আন্তর্জাতিক
ইউয়ানের পতন ঠেকাতে নতুন কৌশল প্রয়োগ করছে চীন

নিজস্ব মুদ্রার মান স্থিতিশীল রাখতে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন নতুন কৌশলে কাজ করছে। সেটা হলো, কেবল ডলার বিক্রি করে ইউয়ান কেনার মতো প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপে না গিয়ে তারা এখন ইউয়ান কেনার পাশাপাশি ব্যাংকারদের দিকনির্দেশনাও দিচ্ছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, এর আগে চীন অবশ্য ভিন্ন পথে হেঁটেছে। ২০১৫ সালে সংকটের সময় পিপলস ব্যাংক অব চায়না এক ট্রিলিয়ন বা এক লাখ কোটি ডলার বাজারে বিক্রি করে ইউয়ানের দর বাড়িয়েছে।
কিন্তু ২০২৩ সালে চীনের অর্থনীতি হোঁচট খেলে এবং দেশটি থেকে বিদেশি বিনিয়োগ বেরিয়ে যেতে শুরু করলে ভিন্ন অবস্থান নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইউয়ানের দর ধরে রাখতে বাজারকে তারা ইঙ্গিত দেয়, কোন ক্ষেত্রে মুদ্রা বিক্রয় সহ্য করা হবে আর কোন ক্ষেত্রে হবে না।
বাজার–সংশ্লিষ্ট ২৮ জনের সঙ্গে কথা বলেছে রয়টার্স। তাঁদের অন্তত ২৪ জন জানিয়েছেন, ইউয়ানের ওপর চাপ কমাতে চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো বাজার–সংশ্লিষ্ট মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে, তাঁদের দিকনির্দেশনা দিয়েছে।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও মুদ্রা নিয়ন্ত্রক স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব ফরেন এক্সচেঞ্জকে এ বিষয়ে রয়টার্স সরাসরি প্রশ্ন করলেও তারা কিছু বলতে রাজি হয়নি। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর প্যান গংসেনগাস বলেছিলেন, মুদ্রার বিনিময় হার অন্যায্য ও ভিত্তিহীনভাবে বাড়তে দেবে না নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং সেই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রার বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করবে।
চীনের বিদেশি মুদ্রা নিয়ন্ত্রক সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, মুদ্রার মান নির্ধারিত হয় অর্থনীতির মৌলভিত্তির ভিত্তিতে এবং চীন কতটা সফলতার সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ রুখতে পারে, তার ওপর।
বাজার–সংশ্লিষ্ট মানুষ ও বিশ্লেষকেরা বলেছেন, চীনের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো মুদ্রার অনিয়ন্ত্রিত পতন রোধ করতে বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব ব্যবস্থার কারণে সফলতা মিলেছে ঠিকই, কিন্তু দেশটির মুদ্রাবাজারে এর অপ্রত্যাশিত নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বাজার–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অবশ্য চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাব মানতে নারাজ। তাঁরা বলছেন, এটা রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখে মূল্যায়ন করার মতো বিষয়।
চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই উদ্যোগের কারণে দেশটির বিদেশি মুদ্রার বাজারে লেনদেনের পরিমাণ কমে গেছে। ফলে চীন নিজের মুদ্রা ইউয়ানকে যে বৈশ্বিক রিজার্ভ মুদ্রায় রূপান্তরিত করতে চায়, সেই উচ্চাভিলাষ নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ইউয়ান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির মুদ্রা, যে দেশটি আবার বিশ্বের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক। ইউয়ানের মূল্যের ওপর বিশ্বজুড়ে পণ্যমূল্য নির্ভর করে, সেই সঙ্গে বিদেশি মুদ্রা হিসেবে ডলারের প্রবাহেও তার প্রভাব আছে। ইউয়ানের মান দেখে বোঝা যায়, চীনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এখন কী অবস্থায় রয়েছে।
২০২৩ সালের জুন থেকে ইউয়ানের মান নিয়ে মুদ্রা কারবারিদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়। তখন চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইউয়ানবিষয়ক দৈনিক দিকনির্দেশনা বাজার থেকে ভিন্ন হতে শুরু করে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মিডপয়েন্ট হিসেবে পরিচিত, তাত্ত্বিকভাবে এটি ১৪টি ব্যাংকের কার্যক্রম এবং আগের দিনের লেনদেন ও মুদ্রার তৎপরতার ওপর নির্ভর করে। এটা দেখে বোঝা যায়, সেই দিন মুদ্রা কতটা ওঠানামা করতে পারে।
গত আগস্ট থেকে কারবারিরা অভিযোগ করতে শুরু করেন, মিডপয়েন্টের সঙ্গে তাদের হিসাবের ব্যবধান বাড়ছে। অভিযোগ ওঠে, চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইউয়ানকে বাজারের গতিবিধির প্রভাব থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে।
২০২৩ সালে সামগ্রিকভাবে ডলার ইনডেক্সের মান কমলেও ব্যাংকারদের ওপর এই চাপের কারণে ডলারের বিপরীতে ইউয়ানের ২ দশমিক ৮ শতাংশ দরপতন হয়েছে। এমনকি ৮ সেপ্টেম্বর ইউয়ানের দর ১৬ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে যায়। এর কয়েক দিন পর আটটি বড় ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে বেইজিংয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। তাঁদের বলা হয়, যারা পাঁচ কোটির বেশি ডলার কিনবে, তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমতি নিতে হবে।
এ ছাড়া ব্যাংকারদের স্পট ট্রেডিং বন্ধ করতে এবং ডলার ধরে রাখার ওপর সীমা আরোপ করা হয়। এসব কারণে বাজার–সংশ্লিষ্ট মানুষের মধ্যে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে সোনার দামে নতুন ইতিহাস

বিশ্ববাজারে ইতিহাস গড়েছে সোনার দাম। প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স সোনার দাম ৩ হাজার ৫০৫ ডলার ছাড়িয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) স্পট মার্কেটে সোনার দাম প্রতি আউন্সে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪৯৩ দশমিক ৯৯ ডলারে, যা দিনের শুরুতে পৌঁছেছিল রেকর্ড ৩ হাজার ৫০৮ দশমিক ৫০ ডলারে।
একই সময়ে ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য মার্কিন সোনার ফিউচার ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬৪ দশমিক ৪০ ডলারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা এবং ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা বৃদ্ধি মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।
ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রোডা বলেন, দুর্বল অর্থনৈতিক পরিবেশ এবং মার্কিন সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার প্রভাবেই সোনার দাম বাড়ছে। এর সঙ্গে যুক্ত একটি বড় কারণ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফেডের স্বাধীনতার ওপর সমালোচনা, যা ডলারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমিয়ে দিচ্ছে।
উল্লেখ্য, সুদের হার না কমানোর কারণে কয়েক মাস ধরেই ফেডারেল রিজার্ভ এবং এর চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের সমালোচনা করে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়া সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়াশিংটন সদর দফতরের ব্যয়বহুল সংস্কারের জন্যও পাওয়েলের সমালোচনা করেছেন।
সোমবার (৩১ আগস্ট) মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট জানিয়েছেন, ফেডারেল রিজার্ভ স্বাধীন এবং স্বাধীন থাকা উচিত। তবে তিনি আরও যোগ করেছেন, ফেড ‘অনেক ভুল করেছে’ এবং বন্ধকী জালিয়াতির অভিযোগে ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্ত করার ট্রাম্পের অধিকারকে সমর্থন করেছেন।
তথ্য বলছে, মার্কিন ব্যক্তিগত খরচের মূল্যসূচক মাসে ০.২ শতাংশ ও বছরে ২.৬ শতাংশ বেড়েছে, যা প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সান ফ্রান্সিসকো ফেড ব্যাংকের সভাপতি মেরি ডেলিও শ্রমবাজারের ঝুঁকি বিবেচনা করে সুদের হার কমানোর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন।
সিএমই ফেডওয়াচ টুল অনুযায়ী, মাসের শেষে ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদের হার কমাবে বলে ৮৭ শতাংশ সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কম সুদের পরিবেশে স্বর্ণ সাধারণত ভালো ফলাফল দেখায়।
এবার বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি মার্কিন অ-খামার বেতন-বহির্ভূত তথ্যের দিকে, যা আগামী শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত হবে এবং ফেডের সম্ভাব্য সুদের হারের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে, বাণিজ্যিক খবরে জানা গেছে, মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার বলেছেন,আদালতের রায় সত্ত্বেও ট্রাম্প প্রশাসন বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, প্লাটিনামের দাম শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৯৫ ডলার ও প্যালাডিয়ামের দাম শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ১১৮ দশমিক ১২ ডলার হয়েছে।
আন্তর্জাতিক
সুদানে ভূমিধসে নিশ্চিহ্ন একটি গ্রাম, মৃত্যু অন্তত ১ হাজার

ভয়াবহ ভূমিধসে সুদানের একটি গ্রামে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মাররা পাহাড়ি অঞ্চলের ওই গ্রামটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে একজন বাদে ওই গ্রামের সবাই মারা গেছেন।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সুদান লিবারেশন মুভমেন্ট বা সেনাবাহিনী।
ভারী বৃষ্টিপাতের পর গত ৩১ আগস্ট ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। সেখানকার একটি গ্রুপের প্রধান এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ গ্রুপটি দারফুরের ওই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে। তারা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে নারী, পুরুষ ও শিশুদের মরদেহগুলো উদ্ধারের জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে।
গ্রামটি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয় গেছে বলে জানিয়েছে তারা।
সুদানের সেনাবাহিনী ও প্যারমিলিটারি র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের দ্বন্দ্বের কারণে অনেক মানুষ দারফুরের ওই পাহাড়ি অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। অঞ্চলটি এতটাই দুর্গম যে সেখানে পর্যাপ্ত খাবার ও ওষুধ পাওয়াই দুস্কর।
দুই বাহিনীর দ্বন্দ্বের কারণে দুই বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের কারণে সুদানের অর্ধেকের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছেন। জীবন বাঁচাতে সেখানে গিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণ হারালেন তারা।
আন্তর্জাতিক
চীনে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন

চীনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিএনপির বৃহত্তর চীন শাখার উদ্যোগে গুয়াংজু ও শেনজেন শহরে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি ছিল, দেশের গৌরবময় ইতিহাস, গণতন্ত্রের সংগ্রাম এবং দলের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা ও সংহতি প্রকাশের মঞ্চ।
চীন বিএনপির নেতা আসিফ হক রুপু’র সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন চীন বিএনপির নেতা সাখাওয়াত হোসেন কানন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলের চীন শাখার নেতা শেখ মাহবুবুর রশীদ, ওয়ালী উল্লাহ, এস এম আল-আমিন, হাসমত আলী মৃধা জেমস, সালাউদ্দিন রিক্তা, মনোয়ার বায়েজীদ, মো. রোমান, জসিম উদ্দিন, খোরশেদ আলম অপু, মো. রাসেলসহ আরো অনেকে।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ তাদের বক্তব্যে দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় বিএনপির অবদান স্মরণ করেন এবং চীনে অবস্থানরত বাংলাদেশীদের মধ্যে দলীয় সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনের মাধ্যমে চীনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা দেশের প্রতি তাদের অঙ্গীকার ও ভালবাসা পুনর্ব্যক্ত করেন। দেশটিতে বসবাসরত শতাধিকেরও বেশি বাংলাদেশি এবং বিএনপি’র ও এর অংঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মী এই সভায় উপস্থিত ছিলেন।
আন্তর্জাতিক
ভূমিকম্পে ভয়াবহ বিপর্যয়ে আফগানিস্তান, নিহত বেড়ে ৬২২

আফগানিস্তানে আঘাত হানা ভূমিকম্পে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিহতের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত এ দুর্যোগে ৬২২ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এ ছাড়া হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন ধ্বংসাত্মক এ ভূকম্পনে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) আফগানিস্তানের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম আরটিএ-এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
এর আগে, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) গভীর রাতে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে ভূমিকম্পটি। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৬।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের মাত্র ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর থেকে অন্তত আরও তিনবার ‘আফটার শক’ অনুভূত হয়েছে। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলও, যা কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরের পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়।
আফগানিস্তানের দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কুনার প্রদেশের নুর গাল, সাওকি, ওয়াটপুর, মানোগি এবং চাপা দারা জেলায় হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। হতাহতদের সংখ্যা চূড়ান্ত নয়, কারণ কর্মকর্তারা এখনও অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
তিনি জানান, ভূমিধসের কারণে সাওকি জেলার দেওয়া গুল এবং নূর গুল জেলার মাজার দারা যাওয়ার রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে উদ্ধারকারী দলগুলোর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে অসুবিধা হচ্ছে।
স্থানীয়রা ইতোমধ্যে এটিকে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পগুলোর মধ্যে একটি বলে বর্ণনা করেছেন। আফগানিস্তানের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদও ভূমিকম্পে ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সামাজিক মাধ্যমে এক পোস্টে লিখেছেন, দুঃখের বিষয়, আজ রাতের ভূমিকম্পে আমাদের পূর্বাঞ্চলীয় কিছু প্রদেশে প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মুজাহিদ বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তা এবং বাসিন্দারা উদ্ধার প্রচেষ্টায় নিয়োজিত আছেন। তিনি জানিয়েছেন, জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মূলত, ভৌগলিক কারণেই মধ্য-দক্ষিণ এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান বেশ ভূমিকম্পপ্রবণ। দেশটি এমন বেশ কয়েকটি ফল্ট লাইনের ওপরে অবস্থিত, যেখানে ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। সেই রেকর্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত তিন দশকে কেবল ভূমিকম্পের কারণে আফগানিস্তানে মৃত্যু হয়েছে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষের।
১৯৯১ সালে মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ার হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে হওয়া এক ভূমিকম্পে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও সোভিয়েত ইউনিয়নে ৮৪৮ জন মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
এরপর ১৯৯৭ সালে আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী ইরানের প্রদেশ খোরাসানের কায়েন শহরে ৭ দশমিক ২ মাত্রার এক ভূমিকম্পে দুই দেশে প্রাণ হারিয়েছিলেন দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ; সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল ১০ হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি।
পরের বছরই ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আফগানিস্তানের প্রায় বিচ্ছিন্ন ও তাজিকিস্তানের সীমান্তবর্তী উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ তাখারে ভয়াবহ আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে, যার শিকার হয়ে আফগানিস্তান ও তাজিকিস্তানে প্রাণ হারান প্রায় ৪ হাজার মানুষ। এর মধ্যে আফগানিস্তানে নিহতের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৩০০।
আন্তর্জাতিক
আফগানিস্তানে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ২০

আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নানগারহার ও কুনার প্রদেশে ভূমিকম্পের কারণে আহত ১১৫ জনেরও বেশি মানুষকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএসের তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় রোববার (৩১ আগস্ট) রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে। এরপর থেকে অন্তত আরও তিনটি কম্পন হয়েছে। সেগুলোর মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ২-এর মধ্যে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে বেশ কয়েক সেকেন্ড কম্পন টের পাওয়া যায়। প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
কাফি