অর্থনীতি
আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ১ শতাংশ: বিশ্বব্যাংক

আগামী অর্থবছরে (২০২১-২২) বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ১ শতাংশ। গত ৩ জুন বাজেট ঘোষণার সময় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আগামী অর্থবছরে ৭ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছেন। কিন্তু বিশ্বব্যাংক মনে করছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী অর্থবছরে এত প্রবৃদ্ধি হবে না।
মঙ্গলবার (৮ জুন) প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেছে। চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তাই আগামী অর্থবছরের ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হলো স্বাভাবিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতি এবং তৈরি পোশাকের রপ্তানি বৃদ্ধি।
এদিকে চলতি বিদায়ী অর্থবছরে (২০২০-২১) জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করছে। এই প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাসে কোনো পরিবর্তন আনেনি বিশ্বব্যাংক। গত জানুয়ারি মাসে প্রকাশিত গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, এ বছর ১ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। পরে গত মার্চ মাসে প্রকাশিত ‘সাউথ এশিয়া ইকোনমিক ফোকাস স্প্রিং ২০২১: সাউথ এশিয়া ভ্যাকসিনেটস’ প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করে বিশ্বব্যাংক।
মার্চ মাসের প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছিল, বাংলাদেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। অর্থনীতির এই পুনরুদ্ধার ভঙ্গুর এবং করোনার নতুন ঢেউ শঙ্কা তৈরি করছে। অর্থনীতিতে ব্যাপক অনিশ্চয়তা আছে। করোনা মহামারি পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা যেমন অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। আবার পরিবর্তিত করোনা পরিস্থিতিতে সরকার কী ধরনের নীতি গ্রহণ করতে হয়, তাও আরেক ধরনের অনিশ্চয়তা। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার কারণে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

গতকাল প্রকাশিত প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলছে, আগামী অর্থবছরে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৩ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরে (২০২০-২১) ভারতের জিডিপি ৭ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে পাকিস্তানে ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্বের গড় প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। গত ৮০ বছরের মধ্যে মন্দা–পরবর্তী সময়ে এত প্রবৃদ্ধি আর হয়নি। কারণ, বিশ্বের কয়েকটি বড় দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তবে উন্নয়নশীল দেশগুলো এখনো করোনা নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

অর্থনীতি
পোশাকশ্রমিকেরা ন্যূনতম মজুরির চেয়ে বেশি মজুরি পান

দেশের পোশাকশ্রমিকেরা নিম্নতম মজুরি বোর্ডের নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরির চেয়ে বেশি মজুরি পান বলে দাবি করেছেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান।
বিজিএমইএর সভাপতি বলেছেন, মজুরি বোর্ড ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করে। তবে প্রকৃত মজুরি অনেক বেশি। মজুরি কাঠামোর বাইরে কারখানাগুলো শ্রমিকদের কল্যাণে মজুরি-বহির্ভূত বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতি মাসে ৩০০-১০০০ টাকার হাজিরা ভাতা, উৎপাদন ভাতা, বিনা মূল্যে বা ভর্তুকি মূল্যে দুপুরের খাবার এবং বিনা মূল্যে নাশতা।
‘পোশাকশ্রমিকদের জন্য নতুন ন্যূনতম মজুরি: স্পষ্টিকরণ এবং আর্থিক প্রভাব’ শীর্ষক এক বিবৃতিতে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন প্রতিবেদন ও মন্তব্যে আমরা দেখতে পাই, চূড়ান্ত হওয়া ন্যূনতম মজুরিকে অপ্রতুল বলে চিহ্নিত করা হয়। যদিও পোশাকের প্রাপ্য মূল্যের ভিত্তিতে মজুরি পর্যাপ্ততা মূল্যায়ন করার প্রচেষ্টা দেখা যায় না।’
ফারুক হাসান বলেন, ‘তৈরি পোশাকশিল্প শ্রমনিবিড়। আমরা বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার একটি অংশ, তাই মজুরি আলোচনা স্থানীয় এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপট থেকে আলাদা করা হলে টেকসই শিল্প নিশ্চিত করা যাবে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রায়ই শিল্পবিরোধী পক্ষপাতিত্বমূলক প্রতিবেদন ও বিভ্রান্তিকর উপস্থাপনায় ক্ষতিগ্রস্ত হই। এমনকি বৈশ্বিক বাণিজ্য নীতিগুলো শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে, এগুলোর প্রভাব সব সময় শ্রমিকদের পক্ষে না–ও যেতে পারে।’
বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, পোশাকশ্রমিকদের নতুন মজুরিকাঠামোর চূড়ান্ত ঘোষণায় গ্রেড সংখ্যা ৫টি থেকে কমিয়ে ৪টি করা হয়েছে। ন্যূনতম বা ৪ নম্বর গ্রেডের (বর্তমানের ৭ নম্বর গ্রেড) শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১২ হাজার টাকা। এই মজুরি অদক্ষ শ্রমিকদের জন্য, যাদের সে রকম শিক্ষা নেই। কাজের অভিজ্ঞতাও নেই। তাঁরা শেখার প্রক্রিয়া চলাকালীন এই মজুরি পান। কারখানার কাপড়, আনুষঙ্গিক ও অন্যান্য সরঞ্জাম ব্যবহার করে দক্ষতা অর্জন করে। একজন অদক্ষ শ্রমিকের মোট মজুরি সাড়ে ৪ হাজার টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা বিদ্যমান ন্যূনতম মজুরির তুলনায় ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি।
অবশ্য খসড়া মজুরির গেজেট অনুযায়ী, শিক্ষানবিশকাল শ্রমিকেরা মাসে সর্বসাকল্যে ৯ হাজার ৮৭৫ টাকা পাবেন। এর মধ্যে মূল মজুরি ৪ হাজার ৯৫০ টাকা, বাড়িভাড়া ২ হাজার ৪৭৫ টাকা ও অন্যান্য ভাতা ২ হাজার ৪৫০ টাকা। শিক্ষানবিশকাল ৩ মাস। তবে তা আরও ৩ মাস বাড়াতে পারে মালিকপক্ষ।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে দক্ষতা আদান-প্রদান জরুরি

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও বিশ্বে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ এবং উৎপাদনশীলতাকে ত্বরান্বিত করতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জ্ঞান ও দক্ষতা আদান-প্রদান অত্যন্ত জরুরি।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) লন্ডনে আয়োজিত কমনওয়েলথ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত ‘টেক অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট: অ্যানাব্লিং ট্রেড’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক হিসেবে অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন।
প্রযুক্তিগতভাবে পিছিয়ে পড়া কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সম্মিলিতভাবে কাজ করারও আহ্বান জানিয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, এক্ষেত্রে ফিনটেক এবং ডিজিটাল ইকোনমিতে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সদস্য দেশগুলোকে নিয়ে একটি ‘কমন সাইবার-বেজড ট্রেড ইনফরমেশন অ্যান্ড লিঙ্কেজ প্ল্যাটফর্ম’ তৈরির করা যেতে পারে।
পাশাপাশি দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি ও বাণিজ্যের হার বাড়াতে ‘কমনওয়েলথ কানেক্টিভিটি অ্যাজেন্ডা ফর ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট’ এর মতো কোনো উদ্যোগ নেওয়া যায় কি না সে বিষয়ে প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।
মাহবুবুল আলম আরও বলেন, আমরা ‘ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন’ এর যুগ অতিক্রম করছি। প্রযুক্তি নির্ভর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের স্বার্থে আমাদের সম্মিলিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রযুক্তিকে সহজলভ্যকরণ, ডিজিটাল লিটারেসি বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং নীতি-কৌশল নির্ধারণে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ হাতে নিতে হবে বলেও জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

কোনো সদস্য দেশ যেন ডিজিটাল রূপান্তরের সুফল থেকে বঞ্চিত না হয়, কমনওয়েলথকে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন মাহবুবুল আলম। বিগত দশকগুলোয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা এবং অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরেন এফবিসিসিআই সভাপতি।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে এফবিসিসিআই এর সহ-সভাপতি শমী কায়সায় ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
জামানত মূল্যায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নিয়ম

দেশে ঋণ খেলাপির বড় হাতিয়ার ভুয়া জামানত। এসব মিথ্যা জামানতের বিপরীতে অসত্য সম্পদ দেখিয়ে প্রভাবশালী ও অসাধু ব্যবসায়ী জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে ঋণ খেলাপি হলেও এসব সম্পদ থেকে ব্যাংকগুলো কোন অর্থ আদায় করতে পারছে না। তাতে ঋণ জালিয়াতি এবং খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে নতুন নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা জারি করেছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, ঋণের বিপরীতে জামানত মূল্যায়ন প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে একটি প্যানেল গঠন করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো ব্যাংক ঋণ দেওয়ার আগে এই প্যানেল থেকে একটি বা দুটি প্রতিষ্ঠান দিয়ে জামানত মূল্যায়ন করতে হবে। প্যানেলভুক্ত জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের ভিত্তিতেই কেবল ঋণ দিতে পারবে ব্যাংকগুলো। তবে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মঞ্জুর করতে ব্যাংকগুলো নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় জামানত মূল্যায়ন করতে পারবে বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে। ঋণের পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা বা তদূর্ধ্ব অঙ্কের ঋণ মঞ্জুরি, বর্ধিতকরণের বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে নবায়নের সময় গৃহীত বা গৃহীতব্য জামানত (সম্পত্তি, মালামাল, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি) ন্যূনতম দুটি জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান দ্বারা পৃথকভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।
নীতিমালা অনুযায়ী, একাধিক মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠান বা মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ব্যাংকের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মূল্যায়নের ক্ষেত্রে উভয়পক্ষের মূল্যায়নের মধ্যে যে মূল্যায়ন ব্যাংকের জন্য অধিকতর অনুকূলে হবে তা গ্রহণ করতে হবে। তবে উভয় মূল্যায়নের ব্যবধান ২০ শতাংশের অধিক হলে ব্যাংক মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে ব্যাখ্যা চাইতে পারবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, ঋণের ঝুঁকি কমাতে ব্যাংক ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে সাধারণত স্থাবর সম্পত্তি (জমি ও ইমারত) এবং অস্থাবর সম্পত্তি (মেশিনারিজ, সহজে বিপণনযোগ্য দ্রব্যাদি) জামানত হিসেবে গ্রহণ করে। ব্যাংকিং খাতে ঋণের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, ঋণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা, খেলাপি ঋণ আদায়, অবলোপন, নন-ব্যাংকিং সম্পদ অন্তর্ভুক্তিকরণ, ঋণ পুনঃতফসিলিকরণসহ শ্রেণিকৃত ঋণের বিপরীতে রাখা প্রভিশন সঠিকভাবে হিসাবায়নের প্রয়োজনে ঋণের বিপরীতে রাখা জামানতের যথাযথ ও নির্ভরযোগ্য মূল্যায়ন খুবই জরুরি।

এতে বলা হয়, যথাযথ ও নির্ভরযোগ্য মূল্যায়ন নিশ্চিত করার জন্য যোগ্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ন্যূনতম যোগ্যতা ও উপযুক্ততা নির্ধারণ সাপেক্ষে তালিকাভুক্তি এবং তালিকা প্রকাশ অত্যাবশ্যক। কোনো ব্যাংকের ঋণগ্রহীতার মাধ্যমে ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত মূল্যায়নের জন্য যোগ্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে একটি সুনির্দিষ্ট, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে তালিকাভুক্তি করতে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো।
জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম যোগ্যতা
তালিকাভুক্তির জন্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের নিম্নোক্ত ইন্সটিটিউশন বা অ্যাসোসিয়েশনসমূহের মধ্যে ন্যূনতম একটির সদস্যপদ থাকতে হবে।
১. বাংলাদেশ সার্ভে অ্যান্ড ভ্যালুয়েশন কোম্পানিজ, ফার্মস অ্যান্ড ইন্ডিভিজুয়াল কনসার্নস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসভিসিএফআইসিএ)।
২. বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স সার্ভেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন।
৩. বাংলাদেশ ব্যাংকের বিবেচনায় সমজাতীয় স্বীকৃত কোনো পেশাজীবী সংগঠন।
এসব সংগঠনের সদস্য ছাড়াও ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ এবং ইন্সটিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের সদস্য এ সার্কুলারে করা শর্তগুলো পূরণ করে তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে পারবে।
এছাড়া ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে (আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সরকারি প্রতিষ্ঠান, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি) জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সার্ভে বা ভ্যালুয়েশন কাজে ন্যূনতম ৩ বছরের বাস্তব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন থাকতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও অভিজ্ঞ জনবল (হিসাবরক্ষক, পুরপ্রকৌশলী, যন্ত্রপ্রকৌশলী, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী) এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সার্ভেয়ার থাকতে হবে। এছাড়া মূল্যায়ন কাজে প্রতিষ্ঠানের আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সুবিধা থাকতে হবে।
আরও বলা হয়, জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর আবেদন পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক তালিকাভুক্তির কার্যক্রম শুরু করবে। এসব প্রতিষ্ঠানের আবেদন মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রতি বছরে দুইবার যোগ্য জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ তালিকা প্রকাশ করবে। জামানত মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তির মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৩ বছর। আর এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে তালিকাভুক্তির তারিখ থেকে প্রতি ৩ বছর পর পর (মেয়াদপূর্তির ৬ মাস পূর্বে) পুনরায় তালিকাভুক্তির জন্য আবেদন করতে হবে।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
নারায়ণগঞ্জে জাইকার ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ‘বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’–এ (বিএসইজেড) আঞ্চলিক ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার (ওএসএসসি) চালু করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
আজ মঙ্গলবার এ সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) কার্যকারিতা এবং সক্ষমতাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে চালু করা ‘প্রজেক্ট ফর ক্যাপাসিটি বিল্ডিং অব বিইজেডএ অন ইজেড ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন (বিইজেডআইপি)’ শীর্ষক জাইকার কারিগরি সহায়তার অধীন এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে পরিচালিত ব্যবসাগুলোর জন্য প্রদান করা সেবা আরও কার্যকর করার প্রচেষ্টা চালানো হয় এ কেন্দ্রের মাধ্যমে।
বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে থাকা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য একটি নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই আঞ্চলিক ওএসএসসি। এটি লাইসেন্সিং, পারমিট, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক প্রক্রিয়াগুলোর ক্ষেত্রে বিশেষ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: জাইকার শীর্ষ ৩ ঋণগ্রহীতার তালিকায় বাংলাদেশ

এ কেন্দ্রের গুরুত্ব তুলে ধরে জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, বিএসইজেডের আঞ্চলিক ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে অব্যাহত সহযোগিতার একটি প্রমাণ। বিএসইজেডের মধ্যে ব্যবসা পরিচালনার সুবিধার্থে এবং বাংলাদেশের অন্যান্য ইজেডগুলোর জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে কাজ করে দেশের সামগ্রিক বিনিয়োগ পরিবেশকে শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এ কেন্দ্র।
অনুষ্ঠানে বক্তাদের মধ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (জ্যেষ্ঠ সচিব) শেখ ইউসুফ হারুন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি; জাপান-বাংলাদেশ এসইজেড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারো কাওয়াচি।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
অর্থনীতি
ব্রয়লার মুরগির দাম কমলো

বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম অনেকটাই কমেছে। বড় বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার কেনা যাচ্ছে ১৬০ টাকার মধ্যে। পাড়া-মহল্লার দোকানে বিক্রি হচ্ছে সবোর্চ্চ ১৭০ টাকায়। গত সপ্তাহেও প্রতি কেজি ব্রয়লারের দাম ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। আর গত মাসে তা ছিল ২০০ টাকার বেশি।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্যেও মুরগির দামে নিম্নমুখিতার কথা বলা হচ্ছে। সংস্থাটি বলছে, গত একমাসে মুরগির দাম কমেছে ১৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। বাজারে এখন ফার্মের মুরগি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকায়, যা আগে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গরুর মাংসের দাম হঠাৎ কমে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে মুরগির বাজারে। এছাড়া হরতাল-অবরোধের কারণে সামাজিক অনুষ্ঠান কমে যাওয়ায় মুরগির চাহিদাও কমেছে। সরকারের কড়া নজরদারিও দামে প্রভাব ফেলেছে। তবে দাম কমলেও সে অনুযায়ী বিক্রি বাড়েনি।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে রাজধানীর সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকার আশপাশে। বিক্রেতারা ১৬০ টাকা দাম চাইলেও দরদাম করে ১৫৫ টাকায় কেনা যাচ্ছে। তবে রামপুরা বাজারে ১৬৫ টাকা এবং শান্তিনগর বাজারে ১৭০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।
ব্রয়লার মুরগির দাম কমার প্রভাব পড়েছে দেশি ও সোনালি মুরগির দামেও। বিভিন্ন বাজারে সোনালি মুরগির দাম চাওয়া হচ্ছিল প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে কম ২০ থেকে ৩০ টাকা।

রামপুরা বাজারে মুরগি বিক্রেতা সামেদুল ইসলাম বলেন, বিক্রি নেই। হরতাল-অবরোধে বাজারে ক্রেতা থাকে না। কিন্তু সরবরাহ ভালো। তাই দাম কমছে।
তিনি জানান, বছরের শেষ সময়ে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান থাকে, যে কারণে মুরগির চাহিদা বাড়ে। সেভাবে খামারিরাও মুরগি উৎপাদন করেছেন। কিন্তু এ বছর হরতাল-অবরোধে বিভিন্ন অনুষ্ঠান যেমন কমেছে, মুরগির বেচাকেনাও কমেছে। এতে লোকসানের মুখে খামারিরা।
ফরিদ মিয়া নামের এক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে দাম কমায় খুচরায় কম দামে বিক্রি করতে পারছেন তারা। দাম কম থাকলে বেচাকেনা ভালো হয়। কিন্তু এখন দাম কমলেও বিক্রি বাড়েনি।
গরুর মাংসের দাম কমাকে ব্রয়লারের দাম কমার বড় কারণ বলছেন খামার মালিক ও ব্যবসায়ীরাও।