গ্রিসে তিন মাসে ১৮ বাংলাদেশির মৃত্যু

গ্রিসে তিন মাসে ১৮ বাংলাদেশির মৃত্যু
দিন দিন বেড়েই চলছে প্রবাসে বাংলাদেশিদের মৃত্যু। স্ট্রোক, হতাশা এবং দুর্ঘটনায় মৃত্যু হচ্ছে বেশিরভাগ প্রবাসীর।

মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান করেছে বেসরকারি সংস্থা ব্র‌্যাক। সংস্থাটি বলছে- নারীদের ক্ষেত্রে আত্মহত্যায় ও পুরুষদের হৃদরোগে মৃত্যুহার অনেক বেশি। অল্প বয়সীদের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর বিষয়টি ভাবনার।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘদিন স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা এবং ধার-দেনা করে বিদেশ যাওয়ায় টাকা উপার্জনে মানসিক চাপে ভোগেন তারা। অনেকেই কড়া সুদে পরিবার, ব্যক্তি কিংবা এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে গমন করেছেন। বিদেশে গিয়ে টাকা পরিশোধের চাপে হতাশায় স্ট্রোক করে থাকেন এসব প্রবাসীরা।

এদিকে ইউরোপের দেশ গ্রিসেও বেড়েই চলেছে বাংলাদেশিদের অপ্রত্যাশিত মৃত্যুর সংখ্যা।

এথেন্স দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গ্রিসে ২০১৫ সাল থেকে ২০২০ এর জুন পর্যন্ত মোট ১০৯ জন বাংলাদেশি মৃত্যুবরণ করেছেন।

২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৪৫ জন এবং ২০২১-২০২২ অর্থবছরের সর্বশেষ তিন মাসেই ১৮ জন প্রবাসী মারা গেছেন।

বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিসের সহযোগিতায় ও বাংলাদেশ দূতাবাস এথেন্সের তত্ত্বাবধানে তাদের মরদেহ দেশে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী একজনের মরদেহ গ্রিসেই দাফন করা হয়েছে। আরও চারজনের মরদেহ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) বিশ্বজিত কুমার পাল বলেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ায় বেশিরভাগ ব্যক্তির মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত ও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কেউ জমি বিক্রি করে, কেউ ঋণ নিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে গ্রিসে এসছেন। বৈশ্বিক করোনা মহামারির মন্দা পরিস্থিতিতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে গ্রিসে আসার পর কর্মহীন প্রবাসীরা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে মানসিক চাপে ভোগেন। বেশিরভাগ প্রবাসীই মারা গেছেন হার্ট অ্যাটাক ও ব্রেন স্ট্রোকে। তাদের অনেকের বয়সই ৩০ থেকে ৪০ বছর। এমন মৃত্যু পরিবারের কাছেও অপ্রত্যাশিত।

বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে অবৈধভাবে কেউ যেন কাজের ক্ষেত্র নিশ্চিত না হয়ে বিদেশে পাড়ি না জমান, এজন্য অনুরোধ করেছেন দূতাবাসের এই কর্মকর্তা।

অপরদিকে, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে, ২০০৫ সাল থেকে ২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত দেশে মরদেহ এসেছে ৪১ হাজার ৭০০টি। ২০২১ সালের প্রথম ছয় মাসে এসেছে ২১৮৭টি। আর ২০২০ সালে এসেছে ২৮৮৪টি মরদেহ।

প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক বলছে, ৬১ শতাংশ বাংলাদেশির মরদেহ এসেছে মধ্যপ্রাচ্য থেকে। শুধু সৌদি থেকেই এসেছে ৩১ শতাংশ। তাদের অতিরিক্ত মানসিক ও অর্থনৈতিক চাপের কারণে প্রবাসে আমাদের কর্মীদের এমন অস্বাভাবিক ও অপ্রত্যাশিত মৃত্যু হচ্ছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

২১ বাংলাদেশি নাগরিককে সম্মাননা দিল ব্রুনাই হাইক‌মিশন
মালয়েশিয়ায় ২৫২ বাংলাদেশিসহ ৫৬৭ জন আটক
বাংলাদেশিদের ভিসা আবেদনে সময় বাড়ালো কানাডা
৩ হাজার ৩৭৫ প্রবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে কুয়েত
লটারিতে ৩ কোটি টাকা জিতলেন বাংলাদেশি প্রবাসী
ত্রিশ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন নিহত দুই প্রবাসীর পরিবার
লটারিতে ৩ কোটি টাকা জিতলেন বাংলাদেশী গাড়িচালক
চীনে মহান বিজয় দিবস উদযাপন
বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার খুলে দিলো মালদ্বীপ
মালয়েশিয়ায় একদিনে ৩ হাজার পাসপোর্ট বিতরণ