আরব আমিরাতের ভূগর্ভস্থ পানিতে লবণের পরিমাণ এতোটাই বেশি যে বহু পরিশোধনের পর তা পান করার যোগ্য করে তুলতে হয়। আর তাই খাবার পানীয় বলতে মূলত সমুদ্রের লবণাক্ত পানিই দেশটির ভরসা।
কিন্তু সেটাও বড় অংকের টাকা ব্যয় করে পরিশোধন করে পান করতে হয়। কিংবা সুদূর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে জাহাজ দিয়ে টেনে আনতে হয় হিমশৈল। সেই বরফ গলিয়ে দেশটি তৈরি করে সুপেয় পানীয়।
সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বের অন্যতম শুষ্ক দেশ। দেশটিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণও খুব কম। এরসঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশটিতে বেড়েই চলেছে তাপমাত্রাও। আর তাই গরমে নাজেহাল বাসিন্দাদের রেহাই দিতে এ বার ড্রোন হামলা করে কৃত্রিম ভাবে মেঘ থেকে বৃষ্টি নামাল ইউএই।
ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব রিডিংয়ে ড্রোন দিয়ে বৃষ্টি নামানোর এই কৌশল আবিষ্কৃত হয়েছে। এই প্রকল্পের অন্যতম গবেষক মার্টেন অ্যামবাউম জানিয়েছিলেন, আরব আমিরাতের ওপর যে পরিমাণ মেঘ পুঞ্জীভূত হয়ে থাকে তার থেকে কৃত্রিম ভাবে ভালো পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
https://twitter.com/NCMS_media/status/1417420751637028867?ref_src=twsrc%5Etfw%7Ctwcamp%5Etweetembed%7Ctwterm%5E1417420751637028867%7Ctwgr%5E%7Ctwcon%5Es1_&ref_url=https%3A%2F%2Fwww.dhakapost.com%2Finternational%2F48877
কী ভাবে বৃষ্টি ঘটায় এই ড্রোন? আরব আমিরাতের কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি নামানোর এই বিজ্ঞান প্রকল্পের প্রধান আল মাজরউয়ি জানান, ড্রোনে ইলেকট্রিক চার্জ নির্গতকারী যন্ত্র রয়েছে। এই যন্ত্র নিয়ে মেঘের কাছে উড়ে যায় ড্রোন। মেঘের মধ্যে ধনাত্মক এবং ঋণাত্বক দু’ধরনের আয়নই রয়েছে।
এই দুই আয়নের ভারসাম্যের হেরফের ঘটিয়ে ইলেকট্রিক চার্জ নির্গতকারী যন্ত্রটি মেঘের মধ্যে থাকা জলকণাগুলোকে কাছাকাছি নিয়ে আসে। জলকণাগুলো মিশে গিয়ে ক্রমে বড় জলকণায় পরিণত হয় এবং একপর্যায়ে সেটা ভারী হয়ে বৃষ্টি হয়ে ঝরতে শুরু করে।
২০১৭ সালে কৃত্রিম ভাবে বৃষ্টি করানোর জন্য দেড় কোটি ডলার নির্ধারণ করে ইউএই। ড্রোন দিয়ে বৃষ্টি ঘটানোর এই কৌশল ছাড়া আরও ভিন্ন ভিন্ন কৌশল নিয়ে কাজ চলছে। তার মধ্যে একটি হলো- বিমান থেকে মেঘের ওপর লবণের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা।
এই প্রকল্পের জন্য গ্রীষ্মকাল সবচেয়ে উপযুক্ত সময় বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। ওই সময় আল-হাজার পর্বতের ওপরে মেঘ জমতে শুরু করে।
এদিকে সম্প্রতি ড্রোন দিয়ে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানোর পরীক্ষায় সাফল্যও পেয়েছে সংযুক্ত আবর আমিরাত। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ভাইরালও হয়েছে। ভিডিতে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি হওয়ার দৃশ্যও ফুটে উঠেছে।
গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় আবহাওয়া দফতর একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওতে মুষলধারে বৃষ্টি হতে দেখা যায়। যার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে- ড্রোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানোর ক্ষেত্রে দেশটি সফল হয়েছে।
সূত্র: দ্য ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড