করোনা আতঙ্কে বিষণ্ণ সন্তান? মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন কীভাবে নেবেন অভিভাবকরা

করোনা আতঙ্কে বিষণ্ণ সন্তান? মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন কীভাবে নেবেন অভিভাবকরা
পৃথিবী এখন আমাদের দেখা সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা একপ্রকার বাধ্য হয়েই মেনে নিচ্ছি এই লকডাউন পরিস্থিতি। এমন পরিবেশে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা বাড়িতে দৌড়ঝাঁপ করা কচিকাঁচাদের। স্কুল, টিউশন বন্ধ। সাঁতার-গান-নাচ-ক্যারাটের কোচিংও বন্ধ। বিকেলে খেলাধুলো বা পার্কে যাওয়ারও উপায় নেই। ২৪ ঘণ্টা ওরা চার দেওয়ালে বন্দি। এই অবস্থায় ওদের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া অভিভাবকদেরই কর্তব্য।

যে সব শিশুর একটু বোধশক্তি তৈরি হয়েছে, তাদের বুঝিয়ে বলুন ‘হোম কোয়রান্টাইন’ কী, আর তার যৌক্তিকতাই বা কতটা। তা হলে চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে থাকার গ্রহণযোগ্যতা অনেকটা বাড়বে ওদের মধ্যে। এক জন ৩-৫ বছর বয়স্ক শিশুদের মধ্যে কিন্তু মৃত্যু সম্পর্কে একটা অস্বচ্ছ ধারণা তৈরি হয়ে যায়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ও তার সংখ্যা নিয়ে ওদের সামনে বেশি আলোচনা না করাই বাঞ্ছনীয়। অপরিণত মস্তিষ্কে মৃত্যুভয় বাসা বাঁধতে পারে।

বাড়ির অন্য সকলে যেমন সংসারের সমস্ত কাজ ভাগ করে করছেন, আপনার সন্তানটিকেও তার বয়স ও ক্ষমতা অনুযায়ী কাজ ভাগ করে দিন। সকলের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করাটা হয়তো ওর কাছে উপভোগ্যই হবে। ছবি আঁকা, বাগান করা, গল্পের বই পড়া, বাজনা বাজানোর মতো কোনও শখ— যেটা ঘরে বসেই করা যায়, এমন কিছুতে উৎসাহিত করুন।

বছরের আর পাঁচটা দিনের চেয়ে অভিভাবকদের হাতে কিন্তু একটু বেশিই সময় আছে সন্তানকে দেওয়ার মত। তাই এই সময় চেষ্টা করবেন, যদি একসঙ্গে বসে কিছু খেলা যায় বা কোনও বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায়— এটা ওদের কাছে অনেক বেশি উপভোগ্য হয়।

এই সময় সব বাড়িতেই খাওয়াদাওয়া আর পাঁচটা দিনের চেয়ে অনেক বেশি সাদামাঠা আর সংক্ষিপ্ত। এটার মধ্যে দিয়ে শিশুটির কাছে এই বার্তা যাক যে জীবনে খারাপ-ভাল সব পরিস্থিতিই আসতে পারে। তাকেও তা মেনে নিতে হবে সকলের মতোই। এই সময় খাবার যেন একদম নষ্ট না করে সেই বার্তাও দিতে হবে। বোঝাত হবে দেশের অবস্থাও।

কোনও ভাবে দাম্পত্য কলহ হলেও খেয়াল রাখতে হবে, বাবা-মার মধ্যেকার অশান্তি যেন সন্তানকে কোনও ভাবে প্রভাবিত না করে ফেলে। চেষ্টা করুন, নিজেদের মধ্যেও কোনও অশান্তি হলে তা দ্রুত মিটিয়ে ফেলতে। শিশুরা ঘরে বসে বসে একঘেয়ে হয়ে দুষ্টুমি করলে তার শাস্তিস্বরূপ মারধর একদমই কিন্তু ঠিক হবে না। এতে এই সময় মনের উপর উল্টো প্রভাব পড়বে ও শিশুর মধ্যে হতাশা তৈরি হবে।

অনেকটা সময় হাতে পাচ্ছে যখন, তখন বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করুন। পাঠ্যবইয়ের বাইরেও নানা বই পড়ার স্বভাব পরবর্তীতে তার অনেক উপকার করবে। শিশুর কার্টুন, মোবাইল গেমসের নেশা কাটিয়ে ফেলুন এই লকডাউনেই।

এই সময়টা শিশুকে ‘হ্যান্ড হাইজিন’ আর ‘কাফ এটিকেট’ শেখানোরও আদর্শ সময়। সেটা আয়ত্ত করে ফেলতে পারলে করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ করার সঙ্গে সঙ্গে আপনার সন্তান সারা জীবন ধরেই কিন্তু অন্য অনেক রোগের আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পাববে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পা-বিহীন টিকটিকিসহ শতাধিক নতুন প্রজাতির আবিষ্কারের বছর ২০২৩
গলাব্যথা সারাতে কেন লবণ-পানি পান করবেন
থার্টিফার্স্টে মেট্রোরেলের আশপাশে ফানুস না ওড়ানোর অনুরোধ
মাশরাফির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ভাঙলেন সোহান
ঢাবির অধীনে এডুকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তির সুযোগ
আজ পীরগঞ্জ যাচ্ছেন শেখ হাসিনা
প্রকৃতি ও সংস্কৃতির সমন্বয়ে পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ গড়তে হবে
দুই বাংলাদেশির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করলো সৌদি
প্রথম দিনেই ‘সালার’ আয় ১৭৫ কোটি
টানা তিন বছর মুনাফা না থাকলে ব্যাংকাস্যুরেন্স সেবা নয়