শেয়ারের দাম ৯০০ শতাংশ বাড়লেও বিক্রি করেননি ফাইজারের বিজ্ঞানী

শেয়ারের দাম ৯০০ শতাংশ বাড়লেও বিক্রি করেননি ফাইজারের বিজ্ঞানী
মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার ও জার্মান ফার্মা গ্রুপ বায়োএনটেকের তৈরি টিকার পেছনের গল্পটা এখন আমাদের অনেকরই জানা। জার্মান চিকিৎসক দম্পতি উগার শাহিন ও ওজলেম তুরেসির যৌথ গবেষণার সাফল্য এই টিকা। আশা করা হচ্ছে ২০২১ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বব্যাপী ফাইজারের ৩০০ কোটি ডোজ তৈরি ও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

উগার শাহিন হলেন বায়োএনটেকের সহপ্রতিষ্ঠাতা। গত বছরের শেষেই টিকা সরবরাহকারী ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলোর তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কার টিকা কে নেবে। এ প্রতিযোগিতায় টিকা প্রস্তুতকারী অনেক কোম্পানিরই শেয়ারের দর হু হু করে বাড়তে থাকে। কোম্পানির ভেতরের অনেকেই লাভের আশায় শেয়ার বিক্রি করতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।

যেমনটা করেছিলেন ফাইজারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) অ্যালবার্ট বোরলা। গত বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি যখন মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি ফাইজার ও বায়োএনটেকের পক্ষ থেকে কোভিড-১৯-এর টিকা ফাইজারের অগ্রগতির সুসংবাদ এল, সেদিনই নিজের কাছে থাকা ৬২ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করে দেন তিনি। তবে মজার তথ্য হচ্ছে, শেয়ারের দাম এত বাড়লেও এখন পর্যন্ত একটি শেয়ারও বিক্রি করেননি বায়োএনটেকের সহপ্রতিষ্ঠাতা উগার শাহিন।

১৯৬০-এর দশকের শেষদিকে তুরস্ক থেকে জার্মানিতে আসা এক অভিবাসীর সন্তান শাহিন উগার এখন জার্মানির অন্যতম ধনী ব্যক্তি। ৫৫ বছর বয়সী শাহিনের জন্ম তুরস্কের ইস্কেন্দেরুন শহরে। মাত্র চার বছর বয়সে ইস্কেন্দেরুন শহর থেকে অভিবাসী হিসেবে পরিবারের সঙ্গে জার্মানিতে আসেন তিনি। বাবা ফোর্ড গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে কোনো রকমে সংসার চালাতেন। ছোট থেকেই উগার শাহিনের ইচ্ছা ছিল চিকিৎসক হওয়ার।

নতুন অভিবাসী হিসেবে অনেক কষ্টে চিকিৎসক হলেন শেষ পর্যন্ত। দ্রুতই যোগ দিতে হয় কাজে। কিন্তু এতে থেমে থাকেননি তিনি। কর্মস্থল থেকেই ১৯৯৩ সালে প্রথম পিএইচডি করেন। সেখানেই পরিচয় হয় ওজলেম তুরেসির সঙ্গে। তারপর বিয়ে। দুজন মিলে গড়ে তোলেন বায়োএনটেক নামের একটি গবেষণাকেন্দ্র।
একেবারেই সাধারণ জীবনযাপন করেন এই উগার দম্পতি। অফিসের কাছে একটি সাধারণ অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন তাঁরা। নিজেদের কোনো গাড়িও নেই। সাইকেল চালিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য বরং এলাকার অন্যতম পরিচিত মুখ শাহিন। অথচ বর্তমানে তার কোম্পানির বাজারমূল্য ৩৬ বিলিয়ন ডলার।

ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের জানুয়ারিতেই যে বিশ্বব্যাপী মারাত্মক এই ভাইরাসের সংক্রমণ হবে এমন বিশ্বাস খুব দ্রুতই জন্ম নেয় উগার শাহিনের মনে। সংক্রামক রোগ থেকে রক্ষা করে এমন সুরক্ষা ব্যবস্থা ও এমআরএনএ পদ্ধতি নিয়ে তাঁর অনেক বছরের অভিজ্ঞতা তাঁকে করোনভাইরাসের ভ্যাকসিন খুঁজে বের করার কাজে নিয়োজিত হতে তাড়িত করেছিল।

ফাইজারের সিইও বোরলাও শাহিন সম্পর্কে বলেন, খুবই খুবই আলাদা একজন মানুষ। গত বছর ‘নিউইয়র্ক টাইমস’কে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে বোরলা বলেন, ‘তিনি কেবল বিজ্ঞান নিয়ে আছেন। ব্যবসা নিয়ে আলোচনা তাঁর বিষয় নয়। তিনি মোটেও তা পছন্দ করেন না। তিনি একজন বিজ্ঞানী, একজন নীতিবাদী মানুষ। আমি তাঁকে শতভাগ বিশ্বাস করি।’

ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে পুঁজিবাজারে আসে বায়োএনটেক। কোম্পানির আইপিওর যে দর ছিল টিকা তৈরির পর সেখান থেকে প্রায় ৯০০ শতাংশ বেড়েছে। কোম্পানিতে শাহিনের যে অংশ আছে, তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে। মেডিন নামে একটি সংস্থার মাধ্যমে শাহিনের বায়োএনটেকের ১৭ অংশ রয়েছে। তবে অর্থের মোহ শাহিনকে টানে না। তিনি এখন পর্যন্ত একটি শেয়ারও বিক্রি করেননি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া