অর্থনীতি
লোহিত সাগর সংকটে বড় বিপর্যয়ের শঙ্কা রফতানি খাতে

হুতিদের ক্রমাগত আক্রমণের মুখে জাহাজ চলাচল বন্ধ করেছে বিশ্বের জাহাজ ও সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন খাতের বড় বড় প্রতিষ্ঠান। দেশের আমদানি-রফতানিতে বড় সমস্যা হয়েছে দাঁড়িয়েছে লোহিত সাগর সংকট। এই রুট এড়িয়ে অন্য রুটে পণ্য রফতানিতে বাড়তি সময় লাগছে ১৪ থেকে ১৫ দিন। এতে বেড়েছে খরচ। ফলে সবমিলিয়ে রফতানি খাতে বড় ধনের বিপর্যয়ের শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।
এশিয়া থেকে ইউরোপে পণ্য পাঠাতে সবচেয়ে সহজ ও খরচ সাশ্রয়ী রুট লোহিত সাগর দিয়ে সুয়েজ খাল পাড়ি দেয়া। এই পথ দিয়ে প্রতিবছর অন্তত ১৭ হাজার জাহাজ চলাচল করে। এ ছাড়া বিশ্ববাণিজ্যের ১০ শতাংশ পণ্য পরিবহন করা হয় গুরুত্বপূর্ণ এই পথ দিয়ে। তবে স্বস্তির এই জলপথই এবার হয়েছে কঠিন আশঙ্কার কারণ।
গত ১৮ নভেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজে ২৫ বার হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠিরা। এতে গুরুত্বপূর্ণ এই জল পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ রেখেছে জাহাজ ও সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন খাতের বড় প্রতিষ্ঠান এমএসসি, মায়েরস্ক, সিএমএ–সিজিএম, কসকো ও জার্মান প্রতিষ্ঠান হ্যাপাগ লয়েড। এ পথ এড়িয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করছে বিকল্প রুট।
এ প্রসঙ্গে গ্লোবাল ট্রেড ডেটা প্রোভাইডার কেপলার জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহে লোহিত সাগরের পরিবর্তে আফ্রিকার কেপ অব গুড হোপ রুট ব্যবহারকারী জাহাজের সংখ্যা ৫৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৪টিতে। নতুন রুট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের প্রায় ৬০ শতাংশ কার্গোই লোহিত সাগর দিয়ে সুয়েজ খাল হয়ে ইউরোপে পৌঁছায়। তবে আফ্রিকা ঘুরে ইউরোপে পণ্য পাঠাতে ৮ থেকে ১০ দিন বাড়তি সময় লাগছে।
শুধু তাই নয়, এক্ষেত্রে বেড়েছে খরচও। বাংলাদেশের বন্দর থেকে প্রতি ২০ ফুট কনটেইনারে ৫০০ ডলারের ‘পিক সিজন সারচার্জ’ আরোপ করেছে ফরাসি প্রতিষ্ঠান সিএমএ সিজিএম। এছাড়া ৫০০ ডলারের ‘ইমার্জেন্সি পিএসএস’ আরোপ করেছে, জাপানি ওশান নেটওয়ার্ক এক্সপ্রেস। একই কনটেইনারে বাড়তি এক হাজার ডলার নিচ্ছে এমএসসি। একই পথে হেঁটেছে জার্মানির হ্যাপাগ-লয়েড। যা তৈরি করেছে বাজার হারানোর শঙ্কা।
নিট শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, সময় ও খরচ বেশি লাগার কারণে ক্রেতারাও তাদের নিকটবর্তী দেশগুলো থেকে পণ্য নেয়ার চেষ্টা করেছেন।
এদিকে বছরে প্রায় ১০ মিলিয়ন বেল তুলা আমদানি করে বাংলাদেশ। সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহনে এই সংকট দেখা দেয়া বিপাকে পড়েছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরাও।
বাজার হারানোর শঙ্কা প্রকাশ করে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পরিচালক প্রকৌশলী রাজীব হায়দার জানান, আমার প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যদি আমি দেরিতে পাই তাহলে দিনশেষে আমাদের উৎপাদিত পণ্যের দামও বাড়বে। ফলে আমরা বাজার প্রতিযোগিতার সক্ষমতাও হারাব।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে: গভর্নর

আগামী মাসে (জুন) মূল্যস্ফীতির হার ৮ শতাংশে নামবে। আগস্ট মাসের মধ্যে সেটা আরও কমে ৭ শতাংশে আসবে। আর ২০২৫ সালের শেষে এটি ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের প্রয়োগ ও প্রভাব’ শীর্ষক এক গোলটেবিলে আলোচনায় এসব কথা জানান তিনি।
গোলটেবিল বৈঠকে গভর্নর বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের বড় কিছু হস্তক্ষেপ আসবে, এতে ব্যাংকগুলো রিক্যাপিটালাইজ হবে। তবে মূল্যস্ফীতির হার বেশি থাকলে বিনিময় হার স্ট্যাবল (স্থিতিশীল) রাখা কঠিন। এ বছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতি ৩ থেকে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারলে মুদ্রার বিনিময় হারকে (এক্সচেঞ্জ রেট) সাপোর্ট দিতে পারবে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হবে। ভারত ও আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৩ শতাংশ। আমাদেরও সে জায়গায় আনতে হবে। সামষ্টিক অর্থনীতিকে যদি ঠিক না করতে পারি, ব্যালান্স অব পেমেন্টের সার্বিক ভারসাম্য ঠিক করতে না পারি, তাহলে এক্সচেঞ্জ রেট ঠিক রাখতে পারবো না। তবে এখন ব্যালান্স অব পেমেন্ট আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে।
আমদানি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, এর আগে যে পরিমাণ কমোডিটি (পণ্য) আমদানি হতো, এখনো সে পরিমাণই আমদানি হচ্ছে। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমেছে, এটা আমাদের হেল্প করছে। আমদানিতে বিধিনিষেধ দেওয়ার পক্ষপাতী নই। কেউ যদি ট্যাক্স দিয়ে লাক্সারি (বিলাস) পণ্য ব্যবহার করতে চায়, এখানে আমার সমস্যা নেই।
তিনি ফরোয়ার্ড মার্কেটকে ডেভেলপ করার জন্য ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এক্সচেঞ্জ রিস্ক নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্যালকুলেশন করবেন। আপনারা ডেফার্ড পেমেন্টে রিস্ক মনে করলে স্পটে পেমেন্ট করে দিন। আমরা নিজেরা নিজেদের গরিব করে রাখি অথচ বাংলাদেশিদের শত শত বিলিয়ন ডলার বাইরে রয়েছে। সম্পদের সিকিউরিটির (নিরাপত্তার) জন্য তারা বাইরে রাখছেন। এই সিকিউরিটি মেইনটেইন করতে না পারলে ক্যাপিটাল ফ্লাইট থামানো যাবে না।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের দেশ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ কোটি টাকা চলে গেছে। এর প্রভাব থাকবেই। এ কারণে অনেক রেট অফার দেওয়ার পরও ডিপোজিট বাড়ছে না। মূল কারণ টাকাতো দেশে নাই। ফরেক্স রিজার্ভ বিল্ডআপ করার মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অনেকেই আমাদের সমালোচনা করেন, অথর্ব বলেন: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেকেই আমাদের সমালোচনা করেন; অথর্ব বলেন। সমালোচনা করবেন, ঠিক আছে। তবে বাইরে এসব ভালো ইম্প্রেশন দেয় না। ইমেজ (ভাবমূর্তি) ক্ষুণ্ন হয়।
শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইকোনমিকস অলিম্পিয়াড-২০২৫ এর জাতীয় পর্যায়ের মূল পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান।
আসন্ন বাজেট নিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক ধরনের করছাড়ের কথা বলা হয়েছে। বাজেটের পরদিন এসব নিয়ে অনেক উত্তর দিতে হবে। তবে সাধারণ মানুষ বা সামাজিক পছন্দ ঠিক করাটা সহজ কাজ না। আর আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) যা চেয়েছিল, তা এবার চাপিয়ে দিতে পারে নাই। আমরা একটা সমাধানে এসেছি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন, ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ, পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রতি দশকে আমাদের ১ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এই প্রবৃদ্ধির সুফল সবাই পায়নি। ফলে বৈষম্য আরও বেড়েছে। এই প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেনি। তরুণ বেকারত্ব বেড়েছে। গত আড়াই বছর উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে মানুষ জর্জরিত। রাজনৈতিক প্রভাবে একমুখী অর্থনীতি পরিচালনা করলে সমাজ পিছিয়ে যায়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মাসরুর আরেফিন বলেন, গত ৯ মাসে অনেক বেশি অর্জন হয়তো আসেনি। তবে ব্যাংকগুলোতে চলা অন্যায়, অনিয়ম বন্ধ হয়েছে। টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে। এটাই বড় অর্জন। তবে রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা আবার বাড়ছে।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনীতি হলো প্রায়োগিক বিজ্ঞান। তাই স্কুল–কলেজ পর্যায়ে থেকে অর্থনীতিকে জনপ্রিয় করতে আমরা চেষ্টা করছি। এবার ২০ হাজার প্রতিযোগী ছিল। প্রতিবছর মনোযোগের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ ইকোনমিক অলিম্পিয়াড।
সপ্তমবারের আয়োজনে এবার সারা দেশে ২০ হাজার প্রতিযোগী থেকে জাতীয় পর্যায়ে ৫ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। তাদের স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ উপহার প্রদান করা হয়। এই পাঁচজন আজারবাইজানে আন্তর্জাতিক ইকোনমিক অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে সবজি ও মুরগির দাম

বাজারে সবজি ও মুরগির দাম বেশ কম। সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত আছে ডিমের দামও। অন্য মুদি পণ্যগুলোর দামও স্থিতিশীল। শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও তালতলা ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে বেশিরভাগ সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পটোল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা ও কাঁকরোল আছে এই তালিকায়। এছাড়া বরবটি, কচুর লতি, উস্তা, বেগুন, ঝিঙে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা আহাদুজ্জামান বলেন, বাজারে গ্রীষ্মের সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে, যে কারণে দাম অনেকটা কম। অনেক এলাকায় বন্যার শঙ্কার কারণে অনেকে ক্ষেতের সবজি তুলে ফেলছেন। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে কমেছে।
এদিকে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নেমেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। কিছু বাজারে দাম ১৭০ টাকা হাঁকলেও দরদাম করলে ওই দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০ টাকা কম। একইভাবে কমে সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বিক্রেতা বজলু মিয়া বলেন, বাজারে এতো সস্তা দামে মুরগি দীর্ঘদিন পরেই বিক্রি হচ্ছে। এখন মুরগি বিক্রি করে খামারিদের প্রচুর লোকসান হচ্ছে। দাম ২০০ টাকা কেজির কাছাকাছি থাকা ভালো।
মুরগির দাম কম থাকলেও ডিমের দাম মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৪০-১৪৫ টাকা হয়েছে। এখনো সে দামেই পাওয়া যাচ্ছে। নতুন করে দামের কোনো হেরফের হয়নি।
মালিবাগ বাজারে পাইকারি ডিম বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বর্ষার এই সিজনে অন্য বছরগুলোতে ডিমের দাম আরও বেশি থাকে। সে হিসেবে এ বছর দীর্ঘদিন ধরে ডিমের দাম কম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় বাজারগুলোতে এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা ডজন দরে। পাড়া-মহল্লায় এক ডজন ডিম ১৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
পুরোনো মিনিকেট চাল বাড়তি দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট। চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা মিনিকেটের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তিনি বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে নতুন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। তবে ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরনো মিনিকেট চাল এখনো সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
অন্যদিকে মুদি বাজারে তেল চিনি ডালের দামে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি। তবে মাছের বাজারে চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম।
বাজারে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে।
এছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের মজুরি বাড়ালো সরকার

সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দৈনিকভিত্তিক সাময়িক শ্রমিকদের মজুরি ১৫০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। তবে এজন্য কিছু শর্ত মানতে হবে তাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, যা আগামী এক জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
পরিপত্রে বলা হয়, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জরুরি কার্য সম্পাদনের সম্পূর্ণরূপে সাময়িকভাবে দৈনিকভিত্তিতে শ্রমিকদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে। ইতোমধ্যে জারি হওয়া ‘দৈনিক ভিত্তিক সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী সরকার সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরির হার পুনর্নির্ধারণ করেছে।
পুনর্নির্ধারিত মজুরি অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৮০০ টাকা। এতদিন এ এলাকায় নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৬০০ টাকা আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৭৫ টাকা। অর্থাৎ এই এলাকায় শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে ২০০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত।
এছাড়া বিভাগীয় শহর এবং অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫০ টাকা। এতদিন যা ছিল যথাক্রমে ৬০০ এবং ৫৫০ টাকা। সেই হিসাবে মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একইসঙ্গে জেলা ও উপজেলা এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৭০০ টাকা। এতদিন নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৫০ টাকা, আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫০০ টাকা। এক্ষেত্রেও মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
পরিপত্রে বেশ কিছু শর্তের কথাও উল্লেখ করা হয়। এগুলো হচ্ছে– ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োজন, মজুরি প্রদান এবং উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতসহ অন্যান্য নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে; শ্রমিকের সংখ্যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে; সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, সংস্থার অনুকূলে বাজেটে দেওয়া বরাদ্দ থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করতে হবে; উল্লিখিত দৈনিক মজুরির হারে মাসিকভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না; এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে এবং এ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধি বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি অত্যাবশ্যক কাজ সম্পাদনে গত এপ্রিলে ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সাময়িকভাবে এ ধরণের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যাবে, যারা সাময়িক ধরনের কাজের জন্য নিয়োজিত হবেন। এজন্য কোনো ধরনের পদ সৃজন করা যাবে না এবং এ ধরনের শ্রমিকদের মাসে ২২ দিনের বেশি সময়ের জন্য নিয়োজিত রাখা যাবে না।
‘সাময়িক কাজ’-এর সংজ্ঞায় নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারের মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি ধরনের অত্যাবশ্যক কাজ বোঝাবে- যা সময়ে সময়ে প্রয়োজন হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান জনবল দ্বারা সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত শূন্য পদ/নিয়মিত পদ/জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেডভুক্ত পদের বিপরীতে কাজ করার জন্য কিংবা ‘আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা’র আওতাভুক্ত সেবাসমূহের বিপরীতে দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না।
নীতিমালা অনুযায়ী, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সের মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম যে কেউ এ নীতিমালার আওতায় সাময়িক শ্রমিক হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের রিজার্ভ আরও বাড়ল

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ হাজার ৬৪২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন বা ২৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ হাজার ৬৪২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০২৭২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর আগে, ১৯ মে পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৪৪৪ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ হাজার ০৭০ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কাফি