প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আনা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিমার আওতায়

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আনা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিমার আওতায়
দেশে প্রথমবারের মতো প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনা হচ্ছে। বিমা পলিসিটির নাম ‘বঙ্গবন্ধু প্রতিবন্ধী সুরক্ষা বিমা’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (১ মার্চ) জাতীয় বিমা দিবস-২০২২–এর অনুষ্ঠানে এ পলিসির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।

এ স্বাস্থ্যবিমা সেবা নিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কোনো মাশুল (ফি) দিতে হবে না। তবে একটা অংশ বহন করবেন অভিভাবকেরা। সাধারণ বীমা করপোরেশনকে বার্ষিক প্রিমিয়াম দিতে হবে ৬০০ টাকা। যেসব অভিভাবকের মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকা বা এর চেয়ে কম, তাঁদের বহন করতে হবে বার্ষিক প্রিমিয়ামের ২৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫০ টাকা। বাকি ৭৫ শতাংশ বা ৪৫০ টাকা বহন করবে এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্ট। আর যেসব অভিভাবকের মাসিক আয় ২৫ হাজার টাকার বেশি, তাঁদের পুরো বার্ষিক প্রিমিয়ামই বহন করতে হবে। পলিসির আওতায় সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হবে।

প্রাথমিকভাবে অটিজম, ডাউন সিনড্রোম, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ও সেরিব্রাল পালসি—এ চার ধরনের প্রতিবন্ধীকে স্বল্প খরচে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। আজ চার শ্রেণিতে চারজনকে বিমার আওতায় এনে কার্যক্রমটি চালু করা হবে। উদ্যোগটি বাস্তবায়নে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন নিউরোডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট (এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্ট) এবং সাধারণ বীমা করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। শারীরিক, মানসিক, বুদ্ধিগত ও বিকাশগত সমস্যাকে নিউরোডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধিতা বলা হয়।

অটিজম হচ্ছে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের এমন একটি জটিল প্রতিবন্ধকতা, যা শিশুর জন্মের দেড় থেকে তিন বছরের মধ্যে প্রকাশ পায়। এ ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শারীরিক গঠনে কোনো সমস্যা বা ত্রুটি থাকে না। তাদের চেহারা ও অবয়ব স্বাভাবিক মানুষের মতোই হয়ে থাকে। তবে তারা পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে যথাযথভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে চলতে পারে না। তবে অনেক ক্ষেত্রে ছবি আঁকা, গান করা, কম্পিউটার পরিচালনা বা গাণিতিক সমাধানসহ অনেক জটিল বিষয়ে এ ধরনের ব্যক্তিরা বিশেষ পারদর্শী হয়ে থাকে।

ডাউন সিনড্রোম হচ্ছে কোনো ব্যক্তির মধ্যে বংশানুগতিক সমস্যা থাকা, যাদের মধ্যে মৃদু থেকে গুরুতর মাত্রার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা, দুর্বল পেশিক্ষমতা ও খর্বাকৃতি ইত্যাদি বৈশিষ্ট্য আছে।

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা হচ্ছে বয়সের উপযোগী ও বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা অর্থাৎ যোগাযোগ, নিজের যত্ন নেওয়া, সামাজিক দক্ষতা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা, লেখাপড়া, নিজেকে পরিচালনা করতে না পারা—এ ধরনের এক বা একাধিক লক্ষণ থাকা।

আর সেরিব্রাল পালসি হচ্ছে প্রসবের সময়ে দীর্ঘসূত্রতার ফলে মস্তিষ্কে আঘাতজনিত সমস্যায় শিশুর চলাফেরা ও দেহভঙ্গিতে অস্বাভাবিকতা দেখা দেওয়া।

উদ্যোগটি পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকা শহর, ঢাকা জেলা ও সিলেট জেলার প্রতিবন্ধীদের জন্য চালু করা হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এনডিডি সুরক্ষা ট্রাস্ট এবং সাধারণ বীমা করপোরেশনের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করা হলেও পরে সব বেসরকারি নন-লাইফ বিমা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী দেশে বর্তমানে মোট প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ২৪ লাখ ৬১ হাজার ৮৫৫। এর মধ্যে এনডিডি গ্রুপের প্রতিবন্ধী ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ অর্থাৎ ৩ লাখ ৪৯ হাজার ২৫৫ জন।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ব্র্যাক ব্যাংক ও মেটলাইফের মধ্যে ব্যাংকাসুরেন্স চুক্তি
৩৪ ব্যাংক ‘ব্যাংকাস্যুরেন্স’ ব্যবসায় অযোগ্য
কমেছে জীবন বিমার বিনিয়োগ, বেড়েছে সাধারণ বিমার
বিআইএ’র বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
ফের সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারপারসন শেখ কবির
মেটলাইফের বিমা সুবিধা পাবেন ক্যাল বাংলাদেশের কর্মীরা
বেস্ট সিইও'র স্বীকৃতি পেলেন ন্যাশনাল লাইফের কাজিম উদ্দিন
বিমা খাতের বড় সমস্যা কর্পোরেট গভর্নেন্সের অভাব
দুর্বল বিমা কোম্পানিকে মূলধারায় নিয়ে আসার চেষ্টা করতে হবে
যাত্রা শুরু করলো শান্তা লাইফ ইন্স্যুরেন্স