আন্তর্জাতিক
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাছে চাকরি হারাবে ৩০ কোটি মানুষ

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) খাতে বিপুল বিনিয়োগের প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। অন্যদিকে আবার একই সময় বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, এ খাতে এতো বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগ্রাসনে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের ৩০ কোটি কর্মী চাকরি হারাতে পারে। অবশ্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জেরে ২০২৩ সাল জুড়েই কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করছিল বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত সিলিকন ভ্যালিতে।
কোম্পানিগুলো যে সব ক্ষেত্রেই ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের কাজের জায়গাগুলো পূরণ করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিচ্ছে, তা কিন্তু নয়। তবে বিষয়টি কাকতালীয় মনে হলেও যে কোম্পানিগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, তারাই বেশি কর্মী ছাঁটাই করছে। এমনকি অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তো সরাসরি এআইকেই কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ বলে উল্লেখ করছে।
তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কর্মীদের মধ্যে এ বিপুল চাকরিচ্যুতির ঘটনা মূলত ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তির জগতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে সংঘটিত হতে যাওয়া আরও অপ্রত্যাশিত ঘটনার পূর্বাভাস বলেই মনে করা হচ্ছে। এমনকি চলতি ২০২৪ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে এ খাতের বিজনেস মডেলের অনেক কিছুই বদলে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বছরের শুরুতেই চাকরি গেছে সাড়ে ৫ হাজার কর্মীর
সিএনএন জানায়, চলতি বছরের প্রথম ১৩ দিনেই মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে চাকরি হারিয়েছেন সাড়ে ৫ হাজার কর্মী। যে সব প্রতিষ্ঠান কর্মী ছাঁটাই করেছে, তার মধ্যে প্রথম শ্রেণির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ক্ষুদ্র পরিসরে থাকা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানও রয়েছে।
বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে গত ১৩ দিনে গুগল ও অ্যামাজন থেকে চাকরি খুইয়েছেন কোম্পানি দুটির বিভিন্ন বিভাগের এবং বিভিন্ন পর্যায়ের শত শত কর্মী। অথচ এ প্রতিষ্ঠান দুটি মাসখানেক আগেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে কাজ করা স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান অ্যানথ্রপিকে বহু বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়ে পুরো প্রযুক্তি জগতকে চমকে দিয়েছিল।
এ বিগ টেক কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ডিসকর্ড তাদের মোট কর্মীর ১৭ শতাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া জনপ্রিয় মোবাইল গেম পোকেমন গোতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিটি সফটওয়্যারও তাদের মোট কর্মশক্তির একচতুর্থাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ১০ শতাংশকে ছাঁটাইয়ের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের জনপ্রিয় ভাষা শিক্ষার অ্যাপ ডুয়োলিংগো।
চলতি বছরের সব মিলিয়ে প্রথম দুই সপ্তাহের মধ্যেই প্রযুক্তি খাতের সাড়ে ৫ হাজার কর্মী চাকরি হারিয়েছে বলে জানিয়েছে সিএনএন।
নতুন বছরের শুরুতেই এভাবে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রবণতা তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মীদের করোনো পরবর্তী ২০২২ ও ২০২৩ সালের তিক্ত অভিজ্ঞতাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। করোনা মহামারি শেষ হওয়ার পর ২০২৩ সাল ছিল বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি জগতের কর্মীদের জন্য ভয়াবহ একটি বছর। সব মিলিয়ে মার্কিন তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানিগুলো ২০২৩ সালে ছাঁটাই করেছে ২ লাখ ৬২ হাজারের বেশি কর্মী। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালেও ছাঁটাই হোন ১ লাখ ৬৪ হাজার কর্মী।
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের কর্মী ছাঁটাইয়ের সঙ্গে সব ক্ষেত্রেই যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিকাশের সম্পর্ক আছে, তা নাও হতে পারে। তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে অনেকেই এ বিষয়টিকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করছে। এ বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি জগতে কর্মী ছাঁটাই মনিটরিংকারী প্রতিষ্ঠান লেইঅফসের প্রতিষ্ঠাতা রজার লি সিএনএনকে বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই করোনা মহামারির সময় প্রযুক্তি খাতে অধিক হারে নিয়োগ দেয়া কর্মীদের ছাঁটাই করছে অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।
মূলত করোনা মহামারির সময় বিশ্বে লকডাউনের কারণে ঘরবন্দি মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় রমরমা ব্যবসা করে বিশ্বের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে ব্যাপক হারে কর্মী নিয়োগ দেয় এসব প্রতিষ্ঠান। তবে মহামারি শেষ হওয়ার পর প্রযুক্তি জগতের এ সুদিন আর থাকেনি। রাজস্ব নাটকীয়ভাবে কমে আসায় শেষ পর্যন্ত মহামারির সময় নিয়োগ দেয়া কর্মীদের ছাঁটাই করতে বাধ্য হয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো।
তবে কর্মী ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে করোনা মহামারি পরবর্তী প্রযুক্তি জগতের মন্দার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উচ্চ সুদের হারকেও দায়ী করেন রজার লি। তবে ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে এগুলোর বদলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রসারকে অজুহাত হিসেবে দেখাচ্ছে বলে সিএনএনকে জানান রজার লি।
গত বছর আইবিএম এবং ড্রপবক্সের মতো প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানায়। সাম্প্রতিক সময়ে ডুয়োলিংগো এমনকি গুগলও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আমলে নিয়েই তাদের শ্রম ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়েছে।
ঝুঁকিতে কোটি কোটি মানুষের চাকরি
সব মিলিয়ে বোঝা যাচ্ছে, বর্তমানে শ্রমবাজারে বিশেষ করে, তথ্য প্রযুক্তির জগতে কর্মীদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। যদিও শ্রমজগতের ওপর এর প্রভাব কতখানি পড়বে তা নিয়ে এখনও চূড়ান্ত কিছু বলার সময় আসেনি। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, সামনের দিনগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কারণে পুরো বিশ্বে ঝুঁকির মুখে পড়বে কোটি কোটি মানুষের চাকরি।
এ প্রসঙ্গে খ্যাতনামা বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস গত বছরের মার্চ মাসে এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত উত্থানের কারণে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে হুমকির মুখে পড়বেন ৩০ কোটি স্থায়ী চাকরিজীবী। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়বেন মূলত হোয়াইট কলার অর্থাৎ বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মীরা।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
সৌদিতে ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা

সৌদি আরবের তামির অঞ্চলে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। ফলে আগামী শুক্রবার (৬ জুন) দেশটিতে উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা। মঙ্গলবার (২৭ মে) সৌদি কর্তৃপক্ষের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গালফ নিউজ।
সৌদি সুপ্রিম কোর্টের ঘোষণা অনুযায়ী, ইসলামী বর্ষপঞ্জির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাস জিলহজ শুরু হচ্ছে বুধবার (২৮ মে) থেকে। এই তারিখ অনুযায়ী আরাফাহ দিবস হবে ৫ জুন (বৃহস্পতিবার) এবং এর পরদিন ৬ জুন (শুক্রবার) উদযাপিত হবে ঈদুল আজহা।
সৌদি আরবের আগেই বেশ কিছু দেশ ঈদের তারিখ ঘোষণা করে।
ব্রুনাই
ব্রুনাইয়ের চাঁদ দেখা কমিটি ঘোষণা করেছে যে, ২৮ মে (বুধবার) হবে জিলকদ মাসের শেষ দিন। কারণ ২৭ মে চাঁদ দেখা যায়নি। সে হিসেবে ২৯ মে (বৃহস্পতিবার) থেকে জিলহজ মাস শুরু হবে এবং ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ৭ জুন, শনিবার।
মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়াও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২৮ মে হবে জিলকদর শেষ দিন, ২৯ মে থেকে জিলহজ শুরু হবে। সে অনুযায়ী, ঈদুল আজহা পড়বে ৭ জুন।
ইন্দোনেশিয়া
গালফ নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়া ২৮ মে (বুধবার) থেকে জিলহজ গণনা শুরু করবে এবং ঈদুল আজহা উদযাপন করবে ৬ জুন (শুক্রবার)।
ওমান
ওমান সরকার জানিয়েছে, আগামী ২৮ মে (বুধবার) থেকে জিলহজ মাস শুরু হবে। সেই অনুযায়ী দেশটিতে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে ৬ জুন (শুক্রবার)।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বাংলাদেশে সামরিক অবকাঠামো নির্মাণ করতে চায় চীন: যুক্তরাষ্ট্র

চীন হয়তো বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও মিয়ানমারসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে সামরিক স্থাপনা প্রতিষ্ঠার কথা বিবেচনা করছে। সম্প্রতি ‘২০২৫ ওয়ার্ল্ডওয়াইড থ্রেট এসেসমেন্ট’ বা ‘বার্ষিক হুমকি মূল্যায়ন’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন দাবিই করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ)।
তবে এসব দেশে চীন ঠিক কী ধরনের সামরিক উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে, তা নিয়ে প্রতিবেদনে কোনো তথ্য উল্লেখ করেনি ডিআইএ। চীনের পক্ষ থেকেও যুক্তরাষ্ট্রের এই দাবির বিপরীতে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের হুমকি নিয়ে প্রতি বছর প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডিআইএ। সম্প্রতি ২০২৫ সালের ১১ মে পর্যন্ত পাওয়া তথ্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে তারা। প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়া অংশে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতের বিভিন্ন হুমকির কথা বলা হলেও বাংলাদেশের কোনো উল্লেখ নেই। তবে চীনের যেসব পরিকল্পনা বা হুমকির বিষয়ে বলা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারও রয়েছে।
চীনের বিষয়ে সতর্ক করে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্ব এশিয়ায় প্রধান শক্তিধর দেশ হওয়ার কৌশলগত লক্ষ্য বজায় রেখেছে চীন। তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ড চীনের সঙ্গে একীভূত করা, চীনের অর্থনীতির উন্নয়ন ও স্থিতিস্থাপকতাকে এগিয়ে নেওয়া ও মধ্য শতাব্দীর মধ্যে প্রযুক্তিগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দেশটি বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জও জানাচ্ছে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, কূটনৈতিক, তথ্যগত, সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মোকাবিলা করার জন্য চীন তার বৈশ্বিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করে চলেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থাৎ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ও তার আশপাশের অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। এই প্রতিযোগিতায় চীনকে আরও ভালোভাবে প্রস্তুত করতে তিনি নানা উদ্যোগ নিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মার্কিন সামরিক জোট ও তার নিরাপত্তা অংশীদারত্বের জন্য যে সমর্থন রয়েছে, সেটিকে দুর্বল করা।
যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিতে চীন কোন কোন অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতির কার্যক্রম শুরু করেছে এবং কোন দেশগুলোতে শুরু করার চিন্তা করছে, তা মার্কিন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে চীনের ‘গ্লোবাল মিলিটারি অপারেশনস’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে বলা হয়, চীনে থেকেই টানা লম্বা সময় কার্যক্রম চালানোর জন্য পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) বা গণমুক্তি বাহিনীর ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করছে দেশটি। এছাড়া আরও শক্তিশালী বিদেশি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছে চীন।
ডিআই’র দাবি, পিএলএ সেনাদের আরও বেশি দূরত্বে মোতায়েন বজায় রাখার জন্য অবকাঠামোও তৈরি করছে জিনপিং সরকার। এই প্রচেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক কার্যক্রম কিংবা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন সম্ভবত মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কিউবা, কেনিয়া, গিনি, সেশেলস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, বাংলাদেশ, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও তাজিকিস্তানে পিএলএ’র সামরিক উপস্থিতির কথা বিবেচনা করছে।
গত ৫ এপ্রিল কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী ও চীনের পিএলএ বাহিনীর একটি প্রতিনিধিদল কম্বোডিয়ার রিম নৌ ঘাঁটিতে যৌথ লজিস্টিকস ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, চীনের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জোর দিয়ে বলেছে, কেন্দ্রটি সন্ত্রাসবাদ দমন, দুর্যোগ প্রতিরোধ, মানবিক সহায়তা ও প্রশিক্ষণের মতো ক্ষেত্রে যৌথ অভিযান কার্যক্রমকে সহযোগিতা করবে।
চীনের এ ধরনের কার্যক্রম কেমন হতে পারে, এ নিয়েও প্রতিবেদনে ধারণা দেওয়া হয়। এতে জানানো হয়, চীন বিভিন্ন দেশে একটি মিশ্র ব্যবস্থায় এসব কার্যক্রম চালায়। এতে গ্যারিসন বাহিনী অর্থাৎ নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থানরত সেনা ও ঘাঁটি রাখা হয়। এছাড়া যেসব দেশে এসব কার্যক্রম চালানো হয়, সেসব দেশের বাহিনীও তাদের সঙ্গে যুক্ত হয় ও সুবিধা পায়। এর বাইরে বাণিজ্যিক অবকাঠামোও থাকে এতে। গত বছর তানজানিয়ায় এমনই করেছে চীন।
ডিআইএ’র প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, গত বছর তানজানিয়ায় একটি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত মহড়া পরিচালনা করে পিএলএ, যা আফ্রিকায় চীনের সর্ববৃহৎ সামরিক মহড়া। এই মহড়ায় সমুদ্র ও আকাশপথে ১ হাজারেরও বেশি সেনা মোতায়েনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী নিজেদের শক্তিমত্তার জানান দেয় চীনের সামরিক বাহিনী।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
সৌদির ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ৬ জুন ঈদুল আজহা

চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে নির্ধারিত হয় আরবি মাসগুলো। বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাস, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার আগে চাঁদ নিয়ে বিশ্বের সব মুসল্লির মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়। এ সময় সবাই নতুন চাঁদের অপেক্ষা করেন।
চাঁদ দেখে আরবি মাস নির্ধারণ যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “তোমরা চাঁদ দেখে রোজা রাখো, চাঁদ দেখে ঈদ করো।” তিনি আরও বলেছেন, “তোমরা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোজা রেখো না এবং তা না দেখা পর্যন্ত রোজা ছেড়ে দিও না।”
তবে গত কয়েক বছর ধরে ইসলাম ধর্মের জন্মস্থান সৌদি আরবের সরকার তাদের জ্যোতির্বিদদের গণনার মাধ্যমে তৈরি করা ক্যালেন্ডার ‘উম আল কুরা’ দেখে রোজা ও ঈদের হিসাব আগে থেকেই ঘোষণা করে দিচ্ছে। যা গত ২৬ মার্চ পবিত্র রমজান মাস চলার সময় জানিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডেল ইস্ট আই। সংবাদমাধ্যমটি উল্লেখ করেছিল, এ বছর সৌদি আরবে ২৯তম দিনে ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা যাবে না বলে জানিয়েছেন প্রায় সব জ্যোতির্বিদ। কিন্তু সৌদি চাঁদ না দেখেই ঈদের ঘোষণা দিতে পারে। সেই আশঙ্কাই সত্যি হয়েছিল, সৌদি চাঁদ ওঠার কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এমনকি দেশটির কোনো সাধারণ মানুষও চাঁদ দেখেননি। তা সত্ত্বেও সৌদির সরকার ২৯তম রোজায় ঈদের ঘোষণা দিয়েছিল। এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল।
রোজা ও ঈদুল ফিতরের পর চলে এসেছে আরেক ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। সৌদির সরকারি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, এবার সৌদিতে ঈদ হবে ৬ জুন। আর আরাফাতের দিন হবে ৫ জুন।
সৌদি আজ রোববার (২৫ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে চাঁদের অনুসন্ধান করতে সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে ২৭ মে সন্ধ্যায় জিলকদ মাসের ২৯তম দিন পড়বে। এদিন যেন সবাই জিলহজ মাসের নতুন চাঁদের অনুসন্ধান করেন। তবে তাদের ‘উম আল কুরা’ ক্যালেন্ডারে আগে থেকেই দেওয়া আছে ২৮ মে হবে জিলহজ মাসের প্রথমদিন। আর ৬ জুন শুক্রবার হবে ঈদুল আজহা।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারতের সঙ্গে জাহাজ নির্মাণ চুক্তি বাতিল করলো বাংলাদেশ

ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের মধ্যেই ভারতের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের একটি চুক্তি বাতিল করলো বাংলাদেশ। চুক্তিটি ছিল একটি উন্নত সামুদ্রিক টাগবোট নির্মাণের জন্য, যা গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে আগে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
কলকাতা ভিত্তিক গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই) ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে এই চুক্তি করে। তবে সম্প্রতি জিআরএসই ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ সরকার এই অর্ডার বাতিল করেছে।
এই চুক্তি ছিল ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে দেওয়া ৫০ কোটি ডলারের ঋণরেখার অধীনে প্রথম বড় প্রকল্প। ৮০০ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি সমুদ্রগামী টাগবোট নির্মাণের লক্ষ্যে এই চুক্তি হয়েছিল।
এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এলো, যখন গত সপ্তাহে ভারত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে। এছাড়া, চলতি মে মাসেই ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১১টি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি ভোক্তা পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করে, যা প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানিকে প্রভাবিত করতে পারে। বাংলাদেশের ৯৩ শতাংশ তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে।
এর আগে এপ্রিল মাসে ভারত বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের জন্য ভারতীয় বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে ট্রানশিপমেন্টের সুবিধাও বাতিল করে। পালটা পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ ১৩ এপ্রিল থেকে ভারতের সুতা রপ্তানি স্থলবন্দর দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ছিল ভারতের বৃহত্তম উপমহাদেশীয় বাণিজ্য অংশীদার। ভারতের রপ্তানি বাংলাদেশে ছিল ১ হাজার ১০৬ কোটি ডলার ও আমদানি ছিল ১৮০ কোটি ডলারের।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না: পাক প্রধানমন্ত্রী

ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতির অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেছেন।
অনুষ্ঠানে দেশটির রাষ্ট্রপতি বলেন, তারা আজ সশস্ত্র বাহিনীর সেইসব বীরদের সম্মান জানানোর জন্য একত্রিত হয়েছেন, যারা ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ড ও অখণ্ডতা রক্ষা করেছেন।
তিনি বলেন, আপনাদের সবাইকে নিয়ে জাতি গর্ব করে। রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আমি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি হিসেবে জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করছি ও সর্বোচ্চ সামরিক পদ হিসেবে তার হাতে ব্যাটন তুলে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই অনুষ্ঠানে বলেন, আজকের দিনটি জাতীয় গৌরব ও পাকিস্তানের ইতিহাসে এক স্মরণীয় মুহূর্ত। তিনি ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, সিজেসসিসি জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর সিদ্দিকী এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নবীদ আশরাফের প্রশংসা করেন।
শাহবাজ বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী শুধু সীমান্ত রক্ষা করেনি, তারা যুদ্ধকে শত্রুর ভূখণ্ডে পর্যন্ত নিয়ে গেছে এবং খুব অল্প সময়েই আগ্রাসী পক্ষকে মাটিতে নামিয়ে এনে শিক্ষা দিয়েছে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ ভেবেছিল পাকিস্তান প্রচলিত যুদ্ধের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। কিন্তু এই যুদ্ধ সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে। আমাদের ঐক্য, সাহস ও ঈমান আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে। ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না। ইনশাআল্লাহ, একদিন কাশ্মীর পাকিস্তানের অংশ হবে।