এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কমেছে ৬৩ লাখের বেশি হিসাব

এপ্রিলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কমেছে ৬৩ লাখের বেশি হিসাব
বাংলাদেশে মোবাইলের মাধ্যমে আর্থিক সেবার যাত্রা শুরু হয় ২০১১ সালের মার্চে। করোনাভাইরাসের প্রভাবে মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠানের ওপর মানুষের নির্ভরশীলতা বেড়েছিল। ফলে এমএফএসে হিসাব খোলা ও লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছিল। কিন্তু গত মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিলে এ খাতে ৬৩ লাখ ২০ হাজার গ্রাহক কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

মাসভিত্তিক এ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে অনুমোদিত ১৫টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। এপ্রিলে মাস শেষে এমএফএস সেবার আওতায় নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার। এর আগের মাস মার্চে যা ছিল ১০ কোটি ২৭ লাখ ৯৬ হাজার। এ হিসেবে এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা কমেছে ৬৩ লাখ ২০ হাজার।

বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। পরে এটির নাম বদলে হয় রকেট। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে এমএফএস সেবা চালু করে বিকাশ। পরবর্তী সময়ে আরও অনেক ব্যাংক এ সেবায় এসেছে। তবে খুব সুবিধা করতে পারেনি। বর্তমানে বিকাশ, রকেটের পাশাপাশি মাই ক্যাশ, এম ক্যাশ, উপায়, শিওর ক্যাশসহ ১৫টি ব্যাংক এ সেবা দিচ্ছে।

প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দেশে করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর গেল বছরের মার্চে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে গ্রাহকরা ব্যাংকগুলোতে লেনেদেনের চেয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের দিকে বেশি ঝুঁকেছে। এর ফলে করোনাকালে প্রতিমাসেই এমএফএস সেবার আওতায় গ্রাহক সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২০ সালের মার্চে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের আওতায় নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়ায় ৮ কোটি ২৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫০ জন। এরপরের মাসে অর্থাৎ এপ্রিলে বেড়ে ৮ কোটি ৫১ লাখ ২৯ হাজার ৬৭ জন, মে মাসে ৮ কোটি ৭৯ লাখ ৩৯ হাজার ৩৩৪ জন, জুন মাসের ৮ কোটি ৮৭ লাখ ৯৭স হাজার ৭৫ জন, জুলাইয়ে ৯ কোটি ২৫ লাখ ৮০ হাজার ২৬৮ জন, আগস্টে ৯ কোটি ৩৮ লাখ ৯২ হাজার ৬৪৩ জন, সেপ্টেম্বর মাসে ৯ কোটি ৪৭ লাখ ৮৬ হাজার ৯৯১ জন, অক্টোবর ৯ কোটি ৬৪ লাখ ১৩ হাজার ৩৪৬ জন, নভেম্বর মাসে ৯ কোটি ৭৮ লাখ ৩৭ হাজার ৩৫৫ জন, ডিসেম্বর মাসে ৯ কোটি ৯৩ লাখ ৩৬ হাজার ১৯৮ জন।

এদিকে চলতি বছরে জানুয়ারি শেষে গ্রাহক সংখ্যা ১০ কোটি ৫ লাখ ৫৩ হাজার ৮৩১ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১০ কোটি ২৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৫১ জন এবং মার্চ মাসে ১০ কোটি ২৭ লাখ ৯৬৫ হাজার ১৭৪ জন। ক্রমান্বয়ে প্রতিমাসে গ্রাহক সংখ্যা বাড়লেও হঠাৎ এপ্রিল মাসে গ্রাহক সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৯ কোটি ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার।

আলোচ্য সময়ে মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০। যা আগের মাস অর্থাৎ মার্চ শেষে ছিল ১০ লাখ ৬৯ হাজার ২৫৭ জন। তবে চলতি বছরের মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিল মাসে লেনদেন বেড়েছে। এপ্রিল শেষে এখাতে লেনদেন হয়েছে ৬৩ হাজার ৪৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। মার্চ মাস শেষে লেনদেন হয়েছে ৫৯ হাজার ৬৪২ কোটি ৪০ লাখ।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব হিসাবে ডাক বিভাগের মোবাইলে আর্থিক সেবা ‘নগদ’ এর তথ্য নেই। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমে বলেন, সম্প্রতি ইউনাইটেড কর্মাশিয়াল ব্যাংকের এমএফএস সেবা ‘ইউক্যাশ’ বন্ধ করে ‘উপায়’ নামে নতুন সেবা চালু করেছে। ‘ইউক্যাশ’ থেকে ‘উপায়’ এ যে গ্রাহক তারা নিয়েছে ওই ডাটাগুলো সংযুক্ত করেনি। তাই গ্রাহক কম দেখাচ্ছে। এটি যুক্ত করা হলে আবার গ্রাহক বাড়বে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি নূরুল আজীম
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
বিকাশের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহফুজ মারা গেছেন
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদের ৩ কমিটি গঠন
ব্যাংকে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শিথিল
মাসিক সঞ্চয় হিসাব খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে
ফের এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন
অফিসার পদে ৭৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে সরকারি ৫ ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা