ভুয়া বিয়ের ফাঁদে তরুণী: পুলিশের হস্তক্ষেপে সমাধান

ভুয়া বিয়ের ফাঁদে তরুণী: পুলিশের হস্তক্ষেপে সমাধান
কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণী ভুয়া বিয়ের ফাঁদে পড়েন। পরবর্তীতে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই তরুণী একাধিকবার আত্মহত্যার সিদ্ধান্তও নেয়। পরে তাঁর বড় বোন পুলিশের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজের ইনবক্সে বিষয়টি জানায়। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে মেয়েটির আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়।

শনিবার (১ মে) পুলিশের ভেরিফায়েড পেইজে এক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি জানানো হয়।

ওই স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘‘মেয়েটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। পড়াশুনার এক পর্যায়ে এক ব্যক্তির সাথে সে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। লোকটির পরিবারের আর্থিক অবস্থা বেশ ভাল। মেয়েটির পরিবারও শিক্ষিত। মধ্যবিত্ত পরিবার। সম্পর্কের এক পর্যায়ে সেই ব্যক্তির কয়েকজন বন্ধুর উপস্থিতিতে তারা বিয়ে করে ফেলে একদিন। কোনো স্বাভাবিক ও গ্রহন‌যোগ্য বিয়ে ছিল না এটা। কোত্থেকে এক মৌলভী এনে তার মাধ্যমে বিয়ে পড়ানো হয়। মেয়েটিকে বোঝানো হয়। ধর্মমতে এটাই বিয়ে। মেয়েটিও লোকটিকে বিশ্বাস করে। তারা মিশতে থাকে।

লোকটির চলাফেরায় এক পর্যায়ে মেয়েটির সন্দেহ হয়। অন্য একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে লোকটি। মেয়েটি চ্যালেঞ্জ করে। মেয়েটিকে অস্বীকার করে লোকটি। একপর্যা‌য়ে, তাকে ভালোয় ভালোয় সরে যেতে বলে। মেয়েটি লোকিটর পরিবারের কাছে যায়। খুলে বলে সব কথা। কেউ তাকে পাত্তা দেয় না। কোনো প্রমানও নেই তার কাছে। মানসিকভাবে ভীষন ভেঙে পড়ে মেয়েটি। সে তার বড় বোনের কাছেও সব খুলে বলে; আগে জানায়নি কাউকে। মে‌য়ে‌টির বড় বোন কাছাকাছি বয়সের, পিঠেপিঠি।

প্রতিদিন মানসিকভাবে আরো বেশি করে ভেঙে পড়ছিল মেয়েটি। আত্মহত্যার উদ্যোগ নিয়েছে কয়েকবার। বড় বোনটি প্রবলভাবে তার পাশে দাঁড়ায়। একপর্যায়ে বড়বোনটি বাংলাদেশ পুলিশ অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজের ইনবক্সে তার ছোটো বোনের জন্য সহযোগিতা চেয়ে বার্তা প্রেরণ করে। মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স সেই বার্তা পেয়ে খিলগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফারুকুল আলমকে বার্তাটি প্রেরণ করে সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়।

মেয়েটি ও তার পরিবারকে সেদিনই থানায় ডাকেন ওসি। ছে‌লে‌টি ও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশি ও আইনি ঝামেলা এড়াতে লোকটির পরিবার ‌মে‌য়ের পরিবা‌রের সা‌থে যোগা‌যোগ ক‌রে। আনুষ্ঠানিক বিয়ে আয়োজনের প্রস্তাব দেয়। উভয় পক্ষের সম্মতিতে এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে কয়েক দিনের মধ্যেই একটি সম্মানজনক দেনমোহর ধার্য করে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

কিছুদিন পর ইনবক্সে আবারও বার্তা। মেয়েটির সাথে তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন ভাল আচরন করছে না। তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। এক পর্যায়ে তাকে শ্বশুরবাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। মেয়েটি তার শ্বশুড়বাড়ির সামনেই অবস্থান করছিল। স্থান ত্যাগ করেনি সে। বার্তাটি ওসি খিলগাঁওকে পাঠিয়ে পুনরায় এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।

ওসি খিলগাঁও ঘটনাস্থলে দ্রুত একটি মোবাইল টিম প্রেরণ করেন। মেয়েটিকে তার শ্বশুড়বাড়িতে তুলে দেয়া হয়। প‌রি‌স্থি‌তি আঁচ কর‌তে পে‌রে মেয়েটির স্বামী এবং অন্য অভিযুক্তরা বাড়ি ছেড়ে আগেই পালায়। মে‌য়ে‌টির নিরাপত্তার জন্য পু‌লি‌শের একটি মোবাইল টিম বাড়ির সামনে অবস্থান করে। মেয়েটির কাছ থেকে একটি অভিযোগ গ্রহন করা হয়। তাৎক্ষনিকভাবে আসামী গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।’’

এঘটনায় ভুক্তভোগী মেয়ের বড় বোন পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায়।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকা‌বিলায় র‌্যাব প্রস্তুত
নববর্ষের আনন্দ যেন বিষাদের কারণ না হয়
জানুয়ারি থেকে ১০ ডলার করে রেশন পবে রোহিঙ্গারা
নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা মনিটরিং সেল গঠন ইসির
ইনানী–সেন্টমার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু
খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের ২১ শতাংশ মানুষ
ভোটের দিন ঘিরে নাশকতার তথ্য নেই
নির্বাচন ঘিরে সেন্টমার্টিনের পর্যটন বন্ধ ৩ দিন
মেট্রোরেলে মাছ-মাংস-সবজি পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা
জলবায়ু পরিবর্তনে দেশে বেড়েছে বজ্রপাত-মৃত্যু