রোববার (২৩ মে) পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশের পাসপোর্টেই ইসরায়েল ভ্রমণ করা যাবে না বলে উল্লেখ রয়েছে। অন্য দেশগুলোর ই-পাসপোর্ট মানের সঙ্গে সাদৃশ্য আনতে কয়েক মাস আগে ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ভ্রমণ করা যাবে না’ বাক্যটি বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ওই বাক্য বাদ দেওয়ার অর্থ ইসরায়েলকে স্বীকৃতি বা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন নয় বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলকে আমরা স্বীকৃতি দিইনি, দেব না।’
এদিকে বাংলাদেশের ই-পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি উল্লেখ না থাকাকে স্বাগত জানিয়ে টুইট বার্তা দিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপিত হচ্ছে বা বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়ে ইসরায়েলে যাওয়া যাবে—বিভিন্ন মহলের এমন জল্পনাকল্পনাও শুরু হয়েছে।
এ অবস্থায় ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকাল বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাংলাদেশের নতুন ই-পাসপোর্টে ‘ইসরায়েল ছাড়া সব দেশ’ লেখা না থাকায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশি ই-পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে গিয়ে ওই লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। এটি মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে বাংলাদেশের নীতিগত কোনো পরিবর্তনের প্রতিফলন নয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে, বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ইসরায়েলে যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা অপরিবর্তিত থাকছে। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েল বিষয়ে তার অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়নি, বরং এ বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে অনুসৃত জোরালো অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার বিবৃতিতে ইসরায়েলি বাহিনীকে ‘দখলদার’ হিসেবে উল্লেখ করে আল-আকসা মসজিদ চত্বর ও গাজায় বেসামরিক জনগণের ওপর সাম্প্রতিক নৃশংসতার নিন্দা জানিয়েছে। মন্ত্রণালয় আরো বলেছে, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৬৭ সালের আগের সীমান্ত অনুযায়ী ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান এবং পূর্ব জেরুজালেম ফিলিস্তিনের রাজধানী—এ ব্যাপারে বাংলাদেশ তার নীতিগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল ১৯৭১ সালেই বাংলাদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করে বার্তা পাঠিয়েছিল; কিন্তু বাংলাদেশ ওই বার্তা আমলে নেয়নি, প্রাপ্তি স্বীকারও করেনি। ফিলিস্তিন-ইসরায়েল ইস্যুতে বাংলাদেশ সুস্পষ্টভাবেই ফিলিস্তিনের পক্ষে। বাংলাদেশ ইসরায়েলকে দখলদার শক্তি বলে মনে করে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনের জনগণ, গণমাধ্যম বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণ ফিলিস্তিনের পক্ষে ও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে।