ঘুরে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি

ঘুরে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি
করোনার ক্ষত কাটিয়ে উঠতে অর্থনীতিতে বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্রুতগতিতে চলছে কভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম। পাশাপাশি শিথিল করা হয়েছে বিভিন্ন বিধিনিষেধও। ফলে দেশটিতে গতি ফিরেছে গ্রাহকব্যয় ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমে। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) দৃঢ়ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল মার্কিন অর্থনীতি। শিগগিরই বিশ্বের বৃহত্তম এ অর্থনীতি প্রাক-কভিড স্তরে ফেরার ইঙ্গিতও দেখা যাচ্ছে। আর চলতি বছর মার্কিন অর্থনীতিতে চার দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী কর্মক্ষমতার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। খবর ব্লুমবার্গ ও রয়টার্স।

মার্কিন অর্থনীতি বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় দ্রুত পুনরুদ্ধার হচ্ছে। ওয়াশিংটনের বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা প্যাকেজের পাশাপাশি মহামারী সম্পর্কে জনগণের উদ্বেগকে কমিয়ে দিয়েছে। ফলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে গেছে এবং রেস্তোরাঁ ও বারগুলো পুনরায় খুলে দেয়ায় পরিষেবা ব্যবসার সুযোগকে বাড়িয়ে তুলেছে। যদিও জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়কালে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রত্যাশিত হারটি ২০১৯ সালের শেষ দিকের প্রবৃদ্ধির চেয়ে কম রয়েছে। ব্লুমবার্গের সমীক্ষায় অর্থনীতিবিদরা প্রথম প্রান্তিকে মার্কিন জিডিপি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন। এ প্রবৃদ্ধির পেছনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছে ভোক্তাব্যয়ে বার্ষিক ১০ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। এটা ১৯৬০-এর দশকের পর থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গতি। অন্যদিকে রয়টার্সের সমীক্ষায় অর্থনীতিবিদরা ৬ দশমিক ১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন। এমনটা হলে এটা ২০০৩ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের পর দ্বিতীয় দ্রুততম জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে।

পৃথক দুই রাউন্ডে প্রণোদনা চেক ও বিপুল পরিমাণ সঞ্চয় অনেক গ্রাহককে জানুয়ারি থেকে মার্চ সময়কালে পণ্য ও পুনরায় চালু হওয়া পরিষেবায় অবাধে ব্যয় করতে সহায়তা করেছে। এরই মধ্যে ক্রমবর্ধমান টিকাদান কার্যক্রম মার্কিন অর্থনীতিকে সব ধরনের বিধিনিষেধের বাইরে বের হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বিনিয়োগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো শ্রমিক নিযুক্ত করার আত্মবিশ্বাস সরবরাহ করেছে।

এমন বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক তথ্য মার্কিন শেয়ারবাজারকে পুনরায় চাঙ্গা করে তুলেছে। ফলে এসঅ্যান্ডপি ৫০০ নতুন রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। একই সময়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় আরো বেশি সহায়তা দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। যদিও কংগ্রেসে এ নীতিগুলো কখন এবং কতটা পাস হতে পারে তা অস্পষ্ট।

ব্লুমবার্গের অর্থনীতিবিদ ইলেনা শুলেয়াতেভা ও এলিজা উইংগার বলেন, মহামারী শুরুর পর থেকে জমা হওয়া বিপুল পরিমাণ সঞ্চয় গ্রাহকব্যয় আরো শক্তিশালী করবে। যেমন আবাসন খাত ও ইকুইটি বাজার থেকে ধনীদের সম্পদ বেড়েছে। উভয় কারণেই অর্থনৈতিক উৎপাদনকে বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং এটা দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

স্থির ও শক্তিশালী আবাসন বাজার এবং ব্যবসায়িক বিনিয়োগও প্রথম প্রান্তিকের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। তবে উভয় খাতের নিট আয় কিছুটা কম থাকতে পারে। অন্যান্য ব্যবসায়িক অংশীদারের চেয়ে মার্কিন অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধার হওয়ায় আমদানির মূল্য রফতানিকে ছাড়িয়ে গেছে। এ সময়কালে উৎপাদন ও ব্যবসায়ীদের সরবরাহ চেইনে বাধা এবং শিপিংয়ের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে হয়েছে। ফলে আগামী প্রান্তিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আরো ভালো করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সব মার্কিন নাগরিকের জন্য কভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম সম্প্রসারণের কারণে এপ্রিলের শুরুতেও গ্রাহকদের আত্মবিশ্বাস ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে ছিল। এটি গ্রাহক চাহিদা বৃদ্ধিতে সহায়তা করছে। মহামারীর এ সময়ে মার্কিন নাগরিকরা কমপক্ষে ২ ট্রিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত সঞ্চয় করেছে। এর আগে গত বছর দেশটির অর্থনীতি ৩ দশমিক ৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল, যা ৭৪ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ কর্মক্ষমতা।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া