চাকরি হারিয়ে দিনমজুর হয়েছেন ২০ শতাংশ পোশাকশ্রমিক

চাকরি হারিয়ে দিনমজুর হয়েছেন ২০ শতাংশ পোশাকশ্রমিক
করোনার প্রথম ধাক্কায় গত বছরের এপ্রিল-মে মাসে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেসব পোশাকশ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করেছেন। কারখানা বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শ্রমিকদের মাত্র ১৫ শতাংশ কোনো না কোনো কাজ পেয়েছেন।চাকরি হারানো শ্রমিকদের মধ্যে যাঁরা নিজেদের কারখানায় কাজ ফিরে পাননি, তাঁদের ২০ শতাংশ দিনমজুরের কাজ করেন।

শনিবার (৮ মে) বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও সজাগ কোয়ালিশনের যৌথভাবে আয়োজিত ‘করোনায় তৈরি পোশাক খাতের করপোরেট জবাবদিহিতা’ শীর্ষক এক সংলাপে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। একটি সমীক্ষার ভিত্তিতে মূল প্রবন্ধটি তৈরি করা হয়।

অন্যদিকে ২০ শতাংশের মতো শ্রমিক কাজ করছেন অনানুষ্ঠানিক খাতে। আরও ২০ শতাংশ শ্রমিক পোশাক খাতের বাইরে বিভিন্ন কারখানায় কাজ নিয়েছেন। নিজেরাই কিছু করার চেষ্টা করেছেন, এমন শ্রমিক প্রায় ২৭ শতাংশ। মাত্র ৬ দশমিক ৭ শতাংশ শ্রমিক তৈরি পোশাক খাতেই কাজ ফিরে পেয়েছেন। বাকি কয়েক শতাংশ অন্যান্য খাতে গেছেন।

এতে আরও বলা হয়, নতুন কাজে শ্রমিকদের আয় কমে গেছে। আগে যেখানে শ্রমিকেরা মাসে ৮ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করতেন, সেখানে চাকরি হারানোর পর নতুন কাজে তাঁরা এখন মাসে গড়ে সাত হাজার টাকা আয় করেন। তা ছাড়া চাকরি হারানোর সময়ে অনেকেই তাঁদের পাওনা পাননি।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। ১০২ জন গার্মেন্টস মালিক, ৩০১ জন পোশাকশ্রমিক ও ১০০ জন বেকার পোশাকশ্রমিকের ওপর এই সমীক্ষা করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, শ্রমিকদের পাওনা দিতে হবে। এ জন্য মালিকপক্ষের দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। শ্রমিকশ্রেণির প্রাপ্য পরিশোধে মালিকেরা যেন নজর দেন। শ্রমিকনেতাদেরও শুধু শ্রমিকস্বার্থ নয়, মালিকদের যৌক্তিক পরিস্থিতিও বিবেচনা করতে হবে। টিপু মুনশি আরও বলেন, গত বছর বিদেশি ক্রেতারা যে পোশাক ১৫ ডলারে কিনত, সেই পোশাক এখন ১২ ডলার দিতে চাচ্ছে। তাই ক্রেতাদের কাছ থেকে উপযুক্ত দাম পাওয়ার বিষয়ে আওয়াজ তুলতে হবে।

পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, করোনার কারণে বিদেশি ক্রেতাদের অনেকে ব্যাংকে ঋণখেলাপি হয়ে গেছে। তাই দামও পড়ে গেছে। এ ছাড়া ২০১৫ সালের পর পোশাকের বৈশ্বিক বাজার বাড়েনি। করপোরেট সুশাসন জোরদারের আশ্বাস দিয়ে তিনি বলেন, ‘আট বছর পর বিজিএমইএর নির্বাচন হয়েছে। এবার নতুন প্রজন্মের অনেক প্রতিনিধি কমিটিতে এসেছে। তাদের নিয়ে করপোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেব।’

বিজিএমইএর পরিচালক আবদুল্লাহ হিল রাকিব মনে করেন, করোনার সময়ে বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদার কথাও বিবেচনা করতে হবে। তাদেরও বিক্রি নেই। তারা এত পোশাক নিয়ে কোথায় রাখবে? তাই উভয় পক্ষের কথা চিন্তা করতে হবে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ