‘সরকারি ভালো কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে’

‘সরকারি ভালো কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে’
ধীরে ধীরে বাজার এগিয়ে যাচ্ছে, তাই সরকারি ভালো কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।

সোমবার (৩১ মে) দুপুরে রাজধানীর জীবন বীমা টাওয়ারে বাংলাদেশ একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেটস (বিএএসএম) এর নতুন ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। এতে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ, ড. মিজানুর রহমান ও আব্দুল হালিম উপস্থিত ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, সরকারের এমন কিছু কোম্পানি আছে যেগুলো বাজারে আনতে পারলে সরকারেরই আর্থিক অবস্থার অনেক উন্নতি হবে।এই প্রতিষ্ঠানগুলো এ মূহুর্তে সরকারের মালিকানাধীন না রেখে জনগণকে শরীক করলে সরকার ও প্রতিষ্ঠান উভয়েরই লাভবান হবে। দীর্ঘ সময়ের জন্য কোম্পানির পুঁজির প্রয়োজন হলে তখন পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত হয়ে থাকে। এছাড়া পুঁজির প্রয়োজন না হলেও অ্যাসেট ভ্যালুয়েশনের মাধ্যমে কোম্পানির ভ্যালুয়েশন বাড়ানোর জন্য অনেক কোম্পানি বাজারে আসতে পারে। এছাড়া কিছু কোম্পানি চিন্তা করে তাদের প্রচুর পরিমাণ ট্যাক্স আসে সেক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়ার জন্য আসে। আমাদের এরকম ভালো ভালো কোম্পানিগুলোকে আমন্ত্রন জানানো উচিৎ। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা উচিৎ যেন তারা আসে। আমরা মনে করি যে সেরকম পরিস্থিতির দিকেই যাচ্ছি।এই মূহুর্তে আমাদের কাছে বেশি আইপিও আবেদন নেই। একটি ইন্সুরেন্স কোম্পানি ও একটি কর্পোরেট গ্রুপের আইপিও আবেদন আছে।তবে আমাদের সাথে যারা যোগাযোগ করছে, তারা আগে আসার চিন্তা করেনি কিন্ত এখন আসার চিন্তা করছে। তারা তাদের একাউন্টস তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা চাই একজন বিনিয়োগকারী তার সঠিক জ্ঞানের মাধ্যমে বিনিয়োগ করবে। যার মাধ্যমে সে তার কষ্টের অর্থের ভালো রিটার্ন অর্জন করবে। আর বিনিয়োগকারীদের এই জ্ঞান অর্জনের জন্য আমরা শেয়ারবাজার নিয়ে ট্রেনিং প্রোগ্রাম করি। এছাড়া যারা বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেইসব ডিলারদেরও শিক্ষার দরকার আছে।

একটা বেকার ছেলেকে এনে ডিলার হিসেবে চাকরী দিয়ে দিলেই হবে না উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ডিলারদেরকে ট্রেনিং দিতে হবে। তা না হলে সেতো ঠিকমতো কাজ করতে পারবে না। এছাড়া তারা ভুলের কারনে বাজার ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। সে না বুঝে বিনিয়োগকারীদেরকে এমন একটা জিনিস বলল, যা মুহূর্তেই বাজারে প্যানিক তৈরী করতে পারে। তাই ডিলারদেরকেও শিক্ষা অর্জন করতে হবে। এসব কথা মনে রেখেই একাডেমি ফর সিকিউরিটিজ মার্কেট প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বলে জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, আজকে আমাদের এই একাডেমির অফিসটি উদ্বোধন করা হল। এখানে জনবল নিয়োগ হয়েছে এবং চলছে। ভালো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে স্থায়ী নিয়োগের পাশাপাশি অভিজ্ঞদের এনে ট্রেনিং দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রথম দফায় আমরা অথোরাইজড ডিলারদেরকে ট্রেনিং দেওয়ার প্রোগ্রাম হাতে নিয়েছি।

তিনি বলেন, এক বছর আগে ক্যাপিটাল মার্কেটের যে লক্ষ্য নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলাম, তা গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে। তবে মূল লক্ষ্যের অনেক কিছুই অর্জন করতে পারি নাই, আমরা করার চেষ্টা করছি। সামনের দিনগুলোতে আমাদের লক্ষ্য প্রস্তুত করা আছে, আমরা সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।

একটি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী ছাড়া কোন দেশ উন্নতি করতে পারে না জানিয়ে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত ইসলাম বলেন, যার একটা প্রকৃত উদাহরণ হচ্ছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কাকে যখন উপনিবেশিকরা শাসন করেছে, তখন থেকেই তাদের লিটারেসি ৯০ শতাংশের উপরে। শুরু থেকেই তারা উন্নত জীবনযাপন করে আসছিল। মাঝখানে তারা কিছুটা পিছন দিকে চলে যায়। তা না হলে তারা অনেক উপরের দিকে থাকত।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা মার্কেট এস্টাবিলাইজেশন ফান্ডের টাকা কিছুদিন পরে মার্জিণ লোন হিসেবে দিয়ে দিবো। যখন ৫০০ হাজার কোটি টাকা মার্জিন লোনে আসা শুরু করবে তখন আমরা মার্চেন্ট ব্যাংকে লোন দিবো ৫ থেকে ৬ শতাংশ সুদ হারে। তখন তারা ৮ বা ৯ শতাংশ হারে বিনিয়োগকারীদের দিতে পারবে। এর ফলে মার্জিণ লোনে সুদহার কমে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে যদি লোন নেয় সেক্ষেত্রে অধিকাংশ ব্যাংকের লোনের সুদহার হচ্ছে ৯ শতাংশ। যদি ব্যাংকের লোনের সাথে ৩ শতাংশ স্প্রেড নেয় তখন মোট ১২ শতাংশ হয়ে থাকে। আর আমরা সেই ১২ শতাংশই বেধে দিয়েছি। লোনের সুদ হার খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই এটির দিকে খুব ভালো করে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা এখানেও একটা পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমরা নতুন ট্রেক দিয়েছি। আর এই নতুন ট্র্রেক দেওয়ার মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাজারে প্রতিযোগীতা তৈরি করা।আমরা এই ট্রেক গুলোকে বলেছি তাদের নিজস্ব ওএমএস নিয়ে আসতে এবং তাদের মূল ফান্ডের ব্যাবস্থা করতে। এখন কিন্ত দেশ বিদেশে ৪ থেকে ৬ শতাংশের ফান্ড পাওয়া যায়।তবে আমরা যে বর্তমানে ১২ শতাংশ সুদহার নির্ধারণ করেছি ভবিষ্যতে এটিও রাখবো না। মার্চেন্ট ব্যাংক ও গ্রাহকের রিলেশনের উপর ফ্রি করে দিবো। আমরা এখন ফ্রি প্রতিযোগীতামূলক বাজার তৈরি করে দিচ্ছি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

ফু-ওয়াং সিরামিকের লভ্যাংশ অনুমোদন
এক বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা
ডিএসইতে মোবাইল গ্রাহক-লেনদেন দুটোই কমেছে
বছরজুড়ে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অনুমোদন পেয়েছে ৯ কোম্পানি
পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ আজ
বছরের ব্যবধানে পুঁজিবাজারে লেনদেন বেড়েছে ৪০ শতাংশ
রবিবার পুঁজিবাজার বন্ধ থাকলেও চলবে দাপ্তরিক কার্যক্রম
লোকসানে ৮ খাতের বিনিয়োগকারীরা
সাপ্তাহিক রিটার্নে মুনাফায় ১০ খাতের বিনিয়োগকারীরা
খাতভিত্তিক লেনদেনের শীর্ষে প্রকৌশল খাত