গ্রামাঞ্চলে অকৃষি খাতের বিকাশ হচ্ছে

গ্রামাঞ্চলে অকৃষি খাতের বিকাশ হচ্ছে
গ্রামাঞ্চলে অকৃষি খাতের বিকাশ হচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ অভিবাসনে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের যেসব অঞ্চলে এসএমই খাতের বিকাশ ঘটেছে, সেসব অঞ্চল থেকে শহরে অভিবাসনের হার কম।

বুধবার (৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা (বিআইডিএস) আয়োজিত লোকাল নন ফার্ম অপরচুনিটিস অ্যান্ড মাইগ্রেশন ডিসিশন্স: এভিডেন্স ফ্রম বাংলাদেশ বা স্থানীয় পর্যায়ে অকৃষি খাতে কাজের সুযোগ ও অভিবাসনের সিদ্ধান্ত শীর্ষক পাক্ষিক সেমিনারে এ কথা বলা হয়।

জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান কমলেও গ্রামাঞ্চলে এখনো কর্মসংস্থানের সবচেয়ে বড় উৎস এটি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, কৃষিশ্রমিকদের আয় নির্ধারিত নয়। নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার কারণে তাঁদের আয় ওঠা–নামা করে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ সেখানে বড় একটি প্রভাবক। সে জন্য গ্রামাঞ্চলে মানুষ আয়ের স্থিতিশীলতার জন্য অকৃষি খাত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রাম কৃষিভিত্তিক পরিবারের চেয়ে অকৃষি খাতে নিয়োজিত পরিবারের আয় বেশি। তবে প্রবাসী আয় গ্রহীতা পরিবারের ক্ষেত্রে উল্টো প্রবণতা দেখা যায়। এ জাতীয় পরিবার কৃষি থেকে বেশি আয় করে। তবে সামগ্রিকভাবে গ্রামীণ পরিবারে অকৃষি খাত থেকে আয়ের অনুপাত বাড়ছে।

আলেচানায় অংশ নিয়ে চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ ভিন্ন দিকে আলো ফেলেন। বলেন, দেশে কৃষি খাতের আধুনিকায়ন হচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এমনকি স্মার্ট কৃষি গড়ে উঠছে। কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠছে। ফলে কৃষি খাত আবারও গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থানের উৎস হয়ে উঠছে। গবেষকেরা এ নিয়ে ভাবছেন কি না, জানতে চান শাইখ সিরাজ। জবাবে কাজী ইকবাল বলেন, ‘আপনার কথার সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। কৃষিভিত্তিক যে শিল্প গড়ে উঠছে, সেখানেও অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে।’

আলোচনার একপর্যায়ে বিআইডিএসের মহাপরিচালক বিনায়ক সেন শাইখ সিরাজের কথার প্রসঙ্গে বলেন, দেশের মফস্বল বদলে যাচ্ছে। সেগুলো ক্রমেই নগরের আদল পাচ্ছে। কিন্তু এই শহরগুলোর উন্নয়নে নীতি প্রণেতারা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, বিষয়টি হলো এই শহরগুলোতে বিভিন্ন শিল্প গড়ে তোলা গেলে গ্রামের মানুষ পার্শ্ববর্তী এই ছোট শহরগুলোতে কাজ করতে আসতে পারেন। তাতে তাঁরা কৃষি ও অকৃষি—উভয় খাতেই একসঙ্গে কাজ করতে পারেন। এর মধ্য দিয়ে গ্রাম-শহরের বিরোধ মীমাংসা করা যেতে পারে।

অভিবাসের ক্ষেত্রে অবশ্য কেবল অর্থনৈতিক বিবেচনাই মূল বিষয় নয়। সামাজিক উন্নতির আকাঙ্ক্ষা থেকেও মানুষ অভিবাসনে আগ্রহী হয় বলে মন্তব্য করেন অর্থনীতিবিদ স্বপন আদনান। তিনি বলেন, যাঁদের অবস্থা কিছুটা ভালো বা শিক্ষাদীক্ষায় যাঁরা এগিয়ে, তাঁরাই মূলত অভিবাসন করেন। এই গবেষণাতেও দেখা গেছে, অকৃষি খাত থেকে আয় বৃদ্ধি পেলে গ্রামাঞ্চলের মানুষ বরং অভিবাসনে উৎসাহিত হয়, যেখানে পৌরসভা অঞ্চলের মানুষ নিরুৎসাহিত হয়।

দেখা গেছে, নারীপ্রধান পরিবারের অভিবাসন করার প্রবণতা বেশি। আরও বলা হয়, স্থায়ী বাসস্থান থেকে দূরে অবস্থানের কারণে লকডাউন বা সাধারণ ছুটির সময় শ্রমিকদের বেশি ভোগান্তি হয়েছে। সে কারণে বিকেন্দ্রীকরণের বিকল্প নেই।

সেমিনারে আরও আলোচনা করেন বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক কাজী সাহাবউদ্দিন।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ভরা মৌসুমে সবজির চড়া দাম
বগুড়ায় রেকর্ড পরিমাণ সরিষার চাষ
এবার রেকর্ড পরিমাণ ডিম ছেড়েছে মা ইলিশ
১০৫ কোটি টাকার খেজুর গুড় উৎপাদনের লক্ষ্য নাটোরে
বাসার ছাদে সবজি চাষের সহজ পদ্ধতি
প্রাণিসম্পদ খাতে বিনিয়োগের জন্য সরকারের নীতি অনেক সহায়ক
মুনাফা লোভীদের কারণে ইলিশের দাম বেশি
কৃষিকাজে সামাজিক মর্যাদা বেড়েছে
বাংলাদেশের মৎস্য খাতে বিনিয়োগ করতে চায় জাপান
এক কাতলা মাছের দাম ৩৮ হাজার টাকা