আন্তর্জাতিক
ইউয়ানের পতন ঠেকাতে নতুন কৌশল প্রয়োগ করছে চীন

নিজস্ব মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখতে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন নতুন কৌশলে কাজ করছে। সেটা হলো, কেবল ডলার বিক্রি করে ইউয়ান কেনার মতো প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে না গিয়ে তারা এখন ইউয়ান কেনার পাশাপাশি ব্যাংকারদের দিকনির্দেশনাও দিচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এর আগে চীন অবশ্য ভিন্ন পথে হেঁটেছে। ২০১৫ সালে সংকটের সময় পিপলস ব্যাংক অব চায়না এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার বাজারে বিক্রি করে ইউয়ানের দর বাড়িয়েছে।
কিন্তু ২০২৩ সালে চীনের অর্থনীতি হোঁচট খেলে এবং দেশটি থেকে বিদেশি বিনিয়োগ বেরিয়ে যেতে শুরু করলে ভিন্ন অবস্থান নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইউয়ানের দর ধরে রাখতে বাজারকে তারা ইঙ্গিত দেয়, কোন ক্ষেত্রে মুদ্রা বিক্রয় সহ্য করা হবে আর কোন ক্ষেত্রে হবে না।
বাজার–সংশ্লিষ্ট ২৮ জনের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাঁদের অন্তত ২৪ জন জানিয়েছেন, ইউয়ানের ওপর চাপ কমাতে চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বাজার–সংশ্লিষ্ট মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে, তাঁদের দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও মুদ্রা নিয়ন্ত্রক স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জকে এ বিষয়ে রয়টার্স সরাসরি প্রশ্ন করলেও তারা কিছু বলতে রাজি হয়নি। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর প্যান গংসেনগাস বলেছিলেন, মুদ্রার বিনিময় হার অন্যায্য ও ভিত্তিহীনভাবে বাড়তে দেবে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সেই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করবে।
চীনের বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, মুদ্রার মান নির্ধারিত হয় অর্থনীতির মৌলভিত্তির ভিত্তিতে এবং চীন কতটা সফলতার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ রুখতে পারে, তার ওপর।
বাজার–সংশ্লিষ্ট মানুষ ও বিশ্লেষকেরা বলেছেন, চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো মুদ্রার অনিয়ন্ত্রিত পতন রোধ করতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব ব্যবস্থার কারণে সফলতা মিলেছে ঠিকই, কিন্তু দেশটির মুদ্রাবাজারে এর অপ্রত্যাশিত নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অবশ্য চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, এটা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখে মূল্যায়ন করার মতো বিষয়।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই উদ্যোগের কারণে দেশটির বিদেশি মুদ্রার বাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমে গেছে। ফলে চীন নিজের মুদ্রা ইউয়ানকে যে বৈশ্বিক রিজার্ভ মুদ্রায় রূপান্তরিত করতে চায়, সেই উচ্চাভিলাষ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ইউয়ান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মুদ্রা, যে দেশটি আবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক। ইউয়ানের মূল্যের ওপর বিশ্বজুড়ে পণ্যমূল্য নির্ভর করে, সেই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রা হিসেবে ডলারের প্রবাহেও তার প্রভাব আছে। ইউয়ানের মান দেখে বোঝা যায়, চীনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এখন কী অবস্থায় রয়েছে।
২০২৩ সালের জুন থেকে ইউয়ানের মান নিয়ে মুদ্রা কারবারিদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। তখন চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইউয়ানবিষয়ক দৈনিক দিকনির্দেশনা বাজার থেকে ভিন্ন হতে শুরু করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মিডপয়েন্ট হিসেবে পরিচিত, তাত্ত্বিকভাবে এটি ১৪টি ব্যাংকের কার্যক্রম এবং আগের দিনের লেনদেন ও মুদ্রার তৎপরতার ওপর নির্ভর করে। এটা দেখে বোঝা যায়, সেই দিন মুদ্রা কতটা ওঠানামা করতে পারে।
গত আগস্ট থেকে কারবারিরা অভিযোগ করতে শুরু করেন, মিডপয়েন্টের সঙ্গে তাদের হিসাবের ব্যবধান বাড়ছে। অভিযোগ ওঠে, চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানকে বাজারের গতিবিধির প্রভাব থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে।
২০২৩ সালে সামগ্রিকভাবে ডলার ইনডেক্সের মান কমলেও ব্যাংকারদের ওপর এই চাপের কারণে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের ২ দশমিক ৮ শতাংশ দরপতন হয়েছে। এমনকি ৮ সেপ্টেম্বর ইউয়ানের দর ১৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যায়। এর কয়েক দিন পর আটটি বড় ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে বেইজিংয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। তাঁদের বলা হয়, যারা পাঁচ কোটির বেশি ডলার কিনবে, তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে হবে।
এ ছাড়া ব্যাংকারদের স্পট ট্রেডিং বন্ধ করতে এবং ডলার ধরে রাখার ওপর সীমা আরোপ করা হয়। এসব কারণে বাজার–সংশ্লিষ্ট মানুষের মধ্যে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
ভারতের সঙ্গে জাহাজ নির্মাণ চুক্তি বাতিল করলো বাংলাদেশ

ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক টানাপোড়েনের মধ্যেই ভারতের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত জাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২ কোটি ১০ লাখ ডলারের একটি চুক্তি বাতিল করলো বাংলাদেশ। চুক্তিটি ছিল একটি উন্নত সামুদ্রিক টাগবোট নির্মাণের জন্য, যা গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে আগে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
কলকাতা ভিত্তিক গার্ডেন রিচ শিপবিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (জিআরএসই) ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সঙ্গে এই চুক্তি করে। তবে সম্প্রতি জিআরএসই ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বাংলাদেশ সরকার এই অর্ডার বাতিল করেছে।
এই চুক্তি ছিল ভারত সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা খাতে বাংলাদেশকে দেওয়া ৫০ কোটি ডলারের ঋণরেখার অধীনে প্রথম বড় প্রকল্প। ৮০০ টন ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি সমুদ্রগামী টাগবোট নির্মাণের লক্ষ্যে এই চুক্তি হয়েছিল।
এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এলো, যখন গত সপ্তাহে ভারত বাংলাদেশের তৈরি পোশাক আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করে। এছাড়া, চলতি মে মাসেই ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ১১টি স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশি ভোক্তা পণ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করে, যা প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানিকে প্রভাবিত করতে পারে। বাংলাদেশের ৯৩ শতাংশ তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে।
এর আগে এপ্রিল মাসে ভারত বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের জন্য ভারতীয় বিমানবন্দর ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে ট্রানশিপমেন্টের সুবিধাও বাতিল করে। পালটা পদক্ষেপ হিসেবে বাংলাদেশ ১৩ এপ্রিল থেকে ভারতের সুতা রপ্তানি স্থলবন্দর দিয়ে বন্ধ করে দেয়।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ছিল ভারতের বৃহত্তম উপমহাদেশীয় বাণিজ্য অংশীদার। ভারতের রপ্তানি বাংলাদেশে ছিল ১ হাজার ১০৬ কোটি ডলার ও আমদানি ছিল ১৮০ কোটি ডলারের।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না: পাক প্রধানমন্ত্রী

ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না বলে মন্তব্য করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। সেনাপ্রধান জেনারেল অসিম মুনিরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফিল্ড মার্শাল পদে পদোন্নতির অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেছেন।
অনুষ্ঠানে দেশটির রাষ্ট্রপতি বলেন, তারা আজ সশস্ত্র বাহিনীর সেইসব বীরদের সম্মান জানানোর জন্য একত্রিত হয়েছেন, যারা ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দেশের সার্বভৌমত্ব, ভূখণ্ড ও অখণ্ডতা রক্ষা করেছেন।
তিনি বলেন, আপনাদের সবাইকে নিয়ে জাতি গর্ব করে। রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, আমি পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি হিসেবে জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরকে ফিল্ড মার্শাল পদে উন্নীত করছি ও সর্বোচ্চ সামরিক পদ হিসেবে তার হাতে ব্যাটন তুলে দিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ এই অনুষ্ঠানে বলেন, আজকের দিনটি জাতীয় গৌরব ও পাকিস্তানের ইতিহাসে এক স্মরণীয় মুহূর্ত। তিনি ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির, সিজেসসিসি জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর সিদ্দিকী এবং নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নবীদ আশরাফের প্রশংসা করেন।
শাহবাজ বলেন, আমাদের সেনাবাহিনী শুধু সীমান্ত রক্ষা করেনি, তারা যুদ্ধকে শত্রুর ভূখণ্ডে পর্যন্ত নিয়ে গেছে এবং খুব অল্প সময়েই আগ্রাসী পক্ষকে মাটিতে নামিয়ে এনে শিক্ষা দিয়েছে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ ভেবেছিল পাকিস্তান প্রচলিত যুদ্ধের ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে। কিন্তু এই যুদ্ধ সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছে। আমাদের ঐক্য, সাহস ও ঈমান আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে নিয়ে যাবে এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হবে। ভারত এই পরাজয় কখনো ভুলবে না। ইনশাআল্লাহ, একদিন কাশ্মীর পাকিস্তানের অংশ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
পার্লামেন্টে জুতায় বিয়ার ঢেলে পান করে রাজনীতিকে বিদায় জানালেন এমপি

অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য পার্লামেন্টে বিদায়ী ভাষণে ব্যতিক্রমী কাণ্ড ঘটালেন লেবার পার্টির এমপি কাইল ম্যাকগিন। এক পায়ে জুতা পরে বিদায়ী ভাষণ দেন তিনি। দীর্ঘ ৫৬ মিনিটের ভাষণ শেষে অপর পায়ের জুতায় বিয়ার ঢেলে পান করেন।
পার্লামেন্টে বক্তৃতা শেষে ম্যাকগিন বলেন, আমি কীভাবে এ ভাষণ শেষ করব তা নিয়ে অনেক ভেবেছি। শেষে মনে হলো, ‘শ্যুয়ি’ দিয়েই শেষ করাটাই সবচেয়ে ভালো। আমার এলাকার মানুষ এটা উপভোগ করবে বলেই আমার বিশ্বাস। দুই মেয়াদে চমৎকার সময় কেটেছে। সবাইকে ধন্যবাদ। চিয়ার্স! এরপর একটি ক্যান থেকে নিজের জুতায় বিয়ার ঢেলে পান করেন তিনি।
এই দৃশ্যে পার্লামেন্টে হাস্যরসের পরিবেশ তৈরি হয়। অনেকেই করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান, আবার কেউ কেউ এ ঘটনায় বিরক্তি প্রকাশ করেন। পরিষদের সভাপতি আলানা ক্লোহেসি সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে বলেন, সম্মানিত সদস্য, আপনি পরিষদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছেন। আমি ধরে নিচ্ছি আপনার বক্তব্য শেষ।
নিজের বিদায়ী বক্তৃতায় কাইল নিজেকে বলেন, অ্যাক্সিডেন্টাল পলিটিশিয়ান’-অর্থাৎ দুর্ঘটনাবশত রাজনীতিতে আসা একজন মানুষ। এ সময় তিনি সরকারের ওয়েস্টপোর্ট প্রকল্পের সমালোচনা করে বলেন, ‘বন্দরের স্বয়ংক্রিয়করণ একটি প্রহসন ও ঠাট্টা।
২০১৭ সালে ম্যাকগিন প্রথমবারের মতো রাজ্য সংসদের উচ্চকক্ষে নির্বাচিত হন। গত মেয়াদে তিনি ছিলেন সংসদীয় সচিব। বিদায় নেয়ার সপ্তাহেও বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। গত মঙ্গলবার পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে বহুজাতিক জ্বালানি কোম্পানি শেভরনের কর ও নিয়োগ নীতির তীব্র সমালোচনা করেন তিনি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ইন্দোনেশিয়ায় ৫.৭ মাত্রার ভূমিকম্প

ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপের কাছে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। এতে ১০০টিরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় সময় শুক্রবার দিনগত রাত ২টা ৫২ মিনিটে কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল ৬৮ কিলোমিটার গভীরে।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৬ এবং গভীরতা ৮৪ কিলোমিটার। তবে তারা নিশ্চিত করেছে, এই ভূমিকম্প থেকে সুনামির কোনো আশঙ্কা নেই।
জাতীয় দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা-এর মুখপাত্র আবদুল মুহারি জানান, বেনগকুলু শহরে ভূমিকম্পে ১৪০টি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৮টি সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়েছে এবং মেরামতযোগ্য নয়। এছাড়া অন্তত ৬টি সরকারি স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেন্ট্রাল বেনগকুলু জেলায় আরও দুটি বাড়ি সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা এরিক চাতুর নুগ্রোহো (৩৬) বলেন, ভূমিকম্পের সময় আমার বাড়ির জানালা প্রবলভাবে কাঁপছিল, সেটাই আমাদের ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলে। আমরা সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে বের হয়ে যাই। বাইরে এসে দেখি, আশপাশের প্রতিবেশীরাও সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে আছে।
ইন্দোনেশিয়া একটি বিশাল দ্বীপপুঞ্জ রাষ্ট্র। যা প্রশান্ত মহাসাগরের রিং অব ফায়ার-এ অবস্থিত। এই অঞ্চলে টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের কারণে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে সুলাওয়েসিতে ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে ১০০ জনের বেশি নিহত হয় এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।
২০১৮ সালে সুলাওয়েসির পালুতে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প ও পরবর্তী সুনামিতে দুই হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
২০০৪ সালে আচেহ প্রদেশে ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামিতে ইন্দোনেশিয়ায় এক লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
লন্ডনে সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ানের সম্পত্তি জব্দ

ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা ও বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানের মালিকানাধীন লন্ডনের দুটি সম্পত্তি জব্দ করার আদেশ পেয়েছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ)।
অর্থাৎ এখন এগুলো বিক্রি বা স্থানান্তর করা যাবে না। প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। এসব সম্পদ অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয়েছিল।
শেখ হাসিনার শাসনামলে দুর্নীতি ও তহবিল আত্মসাতের অভিযোগের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জব্দ হওয়া দুটি সম্পদের মালিক আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান, যিনি বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠাতা সালমান এফ রহমানের ছেলে। আর সালমান এফ রহমান শেখ হাসিনার বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন।
জব্দকৃত সম্পদের একটি হচ্ছে লন্ডনের অভিজাত এলাকা ১৭ গ্রসভেনর স্কয়ারে অবস্থিত একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, যা ২০১০ সালে ৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়। অপরটি উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেনসে অবস্থিত একটি বাড়ি, যা ২০১১ সালে ১.২ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা হয়।
যুক্তরাজ্যের ইলেক্টোরাল রোলের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা—যিনি যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের মা—কখনও কখনও গ্রেশাম গার্ডেনসের ওই বাড়িতে থাকতেন। তবে এখনো তিনি সেখানে থাকেন কি না, তা নিশ্চিত নয়।
ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) এক বিবৃতিতে বলেছে: “আমরা নিশ্চিত করছি, লন্ডনের ১৭ গ্রসভেনর স্কয়ার এবং গ্রেশাম গার্ডেনসের দুটি সম্পদের ওপর ফ্রিজিং অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এটি একটি চলমান তদন্তের অংশ।”
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান মো. আবদুল মোমেনের উদ্ধৃতি দিয়ে ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, সালমান এফ রহমান ও তার ছেলে আহমেদ রহমান দুজনেই দুর্নীতির তদন্তে সন্দেহভাজন।
আহমেদ রহমানের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন: আমাদের মক্কেল দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছেন যে তিনি কোনও বেআইনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। যুক্তরাজ্যে যদি কোনও তদন্ত হয়, তিনি তাতে পূর্ণ সহযোগিতা করবেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে এবং শত শত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। আমরা আশা করি যুক্তরাজ্যের কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি বিবেচনায় নেবে।
এছাড়া শেখ রেহানা ও সালমান এফ রহমান — এই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় পর্যন্ত — কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলেও প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফিনান্সিয়াল টাইমস।