কোনো দেশের গৃহযুদ্ধে মার্কিন সেনার উপস্থিতি চাই না: বাইডেন

কোনো দেশের গৃহযুদ্ধে মার্কিন সেনার উপস্থিতি চাই না: বাইডেন
গত ১১ আগস্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন, তালবান অভিযানের ঝুঁকিতে থাকা অবস্থায় আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে তার কোনো আফসোস নেই। শনিবার কিছুটা ঘুরিয়ে সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন তিনি।

এক বিবৃতিতে শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কোনো দেশের গৃহযুদ্ধে মার্কিন সেনা সদস্যদের উপস্থিতি তার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

পাশাপাশি, তালেবান কবলিত আফগানিস্তানে বসবাসরত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে দেশটিতে ৫ হাজার সৈন্য পাঠানো হবে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।

শনিবারের বিবৃতিতে জো বাইডেন বলেন, ‘যদি আফগান সেনাবাহিনী নিজের দেশের দখল নিজেদের হাতের রাখতে না পারে, বা ইচ্ছুক না হয়, সেক্ষেত্রে আরও এক, পাঁচ বা যতবছরই আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতি থাকুক- সমস্যার প্রকৃত কোনো সমাধান হবে না।’

‘আর একটি কথা হলো- কোনো দেশের গৃহযুদ্ধের মধ্যে মার্কিন সেনা সদস্যদের উপস্থিতি আমি চাই না। এটি একদমই গ্রহণযোগ্য নয় আমার কাছে।’

এর আগে গত ১১ আগস্ট হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, আফগানিস্তানে করা সকল অঙ্গীকারই যুক্তরাষ্ট্র পালন করছে। এর মধ্যে রয়েছে- আকাশপথে ঘনিষ্ঠ সহায়তা (তালেবানের ওপর বিমান হামলা), সামরিক বেতন পরিশোধ এবং আফগান বাহিনীকে খাদ্য ও সরঞ্জামাদি সরবরাহ করা।

তিনি আরও বলেছিলেন, আফগান সেনাবাহিনীকে এখন নিজেদের জন্য যুদ্ধ করতে হবে।

২০০১ সালে ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে বিমান হামলা করেছিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আল-কায়দা নেটওয়ার্ক। সে সময় এই গোষ্ঠীর প্রধান ঘাঁটি ছিল তালেবান শাসিত আফগানিস্তান।

টুইন টাওয়ারে হামলার জেরে ওই বছর আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে মার্কিন ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। অভিযানে পতন হয় তালেবান সরকারের। অভিযানের প্রায় ২০ বছর পর চলতি বছর এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তিনি বলেছিলেন, ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব মার্কিন ও ন্যাটো সেনাসদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। পরে এই সময়সীমাকে আরও এগিয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়।

বাইডেনের এই ঘোষণার পর থেকেই নতুন উদ্যমে আফগানিস্তান পুনরায় নিজেদের দখলে নিয়ে আসার অভিযান শুরু করেছে কট্টরপন্থি ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান। ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের ২৮ টিরই পতন হয়েছে তালেবানগোষ্ঠীর হাতে।

আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তালেবানের সদস্যরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলে নিতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা আগে যে অনুমান করেছিলেন; সেটি ভুল প্রমাণিত হতে চলেছে। কারণ, শনিবার কাবুলের নিকটবর্তী শহর জালালাবাদের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবানগোষ্ঠী।

মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে তালেবানের অবিশ্বাস্য এই সামরিক সাফল্যে আফগান সরকার তো বটেই, পুরো বিশ্বই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। কোথাও কোথাও লড়াই ছাড়াই তালেবানের কাছে পরাজয় স্বীকার বা আত্মসমর্পণ করছে সরকারি বাহিনী।

এদিকে, আগুয়ান তালেবান সদস্যদের থেকে নিজেদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দেশটিতে ৫ হাজার সেনা সদস্য পাঠানো হবে বলে শনিবারের বিবৃতিতে জানিয়েছেন জো বাইডেন।

এ সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমাদের কূটনৈতিক, সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আফগানিস্তানে বসবাসরত মার্কিন নাগরিকদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনতে ৫ হাজার সৈন্য সেখানে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এই ৫ হাজার সৈন্যের মধ্যে ৪ হাজার ইতোমধ্যে আফগানিস্তানে পৌঁছে গেছেন এবং বাকি ১০০০ সৈন্যকেও দ্রুত পাঠানো হবে।

পাশাপাশি, কাতারে অবস্থানরত তালেবান প্রতিনিধিদের যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন ওই কর্মকর্তা।

‘আমরা তাদের বলেছি, আফগানিস্তানে থাকা কোনো মার্কিন নাগরিক যদি হামলার শিকার হন, সেক্ষেত্রে ফের দেশটিতে মার্কিন অভিযান শুরু হবে।’

সূত্র : রয়টার্স

 

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া