ক্ষমতার পরিবর্তন: ইসরায়েলে সহিংসতার আশঙ্কা

ক্ষমতার পরিবর্তন: ইসরায়েলে সহিংসতার আশঙ্কা
১২ বছরেরও বেশি সময় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে তিনি ক্ষমতা আকড়ে ধরে রেখেছেন। তবে এবার দীর্ঘ সময়ের ক্ষমতা ছাড়তে হবে তাকে।

এদিকে দেশটির রাজনৈতিক ক্ষমতায় পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার আশঙ্কা প্রকাশ করে সতর্কতা জারি করেছে দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা। ইসরায়েলে এমন ঘটনা বিরলই বলা চলে।

সিন বেট নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধান নাদাভ আরগামান শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে আমরা সহিংসতা ও উসকানিমূলক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখতে পেয়েছি। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ধরনের ঘটনা ছড়িয়ে পড়তে পারে।’

তিনি বলেন, নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠী বা ব্যক্তি এসব ঘটনায় প্রভাবিত হতে পারেন। এর ফলে তারা সহিংস হয়ে উঠতে পারেন এবং বেআইনি কিছু করে বসতে পারেন। শারীরিকভাবে হামলার ঘটনাও ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের পার্লামেন্টে এ সপ্তাহেই নতুন সরকার গঠিত হতে পারে, যার মধ্য দিয়ে আবসান হতে পারে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দীর্ঘ শাসনের।

ইসরায়েলে গত ২৩ মার্চের জাতীয় নির্বাচনে কোনো দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সমর্থন অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় এর সুযোগ নিয়েছেন বিরোধী দলীয় নেতা ইয়ের ল্যাপিড। জোট সরকার গঠনের প্রয়োজনীয় সমর্থন পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবারের মধ্যেই নতুন সরকার গঠন হতে পারে বলে জানিয়েছেন ল্যাপিড। তিনি বলেন, যদি জোট সরকার গঠনে আমরা সফল হই তাহলে দেশের দীর্ঘ সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে নেতানিয়াহুকে।

জোট সরকার গঠন হলে এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন নাফতালি বেনেট। তাকে নেতানিয়াহুর স্থলাভিষিক্ত করা হতে পারে। ৪৯ বছর বয়সী এই ধনকুবের ইয়ামিনা পার্টির নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

অপরদিকে ৭১ বছর বয়সী নেতানিয়াহু বলেন, ‘বামপন্থী সরকার গঠন করবেন না। এ ধরনের সরকার ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও দেশের ভবিষ্যতের জন্য বিপজ্জনক।’

নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন যে, বেনেট জনগণকে ভুল পথে পরিচালিত করছেন। অপরদিকে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে বেনেট জানান, তার দল একটি জোট সরকার গঠনের জন্য আলোচনায় যোগ দেবে। তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু ইয়ের ল্যাপিডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি জাতীয় জোট সরকার গঠনে আমি সবকিছুই করব।’

তবে বেনেটের প্রতি কিছু ডানপন্থি গোষ্ঠী দারুণ ক্ষুব্ধ, কারণ তিনি মধ্যপন্থি লেপিডের সঙ্গে জোট করেছেন। এর জেরে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক পোস্টে বেনেটকে আক্রমণ করা হচ্ছে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে জোট হওয়া আট দলে যুক্ত হয়েছে ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড আরব লিস্ট। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। কারণ এর আগে এমন কোনো জোট করার ঘটনা দেখেনি বিশ্ব।

প্রথমবারের মতো এবারই ইসরায়েল সরকারের অংশ হতে যাচ্ছে একটি ইসলামী দল। ইসরায়েলের মোট জনসংখ্যার ২১ শতাংশ আরব। এর আগে তাদের ভোটেই সংসদে গেছে ইউনাইটেড আরব লিস্ট নামের এই দলটি।

দলটির নেতা মনসুর আব্বাস বলেন, বিরোধীদের মধ্যে সরকার গঠনের যে চুক্তি হয়েছে তার আওতায় ইসরায়েলের আরব অধ্যুষিত শহরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং সেখানকার সহিংসতা কমানোর জন্য এক হাজার ৬০০ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে।

জোটের চুক্তি অনুযায়ী ইয়ামিনা পার্টির প্রধান নাফতালি বেনেট শুরুতে প্রধানমন্ত্রী হবেন। তিনি ক্ষমতায় থাকবেন আগামী ২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত। এরপর তিনি ইয়াইর লেপিডের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া