কক্সবাজারে অপরাধী চক্রের মূল হোতা আশিক: র‌্যাব

কক্সবাজারে অপরাধী চক্রের মূল হোতা আশিক: র‌্যাব
র‍্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেছেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারে গ্রেপ্তারকৃত আশিকের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জনের একটি অপরাধী চক্র আছে। এই চক্র নারী ধর্ষণ, ছিনতাই, চুরিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত। সবশেষ স্বামী ও সন্তানকে জিম্মি করে এক নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পর আত্মগোপনে চলে যায় আশিক।

সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে কারওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

খন্দকার আল মঈন বলেন, র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৮ ও ১৫ এর অভিযানে রোববার (২৬ ডিসেম্বর) মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণের সাথে জড়িত মামলার প্রধান আসামি আশিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। আশিক কক্সবাজারে পর্যটক এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের মূল হোতা। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ৩০-৩৫ জন। সে ২০১২ বছর থেকে কক্সবাজার পর্যটক এলাকায় বিভিন্ন অপরাধের সাথে যুক্ত রয়েছে। ২০১৪ সালে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়। সে ও তার সিন্ডিকেট পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে চুরি, ছিনতাই, অপহরণ, জিম্মি, চাঁদাবাজি, জবরদখল, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধ কার্যক্রমের সাথে জড়িত। সে পর্যটন এলাকায় বিভিন্ন হোটেলে ম্যানেজারের সাথে যোগসাজশে ট্যুরিস্টদের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করত। আশিক ও তার সহযোগীরা ওই নারীর পরিবারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। তার পরিবার চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে লাবণী বীচ এলাকার রাস্তায় তাকে সিএনজিতে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। আশিক জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে আটক করে রেখে ওই নারীর স্বামীর কাছে মুক্তিপণ দাবি করে। এরপর ওই নারীকে হোটেলে আটকে রেখে হোটেল থেকে বের হয়ে যায়। বিষয়টি ব্যাপকভাবে স্থানীয় পর্যায়েও বিভিন্ন মিডিয়াতে জানাজানি হলে আশিক আত্মগোপনে চলে যায়। বেশভূষা পরিবর্তন করে ঘটনার দুই দিন পর কক্সবাজার থেকে একটি এসি বাস যোগে ঢাকায় আসে। পরবর্তীতে ঢাকা থেকে পটুয়াখালী যাওয়ার পথে সে মাদারীপুরের মোস্তাফাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেপ্তার হয়।

তিনি বলেন, আশিক পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন রকম জবরদখল ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িত রয়েছে। সে পর্যটন এলাকার সুগন্ধায় ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট জোর করে কম টাকা দিয়ে ভাড়া নেয়। ক্ষেত্রবিশেষে দ্বিগুণ ও তিনগুণ ভাড়া সংগ্রহ করে মূল মালিকদের বঞ্চিত করে থাকে। বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি অবৈধ দখল করে ও চাঁদা দাবি করে থাকে। তার চক্রের সদস্যরা রাত্রিকালীন সময়ে সী-বীচে আগত ট্যুরিস্টদের হেনস্তা, মোবাইল ছিনতাই, ফাঁদে ফেলা ও নিয়মিত ইভটিজিং করতো। পাশাপাশি হোটেল-মোটেল জোনে বিভিন্ন ট্যুরিস্টদের সুযোগ বুঝে ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করত। তার নামে ইতোমধ্যে কক্সবাজার সদর থানায় অস্ত্র, মাদক, নারী নির্যাতন ও চাঁদাবাজিসহ ১২টি মামলা রয়েছে। এর আগে সে ৫ বার গ্রেপ্তার হয় এবং দীর্ঘদিন কারাভোগ করেছে।

তিনি বলেন, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে কক্সবাজারে গণধর্ষণের শিকার হন এক নারী। পরে তার স্বামী বাদি হয়ে ৪ জন আসামি ও আরও ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। ভুক্তভোগী ওই নারী স্বামী-সন্তানসহ কক্সবাজারের একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন। তাদের সঙ্গে ৮ মাস বয়সের একটি শিশু সন্তান রয়েছে। শিশুটির জন্মগতভাবে হার্টে ছিদ্র থাকায় তার চিকিৎসায় ১০ লাখ টাকা প্রয়োজন। শিশুটির চিকিৎসার অর্থ সংকুলানের আশায় স্বামীসহ কক্সবাজারে অবস্থান করছিল পরিবারটি। তারা বিত্তবান পর্যটকদের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য চাইত। এ সময় তিনি অপহরণ ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। র‌্যাব ওই নারীর স্বামীকে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ও একপর্যায়ে নারীকে উদ্ধার হয়।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু