কৃষক এবং প্রান্তিক উদ্যোক্তাদের ফুল চাষে উৎসাহিত করতে খুলনা মুক্তি সেবা সংস্থা (কেএমএসএস)-এর সাথে কাজ করতে যাচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। যশোর কেন্দ্রিক এই উদ্যোগটি দেশের কৃষি বৈচিত্র্য ও টেকসইতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এছাড়াও, ফুলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে এবং ৮০০ জন প্রান্তিক চাষীর জন্য নতুন সুযোগের সন্ধানে সহায়তা করবে সংস্থা দুটি।
কৃষি ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ৮০০ ফুল চাষীদের পরিবেশ সচেতন উৎপাদন কৌশল সম্পর্কে জানাতে সাহায্য করবে এই প্রকল্পটি। এর ফলে চাষীরা ফুল চাষের শেড নির্মাণ, ফুল সংগ্রহ পরবর্তী ব্যবস্থাপনা এবং ফরোয়ার্ড মার্কেট লিঙ্কেজের মাধ্যমে আয় বৃদ্ধিতে বিশেষ প্রশিক্ষণ পাবেন। এই প্রকল্পের আওতায় অর্থনৈতিক সাক্ষরতা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট চাষীদের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করাও এই উদ্যোগের একটি লক্ষ্য। দেশব্যাপী কৃষির বৈচিত্র্যময়তার বিকাশে ফুল চাষের ভূমিকা, সুগঠিত বাস্তুতন্ত্র গঠন এবং জলবায়ু-পরিবর্তন সম্পর্কিত প্রভাব সম্পর্কে সকলকে সচেতন করতেই এই উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার নাসের এজাজ বিজয় বলেন, আধুনিকায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি খাত দিনদিন বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা গোলাপ, জুঁই, অর্কিড, টিউলিপসহ আরও উচ্চ মূল্যের ফুলের চাষকে ত্বরান্বিত করতে পারবো বলে আশা করা যায়। কৃষির ঐতিহ্যবাহী কেন্দ্রস্থল যশোরে বাণিজ্যিক চাষাবাদের অনুশীলন এবং শস্যের বৈচিত্র্যময়তাকে-উৎসাহিত করার মাধ্যমে কৃষক এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহযোগীতায় পাশে রয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। আমরা কৃষি খাতের পরিবর্তনমূলক যাত্রায় অংশ নিতে এবং পরবর্তী প্রজন্মকে নেতৃত্বের সুযোগ করে দিতে বদ্ধপরিকর। জলবায়ু সহিষ্ণু- এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল কৃষিকাজ পরিচালনায় কেএমএসএস-এর সাথে অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত।
কেএমএসএস’র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আফরোজা আক্তার মঞ্জু বলেন, টেকসই ফুল চাষের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও কৃষকদের ক্ষমতায়নের প্রচেষ্টায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডকে পাশে পেয়ে আমরা রোমাঞ্চিত। কেবলমাত্র ফুলচাষ নয় বরং সকলের মাঝে পরিবেশ সচেতনতা গড়ে তোলাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য। স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সহায়তায় প্রতিটি কৃষক লাভজনক ফুল চাষ করে একটি সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হবে বলে আমি আশাবাদী। আমাদের এই উদ্যোগকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করার জন্য আমি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
দেশের দীর্ঘমেয়াদী অংশীদার হিসাবে, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি এবং স্থিতিস্থাপকতার অনুপ্রেরণামূলক গল্পের সাথে যুক্ত হয়েছে। ১১৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে, ব্যাংক এই দেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাণিজ্য ও উন্নয়নের জন্য, বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তি প্রচারের জন্য পরিষেবা প্রসারিত করা এবং স্টেকহোল্ডারদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করার জন্য নিবেদিত রয়েছে। বিগত বছরগুলোয় সামাজিক কল্যাণে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সম্পৃক্ততা ও টেকসই উদ্যোগগুলো অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের দিকে ফোকাস করেছে, বিশেষ করে; স্বাস্থ্য, শিক্ষা, আর্থিক শিক্ষা, কৃষি উদ্ভাবনে সমর্থন, খেলাধুলা, শিল্পকলা, সাংস্কৃতিক প্রচার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই ইত্যাদি।
খুলনা মুক্তি সেবা সংস্থার (কেএমএসএস) মূল লক্ষ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের জন্য সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করা। প্রায় দুই দশক ধরে, কেএমএসএস সারা বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত এই জনগোষ্ঠীর চাহিদা মেটাতে কাজ করে যাচ্ছে। কেএমএসএস বাস্তব অগ্রগতি, সংগঠন শক্তিশালীকরণ, ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ার উন্নতি এবং একটি উন্নত সমাজ গঠনে বিশ্বাস করে।