শেয়ারবাজার খোলা রাখার দাবি ডিএসইর পরিচালকের

শেয়ারবাজার খোলা রাখার দাবি ডিএসইর পরিচালকের
করোনার কারণে লকডাউনের মধ্যেও বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে লেনদেন চলছে। কিন্তু বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশে। এ অবস্থায় আগামী ২৬ এপ্রিল রোববার থেকে শেয়ারবাজার খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক মো. রকিবুর রহমান।

একটি টেলিভিশনে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি ছুটি। এরপর হয়তো ছুটি বাড়ানো হতে পারে। কিন্তু শেয়ারবাজার বন্ধ রাখার যুক্তি নেই। কারণ বাজার বন্ধ রাখলে ক্ষুদ্র ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, উদ্যোক্তা এবং স্টক এক্সচেঞ্জ সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর পুঁজিবাজার খোলা রাখতে সবগুলো প্রতিষ্ঠান মিলে হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন লোকই যথেষ্ট। এতে সামাজিক দূরত্বও ব্যাহত হবে না।

তার মতে, আগামীতে দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে পুঁজিবাজারের বিকল্প নেই। এজন্যই বাজার খোলা রাখা জরুরি।

ওই দাবির সঙ্গে একমত পোষন করেছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। এ ব্যাপারে তিনি রোববার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, লেনদেনের সময় কমিয়ে এনে হলেও শেয়ারবাজার চালু করা উচিত। কারণ অনেক বিনিয়োগকারী রয়েছে, যাদের নগদ টাকার সংকট। বাজার চালু হলে এরা শেয়ার বিক্রি করে নগদ টাকা নিতে পারে। এতে তাদের সমস্যা কাটবে। দ্বিতীয়ত বিশ্বব্যাপী পুঁজিবাজার চালু। ফলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাংলাদেশেও চালু রাখা উচিত। তবে এর আগে নিয়ন্ত্রকসংস্থাকে সতর্কমূলক কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে।

এদিকে বাজার খোলা রাখার পক্ষে বেশ কিছু যুক্তি তুলে ধরেছেন, মো. রকিবুর রহমান। তিনি বলেন, সারা বিশ্বই পুঁজিবাজার খোলা রেখে করোনা ভাইরাসের দুর্যোগ মোকাবেলা করছে। আর আমরা বিশ্বের বাইরে নই।

রকিবুর রহমান বলেন, বাজার বন্ধ রাখার একমাত্র কারণ সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা। কিন্তু এখন অনলাইনের যুগ। সবকিছু চলছে অনলাইনে। ফলে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে মাত্র ২জন লোক অফিস করলে যথেষ্ট। আর একটি প্রতিষ্ঠানে ২জন লোক অফিস করলে সেটি কোয়ারেন্টাইনের মতোই। এখানে ভয়ের কিছুই নেই।

তিনি বলেন, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত নিউইয়র্ক শহর। কিন্তু নিউইর্য়ক স্টক এক্সচেঞ্জ খোলা রয়েছে। শেয়ারবাজার খোলা রয়েছে, ইতালি, স্পেন এবং ফ্রান্সসহ ইউরোপের সবগুলো দেশে। পাশের দেশ ভারতেও শেয়ারবাজার চলছে, এমনকি সূচকও বাড়ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার খুলে দেয়া হলেও এখন বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই। কারণ ইতিমধ্যে তালিকাভুক্ত সবগুলো কোম্পানির শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করে দেয়া আছে। এতে কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম, ওই সীমার নিচে নামতে পারবে না।

রকিবুর রহমান আরও বলেন, বাজার চালু হলে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির করে নগদ টাকা নেয়ার একটি সুযোগ পাবে। বাজারে লেনদেন হলে সরকার ট্যাক্স পাবে। কিন্তু বন্ধ রাখলে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মো. রকিবুর রহমান আরও বলেন, বিশ্বের অর্থনীতি নিয়ে সম্প্রতি পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সেখানে ২০১৯ ও ২০২০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতির শ্লথগতির কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ২০২১ সালে চীন ভারত ও বাংলাদেশ এই তিন দেশের অর্থনীতির বড় ধরনের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। আর ২০২১ সাল বেশি দূরে নয়। সে কারণে আমাদের এখনই পরিকল্পনা করে কাজ করা উচিত।

তার মতে, করোনা উত্তর বাংলাদেশে যে কোনো মূল্যে কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বেসরকারিখাতে বেশি ঋণ দেয়া সম্ভব হবে না। ফলে বেসরকারিখাত বিকাশে পুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। আর এখানেই প্রশ্ন আসে, বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা।

তিনি বলেন, বলতে দ্বিধা নেই, গত ১০ বছরে বাজারে সুশাসন ছিল না। এতে খারাপ কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। প্লেসমেন্ট বিক্রি করে অনেকে টাকা নিয়েছে। স্টক ডিমিউচুয়ালাইজেশন (মালিকানা থেকে ব্যবস্থাপনা আলাদাকরণ) আইন অনেক ক্ষেত্রে ব্যাহত হয়েছে। এসব কিছু ঠিক করে বাজারের প্রতি সব ধরনের বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে হবে। তাহলেই বাজার টেকসই হবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত