অর্থনীতি
পোশাকবহির্ভূত পণ্য রফতানি কমেছে সাড়ে ৮ শতাংশ

২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশের মোট পণ্য রফতানিতে কমেছে পোশাকবহির্ভূত পণ্যের অবদান। গত অর্থবছরের তুলনায় রফতানি ৮ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে ৬৪৭ কোটি ডলারে নেমেছে। এর মধ্যে সর্বাধিক নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে পেট্রোলিয়াম উপজাত রফতানিতে। তার পরই রয়েছে কার্পেট (পাট ও অন্যান্য), কৃষি পণ্য, প্রকৌশল পণ্য এবং হিমায়িত ও তাজা মাছ।
বিজিএমইএ সংকলিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) পরিসংখ্যানে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পোশাকবহির্ভূত খাতের পণ্য রফতানি কমে যাওয়া দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ দীর্ঘ সময় ধরে ডলার সংকটে ভুগছে। নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহে। তৈরি পোশাক খাত ছাড়া অন্য খাতগুলোয় কমেছে রফতানি আয়। আগামীতে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটলে তৈরি পোশাক রফতানির ওপর বড় আঘাত আসার আশঙ্কা রয়েছে। তৈরি পোশাক খাতের মতো অন্য খাতগুলোয়ও গুরুত্ব দিয়ে রফতানি আয় বাড়াতে হবে। তা না হলে সামগ্রিকভাবে রফতানি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিকে আরো ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেবে।
ইপিবির তথ্য মতে, বাংলাদেশ ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৪৭ কোটি ২৪ লাখ ২০ হাজার ডলারের পোশাকবহির্ভূত পণ্য রফতানি করে। এর আগের অর্থবছর যা ৭০৮ কোটি ২৭ লাখ ১০ হাজার ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে রফতানি কমেছে ৬১ কোটি ২ লাখ ৯০ হাজার ডলারের।
ইপিবির পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত ছয় অর্থবছরের মধ্যে ২০১৮-১৯-এ পোশাকবহির্ভূত খাতের রফতানি প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৪০ শতাংশ। এর পরের বছর রফতানি কমে ১০ শতাংশেরও বেশি। পরবর্তী ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থাৎ টানা দুই অর্থবছরে রফতানিতে লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি দেখা দেয়। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি আবারো নেতিবাচক হয়ে পড়ে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেও রফতানির চিত্র ছিল নিম্নমুখী।
পোশাকবহির্ভূত রফতানি পণ্যের মধ্যে অন্যতম চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাট ও পাটজাত পণ্য, কৃষি পণ্য, প্রকৌশল পণ্য, হিমায়িত ও তাজা মাছ, কার্পেট, পেট্রোলিয়াম উপজাত। এসব পণ্যের মধ্যে আবার সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এসব পণ্য রফতানি হয় ১২২ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ডলারের। ২০২১-২২ অর্থবছরে যা ছিল ১২৪ কোটি ৫১ লাখ ৮০ হাজার ডলারের। সে হিসাবে রফতানি কমেছে ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাট ও পাটজাত পণ্য। ২০২১-২২ অর্থবছরে ১১২ কোটি ৭৬ লাখ ডলারের রফতানি হলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা কমে ৯১ কোটি ২২ লাখ ডলারে নামে। কৃষি পণ্য রফতানি ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ কমে নেমেছে ৮৪ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। আগের অর্থবছরে যা ছিল ১১৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৫৮ কোটি ৫৮ লাখ ডলারের প্রকৌশল পণ্য রফতানি হলেও আগের অর্থবছরে তা ছিল ৭৯ কোটি ৫৬ লাখ ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে রফতানি কমেছে ২০ কোটি ৯৭ লাখ ডলারের।
পোশাকবহির্ভূত পণ্য রফতানি বাড়াতে রফতানি বৈচিত্র্যকরণে জোর দিতে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবি-সংশ্লিষ্টদের মতে, রফতানি খাতে সরকার বৈচিত্র্য আনয়নের কার্যক্রম শুরু করেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে সরকারের উদ্যোগগুলোর সুফল রাতারাতি পাওয়া যাবে না। এগুলো সময়সাপেক্ষ। সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতির কারণে রফতানি বৃদ্ধি করা যায়নি। পোশাকবহির্ভূত পণ্যের রফতানি বাড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। নীতিসুবিধা আদায়, প্রাপ্তি ও কার্যকর হওয়া সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে রফতানি খাতকে আরো বৈচিত্র্যময় করতে হবে। তাহলে রফতানি নেতিবাচক হবে না।
কাফি
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
বছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে: গভর্নর

আগামী মাসে (জুন) মূল্যস্ফীতির হার ৮ শতাংশে নামবে। আগস্ট মাসের মধ্যে সেটা আরও কমে ৭ শতাংশে আসবে। আর ২০২৫ সালের শেষে এটি ৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) সন্ধায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের প্রয়োগ ও প্রভাব’ শীর্ষক এক গোলটেবিলে আলোচনায় এসব কথা জানান তিনি।
গোলটেবিল বৈঠকে গভর্নর বলেন, আগামী বছর বাংলাদেশ ব্যাংকের বড় কিছু হস্তক্ষেপ আসবে, এতে ব্যাংকগুলো রিক্যাপিটালাইজ হবে। তবে মূল্যস্ফীতির হার বেশি থাকলে বিনিময় হার স্ট্যাবল (স্থিতিশীল) রাখা কঠিন। এ বছর শেষে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতি ৩ থেকে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারলে মুদ্রার বিনিময় হারকে (এক্সচেঞ্জ রেট) সাপোর্ট দিতে পারবে।
তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে হবে। ভারত ও আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি ২ থেকে ৩ শতাংশ। আমাদেরও সে জায়গায় আনতে হবে। সামষ্টিক অর্থনীতিকে যদি ঠিক না করতে পারি, ব্যালান্স অব পেমেন্টের সার্বিক ভারসাম্য ঠিক করতে না পারি, তাহলে এক্সচেঞ্জ রেট ঠিক রাখতে পারবো না। তবে এখন ব্যালান্স অব পেমেন্ট আগের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে।
আমদানি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, এর আগে যে পরিমাণ কমোডিটি (পণ্য) আমদানি হতো, এখনো সে পরিমাণই আমদানি হচ্ছে। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমেছে, এটা আমাদের হেল্প করছে। আমদানিতে বিধিনিষেধ দেওয়ার পক্ষপাতী নই। কেউ যদি ট্যাক্স দিয়ে লাক্সারি (বিলাস) পণ্য ব্যবহার করতে চায়, এখানে আমার সমস্যা নেই।
তিনি ফরোয়ার্ড মার্কেটকে ডেভেলপ করার জন্য ব্যাংকগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এক্সচেঞ্জ রিস্ক নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্যালকুলেশন করবেন। আপনারা ডেফার্ড পেমেন্টে রিস্ক মনে করলে স্পটে পেমেন্ট করে দিন। আমরা নিজেরা নিজেদের গরিব করে রাখি অথচ বাংলাদেশিদের শত শত বিলিয়ন ডলার বাইরে রয়েছে। সম্পদের সিকিউরিটির (নিরাপত্তার) জন্য তারা বাইরে রাখছেন। এই সিকিউরিটি মেইনটেইন করতে না পারলে ক্যাপিটাল ফ্লাইট থামানো যাবে না।
আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমাদের দেশ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ কোটি টাকা চলে গেছে। এর প্রভাব থাকবেই। এ কারণে অনেক রেট অফার দেওয়ার পরও ডিপোজিট বাড়ছে না। মূল কারণ টাকাতো দেশে নাই। ফরেক্স রিজার্ভ বিল্ডআপ করার মাধ্যমে এর সমাধান করতে হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
অনেকেই আমাদের সমালোচনা করেন, অথর্ব বলেন: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেকেই আমাদের সমালোচনা করেন; অথর্ব বলেন। সমালোচনা করবেন, ঠিক আছে। তবে বাইরে এসব ভালো ইম্প্রেশন দেয় না। ইমেজ (ভাবমূর্তি) ক্ষুণ্ন হয়।
শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ইকোনমিকস অলিম্পিয়াড-২০২৫ এর জাতীয় পর্যায়ের মূল পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান।
আসন্ন বাজেট নিয়ে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, অনেক ধরনের করছাড়ের কথা বলা হয়েছে। বাজেটের পরদিন এসব নিয়ে অনেক উত্তর দিতে হবে। তবে সাধারণ মানুষ বা সামাজিক পছন্দ ঠিক করাটা সহজ কাজ না। আর আইএমএফ (আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল) যা চেয়েছিল, তা এবার চাপিয়ে দিতে পারে নাই। আমরা একটা সমাধানে এসেছি।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাসরুর আরেফিন, ঢাকা ব্যাংকের এমডি শেখ মোহাম্মদ মারুফ, পূবালী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, প্রতি দশকে আমাদের ১ শতাংশ করে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এই প্রবৃদ্ধির সুফল সবাই পায়নি। ফলে বৈষম্য আরও বেড়েছে। এই প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারেনি। তরুণ বেকারত্ব বেড়েছে। গত আড়াই বছর উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে মানুষ জর্জরিত। রাজনৈতিক প্রভাবে একমুখী অর্থনীতি পরিচালনা করলে সমাজ পিছিয়ে যায়।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে মাসরুর আরেফিন বলেন, গত ৯ মাসে অনেক বেশি অর্জন হয়তো আসেনি। তবে ব্যাংকগুলোতে চলা অন্যায়, অনিয়ম বন্ধ হয়েছে। টাকা পাচার বন্ধ হয়েছে। এটাই বড় অর্জন। তবে রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা আবার বাড়ছে।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, অর্থনীতি হলো প্রায়োগিক বিজ্ঞান। তাই স্কুল–কলেজ পর্যায়ে থেকে অর্থনীতিকে জনপ্রিয় করতে আমরা চেষ্টা করছি। এবার ২০ হাজার প্রতিযোগী ছিল। প্রতিবছর মনোযোগের কেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে বাংলাদেশ ইকোনমিক অলিম্পিয়াড।
সপ্তমবারের আয়োজনে এবার সারা দেশে ২০ হাজার প্রতিযোগী থেকে জাতীয় পর্যায়ে ৫ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। তাদের স্মার্টফোন ও ল্যাপটপ উপহার প্রদান করা হয়। এই পাঁচজন আজারবাইজানে আন্তর্জাতিক ইকোনমিক অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে সবজি ও মুরগির দাম

বাজারে সবজি ও মুরগির দাম বেশ কম। সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত আছে ডিমের দামও। অন্য মুদি পণ্যগুলোর দামও স্থিতিশীল। শুক্রবার (২৩ মে) সকালে রাজধানীর রামপুরা, মালিবাগ, খিলগাঁও তালতলা ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে বেশিরভাগ সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পটোল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা ও কাঁকরোল আছে এই তালিকায়। এছাড়া বরবটি, কচুর লতি, উস্তা, বেগুন, ঝিঙে বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা আহাদুজ্জামান বলেন, বাজারে গ্রীষ্মের সবজির প্রচুর সরবরাহ রয়েছে, যে কারণে দাম অনেকটা কম। অনেক এলাকায় বন্যার শঙ্কার কারণে অনেকে ক্ষেতের সবজি তুলে ফেলছেন। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় প্রতিটি সবজির দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা করে কমেছে।
এদিকে, বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নেমেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। কিছু বাজারে দাম ১৭০ টাকা হাঁকলেও দরদাম করলে ওই দামে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। যা গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি ২০ টাকা কম। একইভাবে কমে সোনালী মুরগি প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির বিক্রেতা বজলু মিয়া বলেন, বাজারে এতো সস্তা দামে মুরগি দীর্ঘদিন পরেই বিক্রি হচ্ছে। এখন মুরগি বিক্রি করে খামারিদের প্রচুর লোকসান হচ্ছে। দাম ২০০ টাকা কেজির কাছাকাছি থাকা ভালো।
মুরগির দাম কম থাকলেও ডিমের দাম মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। এক সপ্তাহ আগে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১০ টাকা বেড়ে ১৪০-১৪৫ টাকা হয়েছে। এখনো সে দামেই পাওয়া যাচ্ছে। নতুন করে দামের কোনো হেরফের হয়নি।
মালিবাগ বাজারে পাইকারি ডিম বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, বর্ষার এই সিজনে অন্য বছরগুলোতে ডিমের দাম আরও বেশি থাকে। সে হিসেবে এ বছর দীর্ঘদিন ধরে ডিমের দাম কম।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় বাজারগুলোতে এখন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা ডজন দরে। পাড়া-মহল্লায় এক ডজন ডিম ১৪৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
পুরোনো মিনিকেট চাল বাড়তি দামে বিক্রি হলেও কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে বাজারে নতুন আসা মিনিকেট। চাল বিক্রেতা হোসেন আলী বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। এখন প্রতি বস্তা মিনিকেটের দাম ২০০০ টাকার মধ্যে এসেছে, যা আগে ২২০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল।
তিনি বলেন, বাজারে প্রচলিত প্রায় সব ব্র্যান্ডের মিনিকেট চালের দামই কমেছে। তবে পুরোনো কোনো চালের দাম এখনো কমেনি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো মিনিকেট চাল যেখানে সর্বনিম্ন ৭২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, সেখানে নতুন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি দরে। তবে ভালো মানের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পুরনো মিনিকেট চাল এখনো সর্বোচ্চ ৮৫-৮৬ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
অন্যদিকে মুদি বাজারে তেল চিনি ডালের দামে খুব একটা পার্থক্য দেখা যায়নি। তবে মাছের বাজারে চড়াভাব দেখা গেছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বর্তমানে চাষের মাছের সরবরাহ কিছুটা কম।
বাজারে প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ১০০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্বাভাবিক সময়ে এর দাম কেজিতে ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত কম থাকে।
এছাড়া কই, শিং, শোল, ট্যাংরা ও পুঁটির দাম বাড়তি। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশও আগের চেয়ে ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। প্রতি কেজি চাষের রুই, কাতলা ৩২০-৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০-২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০-২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দৈনিকভিত্তিক শ্রমিকদের মজুরি বাড়ালো সরকার

সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে দৈনিকভিত্তিক সাময়িক শ্রমিকদের মজুরি ১৫০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। তবে এজন্য কিছু শর্ত মানতে হবে তাদের। গতকাল বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ, যা আগামী এক জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
পরিপত্রে বলা হয়, সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে জরুরি কার্য সম্পাদনের সম্পূর্ণরূপে সাময়িকভাবে দৈনিকভিত্তিতে শ্রমিকদের জন্য এটি প্রযোজ্য হবে। ইতোমধ্যে জারি হওয়া ‘দৈনিক ভিত্তিক সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী সরকার সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরির হার পুনর্নির্ধারণ করেছে।
পুনর্নির্ধারিত মজুরি অনুযায়ী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৮০০ টাকা। এতদিন এ এলাকায় নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৬০০ টাকা আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৭৫ টাকা। অর্থাৎ এই এলাকায় শ্রমিকের মজুরি বাড়ছে ২০০ থেকে ২২৫ টাকা পর্যন্ত।
এছাড়া বিভাগীয় শহর এবং অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫০ টাকা। এতদিন যা ছিল যথাক্রমে ৬০০ এবং ৫৫০ টাকা। সেই হিসাবে মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। একইসঙ্গে জেলা ও উপজেলা এলাকায় নিয়মিত দক্ষ এবং অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ধরা হয়েছে ৭০০ টাকা। এতদিন নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫৫০ টাকা, আর অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ছিল ৫০০ টাকা। এক্ষেত্রেও মজুরি বাড়ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা।
পরিপত্রে বেশ কিছু শর্তের কথাও উল্লেখ করা হয়। এগুলো হচ্ছে– ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা, ২০২৫’ অনুযায়ী শ্রমিক নিয়োজন, মজুরি প্রদান এবং উপযুক্ত কর্মপরিবেশ নিশ্চিতসহ অন্যান্য নির্দেশনা অনুসরণ করতে হবে; শ্রমিকের সংখ্যা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে; সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, সংস্থার অনুকূলে বাজেটে দেওয়া বরাদ্দ থেকে এ ব্যয় নির্বাহ করতে হবে; উল্লিখিত দৈনিক মজুরির হারে মাসিকভিত্তিক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না; এ বিষয়ে কোনো অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে বিল পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে এবং এ ব্যয়ের ক্ষেত্রে যাবতীয় আর্থিক বিধি বিধান যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি অত্যাবশ্যক কাজ সম্পাদনে গত এপ্রিলে ‘দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োজিতকরণ নীতিমালা ২০২৫’ জারি করে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী, শুধু দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে সাময়িকভাবে এ ধরণের শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া যাবে, যারা সাময়িক ধরনের কাজের জন্য নিয়োজিত হবেন। এজন্য কোনো ধরনের পদ সৃজন করা যাবে না এবং এ ধরনের শ্রমিকদের মাসে ২২ দিনের বেশি সময়ের জন্য নিয়োজিত রাখা যাবে না।
‘সাময়িক কাজ’-এর সংজ্ঞায় নীতিমালায় বলা হয়েছে, সরকারের মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর/রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের জরুরি ধরনের অত্যাবশ্যক কাজ বোঝাবে- যা সময়ে সময়ে প্রয়োজন হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান জনবল দ্বারা সম্পাদন করা সম্ভব হয় না। কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত শূন্য পদ/নিয়মিত পদ/জাতীয় বেতন স্কেলের গ্রেডভুক্ত পদের বিপরীতে কাজ করার জন্য কিংবা ‘আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় সেবা গ্রহণ নীতিমালা’র আওতাভুক্ত সেবাসমূহের বিপরীতে দৈনিক ভিত্তিতে সাময়িক শ্রমিক নিয়োগ করা যাবে না।
নীতিমালা অনুযায়ী, জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক ১৮ থেকে ৫৮ বছর বয়সের মানসিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম যে কেউ এ নীতিমালার আওতায় সাময়িক শ্রমিক হিসেবে যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
দেশের রিজার্ভ আরও বাড়ল

দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও বেড়েছে। বর্তমানে রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ হাজার ৬৪২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন বা ২৫ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলার।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ২৫ হাজার ৬৪২ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন ডলার। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ এখন ২০২৭২ দশমিক ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এর আগে, ১৯ মে পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৪৪৪ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ হাজার ০৭০ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
কাফি