সকাল সাড়ে ৯টায় নিউইয়র্কের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এই প্রোগ্রামের উদ্ধোধন হবে। পর্যায়ক্রমে দেশটির গুরুত্বপূর্ণ আরও তিন শহর ওয়াশিংটন ডিসি, লসএঞ্জেলস এবং সানফ্র্যান্সিকোতে রোড শো চলবে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রকসংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক বাজারে বন্ড ছাড়ার ঘোষনা দেবে বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস কোম্পানি ‘নগদ’।
উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, অর্থমন্ত্রণালয়ের ফাইন্যান্স ডিভিশনের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, রফতানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বেপজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস প্রেসিডেন্ট লরেন্স হেনরি সামার্স, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবিএম রুহুল আজাদ এবং বিএসইসির কমিশনার ড. মিজানুর রহমান। প্রোগ্রামে স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক, নগদ এবং ওয়ালটন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ও কামরুল আনাম খান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিএসইসির চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলী রুবাইয়াত-উল- ইসলাম বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ঈর্শ্বনীয় অগ্রগতি হয়েছে। অর্থনীতির সবগুলো সূচকে আমরা এগিয়েছি। সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করলে আগামীতে বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনা বিশাল। কিন্তু আমাদের অর্থনীতি যে অর্জন ও সম্ভাবনা রয়েছে, উন্নত দেশগুলোর বিনিয়োগকারীদের কাছে তা তুলে ধরা হয়নি। যে কারণে আমাদের ওইভাবে বিদেশি বিনিয়োগ আসেনি। এ কারণে বিদেশি বিনিয়োগ আর্কষণের জন্য আমরা এ ধরনের রোড শোর উদ্যোগ নিয়েছি। তিনি বলেন, এর আগে আমরা দুবাইতে একটি রোড শো করেছি। সেখানে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। পর্যায়ে ক্রমেই সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের লক্ষ্য রেখে বিভিন্ন দেশে এই ধরনের আরও আয়োজন থাকবে।
অনুষ্ঠানে মূল উপস্থাপনায় বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের পুর্বাভাস অনুসারে ২০৫০ সালে বিশ্বের ২৩তম অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ। সংস্থাটির তথ্য অনুসারে দক্ষিণ এশিয়ায় দ্রুত বর্ধণশীল অর্থনীতির দেশ হলো বাংলাদেশ। একই পুর্বাভাস দিয়েছে আরেক আর্ন্তজাতিক প্রতিষ্ঠান হংকং সাংহাই ব্যাংকিং কর্পোরেশন (এইচএসবিসি)। গত দশ বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ। আর মোট জিডিপিতে শিল্পখাতের অবদান ৩১ শতাংশ। প্রবৃদ্ধিকে সাপোর্ট দিতে ২০২০ সালে বাংলাদেশের অবকাঠামোখাতে ৪০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। ২০১১ সালে বাংলাদেশের মাথা পিছু আয় ছিল ৮৬০ মার্কিন ডলার। বর্তমানে তা ২ হাজার ২২৭ ডলারে উন্নীত হয়েছে। এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৭ বিলিয়ন ডলারে পৌছেছে। করোনার মধ্যেও ২০২০ সালে প্রবাসী আয়ে (রেমিট্যান্স) ১০ দশমিক ৮৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পুর্বাভাস অনুসারে করোনার মধ্যে ২৩ দেশ অর্থনৈতিকভাবে ইতিবাচক অবস্থানে থাকবে। সংস্থাটি বলছে, এরমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এছাড়াও বর্তমানে বাংলাদেশে মোট শ্রমশক্তি ৭ কোটি। এরমধ্যে সাড়ে ৫ কোটিই বয়সে তরুন।
নিউইর্য়কে ২৬ জুলাই অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে ২টি সেশন রাখা হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম সেশনে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের প্রবাসী বিনিয়োগকারী সম্মেলন এবং একইদিনে দ্বিতীয় সেশনে বিদেশি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী সম্মেলন। ২৮ জুলাই ওয়াশিংটনে দ্যা রিটজ কার্লটনে অনুষ্ঠিত হবে স্টেক হোল্ডার্স মিটিং বা অংশীজন বৈঠক। ৩০ জুলাই লস এঞ্জেলসের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত হবে বিনিয়োগকারী সম্মেলন। সর্বশেষ ২ আগষ্ট সানফ্রান্সিসকোর হোটেল হায়াত রিজেন্সিতে অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগ সম্মেলন। এসব সম্মেলনে বাংলাদেশের সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের কর্মকর্তা, বেসরকারি উদ্যোক্তা, অনিবাসী বাংলাদেশি এবং বিদেশি উদ্যোক্তারা অংশ নিয়েছেন। আয়োজকরা ধারনা করছেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতি নতুন করে পরিচিতি পাবে।