বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। কমিটি সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, আ.ফ.ম. রুহুল হক, মুহিবুর রহমান মানিক, মনসুর রহমান, আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ এবং আমিরুল আলম মিলন অংশ নেন।
কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম বাস্তবায়নে তারা দুটি কমিটি গঠন করেছে। একটি উপদেষ্টা কমিটি এবং অন্যটি কারিগরি কমিটি। উপদেষ্টা কমিটির সদস্য করা হয়েছে-স্বাস্থ্যমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং এসেনসিয়াল ড্রাগসের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে।
এই কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, করোনা প্রতিরোধী ভ্যাকসিন উৎপাদন কারিগরি কমিটিকে পরামর্শ দেবেন এবং কারিগরি কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনা করে ভ্যাকসিন উৎপাদন কার্যক্রম গ্রহনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন গ্রহণ করবে।
অন্যদিকে কারিগরি কমিটির সদস্য করা হয়েছে-স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (আহ্বায়ক), ঔষধ প্রশাসনের অধিদফতরের মহাপরিচালক (সদস্য), স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য) সদস্য, আইইডিসিআরের পরিচালক সদস্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) সদস্য, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসিএন্ডএইচ) সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ডিন ড. আব্দুর রহমান সদস্য এবং এসেনসিয়াল ড্রাগসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সদস্য সচিব।
এই কমিটি দেশে কার্যকর ও নিরাপদ ভ্যাকসিন উৎপাদনে পদক্ষেপ গ্রহণ, এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনাগুলো পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে সুপারিশ প্রদান, ভ্যাকসিন উৎপাদনে দেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা গ্রহণ এবং উৎপাদন, সংরক্ষণ ও ব্যবহার পর্যায়ে মান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিয়ে মতামত জানাবে।
সরকারের এই দুই কমিটির পাশাপাশি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিও একটি পৃথক কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটিকেও ভ্যাকসিন বোতলজাতকরণ বা উৎপাদনের বিষয়ে এক মাসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম গণমাধ্যমে জানান, দেশে টিকা উৎপাদনের কার্যক্রম পরিচালনায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আগামী এক মাসের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিবে। এরপর সংসদীয় কমিটি এই প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা করবে। তিনি বলেন, ‘কমিটি চায় ৬ থেকে ৯ মাসের মধ্যে ভ্যাকসিন বোতলজাত করে সরবরাহ করতে। আপাতত ভ্যাকসিন বোতলজাত করাই লক্ষ্য। এরপরে সম্ভব হলে এবং প্যাটেন্ট পেলে এখানেই ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হবে।’
এসেনশিয়াল ড্রাগসের গোপালগঞ্জ ইউনিটেই ভ্যাকসিন তৈরির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান ব্যবস্থার মধ্যেই অবকাঠামো তৈরি করে ভ্যাকসিন বোতলজাত করা হবে। সেখানে আরও ৮ একর জমি রয়েছে। সেখানেই ভ্যাকসিনের জন্য ইউনিট হবে। দেশের অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন মেটাতে নিউমেনিয়া, যক্ষ্মাসহ অন্যান্য যেসব ভ্যাকসিন রয়েছে সেগুলোও সেখানে উৎপাদন করা হবে।