আন্তর্জাতিক
মুখ্যমন্ত্রী পদে টানা তৃতীয় দফায় মমতার শপথগ্রহণ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয়বারের মতো শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার (৫ মে) স্থানীয় সময় সকাল পৌনে ১১টায় কলকাতার রাজভবনে শপথ নেন তিনি। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় মমতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ পাঠ করান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বুধবার স্থানীয় সময় সকাল সোয়া দশটার দিকে তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে কলকাতায় নিজের কালীঘাটের বাড়ি থেকে বের হন মমতা। বরাবরের মতো এসময় তিনি সাদা শাড়ি এবং হাওয়াই চপল পরে ছিলেন। পরে সাড়ে ১০টার দিকে তিনি রাজভবনে পৌঁছে যান। সেখানেই মমতাকে শপথ বাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
Mamata Banerjee takes oath as the Chief Minister of #WestBengal for a third consecutive term. She was administered the oath by Governor Jagdeep Dhankhar. pic.twitter.com/IXy05xNZPZ
— ANI (@ANI) May 5, 2021
গত ২৭ মার্চ থেকে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আট দফায় পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ২৯৪টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জয়ী হয়েছে ২১৩টি আসনে। বিজেপি জয় পেয়েছে ৭৭টিতে।

করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০১১ ও ২০১৬ সালের মতো এবার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান বড় আয়োজন করা হয়নি। ২০১১ সালে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রীর শপথ গ্রহণের সময় এসেছিলেন তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। রাজভবনের ভেতরে বিরাট মঞ্চ তৈরি করে বিশাল জনসমাগমের মাধ্যমে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হয়েছিল।
দ্বিতীয়বার মমতার শপথ হয়েছিল রেড রোডে। সেবার আবার দেশের বিজেপি বিরোধী সব নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোভিড সংক্রমণের কারণে বিশাল জয়লাভের পরও বিশাল আয়োজনের ব্যাপারে সব পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে।
২০১১ সালের মতোই এবারও বিধায়ক না হয়েই মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন মমতা। কারণ, নন্দীগ্রাম থেকে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছেন তিনি। যদিও, সেই ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আন্তর্জাতিক
পিওন পদে চাকরির জন্য মন্ত্রীর ছেলের আবেদন

বাবা একটি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। সেই হিসেবে একাধিক সুবিধা পাওয়ার সুযোগ রয়েছে ছেলের। আর সেই সঙ্গে রয়েছে রাজনীতির পথে চলার সুযোগ। কিন্তু বাবার দেখানো পথে হাঁটতে রাজি নন ছেলে। তাই রাজনীতিকে দূরে সরিয়ে পরিবারের বিরোধিতা সত্ত্বেও পিওনের চাকরির জন্য আবেদন করলেন মন্ত্রীর ছেলে। শেষ পর্যন্ত তিনি চাকরিতে নির্বাচিত হয়েছেন।
এমন ঘটনা প্রতিবেশী দেশ ভারতের ঝাড়খণ্ড প্রদেশে ঘটেছে। রাজ্যের শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রী তথা আরজেডি বিধায়ক সত্যানন্দ ভোক্তার ছেলে মুকেশ কুমার পিওনের চাকরিতে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়টি প্রকাশে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। আর সেই সঙ্গে জোর চর্চা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
জানা গেছে, চাতরা সিভিল কোর্টে পিওনের চাকরির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি পরীক্ষাও দিয়েছিলেন। পরীক্ষায় পাশ করার পর ইন্টারভিউতেও টিকেছেন মুকেশ কুমার। তাঁকে এই পদে নিয়োগের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এই পদে মোট ১৯ জনকে নিয়োগ করা হবে তার মধ্যে ১৩ নম্বরে রয়েছেন মুকেশ। এসটি কোটায় তিনি এই পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। মন্ত্রীর ছেলে ছাড়াও এই পদে আবেদন করেছিলেন তাঁর ভাগ্নে রামদেব ভোক্তা। অপেক্ষমাণ তালিকায় রয়েছে তার নাম। নির্বাচিত ১৯ জনের মধ্যে কেউ যোগ না দিলে অপেক্ষমাণ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত প্রার্থীরা তাদের জায়গায় সুযোগ পাবেন।
চাকরির ব্যাপারে যা বলছেন মন্ত্রীপুত্র
মুকেশ বলেন, ‘পিওনের চাকরি নিতে দোষের কিছু নেই। যোগদানের তারিখ জানানো হলে আমি চাকরিটি গ্রহণ করব।’

উল্লেখ্য, মুকেশ কলা বিভাগের স্নাতক। গত বছর মুকেশ ভোক্তার ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন নিজেই।
এদিকে মন্ত্রীর ছেলের চতুর্থ শ্রেণির পদে চাকরি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে জোর চর্চা। সত্যানন্দ ভোক্তা চাতরা বিধানসভা আসনের আরজেডি বিধায়ক। ২০১৯ সালে রাজ্যের হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারে তাঁকে এই বিভাগের মন্ত্রী করা হয়েছিল। ভোক্তা এখনও পর্যন্ত তিনবার বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন এবং তৃতীয়বার মন্ত্রীও হয়েছেন। আরজেডির আগে তিনি বিজেপি এবং ঝাড়খণ্ড বিকাশ মোর্চাতে ছিলেন।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে ইতিহাসে সর্বোচ্চ সোনার দাম

বিশ্ববাজারে সোনার মূল্যবৃদ্ধির জেরে ভারতের বাজারেও সোনার দাম বাড়ছে। দেশটির বাজারে ১০ গ্রাম সোনার দাম ৬৪ হাজার রুপি ছাড়িয়েছে। এতে বিয়ের মৌসুমে গয়নার কেনাকাটা কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, ভারতের বাজারে ৯৯৯ মাত্রার বিশুদ্ধ সোনার দাম আরও বেশি। করসহ প্রতি ১০ গ্রাম এই সোনার দাম ৬৭ হাজার ৫০০ রুপিতে উঠেছে। এটি ভারতের বাজারে এযাবৎকাল সোনার সর্বোচ্চ দাম।
গতকাল সোমবার বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ২ হাজার ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। এ নিয়ে টানা তিন দিন সোনার দাম বাড়ল। মূল্যবৃদ্ধির পেছনে লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও কিছু বাণিজ্যিক জাহাজে হামলার প্রভাব আছে। গতকাল বিকেল থেকে অবশ্য বিশ্ববাজারে সোনার দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সোনার দাম প্রতি আউন্স ২ হাজার ৩৬ ডলারে নেমে এসেছে।
ইন্ডিয়ান বুলিয়ন অ্যান্ড জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুরেন্দ্র মেহতা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, বিশ্ববাজারে সোনার মূল্যবৃদ্ধিতে ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার প্রভাব আছে। দুই মাস আগে যেখানে বিশ্ববাজারে সোনার দাম ছিল আউন্সপ্রতি ১ হাজার ৮২০ ডলার গতকাল তা প্রায় ২ হাজার ১৫০ ডলারে উঠে যায়। এই মূল্য সংশোধন হওয়া জরুরি। সোনার দাম বাড়তে কেবল কিছু খবর প্রয়োজন।
অল ইন্ডিয়া জেমস অ্যান্ড জুয়েলারি ডমেস্টিক কাউন্সিলের সাবেক পরিচালক অবিনাশ গুপ্ত বলেছেন, মৌলিক কারণে এই মূল্যবৃদ্ধি হয়নি। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ প্রত্যাশিত সময়ের আগেই নীতি সুদহার হ্রাস করবে, এই ধারণার কারণে সোনার দাম বাড়ছে।

বিয়ের মৌসুমের ঠিক শুরুতে গয়নার মূল্যবৃদ্ধির কারণে কপালে হাত চাপড়াচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকে। ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর, গয়নার বড়-ছোট সব দোকানেই বিক্রি কমেছে, বিশেষ করে ছোটা দোকানগুলোর বেচাকেনা তলানিতে ঠেকেছে। ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় কারিগরদের আয়-রোজগারও কমছে।
জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডমেস্টিক কাউন্সিলের পরিচালক সমর দে এবং সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের এমডি শুভংকর সেনের শঙ্কা, সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। তাঁদের বক্তব্য, বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছে, সঙ্গে চিন্তা বাড়ছে ভারতে। ২৪ ক্যারেটের সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রাম ৭০ হাজারে উঠলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। সে ক্ষেত্রে হলমার্ক করা গয়নার সোনার দাম আরও বেড়ে যেতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে ভারতের বড় বড় সোনার দোকানগুলো নতুন কৌশল নেওয়ার কথা ভাবছে। তারা এখন কম ওজনের গয়না তৈরিতে ঝুঁকবে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা গেছে।
চলতি বিয়ের মৌসুমে ভারতে প্রায় ৩৮ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠান হতে পারে। তাতে পণ্য, সেবাসহ মোট ৪ দশমিক ৭৪ লাখ কোটি রুপির ব্যবসা হবে বলে ধারণা। সেটা হলে গত বছরের তুলনায় বিয়ের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি হবে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। গত বছর সাড়ে ৩৭ লাখ বিয়ের অনুষ্ঠানে প্রায় ৩ দশমিক ৭৫ লাখ কোটি রুপির ব্যবসা হয়েছে।
দ্য কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি) ধারণা করছে, এবারের বিয়ের মৌসুমে শাড়ি ও কাপড়ে ১০ শতাংশ, গয়না ও অন্যান্য খাতে ১৫ শতাংশ, ইলেকট্রনিকস, ইলেকট্রিক্যাল ও দীর্ঘস্থায়ী পণ্যে ৫ শতাংশ, খাদ্যশস্য, মুদিপণ্য, সবজিতে ৫ শতাংশ, উপহারসামগ্রীতে ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য খাতে ৬ শতাংশ অর্থ খরচ হবে।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
চীনে বাড়ছে খেলাপি ঋণ

খেলাপি ঋণ যে কোনো দেশের অর্থনীতির জন্য খাঁড়ার ঘা সরূপ। করোনাভাইরাস মহামারীর পর থেকে চীনে খেলাপিঋণ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। এটা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে সংকটে ফেলেছে। একই সঙ্গে মহামারীর পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।
চীনের স্থানীয় আদালতের তথ্যানুসারে, মোট ৮৫ লাখ ৪ হাজার লোক বাড়ি বন্ধক থেকে ব্যবসায়িক ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে এদের কালো তালিকাভুক্ত করেছে।
চীনা আইনে কালোতালিকাভুক্ত খেলাপিদের বিভিন্ন অর্থনৈতিক কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বিমানের টিকিট না কিনতে পারা এবং মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করতে না দেয়া।
একজন ঋণগ্রহীতার বিরুদ্ধে ঋণদাতা মামলা করলে এবং পরবর্তীকালে কিস্তি পরিশোধ না করলে তাকে কালো তালিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
চায়না মার্চেন্টস ব্যাংক এ মাসে জানায়, ক্রেডিট কার্ডের পেমেন্টজনিত ব্যাড লোন (৯০ দিনের বেশি বকেয়া) ২০২২ সালে আগের বছরের তুলনায় ২৬ শতাংশ বেড়েছে।

সাংহাইভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান চায়না ইনডেক্স একাডেমির প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথম নয় মাসে চীনে ৫ লাখ ৮৪ হাজার ফোরক্লোজার (বন্ধকি সম্পত্তি দখল নেয়ার পদক্ষেপ) চিহ্নিত হয়েছে। এটা এক বছর আগের তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেশি।
এদিকে আইন বিশেষজ্ঞরা ব্যক্তিগত দেউলিয়াত্বের ক্ষেত্রে ঋণ মওকুফসহ ব্যক্তিগত দেউলিয়া আইন প্রবর্তনের প্রস্তাব করেছেন।
অর্থসংবাদ/এমআই
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
ঘুরে দাঁড়াবে বিশ্ব অর্থনীতি

২০২৪ সালে বৈশ্বিক অর্থনীতি মন্থর থাকবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ক্রমাগতভাবে চাপ তৈরি করবে। চলতি বছর বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করলেও আগামীতে তা থাকবে না। আগামী বছর বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে অর্থনীতিবিদরা আশা প্রকাশ করেছেন।
আগামী বছর সুদহার কমতে শুরু করবে, যা প্রবৃদ্ধিকে গতিশীল করবে। নতুন পুঁজি বিনিয়োগে আস্থা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বৈশ্বিক ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়তে থাকবে। অর্থনীতিবিদরা জানান, এর কারণ চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
ওয়াশিংটনভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক গত অক্টোবরে সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল চলতি বছর বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ আশা করছে। এটা ২০২২ সালের ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সম্প্রসারণের চেয়ে ধীর। একই সঙ্গে এটা গড় প্রবৃদ্ধির চেয়েও কম।
আগামী বছরের জন্য আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, বৈশ্বিক জিডিপি ২ দশমিক ৯ শতাংশ প্রসারিত হবে, যা জুলাইয়ের পূর্বাভাস থেকে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ পয়েন্ট কম।
আইএমএফ জানায়, প্রবৃদ্ধি ধীর ও অসম থাকবে। বিশেষ করে উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোয়। উচ্চ সুদহার এবং ক্রমাগত উচ্চ মূল্যস্ফীতি বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ চলতি মাসে একটি বিবৃতিতে জানায়, এ মাসে সুদহার নতুন করে বৃদ্ধি করেনি ফেড। গত বছরের মার্চ থেকে ১১ বার সুদহার বাড়ানোর পর এটা একটা বিরতি। মূল্যস্ফীতি রোধ করার কৌশল হিসেবে সুদহার বৃদ্ধি ২০২২ সালের জুনে চার দশকের উচ্চতায় পৌঁছেছিল। সুদহার এখন ৫ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২২ বছরের সর্বোচ্চ। এটা গত বছরের মার্চে শূন্যের কাছাকাছি ছিল। দ্বিতীয়বারের মতো ফেড ৫ দশমিক ২৫ থেকে ৫ দশমিক ৫০ শতাংশের মধ্যে সুদহার অপরিবর্তিত রেখেছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি অব্যাহত। দেশটিতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম তৃতীয় প্রান্তিকে দ্রুতগতিতে প্রসারিত হয়েছে। চাকরির বাজার এখনো শক্তিশালী। মূল্যস্ফীতি গত বছরের ৫ দশমিক ৬ থেকে বর্তমানে ৩ দশমিক ৭ শতাংশে নামিয়ে আনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থা রকফেলার ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান রুচির শর্মা বলেন, বৈশ্বিক অর্থনীতি আগামী বছর ধীরগতিতে বাড়বে। ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা থাকবে। মন্দা হওয়ার আশঙ্কা নেই। উচ্চ সুদহারের প্রভাব বজায় থাকবে। তবে বড় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হবে না।
চারটি গ্রন্থের লেখক রুচির শর্মা জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে গড়ে বিশ্ব অর্থনীতি প্রায় ৪ শতাংশ বেড়েছিল। ২০০৮ সালে আর্থিক সংকটের সময় প্রায় ২ দশমিক ৫ শতাংশে নেমে আসে। কারণ ঋণ খুব বেশি বেড়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, আমি সে সময়টি দেখেছি। দুটোর মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে বৈশ্বিক আর্থিক সংকটের পরে এখন মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেশি।
বাহরাইনভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টকর্পের নির্বাহী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলারধি বলেন, আমি ২০২৪ সালের জন্য আশাবাদী। আমি মনে করি, আগামী বছর আমরা সুদহার কমতে দেখব। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসতে দেখব। বিনিয়োগকারীরা অর্থ বিনিয়োগে আত্মবিশ্বাসী হতে শুরু করবে। এরই মধ্যে আমরা আর্থিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোর সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখেছি।
অর্থসংবাদে প্রকাশিত কোনো সংবাদ বা কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
আন্তর্জাতিক
বিশ্ববাজারে ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা

বিশ্ববাজারে ইতিহাসে সর্বোচ্চ বেড়েছে মূল্যবান ধাতু সোনার দাম। এ বছর দ্বিতীয়বারের মতো পূর্বের রেকর্ড ভেঙেছে সোনা। অন্য যেকোনো কিছুর তুলনায় সোনা সুরক্ষিত হওয়ায় এটির প্রতি ঝুঁকেছেন বিনিয়োগকারীরা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান সোমবার (৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এদিন প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়ে ২ হাজার ১১১ ডলার হয়। এরমাধ্যমে গত শুক্রবার হওয়া নতুন রেকর্ডটিও ভেঙে গেছে।
২০২০ সালের আগস্টে একবার সোনার বাজার এমন চড়া হয়েছিল। তখন তৈরি হয়েছিল নতুন রেকর্ড। তবে সেবার সোনার দাম যা হয়েছিল সেটি থেকে নতুন দামে অনেক পার্থক্য রয়েছে।
সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস অবশ্য জানিয়েছে, সর্বোচ্চ দাম স্পর্শ করার পর এটি ২ হাজার ৬৪ ডলার প্রতি আউন্সে নেমে আসে।
বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডসহ আগামী বছর বিশ্বের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ঋণের সুদহার কমাবে। আর এই আশা থেকেই বেড়েছে সোনার দাম। সোনার মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দুর্বল হয়েছে ডলারের দাম।

মার্কিন-ব্রিটিশ অর্থনৈতিক তথ্য প্রদানকারী সংস্থা রিফিনিটিভ জানিয়েছে, এ বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের শুরুর সপ্তাহ পর্যন্ত দ্রুত গতিতে সোনার দাম বেড়েছে। অক্টোবরে যেখানে প্রতি আউন্স সোনার দাম ছিল ১ হাজার ৮২০ ডলার। সেখানে ডিসেম্বরে এসে এটি ২ হাজার ১১১ ডলার স্পর্শ করেছে। যদিও দাম আবার কিছুটা কমে গেছে।
সোনার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ক্রিপ্টো কারেন্সির দামও। সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, বিটকয়েনের দাম এ বছর প্রথমবারের মতো ৪০ হাজার ডলার পার করেছে। এদিন বিটকয়েন ৪২ হাজার ডলারে লেনদেন হয়েছে।