি হিসেবে তার মেয়াদ ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। তিনি বর্তমান প্রধান বিচারপতি রেমন্ড জোন্ডোর স্থলাভিষিক্ত হবেন। জোন্ডো অবসর নিচ্ছেন।
মায়া ( ৬০) সাংবিধানিক আদালতে তার পদোন্নতির আগে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আদালত, সুপ্রিম কোর্ট অফ আপিলের বিচারক সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
রামাফোসা ফেব্রুয়ারিতে প্রধান বিচারপতির জন্য মায়াকে মনোনীত করেছিলেন এবং মে মাসে জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন তার সাক্ষাৎকার নেয়।
রামাফোসা এক বিবৃতিতে বলেছেন, কমিশন তাকে সুপারিশ করেছে এবং তাকে এ পদের জন্য নিয়োগ দিতে পারা দেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক।
এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
নীতি সুদহার কমাল চীন
মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে গত দুই বছর দফায় দফায় নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বিভিন্ন দেশ। উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশ এর ফলও পেয়েছে। তাদের চাহিদা ও সরবরাহ দু’দিককার ব্যবস্থাপনাই ঠিক থাকায় কমে এসেছে মূল্যস্ফীতি। এবার বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চাঙ্গা করার পালা। নীতি সুদহার কমিয়ে সে ইঙ্গিতই দিল চীন ও কানাডা।
বৃহস্পতিবার নিক্কেই এশিয়ার খবরে বলা হয়, পিপলস ব্যাংক অব চায়না এক বছরের মধ্যমেয়াদি ঋণ সুবিধার (এমএলএফ) হার ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ দশমিক ৩ শতাংশে এনেছে। মাত্র এক সপ্তাহের কম সময়ের ব্যবধানে সুদহার কমাতে এটি চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয় পদক্ষেপ। গত সোমবার সাত দিন মেয়াদি রিভার্স রেপোর সুদহার ১ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ দশমিক ৭ শতাংশ নির্ধারণ করেছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অর্থনীতির প্রকৃত খাতের উন্নতির জন্য আর্থিক খাতের মাধ্যমে সহায়তা করার অংশ হিসেবে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপ।
এদিকে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি আনতে ব্যাংক অব কানাডা বুধবার নীতি সুদহার আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। এ সুদহার নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে। এর আগে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টানা এক বছর নীতি সুদহার ৫ শতাংশে রাখে ব্যাংক অব কানাডা। দেশটির নীতি সুদের এ হার ছিল গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ।
উল্লেখ্য, করোনা অতিমারি পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার পর শুরু হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। এর প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক হারে বেড়ে যায় পণ্যমূল্য। দেশে দেশে দেখা দেয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে, ২০২২ সালে বিশ্বের গড় মূল্যস্ফীতি পৌঁছায় ৮ দশমিক ৭ শতাংশে।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতি সুদহার বাড়ানোসহ ব্যাপক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির পথে হাঁটতে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। সরবরাহ ব্যবস্থাতেও উন্নতি আনার চেষ্টা করা হয়। ফলে ২০২৩ সালে বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতি নেমে আসে ৬ দশমিক ৮ শতাংশে। এটি আরও কমে ২০২৪ সালে ৫ দশমিক ৯ এবং ৪ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে আইএমএফের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এমআই