১৪ বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে ডিএসই’র পিই রেশিও

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সার্বিক মূল্য আয় অনুপাত (পিই) গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে গেছে। যদিও গত ১৪ বছরে ডিএসইতে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা বেড়েছে তিনগুণের বেশি।

ডিএসই’র তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ মার্চ ২০২০ ডিএসইতে পিই রেশিও নেমে দাঁড়িয়েছে ১০.৫৮ পয়েন্টে। এর আগে ২০০৬ সালে জুন মাসে ডিএসইর পিই রেশিও ছিল সর্বনিম্ন। ২০০৬ সালের জুন মাসে পিই রেশিও ছিল ১০.৬৬ পয়েন্ট। এর প্রায় ৪ বছর পর ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পিই রেকর্ড সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে যায়। ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পিই উঠে যায় ৩০.৫০ তে। তবে সেই বছরই পুঁজিবাজারে বড় ধস দেখা যায়। বড় ধসের কারণে একই বছর ডিএসইর পিই অর্ধেকের নিচে নেমে যায়।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ডিএসইর পিই ৩০.৫০ তে উঠলেও অব্যাহত পতনে ২২ মাসের মাথায় ২০১১ সালের ডিসেম্বরে পিই এসে দাঁড়ায় ১৩.৬৮ তে। এরপর ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ১২.০৭, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে ১৫.০৭, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে ১৭.৭৭, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ১৪.২৩, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ১৪.২৯, ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ১৭.২৮, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ১৫.০৯ এবং ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পিই ছিল ১১.৫৩। আর সর্বশেষ ২০২০ সালের মার্চ মাসে ডিএসইতে পিই রেশিও নেমে দাঁড়ায় ১০.৫৮ তে। যা গত ১৪ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে খাতভিত্তিক কোম্পানির পিই ছিল যথাক্রমে ব্যাংক ২৫.২৪, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪৭.২৭, প্রকৌশল ৫০.১০, মিউচুয়্যাল ফান্ড ১৭.৫৩, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ২৭.৩, বিদ্যৎ ও জ্বালানি ২১.৫৭, পাট খাত ৫৫.৬৬, টেক্সটাইল ৫২.৪৪, ওষুধ ও রসায়ন ৩৪.১২, পেপার ও প্রিন্টিং ১২৬.৯৩, সেবা ও আবাসন ৪৩.৯৩, সিমেন্ট ৩৩.৪৪, আইটি ৬৪.৯১, ট্যানারি ২০.৬৬, সিরামিক ১০৬.৮৬, ইন্স্যুরেন্স ৬৪.৬৪, টেলিকমিউনিকেশন ২০.৩৫, ভ্রমন ও অবকাশ ৬৫.৪৫ ও বিবিধ খাত ১৯.৫৪।

২০১২ সালে জুন মাসে খাত ভিত্তিক কোম্পানিতে পিই কমে দাঁড়িয়েছে ব্যাংক ৮.৭১, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ১৭.০৯, প্রকৌশল ১৯.৮৩, মিউচুয়্যাল ফান্ড ৫.৩৫, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ১৬.৫১, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ১২.৮৭, পাট ১৯.৮২, টেক্সটাইল ১৫.১৮, ওষুধ ও রসায়ন ২০.৮১, পেপার ও প্রিন্টিং ২৬.৬৭, সেবা ও আবাসন ২২.৩০, সিমেন্ট ২৫, আইটি ২৯.৭৬, ট্যানারি ১২.৩৮, সিরামিক ২৪.৯৩, ইন্স্যুরেন্স ২৪.৪৪, টেলিকমিউনিকেশন ১৫.০৭, ভ্রমন ও অবকাশ ১৫.৪২ ও বিবিধ ৬.৫০। এছাড়া ২০১১ সালে ডিসেম্বরে ডিএসই’র মার্কেট পিই ছিল ১৩.৬৮।

আর ২০২০ সালে মার্চ মাসে খাত ভিত্তিক কোম্পানিতে পিই কমে দাঁড়িয়েছে ব্যাংক খাত ৬.৫২, টেলিকমিউনিকেশন ৯.৫২, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ৯.৬০, ইন্স্যুরেন্স ১০.৬০, সেবা ও আবাসন ১০.৬৭, আইটি ১৩.৯৬, টেক্সটাইল ১৪.২২, প্রকৌশল ১৪.৪০, ওষুধ ও রসায়ন ১৫.১০, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ১৭.০৪, ট্যানারি ১৮.৭৫, বিবিধ ২১.৪৪, সিরামিক ২২.৪৩, সিমেন্ট ২৯.৮০, ভ্রমন ও অবকাশ ৩১.৭১, পাট ৩২.৯১, পেপার ও প্রিন্টিং ৪১.১৪, ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ৪৪.১৩ ।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই কারণে শেয়ারের পিই রেশিও কমতে পারে। একটি হচ্ছে কোম্পানির আয় কমলে এবং অন্যটি হচ্ছে শেয়ার দর কমলে। আমাদের দেশের পুঁজিবাজারের পিই কমার পেছনে কোম্পানির আয় কমাই বেশি কাজ করে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে গত এক বছরে শেয়ারের পিই কমেছে অব্যাহত দর কমার কারণে।

গত বছর মার্চ মাস থেকে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত ১২ মাসে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১৫২৫ পয়েন্ট। এতে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১০১৫ বিলিয়ন টাকা। গত এক বছরে ৯২টি কোম্পানির শেয়ার দর অভিহিত মূল্যের নিচে নেমে গেছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত