রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকার প্রধানের সন্দেহ প্রকাশ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের জান্তা সরকার প্রধানের সন্দেহ প্রকাশ
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় রোহিঙ্গারা। এসব রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে হয়েছে অনেক আলোচনা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে এ প্রক্রিয়া অনেকটা থমকে যায়। এবার রোহিঙ্গাদের ফেরার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন দেশটির সামরিক জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লেইং।

সোমবার (২৪ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।

গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকার উৎখাতের পর ক্ষমতায় আসা এই জান্তা প্রধান প্রথমবারের মতো রোববার (২৩ মে) চীনা ভাষার ফোয়েনিক্স টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গাদের ফেরা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

রোহিঙ্গা মুসলিমদের রাখাইন রাজ্যে ফেরার অনুমতি দেওয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মিন অং হ্লেইং ফোয়েনিক্স টেলিভিশনে নিজের সন্দেহের কথা জানান।

তিনি বলেন, এটা যদি মিয়ানমারের আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হয়, তাহলে বিবেচনা করার কী আছে? আমি বিশ্বাস করি না যে বিশ্বে এমন কোনো দেশ আছে যারা শরণার্থীদের গ্রহণের জন্য নিজের দেশের আইনের বাইরে যেতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে মিয়ানমারের স্বাধীনতা লাভের পর ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটির উৎপত্তি হয়।

মিন অং হ্লেইং বলেন, আমাদের স্বাধীনতা লাভের পর আদমশুমারিতে ‘বাঙালি’, ‘পাকিস্তানি’ এবং ‘চট্টগ্রাম’ শব্দগুলোও নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু কখনই ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি। আমরা এই শব্দটিকে গ্রহণ করিনি।

অভ্যুত্থানের পরপরই মিন অং হ্লেইং বলেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। কিন্তু মিয়ানমার সেনাপ্রধানের এই ঘোষণার পরও রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে কোনো ধরনের অগ্রগতির লক্ষণ এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। যদিও অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়ার পর দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে সামরিক জান্তা সরকারকে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর রক্তাক্ত অভিযানের মুখে রাখাইন থেকে মুসলিম রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। সেসময় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান ছিলেন মিন অং হ্লেইং। বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের অনেকে রোহিঙ্গাদের জাতিগত গোষ্ঠী হিসেবে স্বীকার করেন না।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মিয়ানমারের প্রধানমন্ত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিন অং হ্লেইংয়ের সামরিক বাহিনী। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যখন গণহত্যা চালানো হয় সেই সময় অং সান সু চিও সেনাবাহিনীর পক্ষে সাফাই গেয়েছিলেন।

বর্তমানে সব মিলিয়ে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে নোয়াখালীর ভাসানচর এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে। আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরাতে কয়েক দফা আলোচনা এবং দুবার প্রত্যাবাসনের তারিখও ঠিক হয়। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের অনীহায় তা ভেস্তে যায়।

আর এখন করোনা পরিস্থিতি ও মিয়ানমারে জান্তা সরকার ক্ষমতায় আসার পর আন্দোলনের কারণে প্রত্যাবাসন নিয়ে নেই কোনো আলোচনা। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েরও নেই কোনো উদ্যোগ। তবে রয়টার্স জানিয়েছে, চীনের সহায়তায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের মধ্যে পুনরায় আলোচনা শুরু প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া