রোববার মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডা. ফাউসি বলেন, ‘এটি এখন পুরোপুরি স্পষ্ট যে, করোনাভাইরাস এবং এর অন্যান্য পরিবর্তিত ধরনগুলোর চেয়ে ডেল্টার সংক্রমণক্ষমতা অনেক বেশি এবং এটি করোনার একটি কুৎসিত পরিবর্তিত ধরন।’
‘খারাপ খবর হলো- ডেল্টা খুবই জঘন্য ও কুৎসিত একটি ধরন এবং ভালো খবর হচ্ছে- আমাদের কাছে যে টিকাসমূহ রয়েছে, তাতে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
গত বছরের অক্টোবরে ভারতে প্রথম করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ডেলটা শনাক্ত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রচলিত করোনাভাইরাস ও এটির অন্যান্য পরিবর্তিত ধরনসমূহের চেয়ে ডেল্টা অন্তত ৪০ শতাংশ বেশি সংক্রামক। মূলত এই পরিবর্তিত ধরনটির প্রভাবেই চলতি বছর এপ্রিল ও মে মাসে ভারতে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল।
শনাক্তের পর শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের এই ধরনটিকে ‘ভারতীয় ধরন’ বলে উল্লেখ করা হতো। পরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গ্রীক বর্ণমালা অনুসারে এটির নাম দেয় ‘ডেল্টা’।
ইতোমধ্যে বিশ্বের অন্তত ৮৫টি দেশে করোনার ডেলটায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। ভাইরাসের এ ধরন এখন এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন অংশে প্রাধান্য বিস্তারে সক্ষম হয়েছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রেও বাড়ছে এর সংক্রমণ।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে ডা. ফাউসি জানিয়েছিলেন, বর্তমানে প্রচলিত বেশিরভাগ করোনা টিকা ডেল্টা সংক্রমণ প্রতিরোধে উচ্চমাত্রায় কার্যকর। এর সংক্রমণ থেকে নিরাপদ থাকতে মার্কিন জনগণকে টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে টিকা কোনো বিকল্প নেই। সবাইরই টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করা উচিত কারণ টিকা কার্যকর, নিরাপদ, এবং এই মুহূর্তে খুবই প্রয়োজনীয়।’
করোনা মহামারি শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৩ কোটি ৪৭ লাখ ৩২ হাজার ৭৫৩ জন এবং মারা গেছেন মোট ৬ লাখ ২২ হাজার ৮৪৫ জন।
অবশ্য গত কয়েকমাস ধরে টিকাদান কর্মসূচিতে গতি আসায় দেশটিতে কিছুটা কমেছে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৪৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিক ইতোমধ্যে করোনা টিকার অন্তত একটি ডোজ নিয়েছেন।
এদিকে, করোনার ডেলটা ধরনের সংক্রমণ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত শনিবার বিশ্বের ধনী দেশগুলোর জোট তথা জি-২০-ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা সতর্ক করে বলেছেন, ডেলটা ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বৈশ্বিক অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আরও ধীরগতি হবে।
সূত্র: এএনআই, এনডিটিভি অনলাইন